somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যদি বন্ধু যাবার চাও ঘাড়ের গামছা থুইয়া যাও রে- বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী গামছাকথন

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যদি বন্ধু যাবার চাও
ঘাড়ের গামছা থুইয়া যাও রে
বন্ধু কাজল ভ্রমরারে
কোন দিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রে .....

আমাদের গ্রাম-বাংলার এমন সব লোকসঙ্গীতের মাঝে “গামছা” কথাটির অস্তিত্ব বুঝিয়ে দেয় যে, বাঙ্গালীর কাছে গামছা শুধু প্রয়োজন মেটাবার উপকরণই নয় বরং তা আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বা এক কথায় বাংলার শ্বাশত রূপের সা্থে কতখানি জড়িয়ে আছে। একজন গাড়িয়ালভাই এর মাথায় বা বাংলার দুরন্ত দামাল রাখাল ছেলের কোমরে বাঁধা গামছা কিংবা লাজুক লাজুক কিষানী বউটির ভাত তরকারী বেঁধে আনা গামছাটি জানান দেয়, গ্রাম বাংলার যে কোনো পেশার যে কোনো মানুষের কাছে এই গামছার কদর কতখানি। উথাল নদীতে বয়ে চলা একখানি বিশাল বজরা বা কোনো শাখা নদীর ছোট্ট একখানি কোষা নৌকার মাঝিকেও আমরা গামছা ছাড়া কল্পনা করতে পারিনা।


গামছার কথা উঠলেই মনে পড়ে রবিঠাকুরের সেই প্রিয় কবিতা,
তীরে তীরে ছেলেমেয়ে নাহিবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।

কাজেই দেখা যায় গ্রামবাংলার দৃশ্যের সাথে গামছা যেন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শুধু গ্রামেই নয় এখনও শহরেও গামছার বহুল প্রচলন রয়েছে। নরম সুতায় হাতে বোনা গামছার কদর বুঝি বাঙ্গালীর কাছে কখনই ফুরোবার নয়।


