বিদ্যুৎ বিল জমা দেওয়ার শেষ তারিখ । ভাদ্রের গরমে হাঁসফাঁস দুপুর । দুটো কাইন্টারে চারটা লাইন । সামনে এগুচ্ছে কচ্ছপের গতিতে ।
মাথার উপর রোদ যেন শিশার মতো ঢেলে পড়ছে । ভাই, আপনার পিছনে কিন্তু আমি, একটু ছায়াতে গেলাম, আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না । একটা পাগল বিল হাতে মুখে শব্দ করতে করতে ভেতরে ঢুকে পড়ল । আরেকজন পাগলপ্রেমিক তাকে ধরে কাউন্টারের সামনে নিয়ে গেল । নিয়ে যাওয়ার সময় সে সবাইকে ওছিওত করে বলল, আপনারা কিছু মনে করবেন না, ওকে একটু সুযোগ দিন । পাগল গান ধরল - কইলজের খবর রাখলিনারে কেউ...।
মহিলারা মুখে কাপড় দিয়ে হাসছে । তালপাকা গরমে এ যেন তালের ফুলুরি ।
একজন বয়স্ক লোক কি যেন সব নথিপত্র নিয়ে লাইন ছাড়া কাউন্টারে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ফ্যাচর ফ্যাচর করছে । বাকীদের রোদপোড়া শরীরে বাড়ছে ঘামের স্রোত, গায়ের দুর্গন্ধ; উঠছে মেজাজের পারদ । খিটখিটে এক লোক বলে উঠল, দেখছেন ভাই এই বালপাকনা বুড়োটার কান্ড ? আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি আর উনি এই সময় তার সমস্যার সমাধান করতে এসেছেন ।
সবাই একবার এর-ওর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করল । এরমধ্যে হঠাৎ একজন রাগে গজ গজ করে বলে উঠল, আমাদের টাকাই ভেতরে দুটো ফ্যান ঘুরছে আর আমরা বাইরে রোদে সবাই ভাজা ভাজা হচ্ছি । আরেকজন বলল, আসলে সরকারী অফিসের যেখানেই যাবেন, সেখানেই দেখবেন উনারা উনাদের গতিতেই চলছে । পাবলিকের কষ্ট কেউ মাথায় নেয় না ।
আমার তখন মনে পড়ল পান খেয়ে জাবরকাটার কথা । কিন্তু কোথাও পিকদানি খুঁজে পেলাম না ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৯