somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচিত্র যত বিল্ডিং (পর্ব – ২ক)

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব - বিচিত্র যত বিল্ডিং (পর্ব – ১)

একজন আর্কিটেক্ট হিসেবে হয়তো আর্কিটেকচারের ওপর কিছু গুরুগম্ভীর পোস্ট দেয়া আমার কর্তব্য। কিন্তু ছাত্র হিসেবে নেহায়েৎ বাজে ছিলাম বলে কটকটে কঠিন আঁতলামি ভাল লাগতোনা। তাছাড়া এসবের জন্য বহুগুণী লোক রয়েছেন। বেশ আগে (২০১১’য়) ৬টি বিচিত্র বিল্ডিংয়ের ওপর এক পোস্ট দিয়েছিলাম। কোন কোনটির আর্কিটেক্টের নাম পাওয়া গিয়েছিলো, কোনটির পাওয়া যায়নি।

এবার এলাম নতুন ছয়টি বিল্ডিংয়ের পরিচিতি নিয়ে। ইউটিউব বা নেটে অনেকেই এগুলোর ছবি দেখে থাকবেন। শুধু কিছু স্থাপত্য বিষয়ক তথ্যের জন্য এই পোস্টের অবতারণা। পোস্টটি খুব লম্বা হয়ে যাচ্ছিলো, তাই এটাকেও ছোট ছোট পর্বে ভাগ করা হয়েছে। সঠিক উচ্চারণ সম্বন্ধে ধারণা না থাকায় ইংরেজীতেই নাম দেয়া হোল।

Niterói Contemporary Art Museum

গুগল বলবে নিটেরই হলো ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূবে, Rio de Janiro রাজ্যের একটা শহর। এখানেই আছে অনেকটা ফ্লাইং সসারের মত এক অদ্ভুত স্থাপত্য। নিটেরই শহরটা গুয়ানাবারা উপসাগরের পাশে। এখানে Almirante Benjamin Sodré নামের অ্যাভেনিউয়ের ওপর Boa Viagem (শুভযাত্রা) viewpoint নামে এক দারুণ আকর্ষণীয় জায়গা রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ Niterói Contemporary Art Museum।

নিটেরই সমকালীন চিত্রশালা

গুগল আর্থে নিটেরইয়ের অবস্থান

গুয়ানাবারা উপসাগর

Oscar Niemeyer আধুনিক স্থাপত্য জগতের এক দিকপাল। ব্রাজিলিয়ান এই আর্কিটেক্ট ১৯৬৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের সময় ব্রাজিল ত্যাগ করেন। ব্রাসিলিয়াতে তার বেশ কিছু বিখ্যাত স্থাপত্যকর্ম রয়েছে। ১৯৮৫’তে তিনি আবার যখন ব্রাজিল ফেরেন তখন ব্রাজিলের নতুনরূপ।

স্থপতি Oscar Niemeyer এর ভাষায় এক টুকরো পাথরের ওপর একটা প্রস্ফুটিত ফুল। নিয়েমায়ার নিজেই বলেছিলেন “সাগর পরিবেষ্টিত জায়গাটা সরু, সমাধান ছিলো স্বাভাবিক। কেন্দ্রের স্তম্ভটি ছিলো অবশ্যম্ভাবী প্রথম ধাপ। তার সাথে স্বতস্ফূর্তভাবেই ফুলের আবির্ভাব।“

কনসেপ্ট

চিত্রশালাটি একটি সনাতন উপসাগরমুখী বাতিঘরের উপমা। ২৫০০০ বর্গমিটার খোলা চত্বরে রয়েছে গোলাকার, ৬০ সে. মি. গভীর আর ৮১৭ বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের এক জলাধার। এর মাঝে চিত্রশালার মূল স্তম্ভ (২.৭ মি. ব্যাস)।

The Eagle Has Landed

লাল আঁকা বাঁকা ramp

মাটির নীচে কিছু অংশ আর ওপরের তিনটি স্তর নিয়ে এই চিত্রশালা। ৯৮ মি. দীর্ঘ আঁকাবাঁকা হাটা ramp দিয়ে দর্শনার্থীরা উপরে যেতে পারেন। পাঁচটি মূল গ্যালারী ছাড়াও কিছু ছোট ছোট প্রদর্শন কক্ষ রয়েছে।

নিয়েমায়ারের সরল রেখার কাজ পছন্দ ছিলোনা। তার কাছে সবসময়ই কামোদ্দীপক বক্রতা পছন্দের ছিলো। তার মানে অবশ্য এ নয় যে সেখানে কোন স্ট্রেইট লাইনই নেই।

উপসাগরের অতন্দ্র প্রহরী

সেকশান

নীচতলার প্ল্যান



সখী আর্কিটেকচার কাহারে কয়!

লেভেল – ১ এর ভিউয়িং এলাকা। পুরো উপসাগরের দৃশ্য উপভোগের জন্য।

পুরো ভবনটি ঘন্টায় দু’শো কিলোর ঝড় সহ্য করতে পারে। এর স্ট্রাকচারাল ডিজাইনার হচ্ছেন সিভিল ইঞ্জিনীয়ার Bruno Contarini। ১৯৯৬ সালের এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

আধুনিক স্থাপত্যকলার দুই দিকপাল। বা’য়ে নিয়েমায়ার, ডানে Norman Foster (ইংল্যান্ড)। ২০১১ সালে

অস্কার নিয়েমায়ার ২০১২’তে ১০৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

এ প্রজেক্টের সাথে এক রাজনৈতিক কেলেংকারী জড়িত। Zeca Mocarzel, sub-mayor of the Niterói's Oceanic Region খুব কমদামে মূল মালিকদের কাছ থেকে ঐ এলাকার জমি কিনে রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ঐ জায়গাটি এক ধরণের restricted zone বিধায় ওখানে নতুন কিছু করা যাবেনা। কিন্তু কিছুদিন পর ক্রিসমাসের আগ দিয়ে যখন Jorge Roberto Silveira প্রজেক্টটি নির্মাণ অনুমোদনের জন্য সিটি কাউন্সিলের কাছে পাঠান, তখন মাত্র দু’দিনেই তা অনুমোদিত হয়ে যায়। আর ধা ধা করে জমির দামও বেড়ে যায়। স্থানীয়দের কাছে এটা Jorge Roberto Silveira, Zeca Mocarzel and João Sampaio (long-time Niterói's politicians) এই ত্রিমূর্তির ক্রিসমাসের উপহার!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×