somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কপিবিদ্যা মহাবিদ্যা, না পড়িলে ধরা।

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নাটকের নামঃ উদ্দেশ্য
অভিনয়েঃ তাহসান, মিম
রচনা, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ্।

নাটকটির গল্পে দেখা যায়, অনিমা কোন এক ছাদের ট্যাংকির উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার চেহারায় বিষন্নতার ছাপ। পরবর্তিতে ফ্ল্যাশব্যাকে দেখা যাবে, অনিমা একজন পুলিশ কর্মকর্তা। একদিন সকালে পার্কে জগিং করতে গিয়ে দেখে এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাই হয়েছে। তৎক্ষণাৎ ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করে সে। কিন্তু ভুল বশত জারিফ নামের অপর একজনকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে জারিফকে ছেড়ে দেয় মিম। জারিফও থানা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় অনিমাকে যা ইচ্ছা তাই বলে যায়।
এদিকে গল্প অন্যদিকে মোড় নেয়, অনিমা এবার জারিফকে কিডন্যাপ করে দুঃখ প্রকাশ করার জন্যে। এরপর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। হঠাৎ একদিন রাতের বেলায় এক সন্ত্রাসীকে ধাওয়া করে সে। এসময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। এক পর্যায় অনিমার পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে ভুল বশত জারিফের বুকে লাগে এবং জারিফ মারা যায়। তারপর থেকে অনিমা নিজেকে দোষী মনে করে আর অপরাধ বোধ তাকে গ্রাস করে। আর এভাবেই নাটকটির গল্প এগিয়ে যেতে থাকে।

নাটকটার রচনা, চিত্রনাট্য ইত্যাদিতে মাবরুর রশিদ বান্নাহ্‌ না লিখে কপি লিখে দেয়াটাই শ্রেয়। কারন হুবুহু কপি করেছে ২০০৪ সালের কোরিয়ান মুভি Windstruck কে।
হাসি পেলো ললনাদের হার্ট থ্রব তাহসানকে কপি করা একটা ক্যারেক্টারে অভিনয় করতে দেখে। এরা ভাবে কি?? আমরা বাহিরের মুভি টুভি সমন্ধে কোন জ্ঞান রাখি নাহ?? কপি যখন করেছেই তখন এটা উল্লেখ করে দিলে কি নাটকের দর্শক কমে যেতো??

আমি রোমান্টিক মুভির ফ্রিক নাহ। তবে সেটা যদি হয় কোরিয়ান, তাহলে আমি রাত জাগতে রাজি আছি। ওদের চেয়ে ভালো রোমান্টিক মুভি কেউ বানায় নাই, বানাতে পারবেও নাহ। যাহোক, যেই মুভিটাকে কপি করলো সেটার কাহিনীটা একটু বলি। তাদের জন্য যারা দেখেন নি মুভিটা।



Windstruck (2004)
আমার অন্যতম পছন্দের মুভিগুলোর একটি। পুরো মুভিটা ২ ঘন্টা তিন মিনিটের।
মুভিটার শুরুর দিকে দেখা যায় এক তরুনী ছাদের কিনারে বিষন্ন মনে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটার নাম Kyungjin (বাংলায় স্পেলিং করতে পারি নাহ :P)।,



