somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাবিয়ে রাখার আনন্দ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অন্যকে দাবিয়ে রাখার ভিতরে একটা চরম আনন্দ রয়েছে। পিতৃতান্ত্রিক সমাজে স্বামী রূপে স্ত্রীকে দাবিয়ে রাখা। একান্নবর্তী পরিবারের গৃহকর্ত্রী শাশুড়ি রূপে পুত্রবধুকে দাবিয়ে রাখা। নিউক্লিয়াস ফ্যামিলিতে সংসার সাম্রাজ্ঞী রূপে বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়িকে দাবিয়ে রাখা। দাদা দিদি রূপে ভাই বোনকে দাবিয়ে রাখা। নড়বড়ে ব্যক্তিত্বের স্বামীকে দজ্জাল গিন্নী রূপে দাবিয়ে রাখা। বেত হাতে মাস্টার রূপে নিরীহ ছাত্রদের দাবিয়ে রাখা। চতুর উকিল রূপে অজ্ঞ মক্কেলকে দাবিয়ে রাখা। পদাধিকারের বলে অধঃস্তন কর্মচারীকে দাবিয়ে রাখা। পুলিশের পোশাক পরে জনতাকে দাবিয়ে রাখা। মিলিটারির অস্ত্রসম্ভারের বলে রাষ্ট্রকে দাবিয়ে রাখা। এই সব অভিজ্ঞতাগুলি পাঠক মাত্রেই অধিকাংশের জীবনেই রয়েছে। দাবিয়ে রাখা ও দেবে থাকার এক বিস্তৃত অভিজ্ঞতা। অবশ্যই, দাবিয়ে রাখার অভিজ্ঞতার মৌজই আলাদা। কিন্তু দেবে থাকার অভিজ্ঞতার শিকার যাঁরা। তাঁরাই জানেন। এই দাবিয়ে রাখার প্রবৃত্তি ও সংস্কৃতি সমাজ সংসার ও ব্যক্তিজীবনে কতটা ভয়ঙ্কর। দাবিয়ে রাখার প্রবৃত্তি চুলকানি’র মতোই এল্যার্জিক। ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। এবং কালক্রমে দগদগে ঘা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তখন সেই ক্যানসার চিকিৎসা বিদ্যার পরিসীমার সীমারেখা লঙ্ঘন করে যেতে পারে।

ব্যক্তি জীবন থেকে পারিবারিক জীবনে যেমন। সমাজ জীবন এবং রাষ্ট্রীয় জীবনেও ঠিক সেই রকমই। দাবিয়ে রাখা ও দেবে থাকার একটা ধারাবাহিক সংস্কৃতি অধিকাংশ সময়েই বর্তমান থাকে। দাবিয়ে রাখা এবং দেবে থাকার এই সংস্কৃতি নির্ভর করে শক্তির ভারসাম্যের তারতম্যের উপরেই। যে কোন নির্দিষ্ট সময়ে শক্তির ভারসাম্যের অভাবে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। এক পক্ষে সবল। অন্য পক্ষে দুর্বল। সবল দুর্বলকে দাবিয়ে রাখবে। এ আর নতুন কথা কি। আবার কালের আবর্তনে সেই সবলের শক্তি ক্ষয় হতে থাকলে, দাবিয়ে রাখার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে। যার ফলে দুর্বলও আর ততটা দুর্বল থাকে না। সেও ফোঁস করতে শুরু করে দেয়। এই ভাবেই ইতিহাসও বিবর্তিত হতে থাকে। ঘর থেকে বাইরে। সবলের সার্বক্ষণিক লক্ষ্য থাকে। শক্তি বৃদ্ধি করে চলার উপরে। কারণ সে জানে। শক্তি’র প্রাণভোমরা, নিরন্তর শক্তিচর্চা’র ভিতরেই লুকিয়ে থাকে। ফলে যে একবার অন্যকে দাবিয়ে রাখতে শুরু করে। সে, আর কোন অবস্থাতেই শক্তি প্রদর্শন বন্ধ করতে পারে না। যতক্ষণ না তার শক্তিক্ষয় শুরু হচ্ছে। নানা কারণেই এই শক্তিক্ষয় শুরু হতে পারে। একটা কারণ তো এইমাত্রই উল্লেখ করা হলো। নিরন্তর শক্তিচর্চায় ছেদ পড়ে যাওয়া। তখন তার পক্ষেও আর অন্যকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। কপাল খারাপ হলে, উল্টে তাকেই তখন অন্য কেউ দাবিয়ে রাখতে শুরু করে দেয়। যার সবচেয়ে বেশি নিদর্শন দেখা যায়, আমাদেরই বাঙালিদের ঘরে ঘরে। একদিন যে শাশুড়ি, নিজের হাতে বরণ করে ঘরে তোলা পুত্রবধুকে দাবিয়ে রাখতেই অভ্যস্থ ছিল। বয়সের ভারে একদিন তাঁকেই সেই একই পুত্রবধুর কাছে দেবে থাকতে হয়। মানুষের শরীরের মহিমা এমনই। সেদিনের মনোঃকষ্টও কম নয়। নিজের কপালে হাজার করাঘাত করেও সান্ত্বনা পাওয়া যায় না। আসলে শক্তির প্রকৃতিই এমন। যতদিন বল থাকে। ততদিন ধরাকে সরা জ্ঞান করা ছাড়া আর অন্য কোনদিকে হুঁশ থাকে না। হুঁশ ফেরে সেদিন। যেদিন শক্তি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সেদিনও শক্তির ভারসাম্যে অভাব থাকে। তবে শক্তির প্রাবল্য সেদিন আর নিজের দিকে থাকে না। অন্যের দিকে ঢলে পড়ে।

