দুই
নীলা রাগ করে বাবার বাড়ি চলে গেছে। আসলে বাবার বাড়ি না। বাবার বাড়ি গিয়েছিল কিন্তু মা বাবা দুজনেই ওকে দেখে, বলা শুরু করল অসুস্থ জামাইকে রেখে এ সময়ে তুমি এসেছো কেন? ওর পাশে থেকে ওকে যত্ন করার সময় এখন। ও হলো তোমার আসল ঠিকানা। এ সময়ে ওকে যত্ন দিয়ে সারিয়ে তোলা তোমার কাজ। পরে এসে যতদিন খুশি থেকে যেও। স্যুটকেস নিয়ে এসেছো দেখে তো মনে হচ্ছে তুমি থাকতে এসেছো।
এসব কথা শুনে সাথে সাথেই নামিয়ে রাখা স্যুটকেসটা নিয়ে, বেরিয়ে গেছে বাড়ি থেকে নীলা। ওদের কোন কথার উত্তর দেয়নি। নীলার মা ফোন করে আমাকে জানালেন, যে মেয়েকে আমার কাছে চলে আসতে বলেছেন। ও চলেও এসেছে। নীলা পৌঁছালে যেন একটা খবর দেই।
নীলা যে চলে গেছে আমি জানতাম না। আমি তখনও ঘুমাচ্ছিলাম।
ঘড়ির দিকে থাকিয়ে দেখলাম বেলা দশটা বাজে। আমি এত বেলা ঘুমাচ্ছিলাম । নীলা চলে গেছে কিছু টের পাইনি।
জ্বরটা সেরেছে মনে হয়। রাতে গা কাঁপিয়ে জ্বর উঠেছিল আজ সকালে সেটা হয়নি। খুব দূর্বল লাগছিল। গভীর ঘুম ঘুমাচ্ছিলাম।
রাতে মুরগীর মাংসের হালকা ঝোলের তরকারি আর করলা ভাজি দিয়ে, নিজের হাতে ভাত খাইয়ে দিয়েছিল নীলা। করলা খেতে আমার ভালো লাগে না। কিন্তু নীলা বলল, রক্ত পরিস্কার করবে। রোগ সারাবে। এমন তরকারি খেতে হবে। একটু কষ্ট করে খাও। ও মুখে তুলে দিচ্ছিল বলে, অনেক খারাপ তিতা লাগলেও গিলে ফেলছিলাম। তারপর গুনে গুনে তিনটা ওষুধ দিল। মুখ, শরীর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মুছিয়ে দিল। পরনের কাপরটাও বদলে নিতে বলল। বিছানা বদলে বেশ পরিচ্ছন্ন করে শুতে দিয়েছিল। নতুন ধোয়া মশারির ভিতর বেশ ফুরফুরে লাগছিল।
আগের ক'দিনের ভয় এবং অস্বস্তির অনুভূতি ছিল না। অল্প সময়েই আমি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
এত যত্নে এ ক'দিন নীলা আমাকে দেখ ভাল করছিল। সে কেন চলে গেল হঠাৎ বুঝতে পারলাম না। রোগীর সাথে থাকতে খারাপ লাগতেই পারে। দুদিন মা বাবার কাছে গিয়ে থাকলে কোন অসুবিধা তো নাই। নীলা সব সময়ই নিজের ইচ্ছায় বাবার বাড়ি, যাওয়া আসা করে। অনেক সময় আমি সেধেও পাঠাতে পারি না। আবার অনেক সময় বাড়ি ফিরে দেখি একটা চিরকুট রেখে চলে গেছে। ক'দিনের জন্য রান্না করে ফ্রিজে কোথায় কি রেখেছে । কোন দিন কি খাবার খাব, সব লিষ্ট লিখে রেখে যায়, যত্ন করে নীলা। ও বেড়ে তুলে না খাওয়ানো ছাড়া আমার কোন অসুবিধা হয় না, ও না থাকলে। খেয়ে একটার পর একটা প্লেট সিঙ্কে জমাই। এসব নিয়ে নীলা কোন অভিযোগ করে না। ফিরে এসে বাড়ি ঘর ঝকঝকে তকতকে করে তুলে। কিন্তু মঙ্গল বারের বা বৃহস্পতিবারের খাবার ঠিক মতন না খেলে ওইটা নিয়ে মুখ ঝামটা দিয়ে কথা বলতেই থাকে। রাগী বিড়ালের মতন গড়গড় করে নীলা। এত কষ্ট করে ঘেমে নেয়ে রাঁধলাম, উনার খেতে ইচ্ছে হলো না। কষ্ট তো কষ্ট, সাথে কত গুলো টাকা খরচ হয়েছে, সে হিসাব হয়েছে কখনও। না উনি আরো খরচ করে বাইরে খেয়ে এসেছেন। অন্যের স্বাস্থ নিয়ে আমি অস্থির, অথচ মানুষের নিজের চিন্তা নাই। আমি ভেবে ভেবে মরি। কি আমার ভালোবাসা! তাতে কার কি! কি আমার সাধের সংসার!
