ভোর হতেই ঠিক ৬ টা ৩০ মিনিটে
পশ্চিম
দেয়ালে লাগানো ঘড়িটা জানান
দিয়ে
দিল যে সকাল হয়েছে।সাথে সাথেই
ঘুম
থেকে উঠতে হল।সাথে সাথে দরজার
নক
করলো ডেক্সবার।ডেক্সবার কোন
মানুষের
নাম নয়।অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিতে
তৈরি
একটা রোবট।পারমিশন দিলাম মধ্যে
আসার জন্য।পারমিশন পেয়েই এসে
দরজা
খুলে রুমে এসে বিছানার পাশে
দাঁড়ালো। হাতে একটা ঝুড়ির মত কি
যেন।ঈশারা করতেই সেটা খুলে গেল।
ভিতরে দেখলাম ব্রাশ আর টুথপেস্ট।
ব্রাশ
করে মুখ ধুয়ে নিলাম।তখন ডেক্সবার
চলে
গিয়েছিল।মুখ ধুয়ে আসার সাথে
সাথে
আবারো ফিরে আসল।চা নাস্তা
নিয়ে।
চা-নাস্তা খেয়ে যেই টেবিলে
বসে
অফিসের সব কাজ করি সেই টেবিলে
গিয়ে বসলাম।ল্যাপটপটা অন করে
অফিসের একটা প্রোজেক্ট করতে
গিয়েই
দেখি সব অলরেডি করার আছে।বুঝলাম
এটা ডেক্সবারের কাজ।সবগুলো কাজই
সে
করে রেখেছে নিজেকে কিছুই করতে
হয়নি।মাত্র ৭টা ৩০ বাজে অফিস
সকাল
১০ টায়।মনে মনে ভাবলাম পুরানো
কিছু
গান শুনবো।সাথে সাথেই দেয়ালে
ঘিরে
রাখা সাউন্ড সিস্টেমগুলো চালু হয়ে
গেল
পুরানো গানে।ডেক্সবারের ক্ষমতা
প্রবল।আমার মনে যা আসে কিভাবে
যেন
বুঝে ফেলে।গানগুল্প শুনতে শুনতে
বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।
ডেক্সবার
চলে গেল।আমি বিশ্রাম নিলে আমার
কাছে থাকে না।১০ টা বাজার একটু
আগে
ডেক্সবার পুনরায় ফিরে আসল চোখ
থেকে
দেয়ালে ফ্লাস করলো সেখানে
লেখা
ছিল অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে
নিতে।ব্যাস।সাথে সাথে রেডি
হয়ে
নিলাম।বাড়ির সামনে গিয়ে
গাড়ির
সামনে দাঁড়ালাম সাথে সাথে
গাড়ির
দরজা খুলে গেল।ড্রাইভিং এর
জায়গায়
ডেক্সবার-২ মানে আরেকটা রোবট
বসে
আছে।
.
আমি যে অফিসে কাজ করি সেই
অফিসের নাম "Alien Reporters" আমরা
এলিয়েনদেরকে নিয়ে গবেষনা করি।
অফিসে ঢুকতেই আইডি কার্ড সো
করলাম
দরজার সামনে সাথে সাথে দরজা
খুলে
গেল।অফিসের ভিতরে বিভিন্ন
টাইপের
রোবট কাজ করতেছে।একজন মেঝে
পরিস্কার করছে,অন্যজন ভাঙা একটি
কম্পিউটার মেরামত করছে।অফিসে
আজকে মিটিং আছে সব বেস্ট
এলিয়েন
রিপোর্টারসরা থাকবে সেখানে।
আমিও
তার মধ্যে একজন।
.
মিটিং শুরু হতেই একজন রিপোর্টার
তথ্য
দিল পৃথিবীর কোন এজ প্রান্তে একটা
এলিয়েন ল্যান্ড করেছিল গতকাল।রাত
১টা ৩০ মিনিটে না জানা কোন এক
গ্রহের মধ্যে থেকে একটা যানে করে
এসেছিল এলিয়েনের একটা টিম।
আমাদের
তৈরি করা পৃথিবীর বাইরে
স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে যানের
একটি
চিত্র।সেই ভিডিওটি প্রোজেক্টরে
চালু
করলো আরেকটি রোবট।যানের গায়ে
একটা "s" এর মর চিহ্ন দেয়া ছিল।
সাধারন
যানের মত নয়।কেমন যেন একটা অন্য
ভাব
আছে মধ্যে।আমাদের স্যাটেলাইটের
ঘড়িতে ধরা পড়লো পৃথিবীতে
প্রবেশের
সময়।ম্যাপ থেকে দেখা গেল
আমেরিকার
শেষ প্রান্তে সেটা ল্যান্ড করেছিল
আর
সেখান থেকে প্রায় ১ঘন্টা পর মানে
২টা
৩০ এর দিকে সেই যানটি পৃথিবী
থেকে
চলে যায়।হঠাৎ করেই আমার একটা
জিনিস
মনে পড়ল।তাই বললাম ভিডিওটা
পুনরায়
চালু করতে।যখন যানটি পৃথিবীতে
প্রবেশ
করলো ঠিক তখনি ভিডিওটাকে স্টপ
করতে বললাম আর বললাম যানটির
জানালার দিকে জুম করতে।জুম করা
হল।
সবাইকে দেখলাম যানটির জানালার
পাশে সেইসময় একটা এলিয়েন
দাঁড়িয়ে
ছিল।পাশ থেকে ভিডিওটা করা
হয়েছিল তাই স্পষ্ট দেখতে পারিনি।
তবে এটা গ্যারান্টি যে ওটা একটা
এলিয়েনই ছিল।সবাই আমার কাজ
দেখে
মুগ্ধ হলো।এরপর অন্য সাইটের একটি
ক্যামেরা দিয়ে ভিডিওটা পুনরায়
চালু
করতে বললাম।অন্য একটি এঙেলে।
সেখানে পুরোপুরি স্পষ্ট যে ওটা
একটা
এলিয়েনই ছিল।গায়ের রং ছিল
হালকা
সবুজ।চোখদুটো নীল মনে হচ্ছে।যানটির
জানালার কাচটা সাদা ছিল তাই
অনেক
কিছুই স্পস্ট বুঝা গেল।স্যাটেলাইটে
আমরা কিছু হাই রেজুলেশনের HD
ক্যামেরা পাঠয়েছি।সেখান
থেকেও
প্লে করতে বলা হয় ভিডিওটা।
আমাদের
একটা ক্যামেরার ঠিক উপির দিয়ে
যানটা এসেছে।তাই যানটির নিচের
দিকে জুম করতে বললাম।আমি বুঝতে
পারলাম যানটা মঙল গ্রহ থেকে
এসেছে।
কেননা সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী মঙল
গ্রহে
মাটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যা
জেনেছি
এই যানটির নিচের কিছু লেগে থাকা
মাটিও তেমনি ঈশারা করছে।সবাই
আমার কথায় একমত হল।এটা নিয়ে
আমাকে
আরো কিছু রিপোর্ট তৈরি করতে
বললেন
আমাদের লিডার।আমি সম্মতি
জানালাম।
.
