তসলিমা নাসরিন জানতে চেয়েছিলেন, ছেলেরা দাড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারলে মেয়েরা কেন পারবে না! আচ্ছা, এই কথাটা লেখার আগে উনি নিজে কি কখনো দাড়িয়ে এই কাজটা করার চেষ্টা করে দেখেছিলেন? যেকোন সাধারন বিচার বুদ্ধিওয়ালা মানুষের কাছে উত্তরটা একদম সোজা। আমরা সকলেই জানি জানি মেয়েদের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা। যায় হোক, তসলিমা নাসরিন নাহয় বোকা, গর্দভ আর মানসিক বিকারগ্রস্থ মহিলা, তাই হয়তো এই বিষয়টা ধরতে পারছেন না। কিন্তু তসলিমার এদেশীয় যেসব মুরিদেরা আছেন, তারাও কি উনার মতই মাথামোটা হয়ে গেছেন, নাকি শুধু মাথামোটারাই উনার মুরিদ হয়ে বসে আছেন? মানুষের দেহ সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান না নিয়েই কি উনারা উদ্দেশ্যহীন কিছু নারীবাদি আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছেন?
আমার লেখাটা পড়ে অনেকেই হয়তো অখুশি হবেন, কিন্তু আমার যৌক্তিক কিছু জবাব চাই। নারী স্বাধীনতা বলতে আসলে কি বুঝানো হয় আমাদের? পুরুষের মত চলাফেরা আর পোশাক পরিচ্ছেদের মানেই কি নারী স্বাধীনতা? নারী স্বাধীনতা মানে যদি এমন হয় যে পুরুষেরা দাড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারলে নারীরাও পারবে না কেন... তাহলে হয়তো কয়েকবছর পর তসলিমার মত আরো একজন মানসিক বিকারগ্রস্থ এসে প্রশ্ন তুলবেন, ছেলেরা গর্ভধারন না করলে মেয়েরা করবে কেন? অতপর তারা নারীদের গর্ভধারনের প্রতিবাদে আন্দোলন করবে এবং মজার বিষয়, এই আন্দোলনে নারীদের চেয়ে পুরুষের আধিপত্য বেশি থাকবে।
অদ্ভুত হলেও সত্য, বর্তমানে নারী স্বাধীনতা নিয়ে নারীদের চেয়েও কয়েক প্রজাতির পুরুষ বেশী চিন্তিত। বেগম রোকেয়া, নবাব ফজিলাতুন্নেসার মত মহিয়সীরা চেয়েছিলেন নারীদের ঘর থেকে বের করে এনে তাদের শিক্ষা-দিক্ষায় দিক্ষিত করে সমস্ত পৃথিবীর সামনে নারীদের জ্ঞান ও প্রতিভা উন্মোক্ত করতে। আর বর্তমানকার প্রগতিশীল দাবী করা নারীবাদীরা চান কাপড়ের খোলস থেকে নারীদের বের করে এনে তাদের দেহখানা সমস্ত পৃথিবীর সামনে উন্মোক্ত করতে।
ভুল কিছু বললাম? নারীদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা কি চায়। স্বাধীনতা ও আধুনিকতার নামে তাদের শুধু ভোগ্যপন্য বানিয়ে ফেলা হচ্ছে আজ। যদি তারা বোরকা পড়তে চায়, তাহলে তাদের বলা হয়, কাপড়ের খোলসে নিজেরদের ঢেকে রেখেছ কেন? উন্মোক্ত হও। ্যদি তারা শুধু নিজেদের স্বামীর সামনে উন্মোক্ত হতে চায়, তাহলে বলা হয়, শুধু স্বামীর সামনে কেন? নিজেকে সারা পৃথিবীর সামনেই উন্মোক্ত হতে হবে। এটাই তো তোমার স্বাধীনতা, এটাই তো আধুনিকতা!
দেখেন ভাই, আপনে মানেন আর না মানেন, প্রকৃত সত্য হল প্রকৃতি কিছু সীমাবদ্ধতা রেখে নারীদের সৃষ্টি করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের পুরুষের উপর নির্ভর করতে হয়। আবার পুরুষেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, আর সেজন্যে তাদের নারীদের উপর নির্ভর করতে হয়। এটাই বাস্তবতা, স্বীকার করতে লজ্জা কোথায়? নারী-পুরুষ একে অন্যের পরিপূরক সবসময়। এটা আদি যুগে যেমন সত্য ছিল, বর্তমানেও সত্য আছে, ভবিতষ্যতেও থাকবে। আর সমান অধিকারের কথা বলছেন? ছেলে-মেয়ে একসাথে লেখাপড়া করবে, চাকরি করবে, ব্যাবসা করবে... ব্যাস, এটাই তো সমান অধিকার, তাই না?