এই যে এক সংসারের নিয়ম। আমরা কেউই এর বাইরে নই। আমাদের সামাজও এর বাইরে নয়। পৃথিবীর কোন রিলিজিয়নও এর বাইরে নয়। বিশ্বের কোন জাতিও এর বাইরে নয়। বিশ্বের কোন রাষ্ট্র বা দেশও এর বাইরে নয়। বস্তুত মানুষের ইতিহাসই এর বাইরে নয়। বলা ভালো। এটাই মানুষের প্রকৃত ইতিহাস। দাবিয়ে রাখা। আর দেবে থাকা। না, কোনটিই চিরন্তন নয়। কালের নিয়মই এমন। আর আমরা যে যতটা বেশি সেই সত্যকে জানি। সে ততই প্রবল ভাবে নিজের শক্তি বৃদ্ধির দিকে মনযোগ দিয়ে থাকি। অবশ্য, নিজের শক্তিবৃদ্ধি তখনই সম্ভব হয়। যখন অন্যের শক্তি হরণ করা ও হরণ করে রাখা যায়। ফলে আমাদের মূল লক্ষ্যই থাকে অন্যের শক্তি হরণ করে আপন শক্তিবৃদ্ধি করা। ঠিক যে লক্ষ্যের সর্বোত্তম নমুনা হচ্ছে নিউক্লিয়ার নন-প্রলিফারেশন চুক্তি (এনপিটি)। শুধুমাত্র হাতে গোনা নামমাত্র কয়েকটি দেশের হাতেই পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার মজুত থাকবে। অথচ বাকি কোন দেশ সেই অস্ত্র তৈরী করার পরিকল্পনাও করতে পারবে না। ফলে সেই অন্যকে দাবিয়ে রাখার শক্তি কেবলমাত্র বিশেষ কয়েকটি দেশের হাতেই থাকবে। যে শক্তি দেখিয়ে তারা বিশ্বের বাকি দেশগুলিকে নিজেদের স্বার্থের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে। নিজেদের অর্থনীতির উন্নয়নে বলির পাঁঠা করতে পারবে। এবং তাদের এই মহাশক্তি যাতে কোনদিনও ক্ষয় না হয়। সেই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারবে। না, বর্তমান আলোচনা বিশ্বরাজনীতির মূল প্রেক্ষাপট নিয়ে নয়।

আমাদের আলোচনা আমাদের অন্তরের এই প্রবৃত্তিকে নিয়ে। নিজের শক্তির উপরে নির্ভর করে দুর্বলকে দাবিয়ে রাখার আনন্দ লাভের স্বার্থ। এই আনন্দের যে কোন বিকল্প নাই। সে কিন্তু আমরা অল্প বিস্তর সকলেই জানি। আমাদের এই প্রবৃত্তিই প্রতিটি সম্প্রদায়ের ভিতরে সাম্প্রদায়িক মানসিকতায় বিকশিত হয়ে উঠতে থাকে। উচ্চবর্ণের হিন্দু নিম্নবর্ণের হিন্দুকে দাবিয়ে রেখে আনন্দ পায়। যার কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস ভারতবর্ষের সামগ্রিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো অধ্যায়। ইতিহাস সচেতন মানুষ মাত্রেই যে কথা জানেন। এবং বর্তমান সময়ে উগ্রবাদী হিন্দুত্বের রাজনৈতিক পুনরুত্থানে দলিত নির্যাতনের বিষয়টিও এই দাবিয়ে রাখারই প্রবৃত্তি জাত। দাবিয়ে রাখার এই প্রবৃত্তি যে কোন অঞ্চল কিংবা ভুখণ্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের ভিতরেই কম বেশি দেখা যায়। আবার এই প্রবৃত্তির ভিতরে যদি ধর্মান্ধতার শিকড় বিস্তৃত হয়ে পড়ে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানসিকতায় দাবিয়ে রাখার এই প্রবৃত্তি সংখ্যালঘু অংশের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। যদি না ধর্ম নিরপেক্ষ সংসদীয় গণতন্ত্র সবল ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রাজনীতির কথা থাক। আমাদের নিজেদের মুখ আয়নায় দৃষ্টি ফেরানো যাক।