গামছা বুনন প্রক্রিয়া-
“গামছা” শব্দটি এসেছে বাংলা শব্দ গা মোছা থেকে। কাজেই এই গামছাকে গা মোছাও বলা হয়। এটি মূলত এক টুকরো কাপড়। গামছা নানা রকম বর্ণীল রঙ্গে বোনা হয়। অধিকাংশ গামছাতেই চেকের ব্যবহার দেখা যায়। গামছা সাধারণত লাল, কমলা, সবুজ ইত্যাদি রঙের হয়। তবে ঠিক কবে থেকে এই গামছার ব্যাবহার শুরু হয়েছিলো তা জানা নেই । ধারনা করা হয় মানুষ যখন থেকে কাপড়ের ব্যাবহার শুরু করেছে প্রায় তখন থেকেই গামছার ব্যবাহার শুরু।
গামছা বোনা হয় তাঁতে আর এই তাঁতও দু রকম। গর্ত করা তাঁত বা পিটলুম, আরেক প্যাডেলে চালিত তাঁত। আরও আছে পাওয়ার লুম। তবে হাতে তাঁত চালিয়ে বানানো গামছাই সবচাইতে জনপ্রিয়।
গামছা মূলত তাঁতশিল্প। তবে শুধু গ্রাম বাংলার তাঁতীরাই নয় বাঙ্গালী মণিপুরি সাঁওতাল, চাকমা, মারমা, গারো ইত্যাদি উপজাঁতি জনগোষ্ঠীর হৃদয় নিংড়ানো কল্পনার রঙ ও মনের মাধুরী দিয়েও হাতে তৈরী হয় এই শিল্পটি। এসবের ভাঁজে ভাঁজে ছড়িয়ে আছে এক একটি জনপদের সহস্র বছরের সঞ্চিত আবেগ, দক্ষতা, স্মৃতি ও ঐতিহ্য । এগুলো কেবলই সুতোর পরে সুতো দিয়ে গাঁথা কোন আটপৌরে শিল্প নয়, যেন পরম মমতা ও ভালবাসার এক একটি স্মারক।
গামছা তৈরীতে লাগে সুতা এবং রঙ। সুতা কিনতে হয় পাউন্ড হিসাবে।ব্যাস অনুযায়ী সুতাকে কাউন্ট হিসাবে বিভিন্ন সংখ্যায় চিহ্নিত করা হয়। তুলা থেকে সাধারনত ৩২ থেকে ১০০ কাউন্টের সুতা তৈরী হয়। কাউন্ট চিহ্নিত হয় জোড় সংখ্যায়, ৩২, ৩৪, ৩৬ এভাবে এবং সাধারনত ৬৪ কাউন্টের সুতা দিয়ে গামছা তৈরী হয়। সুতা থাকে লাছি আকারে। গামছা বোনার আগেই সুতাতে মাড় ও রঙ দেওয়া হয়। রঙ ও মাড় একই পাত্রে গুলে তার ভেতরে সুতা ভিজিয়ে রাখা হয় ছয় থেকে আট ঘন্টা তারপর লম্বা বাঁশে ঝুলিয়ে রোদে শুকানো হয়। রঙ গুলানোর সময় ম্যানথল ব্যাবহার করা হয়।
রঙ পাকা করার জন্য আট থেকে চব্বিশ ঘন্টা মানে বেশী সময় সুতা রঙ্গে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এছাড়াও রঙ্গের সাথে সোডা মিশিয়ে প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা জ্বাল দিতে হয়। তবে সাধারনত গামছায় কাঁচা রঙই ব্যাবহার করা হয় ও মাড় হিসাবে ব্যাবহৃত হয় ভাতের মাড় বা বার্লি।
গামছায় বিভিন্ন রকম চেক ফুটিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন রকম সুতা দিয়ে। গামছা বিভিন্ন মাপের হয়। বড় ও ছোট দুইরকম গামছার মাঝে বড় গামছার দৈর্ঘ সাধারনত চার হাত ও প্রস্ত পৌনে ২ হাত হয়। ছোট গামছার দৈর্ঘ ২ হাত ও প্রস্থ পৌনে এক হাত হয়। মাঝারি গামছা বিভিন্ন মাপের হয়।
গামছার দুটি দিক থাকে, টানা এবং পোড়েন। টানা হলো দৈর্ঘ ও পোড়েন হলো প্রস্থ।গামছার টানায় নির্দিষ্ট দৈর্ঘের পোড়েন বোনা শেষ হলে ইঞ্চি দুয়েক আঁচল রাখা হয়।পুরো টানা বোনা শেষ হলে এই আঁচল অংশে কেটে প্রতিটি গামছা আলাদা করা হয়। গামছা জোড়ায় জোড়ায় ভাঁজ দিয়ে পাইকারী বিক্রি করা হয়। এরপর খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাত ধরে গামছা পৌছায় বাঙ্গালীর ঘরে।
একটি গামছা তৈরী করতে শ্রমিকের সময় লাগে ৩৫ মিনিট। প্রতিটি গামছা তৈরীর জন্য শ্রমিকের মুজুরী দেয়া হয় ২২ টাকা।দিনে একজন শ্রমিক প্রায় ১০টি গামছা তৈরী করে এবং দিন শেষে একজন শ্রমিক ২০০-২২০ টাকা আয় করে।আর গামছা তৈরী করার পর বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে পাইকারী-খুচরা দামে সরবরাহ করা হয়।
আমাদের দেশে তোয়ালের তুলনায় গামছা জনপ্রিয় কেননা এটি ইউরোপীয় ঘরানার তোয়ালের মত মোটা নয়, পাতলা যা এই উপমহাদেশের আদ্র আবহাওয়ার সাথে মানানসই। যান্ত্রিক বুননের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের সমতল ও পাহাড়ের গ্রামীন জনপদ এখনও টিকিয়ে রেখেছে নিজ নিজ ঐতিহ্য-মণ্ডিত বুনন শিল্প। উৎপাদন প্রক্রিয়া আঞ্চলিক ও লোকজ হলেও এসকল গামছা ব্যবহারিক ও শৈল্পিক মানের বিচারে অতুলনীয়।


কিছু অঞ্চলের বিখ্যাত গামছা-
নওগার রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউপির তাঁতিপাড়ার গৃহিণীরা গৃহের কাজকর্মের সাথে সাথে গামছা বুননের শিল্পটি আজও ধরে রেখেছেন।এক একজন দিনে এক থান বা চারটি গামছা বুনতে পারেন। সাধারণত বড় গামছাগুলো ২৫০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রয় হয়। অনেক সময় রঙ, নকশা ও গুণগতমানের জন্য গামছার দাম কম বেশিও হয়ে থাকে।
উপজেলার কুবরাতলী গ্রামের গামছা ব্যবসায়ী আজাহার আলী বলেন, মিরাটের তাঁতিদের তৈরি গামছা দেশের ঐতিহ্যবাহী বুনন শিল্পের অন্যতম। কিন্তু সুতার দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এখানকার তাঁত ও তাঁতির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে হারানোর পথে এই ঐতিহ্যবাহী বুনন শিল্প।