নীলা যখন রাগ হয়, সম্বোধন হয়ে যায় পরোক্ষ। ও যে কেন এত রাগ করে, পান থেকে চুন খসলে। আমি ঠিক ধরতে পারি না। আমি এটাও বুঝি না কখন কি জন্য ওর মেজাজ চটে যাবে।
অথচ ও আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আমি ওর সাথে ঠিক কোন আচরণটি করব বুঝতে পারি না। হয়তো এক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সে ভাবে ওর মতন করে কথা বললাম। দেখি ও রাগ হয়ে গেছে।
নীলা রাগ হয় আমার উপর কিন্তু সরাসরি আমাকে কোন কথা বলে না। তৃতীয় বচনে ঘরের আসবাবপত্রর সাথে যেন কথা বলে। আমি নিরব দর্শকের মতন শুনি।
নীলাকে কিছু বলতে হয় না আমার, ও না থাকার সময় আমি কি করেছি না করেছি, নিজের মতন হিসাব করে বের করে ফেলে আমি কি ভাবে কাটিয়েছি এ কদিন। ওর খাবারের অপব্যবহারে ওর মন খারাপ হয় খুব। সাথে টাকা পয়সারও হিসাব করে। কিন্তু আমরা দুটি মাত্র প্রাণীর জন্য, এত হিসাবের প্রয়োজন পরে না। মাঝে মধ্যে অনিয়ম করতে আমার ভালোলাগে। দু একবার বাইরের খাবার খেলে শরীর নষ্ট হয়ে যাবে না। টাকা পয়সারও খুব অভাব নাই। একটু অপচয়ে জীবন আমাদের পথে বসবে না। অথচ বেঁধে দেয়া নিয়মের উল্টাপাল্টা নীলা সহ্য করতে পারে না।
রূপার সাথের জীবন আমাকে অনেক বেশি পাগলামী অনেক নিয়ম না মানা শিখিয়েছিল। নীলার অনুপস্থিতিতে আমি আবারও নিয়ম না মানার খেলা খেলি। কিন্তু কখনো খুব বেহিসাবী হয়ে উঠতে পারি না। একটা সংযত ভাব রাখি। নীলা যেন ধরতে না পারে। ওর যেন অসম্মান না হয় সে জন্য।
কিন্তু নীলা খুব ছকে বাঁধা থাকতে পছন্দ করে। ওকে নিয়ে হুটহাট রিকসায় ঘোরা বা রাস্তার পাশে খাওয়া খুব একটা হয় না। পথে ঘাটে খাওয়া বা ফুল কেনা, হুট করে একটা তাঁতের শাড়ি কিনে হাজির হলে নীলা খুশি তো হয় না বরং তার প্রতিবাদে কথা চলতেই থাকে কদিন ধরে। উৎসবে পরিপাটি হয়ে পার্টিতে যেতে হয় বিবাহ বাষিকী বা জন্মদিন এমন কি, সুন্নতে খাতনারও তিন চারদিন ব্যাপী, বিশাল পার্টি হয় নীলার পরিবেশে। আমাকে নীলার সাথে যেতে হয় স্যুট টাই পরে, ম্যাচিং ড্রেস পরে। ওর পাশে পাশে হাসি মুখে ঘুরতে হয় । বিশাল উপহারও নিতে হয়। নীলার জন্যও ওর পছন্দে জড়োয়া গহনা বা শাড়ি, কখনো শাড়ি, গহনা দুটোই কিনতে হয় এই সব উৎসব উপলক্ষে। সাথে আমার ম্যাচিং স্যুট। আমি ঠিক কোন পার্থক্য খুঁজে পাই না এই সব স্যুটের। কিন্তু পুরানোটা পরা যাবে না । নীলাদের বাড়ির প্রতি অনুষ্ঠানের জন্য নতুন কিছু কেনা লাগবে।
মাঝে মাঝে রূপার সাথের অতি সাধারন অথচ সুন্দর প্রাণ ভরা আনন্দের দিনগুলি আমি খুব মিস করি।
এখন জীবনের মানদণ্ডও এক ডিগ্রি বেড়ে গেছে। গাড়ি আছে। সাজানো নিজের ফ্ল্যাট। এখানে সেখানে ঘুরতে যাওয়া মানে থাইল্যাণ্ড, সিংগাপুর। ঢাকায় বা দেশে ঘোরার মতন অবস্থা এখন নাই। এ সবই নীলার সাথে খুব মানায় । আমার সাথে তেমন যায় না তবু আমিই এসবের যোগানদাতা। নীলা সব সাজিয়ে সুন্দর করে চলে, আমাকে সাথে নিয়ে। চারপাশের এত পরিপাটির ভিতরে আমার কেমন বেখাপ্পা লাগে নিজেকে। তারপরও জীবন চলে যাচ্ছে বেশ স্বচ্ছন্দে, নীলার তত্বাবধানে।
