somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাঝে মাঝে নিজেকে 'বাইসাইকেল থিফ' মনে হয়......

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ইতালি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পরের অবস্থা । পরাজিত শক্তি ইতালির রাজনৈতিক অবস্থা বেশ দুর্বল। ভেঙে পড়েছে অর্থনৈতি। চারিদিকে বেকার। কাজের খোঁজে হাজার হাজার মানুষ হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে।


এন্টোনিও রিকি একজন বেকার। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে তার পরিবার। চরম হতাশায় ডুবে থাকা বেকার কাজের সন্ধ্যানে ছুটে বেড়াচ্ছে। এভাবে সে একদিন একটা কাজের সন্ধান পেয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গাতে পোস্টের লাগানোর কাজ। বিভিন্ন জায়গাতে পোস্টের লাগাতে হবে বিধায় পায়ে হেঁটে সম্ভব হবে না। এই কাজের জন্য প্রয়োজন একটি বাইসাইকেল। আর এই বাইসাইকেল কিন্তু চাকরিদাতা দিবে না। যে কাজ করবে তাকেই বাইসাইকেল জোগাড় করতে হবে।
কিন্তু রিকির তো বাইসাইকেল নেই। কি করবে সে ? বাইসাইকেল না থাকলে চাকুরী হবে না। এই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে কাজ জোগাড় করা কতটা দুরহ সেটা রিকি বেশ ভালো করেই জানে।
কাজেই চাকরি হাতছাড়া করা যাবে না। কিন্তু বাধ সাধলো বাইসাইকেল। অবশেষে সাইকেল জোগাড় করতে পারবে এই মর্মে রিকিকে কাজে রাখা হয়।
চাকুরীতো হল কিন্তু বাইসাইকেল পাবে কোথায়? সে তার স্ত্রী মারিয়াকে বিষয়টা বলে। মারিয়া বিয়েতে পাওয়া দামি চাদরগুলো বিক্রি করে সাইকেল কেনে রিকি।



সাইকেল কেনার পর থেকেই বাবা ছেলের মাঝে অন্যরকম এক উদ্দীপনা। কাজের প্রথমদিন। নতুন স্বপ্ন নিয়ে সকালে রিকি তার ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু স্বপ্নটা দুঃস্বপ্ন হতে বেশি সময় লাগেনি। ওই দিনই সাইকেলটি চুরি যায়।

সাত বছরের ছেলে কে নিয়ে নিয়ে সে রোমের রাস্তায় রাস্তায় সাইকেলটা খুঁজতে থাকে । কিন্তু পায় না। এদিকে সংসার চালানো খুব কষ্ট। সাইকেল হারানোর বেদনায় রিকির স্ত্রী যখন ক্রন্দনরত তখন এগিয়ে আসে রিকির এক বন্ধু। সে রিকিকে আর তার ছেলেকে নিয়ে সাইকেল উদ্ধারের চেষ্টায় বেরিয়ে সাইকেলটির খোঁজ পায়, কিন্তু প্রমাণের অভাবে উদ্ধার করতে পারে না। নদীর ঘাট, খেলার মাঠের বাইরে সে তার চুরি যাওয়া বাইসাইকেল খুঁজতে থাকে। একসময় এক চোরের পিছনে কিছুটা পথ ধাওয়া করে তার হারিয়া যাওয়া সাইকেলের তথ্য পাওয়ার জন্য। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হয়, হারিয়ে ফেলে সেই চোরকে।

পরদিন যে তাকে কাজে যেতে হবে। স্টেডিয়ামের বাইরে অনেক সাইকেল রাখা। ভেতরে খেলা চলছে। রাস্তায় রাখা অন্য একটি সাইকেলের দিকে নজর পড়ে রিকির। অনেক সংশয়াপন্নতার পর মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় এই বাইসাইকেল সে চুরি করবে। সে ছেলেকে বাসে করে চলে যেতে বলে। যাতে সে সুযোগ বুঝে একটা সাইকেল চুরি করে পালাতে পারে ।

কিন্তু রিকি চুরিতে অভিজ্ঞ কিংবা দক্ষ নয় । প্রাণপণে সাইকেল নিয়ে পালতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। জনগণের কাছে মার খায়। এদিকে বাসটিতে উঠতে না পেরে রিকির ছেলে যখন পেছনে ফিরে তাকায়, তখন তার বাবাকে দেখতে পায়। তার বাবা মার খাচ্ছে। সাত বছরের শিশুপুত্রের চোখের সামনে গরীব শ্রমিককে মারছে তারা। অথচ এই শ্রমিকের একমাত্র সাইকেল চুরি হয়ে গেছে, যার আর কোনো সম্বল নেই, যাকে এই চাকরিটা করতেই হবে, সেই বাবাকে ছোট্ট ছেলের চোখের সামনে মারছে জনগণ।

ব্রুনো (রিকির ছেলে) “বাবা.. বাবা” বলে কাঁদতে থাকে আর অসহায় বাবা তার সন্তানের সামনে অপমানিত হয়ে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকে। বাবার সেই অসহায় চাহনি, আর শিশুর সেই বিস্মিত চোখ নিয়েই ‘দ্য বাইসাইকেল থিফ’ সিনেমা।



রিকির অসহায়ত্ব বুঝতে পারে সাইকেলের মালিক। তাকে ছেড়ে দেয়। লজ্জিত ও অপমানিত রিকি এবং তার ছেলে ব্রুনো ইতালির জনবহুল রাস্তা ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরতে থাকে। যদিও রাস্তাটা জনবহুল তবুও তারা যেন একা। শুধু বাপ আর ছেলে।


-------------------------------------------------------------------------
সর্তর্কীকরণ: এই পোস্ট কপি পেষ্ট দোষে দুষ্ট । আগে থেকেই খোলাসা করে নিলাম।











সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×