সম্প্রতি সুদূর কর্ণাটকের একটি সরকারী কলেজে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মাথায় হিজাব জড়িয়ে ক্লাস করতে না দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে প্রবল আলোড়ন ও বিতর্কের ঘূর্ণিঝড় উঠেছে। সেই আবর্তনে আমরা পরস্পর প্রায় বেআব্রু হয়ে পড়েছি। কিংবা বলা ভালো। অন্তরের সাম্প্রদায়িক বিষ উগ্রিয়ে দিতে আসরে নেমে পড়েছি অনেকেই। আবার অনেকেই এই বিতর্ক থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখছি। কারণ আমরা অধিকাংশই নিজের প্রকৃত অবস্থান পাব্লিক করতে চাই না। কিন্তু চাই বা না চাই। আমাদের ভিতরের সাম্প্রদায়িক চরিত্র এই ঘটনায় নিজের মুখ আয়নায় অন্তত সুষ্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ঠিক যে যুক্তি দেখিয়ে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পড়ার বিরুদ্ধে আমাদের আক্রোশ। সেই একই যুক্তিতে আমরাই কিন্তু সেই একই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখ ছাত্রদের মাথায় পাগড়ি বেঁধে ক্লাসে ঢোকার বিরুদ্ধাচারণে রাজি নই। এই উলঙ্গ হিপোক্রেসি আমাদের সকলেরই মজ্জাগত। না, কোন বিশেষ ধর্ম বা সম্প্রদায়। জাতি বা রাষ্ট্রের উপরে এই হিপোক্রেসি নির্ভর করে না। নির্ভর করে শুধুমাত্র একটি বিষয়ের উপরেই। শক্তির তারতম্য ভেদে অন্যকে দাবিয়ে রাখার আনন্দ। যে আনন্দের কোন বিকল্প নাই। মানুষের ভিতরে সাম্প্রদায়িক প্রকৃতির বিকাশ মূলত এই দাবিয়ে রাখার আনন্দ প্রাপ্তির স্বার্থজাত।

প্রথমেই স্মরণে রাখা দরকার। শিক্ষাঙ্গনে ইউনিফর্ম পরে ঢোকার ড্রেসকোড মূলত স্কুল পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকার কথা। আজ যারা ড্রেসকোড নিয়ে গলা চড়াচ্ছেন। তাঁরা অধিকাংশই নিজেদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে কোন ইউনিফর্ম পরে পড়াশুনো করতেন না। আর কর্ণাটকে যে কয়েকজন ছাত্রী হিজাব পরে ক্লাস করার অধিকার ফিরে পেতে আদালতের দারস্থ হয়েছে। তারাও কেউই স্কুলের পড়ুয়াও নয়। সকলেই কলেজের শিক্ষার্থী। ফলে ড্রেসকোডের ইউনিফর্মের যুক্তিটা কিন্তু নড়বড়ে। এবং একপেশে। এখন যদি শোনা যায়। স্কুলের ছাত্রীদের একটা অংশও হিজাব পড়ে ক্লাসে ঢোকার দাবি জানাচ্ছে। কেরল সহ অন্যান্য অনেক অঞ্চলেই স্কুলের ইউনিফর্মের সাথে মিলিয়ে হিজাব পড়ে ক্লাস করার চলও এই ভারতবর্ষেই রয়েছে যদিও। তবুও প্রশ্ন রয়ে যাবে। শুধু কি স্কুলে? জীবনের সর্বত্রই শিখ ধর্মের পুরুষ। মাথায় পাগড়ি বেঁধেই স্কুলের ইউনিফর্ম থেকে শুরু করে পুলিশ ও মিলিটারি, আদালত ও গুরুদ্বার। সর্বত্রই বিরাজমান। না, আজকে যাঁরা মুসলিম সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের মাথায় হিজাব পরে কলেজে ঢেকার বিরুদ্ধে ঘরে বাইরে নিরবে সরবে যুক্তি শানাচ্ছেন। অদ্ভুত ভাবে তাঁরা সেই একই যুক্তিতে শিখ সম্প্রদায়ের ছাত্রদের মাথায় পাগড়ি বেঁধে ক্লাস করার বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য্য রকম ভাবে নিরব। একটাই যুক্তি তাঁদের। পাগড়ি শিখধর্মের ধর্মীয় পরিচয়। বাহ! অসাধারণ।