নীলা কি চিরকুটে কিছু লিখে রেখে গেছে? সাধারনত চায়ের পটের নীচে কাগজে লিখে, খাবার টেবিলেই ও রাখে চিরকুট। উঠব ভেবেও আলসেমী করে এদিক থেকে ওদিকে গড়াচ্ছিলাম বিছানায়।
ও যদি গিয়েছে, বাবা মা কেন ওকে ফিরিয়ে দিলেন? ঘুম থেকে জেগে উঠে এখনও ঠিক মতন কিছু ভাবতে পারছি না, অসুস্থ মস্তিষ্কে। ফোনটা আবার বেজে উঠল। নীলার মা আমার শাশুড়ি আম্মা, ফোন করেছেন। উনি মোবাইলে ফোন করেন না। ল্যাণ্ডফোনে ফোন করেন, সব সময়।
মিসেস চৌধুরি দারুণ পরিপাটি, টাইম টেবিল মানা মানুষ। নীলার ফিরে আসার ব্যাপারে, আমার ফোন না পেয়ে, টাইম হিসাব করে ফোন করেছেন। উনি বেশি সময় অপেক্ষা করতে পারেন না কোন কিছুর জন্য।
আমি তো এখনও উঠি নাই। নীলা ফিরে এসে বাইরের ঘরে চুপচাপ বসে আছে কিনা সেটাও দেখা হয়নি। অথচ ও কেন গেল সে চিরকুটও পড়িনি এখনও।
শাশুড়ি আম্মার ফোন দেখে, আমি লাফিয়ে উঠলাম। ড্রয়িং রুম, গেষ্ট রুমে গিয়ে নীলা এসেছে কিনা দেখে নিলাম। বারান্দায়ও নেই। খাবার টেবিল একদম খালি। টিপটে, ফ্লাক্সে চা নেই। নাস্তা ঢাকা দেয়া নেই। কোন চিরকুটও নেই। দ্রুত সব দেখে ফোনটা ধরলাম।
ভদ্র মহিলা, এর মধ্যে কয়েকবার ফোন দিয়ে ফেলেছেন।
একটু মিথ্যা বলতে হলো, বাথরুমে ছিলাম আম্মা।
নীলা পৌঁছেছে? একটু ঝাঁঝের সাথেই জানতে চাইলেন।
না আম্মা, ও তো পৌঁছায় নাই এখনো।
সে কি! এক ঘণ্টা হয়ে গেল। আর তুমি চুপচাপ বসে আছো।
আমার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠছে। তাড়াহুড়ায় ছুটাছুটি এঘর ওঘর করে । তাছাড়া ভীষণ পেসাব চেপেছে। অথচ আম্মা এখন কতক্ষণ ফোনে আটকে রাখেন কে জানে।
কোন রকমে বললাম। এসে পরবে আম্মা, হয় তো বাজারে নেমেছে।
তোমার মাথা। স্যুটকেস নিয়ে কেউ বাজারে যায়। এই সব বুদ্ধি নিয়ে চলো কি ভাবে? নীলার মতনই এক নাগারে অনেক অভিযাগ করে এক সময় থামলেন তিনি। শেষ বাক্যটি বললেন, দেখছি আমি।
আমার মতন জামাইকে দিয়ে যে কিচ্ছু হবার নয় তিনি বুঝেছেন। মেয়েকে খোঁজার দায়িত্ব এখন উনার।
ফোন থামতেই আমি দৌড়ে বাথরুমে ঢুকলাম। এখন কিছু ভাবতে পারছি না।
নীলা কোন চিরকুট রেখে যায় নাই। খাওয়ারও না। সাধারনত নীলা রাগ করে গেলেও, আমার জন্য খাবার সাজিয়ে রেখে যায়। অথচ আমার অসুস্থ শরীরে এ সময় ও আমাকে এভাবে নিঃসঙ্গ ফেলে চলে গেল কেন বুঝলাম না।
প্রচণ্ড খিদায় পেট জ্বলছে। আমার আর কোন ঔষধ খেতে হবে কিনা তাও জানি না।
যা হোক কিছু খেতে হবে।
ফ্রিজ খুলে তেমন কিছু পেলাম না কিছু ভাত আর গত রাতের মুরগির মাংস ছাড়া। আমি সামনের মশল্লা মালাই রেস্টেুরেন্টে ফোন করলাম। ঝাল গরুর মাংস আর পরোটা সাথে ঘন দুধের চা আনতে বললাম।