এছাড়াও বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদার অন্যতম পোশাক শিল্প নগরী সিরাজগঞ্জ। এই জেলায় ছোট-বড়-মাঝারী কয়েক হাজার তাঁত এবং কুটির শিল্প রয়েছে।এই জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় কয়েক হাজার তাঁত শিল্প রয়েছে এবং এই শিল্পে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এখানে শ্রমিকেরা নিজ হাতে তাঁতের বস্ত্র সামগ্রী ও গামছা উৎপাদন করে।
ঐতিহ্যবাহী খুলনার ফুলতলার গামছা শিল্পের প্রচুর চাহিদা ছিল। রং ও নিখুঁত বুননের জন্য ফুলতলার গামছার কদর ছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে। উপজেলার দামোদর, আলকা ও গাঁড়াখোলা গ্রামের প্রতিটি বাড়ীতে ছিল তাঁতকল। উৎপাদিত গামছা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হত সাতক্ষীরা, যশোর, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায়।
ঝালকাঠি জেলার তাঁত শিল্প বিশেষ করে গামছার সুনাম আছে। ঝালকাঠি শহরের নিকটবর্তী প্রবাহিত বাসন্ডা নদীর পশ্চিম দিকের গ্রামগুলোতে গামছা শিল্পের বিস্তৃতি। ।আনুমানিক দেড় থেকে দুইশত বৎসর ধরে ঝালকাঠি জেলা এবং এ জেলাধীন রাজাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ শিল্পের সুনাম ছিল। সুতা হল এ শিল্পের প্রধান উপকরণ।একসময় ঝালকাঠি শহরের নিকটবর্তী প্রবাহিত বাসন্ডা নদীর পশ্চিম দিকের গ্রামগুলোতে পুরো এলাকা জুড়ে প্রায় ৩৫০/৪০০ তাঁতি পরিবার ছিল।
ঝালকাঠি তাঁতে বোনা গামছা একসময় খ্যাতি অর্জন করেছিল সারাদেশব্যাপী। জাতীয় পর্যায়ের কিংবা বিদেশী কোন বরেণ্য অতিথি ঝালকাঠি বেড়াতে এলে তাদের হাতে বিশেষ উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হতো ঝালকাঠির গামছা। ঝালকাঠি পৌরসভার ইছানীল এলাকা আর বাসন্ডা গ্রাম ঘুরলে ও একটু উঁকি দিলেই দেখা যাবে প্রায় প্রতিটি বাড়ির বারান্দায় কিংবা আলাদা ঘরে বসানো কাঠ বাঁশের তৈরি ছোট ছোট তাঁত। তৈরি হচ্ছে নানা ডিজাইনের আর সাইজের গামছা। রঙ-বেরঙের সুতা গুটিয়ে-গুছিয়ে দিচ্ছে মহিলা ও শিশুরা। এ দৃশ্য প্রতিদিনকার। তাঁতীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় দেড়শ’বছর ধরে ঝালকাঠিতে গামছা তৈরির কাজ চলে আসছে।সারাদেশে এমনকি বিদেশেও এ গামছার কদর আলাদা। তাই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বাইরেও এখানকার গামছা পাওয়া যায়।
সেই হস্তচালিত তাঁতে তৈরি ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী গামছা এখন মার খাচ্ছে বিদ্যুৎচালিত তাঁতে তৈরি গামছার কাছে। এছাড়াও তাঁত শিল্পের কাঁচামাল সূতা ও রঙের দাম আকাশচুম্বি। তাই গামছা তৈরির খরচও বেড়ে গেছে। যুগ যুগ ধরে বাপ-দাদার এ শৈল্পিক পেশা ছেড়ে শত শত কারিগর তাঁত শিল্প বন্ধ করে দিনমজুর, রিকশা, ভ্যান চালনাসহ বিভিন্ন পেশায় চলে গেছে। যারা এখনো এই পেশায় আছেন তারা অন্য কাজ করতে না পারায় শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে দুঃখ-কষ্ট নিয়ে রাত দিন পরিশ্রম করে টিকিয়ে রেখেছেন এ শিল্পকে। এ গামছা শিল্পে স্বর্ণালী দিন ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। আর তা না হলে হয়তো মসলিন কাপড়ের মতো হারিয়ে যাবে ঝালকাঠির গামছা শিল্প। আর ঠাঁই নেবে পাঠ্য বই কিংবা যাদু ঘরের উপকরণ হিসেবে।


গামছার ব্যাবহার-
গামছা মূলত গোসল ও ধোয়াধুয়ির কাজে ব্যাবহার করা হয়। তবে এর বহুবিধ ব্যাবহার আছে। ইদানিংকালে বিবি রাসেলের ফ্যাশনে ও শহুরে বাঙ্গালীয়ার উৎসব অনুষ্ঠানে এই গ্রাম বাংলার গামছার বহুল ব্যাবহার দেখা যায়। বাংলাদেশে গামছা ফ্যাশনের সূচনায় ব্যাপক ভূমিকা রাখেন আন্তর্জাতিক ফ্যাশন আইকন, ডিজাইনার বিবি রাসেল। তিনিই মূলত বাংলার এ ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন। এরপর থেকে ফ্যাশনের একটি আলাদা অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় গামছা। পাতলা কাপড়ের ধরন এবং প্যাটার্নটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আলাদা একটি ফ্যাশন জগৎ। গামছা নিয়ে বিশ্বের ফ্যাশন জগৎ মাতিয়ে চলছেন আমাদের ডিজাইনাররা।


গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে মিশে আছে গামছা তবে শহুরে জীবনে নরম তোয়ালের প্রভাবে অনেকটা হারিয়ে গিয়েছিল। জীবনযাত্রায় সেই গামছা ফিরিয়ে এনেছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল। শুধু দেশেই নয়; বরং গামছাকে তিনি তুলে ধরেছেন বিদেশেও। তবে এটিকে জনপ্রিয় করেছেন একটু অন্যভাবে। গামছাকে ঠিক গামছা হিসেবে নয়, কাপড় হিসেবে তুলে এনেছেন পোশাকে, গৃহসজ্জা সামগ্রী এমনকি জুয়েলারিতেও।


শাড়ি, ফতুয়া, টপস, স্কার্ট, ওড়না, সালোয়ার-কামিজ এমনকি পাঞ্জাবিতেও ব্যবহার হচ্ছে পিওর গামছা।'পোশাকে গামছা শুধু কাপড় হিসেবেই নয়; বরং বাংলার আবহমান ঐতিহ্য হিসেবেই উঠে এসেছে। শুধু পোশাকেই নয়; ফ্যাশন দুনিয়ায় রয়েছে গামছার বহু ব্যবহার। ফ্যাশনেবল ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে গামছা। তৈরি হচ্ছে স্যান্ডেলও। রাবারের সোল, লেদার আর গামছা গিয়ে তৈরি হচ্ছে ছেলেমেয়েদের স্যান্ডেল। রয়েছে ল্যাপটপ ব্যাগও। এ ছাড়া রয়েছে রুমাল, জুয়েলারি বঙ্, মাথার ব্যান্ড ও ফিতা।
ঘর সাজাতেও ব্যবহার হচ্ছে গামছা। বিছানার চাদর, বালিশ, পর্দা, সোফার কুশন কভার, ম্যাট এমনকি খাবার টেবিলের রানার হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে গামছা। ঘরের কোণে রাখা টেবিল ল্যাম্পটিও গামছার তৈরি। গামছা বাঙালিয়ানার প্রতীক। আর গামছার রংগুলো সাধারণত অনেক উজ্জ্বল হয়। ফলে এর ব্যবহারে অন্দরের শোভা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। বিছানার চাদর, পর্দা, কুশন কভার, ম্যাট ইত্যাদিতে সরাসরি গামছা ব্যবহার না করে সুতি কাপড়ে গামছা মোটিফ ব্যবহার হয়েছে। লাল, সবুজ, হলুদ, মেরুন, কালো, নীলসহ উজ্জ্বল সব রং ব্যবহার হয় গামছায়।


যদিও আমাদের সমাজে গামছার নানামুখী ব্যবহারের সাথে সাথে গামছা নিয়ে নানা রকম বাগধারাও রয়েছে যেমন- গলায় গামছা দিয়ে ধরে আনা বা গলায় গামছা বেঁধে মরার মত বাগধারা তবুও গামছা কথন শেষ করার আগে আরেকটি কবিতার কথা না বললেই নয় , তা আমাদের পল্লীকবি জসিমুদ্দিনের সেই বিখ্যাত কবিতা আমার বাড়ি।

আমার বাড়ি যাইও ভ্রমর,
বসতে দেব পিঁড়ে,
জলপান যে করতে দেব
শালি ধানের চিঁড়ে।
শালি ধানের চিঁড়ে দেব,
বিন্নি ধানের খই,
বাড়ির গাছের কবরী কলা
গামছা বাঁধা দই।


অটুট থাকুক পল্লীকবি জসিমুদ্দিনের কবিতায় উঠে আসা বাঙ্গালীর গামছা বাঁধা দৈ এর স্বাদ আর সাথে বেঁচে থাকুক আমাদের বহুমুখী ব্যাবহার্য্য গামছা শিল্প। সকল বাঙ্গালীর প্রিয় গামছা ও বাংলাদেশের গামছা শিল্প চিরজীবি হৌক।

ছবি ও কিছু তথ্য

গামছা শিল্পরাণীনগরে হারানোর পথে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প

ঐতিহ্য হারিয়েছে ফুলতলার গামছানওগাঁয় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প

বাঘায় তাঁত পল্লীর নারীরা গামছা বুনে জীবিকা নির্বাহ

কেমন আছে মনিপুরীদের তাত শিল্প...


Related pictures
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×