অফিসের কাজ শেষে বাসায়
ফিরলাম।
কিন্তু বাড়িতে তালা লাগানো
ছিল
না।থাকবেই বা কেন বাড়িটা
ফিংগার
প্রিন্টের মাধ্যমে সিকিউরিটেড
করা
আছে।আমার আঙুল বাসার দরজার বাম
দিকে একটা বোর্ডে রাখলাম ৩
সেকেন্ড
স্ক্যান করলো তারপর খুলে গেল দরজা।
আমি ঢুকতেই বন্ধ হয়ে গেল।তখন প্রায় ৮
টা বাজে।১ ঘন্টা অফিসের রিপোর্ট
তৈরি করবো ভেবেছিলাম।তাই
গিয়েই
ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসলাম ল্যাপটপ
নিয়ে।সাথে সাথে ডেক্সবার এসে
হাজির।আমাকে রিপোর্ট তৈরির
বিভিন্ন কাজে সাহায্য করলো।প্রায়
২
ঘন্টা অনেক রিপোর্ট তৈরি করলাম।
.
রিপোর্টটা ছিল এরকম।১.যানটির
নিচের
দিকে হালকা মাটি লেগে ছিল আর
ফা
শুকিয়ে গেছিল প্রায়।তাই অবশ্যই
সেটা
মঙল গ্রহের এমন জায়গা থেকে
এসেছে
যেখানের মাটি শক্ত।কেননা নরম
হলে
যানটির নিচের চাকায় আরো বেশি
মাটি
লেগে থাকত।২.পৃথিবীতে প্রবেশের
কয়েক সেকেন্ড আগে যানের
চাকাগুলো
খুলে যায়।তারমানে হলো পৃথিবীতে
নামার সাথে সাথেই সেটি ল্যান্ড
করবে
কোন এক জায়গায়।কেননা ল্যান্ড না
করলে চাকা খুলে যাওয়ার কোন প্রশ্নই
আসে না।আর যদি দুর্ঘটনাবসত খুলে
যেত
তাহলে পৃথিবী ছেড়ে পুনরায় ফিরে
যেতে পারত না।৩.এলিয়েনরা
নিজেদের
জায়গায় একেবারে শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত
দাঁড়িয়ে ছিল।কেননা যখন এক এঙেল
থেকে ওই এলিয়েনটা দেখলাম তার ৫
মিনিট পরেও অন্য এঙেলে সেইম
ভাবে
দাঁড়িয়ে ছিল এলিয়েনটা।আর
পৃথিবী
থেকে যাবার সময় ও সেইম ভাবেই
ছিল।
.
এসব রিপোর্টগুলো হাইলাইট করে বের
করলাম।আর কোন রিপোর্ট করার মত
জিনিস দেখতে পেলাম না।যানটার
স্পিড অনেক বেশি ছিল তবুও স্লো
মোশনে অনেক কিছুই স্পস্ট ছিল।কাজ
শেষে খাবার টেবিলে গিয়ে
দেখলাম
সব খাবার সাজানো আছে।সুপ,নুডুলস।
একটা
ফ্লাক্সে ছিল কফি রাখা।জগ ভর্তি
পানি।আরো বিভিন্ন খাবারে
সাজানো
ছিল টেবিল।খাবার শেষ করতেই
হাতে
তোয়ালে ধরিয়ে দিল ডেক্সবার।
হাত মুখ
মুছে নিলাম।এরপর আবার সেই ব্রাশ আর
টুথপেস্ট।তারপরে রুমে গিয়ে
বিছানায়
গা এলিয়ে দিলাম।ঈশারা করতেই
দরজা
বন্ধ হয়ে গেল আর লাইটগুলো অফ হয়ে
গেল।শুধু মাথার উপরের দিকে হালকা
হলুদ একটা ডিম লাইট চালু ছিল।কাল
সকালটা আবার ব্যস্ততা নিয়ে শুরু হবে
ভেবেই তাড়াতাড়ি ঘুমাবার চেস্টা
করলাম।