টিপু ছেলেটা বেশ, চটপটে। সুন্দর করে খাওয়ার প্যাকেট এগিয়ে দিল। রিসিপ্ট দেখে বিল দিয়ে, ওর হাতে পঞ্চাশ টাকার নোট ধরিয়ে দিলাম একটা। লুকিয়ে রাখ, এটা তোর। আর খেয়াল রাখিস, কদিন আমাকে খাবার দেয়া লাগবে।
আচ্ছা স্যার।
যা এখন।
বেশ ভালো খেলাম। চা নিয়ে বারান্দায় বসেছি। অনেকদিন পর বাইরের প্রকৃতি দেখছি। কদিন ঘরের দেয়ালের মধ্যে চোখ আটকে ছিল। দুপুরের রোদে ঝা চকচক করছে চারপাশ। সামনের বাড়ির গেটে কৃষ্ণচূড়া গাছে এখনও কিছু লাল রঙ দেখা যাচ্ছে। হালকা আমেজের বাতাস হচ্ছে। পালকের মতন নড়ছে কৃষ্ণচূড়ার সবুজ পাতা। এসব দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। কিছু ফেরিয়ালা, মাথায় মস্ত বোঝা নিয়ে চিৎকার করে যাচ্ছে তাতানো রোদের মধ্যেও।
কই মাছ কই, টাটকা কই মাছ.... হাঁক শুনে কিনে ফেলতে ইচ্ছা হচ্ছে । আষাঢ়ের এই সময়ে ডিমভরা কই খুব মজা। নীলা খুব ভালো রান্না করে। পেঁয়াজ বেশি দিয়ে কখনো দোপেঁয়াজা। কখনো সরিষা দিয়ে ভাঁপানো। আহা! গরম ভাতের সাথে কই মাছ মেখে খেতে ইচ্ছা করছে এখন।
এই মাত্র খেয়ে উঠলাম। চায়ের কাপ এখওে হাতে অথচ আমার যেন খিদা লেগে গেছে। হচ্ছে টা কি। জোড় করে খাওয়ার চিন্তা সরিয়ে নীলার কথা ভাবার চেষ্টা করছি এখন। নীলা চলে গেল কেন এমন না বলে।
বাবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় গেল? নীলাকে খোঁজার জন্য বের হওয়া দরকার। কিন্তু কোথায় খুঁজব? এক সপ্তাহ অফিস যাচ্ছি না। শরীরটা এখনও দূর্বল। আমাকে এ অবস্থায় রেখে নীলা যেতে পারল। অভিমান হচ্ছে খুব।
তখন হঠাৎ মনে পরল। কাল রাতে খাবার মুখে দেওয়ার সময় নীলার মুখটা থমথমে ছিল। আমি কি হয়েছে নীলা বলতেই, চোখের জল গড়িয়ে পরেছিল।
এই নীলা কি হলো, কাঁদছো কেন? জানতে চেয়ে ছিলাম। কোন উত্তর না দিয়ে উঠে চলে গিয়েছিল হাত ধুতে। সব গুছিয়ে ও যখন আমার কাছে আসল, ততক্ষণে আমার ঘুম পেয়ে গিয়েছিল। আমি গভীর ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিলাম।
সকালে উঠে এই খবর শোনা হলো, নীলা চলে গেছে।
নীলাকে নিশ্চয়ই আমি দুঃখ দিয়েছি, অবশ্যই দিয়েছি। নয় তো নীলা এভাবে যেতে পারে না। কিন্তু কখন কি ভাবে নীলাকে দুঃখ দিলাম সেটা বুঝতে পারছি না।
এ কদিন জ্বরের ঘোরে বিছানায় কাটালাম কখন অজ্ঞান, কখন জ্ঞান ছিল । কখন ছিলাম ঘুমে কিছুই মনে করতে পারছি না ভালো করে। আচ্ছা নীলার কি আমাকে বলা উচিৎ ছিল না কেনো রাগ হয়েছে সে। আমি জানব কি ভাবে।
যাই হোক নীলাকে খুঁজতে হবে। মাকসুদকে কি আসতে বলব। ওকে নিয়ে বেরুবো। নীলাকে খুঁজতে । আমার কি একা বাইরে বের হওয়া ঠিক হবে । আমার ভাবনার মাঝেই শাশুড়ি আম্মা ফোন দিয়ে জানালেন, নীলা ওর ভাইয়ের বাসায় আছে। এই কথা জানাতেও আধঘন্টা কথা বললেন।
চলবে...........
প্রথম পর্ব এক
ডুব সাঁতার :প্রথম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০০