Kyungjin একজন পুলিশ অফিসার। নায়কের নাম Myungwoo। সে পেশায় স্কুলের একজন ফিজিক্স টিচার। একদিন সকালে এক মহিলার পার্স ছিনতাই হয়ে গেলে Myungwoo তার পিছু পিছু দৌড়াতে থাকে। Kyungjin সেটা দেখে ভুলবশত Myungwoo কে ছিনতাইকারী ভেবে বসে। তারপর ছিন্তাইকারী ভেবে ধরে ফেলে Myungwoo কে। রাস্তার মধ্যে প্রহার শুরু করে Myungwoo কে। থানায় নেবার পর Myungwoo ছিন্তাইকারীর চেহারা একে দেখায়। এতে অবশেষে ছাড়া পায় সে।
তবে Myungwoo রাস্তায় ওই মহিলার ছিনতাই হওয়া ব্যাগটা দেখতে পেয়ে হাতে তুলে নিলে সেই মহিলা পুলিশ অফিসার আবার তাকে ধরে ফেলে এবং থানায় নিয়ে আসে। তবে ততক্ষণে Myungwoo এর আকা চেহারার সাথে মিলিয়ে আসল ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলা হয়েছে।
এবার Myungwoo পুলিশ অফিসারকে তাকে সরি বলতে বলে। জবাবে Kyungjin বলে, "আমার ডিকশনারিতে সরি বলে কোন শব্দ নেই। যদি তোমার সরি শুনতে ইচ্ছে করে তবে তোমার নামটা Myungwoo থেকে পালটে Sorry রাখো"

এভাবেই পরিচয় তাদের।
একদিন Kyungjin ড্রাগ ডিয়েলারদের পিছু নেয়। সাথে Myungwoo কে আসতে বলে। Myungwoo আসতে রাজি না হওয়াতে Kyungjin তার নিজের হাতের সাথে Myungwoo এর হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকিয়ে নেয়। বাধ্য হয়ে Myungwoo তার সাথে হাটতে থাকে।



তারপর থেকে একসাথে সময় কাটাতে থাকে তারা। সময় কাটাতে কাটাতে ভালোবেসে ফেলে একে অপরকে।



নায়ক একদিন নতুন গাড়ি কিনে ওকে নিয়ে ভ্রমনে যায়। ভ্রমন থেকে ফেরার পথে বৃষ্টির কারনে পাহাড় ধ্বসে পড়াতে ওদের গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। নায়ক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। নায়িকা পানিতে ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে নায়ককে বের করে ডাঙায় নিয়ে আসে। নায়কের বুকে চাপা দিয়ে, মুখ দিয়ে বাতাস দিয়ে তাকে বাঁচাবার জন্য পাগলের মত কাঁদতে কাঁদতে চেষ্টা চালাতে থাকে। মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সাথে এই দৃশ্যটা জাস্ট অসাধারন। যাহোক, নায়িকা অবশেষে বাঁচাতে সক্ষম হয় নায়ককে।



তারপর একদিন নায়ক রেস্টুরেন্টে অপেক্ষা করতে থাকে নায়িকার জন্যে। কিন্তু গুরুতর এক ক্রিমিনালের পিছু নেয়াতে আসতে পারে নাহ Kyungjin। নায়ক ছুটে যায় ওকে সাহায্য করার জন্য। এক পর্যায়ে ভুলবশত নায়িকার সাথের অন্য পুলিশ অফিসারের গুলি গিয়ে লাগে Myungwoo এর বুকে। তবে নায়িকা ভাবে গুলিটা সে করেছে। Myungwoo মারা যায়। Kyungjin ওর মৃত্যুর পর অনেকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

Myungwoo মারা যাবার অনেকদিন পর আবারও ক্রিমিনালের পেছনে ছুটতে দেখা যায় Kyungjin কে। এবার তার সাথে রয়েছে সেই অফিসার যে ভুলে Myungwoo কে গুলি করেছিলো। দৌড়াদৌড়ির এক পর্যায়ে বুকে গুলিবিদ্ধ হয় Kyungjin। হাসপাতালে তার সাথের সেই পুলিশ অফিসারটি বার বার সত্যটা বলার চেষ্টা করে যে Myungwoo কে সে গুলি করেছিলো।

শেষের দিকে দেখা যায় নায়িকা তার জানালা খুলে বাতাসের মধ্যে Myungwoo কে খুজছে। ঠিক যেভাবে Myungwoo বলেছিলো,"জানো, আমি আমার আগের জনমে বাতাস ছিলাম। আমি যখন থাকবো না তখন আমাকে বাতাসের মধ্যে খুজো। আমি মরে গিয়ে আবার বাতাস হয়ে যেতে চাই।"



৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×