যে ভালবসার রং কেবল লাল আর বেদনার রং নীল তেমন ভাল আমি বাসি না তোমাকে।
বিশ্বাস কর তোমার জন্য আমার ভালবসার রং রংধনুর মত। যদিও আমার ভালবাসায় নীল রং এর ব্যাবহার হবে না বললেই চলে।
ইরা তোমাকে আমি আমার ভালবাসার রং এ রাঙাতে চাই, তুমি......
কথা শেষ করতে পারল না নিহান, কিছু বুঝে উঠার আগেই নিজের গালে ব্যাথা অনুভব করল ও, চোখ বন্ধ হয়ে গেল কিছুটা ব্যাথায় আর বাকিটা লজ্জায়। খুব ভাল করে বুঝতে পারছিল চোখ খুলে কি দেখবে সে , আসে পাশের সবাই ওর দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আসলে সবার তাকানোর কারণ ও আছে, থাপ্পড়টা না যতো জোড়ে দিছে, তার চাইতে বেশী হইছে শব্দ। চিন্তা করেই বেচারার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠতে শুরু করল। যদিও এই লাল ভালবাসার লাল রং না।
হায় রে, প্রেম প্রস্তাবের এই লাইন গুলো যে কত নির্ঘুম রাত, গবেষণা আর পরিশ্রমের ফসল,তা তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই জল্লাদ মেয়ে ক্যামনে বুঝবে।
চিন্তা করেই নিজের উপর ই রাগ হল ওর। কি দরকার ছিল এই জল্লাদ আর জেদি মেয়েটার প্রেমে পরার, যদিও প্রেমে পরার মত যথেষ্ট ও যথোপযুক্ত অনেক গুলো কারণ ও আছে, ওই গুলো অন্য কোন দিন বলা যাবে। মনে মনে চিন্তা করল নিহিন, আচ্ছা বুঝলাম না হয় প্রেমে পরেছি তাই বলে প্রেমর প্রস্তাব দেয়ার কি দরকার ছিল জল্লাদটারে।
অবশ্য প্রেম প্রস্তাবের আইডিয়াটা ছিল রাফসানের, ব্যাটা যদি ওই দিন এই আইডিয়াটা না দিত তাহলে এত বড় সাহস জীবনেও আসতো না। তবে রাফসানকে ও দোষ দেয়া যায় না, ও তো আর জানে না যে আমি একটা সাক্ষাৎ জল্লাদের প্রেমে পরছি। দোষটা আসলে আমার ই, কেউ জানুক আর না জানুক আমি তো জানি যে, প্রস্তাব পরবর্তী সময়ে এমন দুর্যোগ পূর্ণ পরিবেশ তৈরি হতেই পারে। তার জন্য আমার ই উচিত ছিল আগে থেকে প্রস্তুত থাকা, দুর্যোগ পূর্ব কালীন, দুর্যোগ কালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময় কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই যেমন-
-সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রেম প্রস্তাব।
- দ্রুত প্রেম প্রস্তাব ও নিমিষেই স্থান ত্যাগ।
- মুঠো ফোনে প্রেম প্রস্তাব।
- ফেইসবুকে স্ট্যাটাস পরিবর্তন।
- অন্য কারো মাধ্যমে পত্র প্রেরণ।
- এটা একটা প্রেম প্রস্তাবই ছিল না বলে হেসে উড়িয়ে দেয়া।
এই সব চিন্তা করে নিজের উপর নিহানের আরো বেশী মেজাজ খারাপ হতে লাগল। আরে ভাই আগে কেন ওর মাথায় এত উর্বর চিন্তা আসে নাই। কথায় আছে না, চোর গেলে বুদ্ধি বারে, ওর এখন হইছে ওই দশা।
যাই হোক, যা হবার তা তো হয়েই গেছে। এখন চিন্তা করে আর কি হবে।
ভয়ে ভয়ে চোখ খুললো নিহান।
কিন্তু এ কি! চোখ খুলে নিহান যা দেখলো তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলনা ও।
ইরার চোখে অগ্নি দৃষ্টির পরিবর্তে ঝরছে পানি।
নিহিন বুঝে উঠতে পারছে কি করবে! ব্যাথা পাইল সে, লজ্জা পাইল সে আর পানি এখন ইরার চোখে।
আসলে মেয়ে মানুষ ই একটা ভ্যাজাল। এই গুলা সব পাগল এর দল। কখন কি করে আর কি বলে এরা ও ঠিক জানে কি না কে জানে।
একটু আগে ও দেখে বুঝার উপায় ছিল না এই মেয়ে কাঁদতে জানে। আর এখন দেখে মনে হচ্ছে, কান্না করা যদি কোন শিল্প হত, তাহলে নিশ্চিত ও একজন নাম করা কান্না শিল্পী হয়ে যেত।
কিছু বুঝে উঠার আগেই, ইরা কাঁদতে কাঁদতে ঝাঁপিয়ে পরল নিহানের বুকে। ইরার কান্নার ফাঁকে নিহান শুনতে পাচ্ছিল, এত দিন লাগল এই টুকু কথা বলতে বুদ্ধু ......
নিহানের তখন কবি গুরুর একটা কথা খুব করে মনে পরল,
আমি পাইলাম, ইহাকে পাইলাম
আহা ভালবাসা কি মধুর।।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:০৩