১.
এই যে এতসব কষ্ট, যন্ত্রণা;
এগুলো আমারই থাক।
তোমার জন্য শুভ্র সকাল,
আমার বাগিচার সবচেয়ে সুন্দর গোলাপটাই তোমার থাক।
এই যে এত্ত যন্ত্রণা, বুকের তীব্র আর্তনাদ;
বুকের ভেতর জ্বলতে থাকা বিষাদ!
এ সব আমারই থাক।
আর তোমার জন্য-
বৃষ্টি ভেঝা শহর, যার সতেজ বাতাস,
সচ্ছ আকাশ, সোনালী রৌদ্রুর-
এ সবই তোমার।
নিদ্রাহীন নির্ঘুম রাত, বুকের তীব্র ব্যাথা,
মেঘলা আকাশ, কুয়াশার ঘনঘটা;
এগুলো আমারই থাক।
তোমার জন্য-
উষ্ণ ছোঁয়া, জোছনা রাতের অপার সৌন্দর্য,
বসন্তের রঙিন হাওয়া, কোকিলের কুহূতান।
এই সব তোমার।
আমার জন্য থাকুক না হয়-
আস্তাকুড়ের তীব্র দহন,
নিয়ম ভাঙ্গার যন্ত্রণা, থাকুক সাথে খোঁদার লানত!
আরো থাকুক, অবহেলা আর প্রতীক্ষা।
তোমার জন্য রইলো শেষে-
ভালোবাসার প্রথম কলি,
শিশুর মুখের মিষ্টি হাসি, আবীর মাখা কৃষ্ণচূড়া।
সাথে রইলো সদ্য ফোটা দোলনচাঁপা,
আরো রইলো আমার বুকের সবটুকু ভালোবাসা।
কবিতাঃ কিছু থাকুক তোমার জন্য
২.
আমায় তুমি ডাকনি সে বেলা,
অবেলার কথা বলে দিব্যি হেঁটেছ একেলা।
ভুল করেও ছুঁতে দাওনি, তোমার সেই ক্লান্ত ছাঁয়া,
উন্মাদ বলে সর্বদা রেখেছ একেলা।
আমি মুচকি হাসির আড়ালে,
লুকিয়েছি সব দুঃখ ব্যথা।
নীরবে নীরবে,
অতিসন্তর্পনে হেঁটেছি তোমার পাশে,
তবুও ক্ষণিকের তরে তোমায় আড়াল করিনি।
আমি একটু একটু করে, পুষেছি তোমার তরে:
হৃদয়ের তীব্র ভালোলাগা
যত্নে রেখেছি তোমাকে, বসন্তের নতুন সাঁজে-
আমার হৃদয়ের অবক্ত গাঢ় পঙক্তিমালা!
তবুও তুমি ফিরে তাকাওনি,
করুণা করেও একবার হাতটি ছুঁয়ে দেখনি!
আমি তাতেও কিন্তু রাগ করিনি,
অভিমান ভরা কণ্ঠে নিষ্ঠুর বলে গালমন্দ দেইনি।
আমি দূর থেকেই তোমায় ভালবেসেছি,
প্রাপ্তির খাতাটা অপ্রাপ্তি দিয়েই পূর্ণ করেছি।
কবিতাঃ অপ্রাপ্তি
৩.
আমার জন্য তোমার কাজল পরতে হবে না,
বৃত্ত কালো টিপ পরতে হবে না,
তোমার কোমর ছুঁই ছুঁই সুদীর্ঘ চুল লাগবে না,
চুলে মুখে রং,
গায়ে সুগন্ধী ছিটাতে হবে না!
আমি তোমায় ভালবাসি,
এ বেলায় মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করতে আসিনি, তাই তোমার যা কিছু খুঁত, যা কিছু ভুল থাকুক, তাতে আমার কিচ্ছু আসে যায় না!
আর যাই হোক আমার জন্য তোমার,
ঘটা করে সাজতে হবে না,
সবচেয়ে ভালো শাড়িটা পরতে হবে না,
নিয়ম করে শাসন করতে হবে না,
যদি প্রেম না বুঝো তবে কষ্ট করে প্রেম পূজারি হতে হবে না!
তোমার যা কিছু ভুলভাল, অসুন্দর আছে তাই আমার কাছে সুন্দর, তা নিয়েই আমি দিব্যি সুখে থাকবো!
মূলত আমি তোমায় ভালবাসি, তোমার সাথে প্রেম নিয়ে তো ব্যবসা করতে আসিনি, যে দরদাম করে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষবো।
আমার জন্য তোমার নতুন করে মিষ্টি কথা শিখতে হবে না,
শিখতে হবে না কেমন করে রাগ ভাঙাতে হয়,
কায়দা করে তলপেটের মেদ, চোখের কিনারার ভাঁজ লুকাতে হবে না!
তোমার কথার মাঝে যে বিষ,
নিয়ম ভাঙার যে দোষ আছে তাতেই না হয় আমি মুগ্ধতা খুঁজে নিব।
হয়তো ভাবছো এত্ত এত্ত দোষ, এত্ত এত্ত অনিয়ম!
তবুও এত্ত ভালবাসা!
ভালবাসা না ছাই, সবই আদিক্ষ্যেতা! দুদিন পরে কই হারাবে ভালবাসা আর কই হারাবে মধুর কথা!
সত্যি বলছি,
এগুলো আদিক্ষ্যেতা না, এরও একটা কারন আছে!
কারন,
কারন তো একটাই তোমায় আমি ভালবাসি! আর আমি তো কোনো সওদাগর নই, যে প্রেম নিয়ে সওদা করবো!
প্রেম নিয়ে যে সওদা করে, লাভ-ক্ষতির হিসাব কষে, নারীর হাজারো খুঁত খুঁজে বেড়ায়!
সে আর যাই হোক, আমার কাছে কোনো প্রেমিক হতে পারে না!
কবিতাঃ যেমন তুমি
৪.
মরভূমির বুকে তপ্ত রৌদ্রুরে যখন পথিক তৃষ্ণায় ক্লান্ত,
ঠিক তখনি অমৃত হাতে সত্য নিয়ে এসেছিলো এক দীপ্তিমান যুবক!
কিন্তু আফসোস,
তারা সত্যকে কল্পনায় গড়া কাব্য ভেবে, যুবককে উন্মাদ কবি বলে
আখ্যায়িত করলো!
তারা বললো, এক উন্মাদ কবির কাব্য শুনে আমরা কী পাথরে গড়া
নিষ্প্রাণ প্রভুদের ছাড়তে পারি!
কবিতাঃ উন্মাদ কবি
বই:- মৃন্ময় মৃণালিনী
লেখক:- শরিফুল ইসলাম
প্রকাশনী:- আলোর ঠিকানা প্রকাশনী
প্রচ্ছদ:- জহিরুল হক অপি
প্রচ্ছদ মূল্য:- ১৫০ টাকা
প্রকাশকাল: ২০২০ বইমেলা
স্টল নং: ৩৩৭-৩৩৮, বাংলার প্রকাশন
মোট কবিতাঃ ৪৭
মোট পৃষ্ঠাঃ ৭৮
বিঃদ্রঃ বইটি পাওয়া যাবে অমর একুশে বইমেলা ২০২০, বাংলার প্রকাশন, ৩৩৭-৩৩৮ নং স্টলে।
এবং রকমারিতেও পাওয়া যাবে; রকমারি লিংকঃ Click This Link
১৪ই ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে থাকছি আমি বইমেলায়, চাইলে যে কেউ আসতে পারেন; হবে আড্ডা, হবে গল্প।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৪৮