অর্থাৎ এই ড্রেসকোড, ইউনিফর্ম। এই সকল যুক্তিগুলিই এক ধরণের প্রবঞ্চনা। ড্রেসকোড ইউনিফর্ম বিশেষ বিশেষ ধর্মের জন্য তাহলে ভিন্ন রকম হতে পারে। তাতে কোন অসুবিধা নাই। শিখছাত্রের ড্রেসকোডে পাগড়িতে কোন বিপত্তি নাই। কিন্তু মুসলিম ছাত্রীর ড্রেসকোডে হিজাবেই যত বিপত্তি। কতটা প্রবঞ্চক হলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রকমারি ডিগ্রিধারী মানুষও এই ধরণের মত প্রচার করতে থাকে। প্রচার না করলেও সমর্থন করতে থাকে। ঘরে এবং বাইরে। তাঁদের হাতে আরও একটি চমৎকার যুক্তি শোনা যাচ্ছে। হিজাব নারী স্বাধীনতার পরিপন্থী। হিজাব পরিয়ে মুসলিম সম্প্রদায় তাদের নারীকে খর্ব করে রাখে ইত্যাদি। কথটা সম্পূর্ণ সত্যও নয়। পুরোপুরি মিথ্যেও নয়। কারণটা স্থানগত। আফগানিস্তানের মতো মৌলবাদী শক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দেশগুলিতে সত্য সত্যই মেয়েদের নিজ পছন্দের মতো‌ পোশাক পরার স্বাধীনতা থাকে না। সেখানে ধর্মীয় পরিচয়বাহী পোশাক পরা বাধ্যতামূলক। নারীস্বাধীনতা খর্ব করাই সেই সেই দেশের শাসক সমাজের লক্ষ্য। আবার ভারতবর্ষের মতো দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য বহু দেশেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু নারীই নিজস্ব ব্যক্তিস্বাধীনতায় পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। ভারতবর্ষের মুসলিম রমনী শাসকের চোখরাঙানিতে হিজাব পরে না। নিজ সম্প্রদায়ের বাধ্যবাধকতা থেকেও হিজাব পরে না। পরে নিজের পারিবারিক সংস্কার থেকে। আর পরতে পারে নিজের ব্যক্তিস্বাধীনতার ইচ্ছায়। এমনকি পরতে পারে নিছক ফ্যাশনের কারণেও। পরতে পারে নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেও। ঠিক যেমন শিখধর্মের পুরুষ মাথায় পাগড়ি না বেঁধে বাইরে চলাচল করে না। তার ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে। তার সামাজিক সংস্কার থেকে। আবার অনেক শিখকেই দেখায় যায়। মাথায় পাগড়ি নেই। তাতেও তাদের জাত যায় না। ভারতীয় মুসলিম রমনীদের অধিকাংশই হিজাব না পরেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারে। দিয়েও থাকে।

আসলে যুক্তিবাদী হলে মুশকিল রয়েছে। তাহলে সৎ হতে হয়। সজ্জন হতে হয়। অধিকাংশ মানুষই সৎ হতে পছন্দ করে না। সজ্জন হওয়ার ভান করলেও সজ্জন হতে ভয় পায়। সৎ ও সজ্জন হতে মেরুদণ্ডের জোর লাগে। কিন্তু অসৎ হতে। প্রবঞ্চক হতে তা লাগে না। গড্ডালিকায় ভাসতে পারলেই হওয়া যায়। ফলে শিখদের পাগড়ি বাঁধার সংস্কৃতিকে মেনে নিয়েও মুসলিমদের হিজাব পরার সংস্কৃতিতে একদল মানুষের প্রবল আপত্তি। তাঁদের অনেকের যুক্তি আবার আরও অদ্ভুত। তাঁদের যুক্তি হলো। শিখদের মেয়েরা তো আর পাগড়ি বাঁধে না। না তারা কেউই মুসলিম সম্প্রদায়ের নন। তাই তাঁরা সদম্ভে বিধান দিচ্ছেন। হিজাব পরে ক্লাস করতে হলে মাদ্রাসায় যাও। কিন্তু কখনোই বলছেন না। পাগড়ি পরে ক্লাস করতে হলে খালসা স্কুলে কি গুরুদ্বারে যাও। ফলে আজকে তাদের প্রবঞ্চক প্রকৃতি একেবারে উলঙ্গ হয়ে বেআব্রু হয়ে গিয়েছে। না, তাতেও তাঁদের কোন অসুবিধা নাই। তার একটা বড় কারণ রয়েছে। তাঁরা জানেন। আজ যদি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধ করে দেওয়া যায়। তবে পরবর্তীতে ভারতবর্ষে মুসলিম সম্প্রদায় কোন পোশাক পরবে। কোন খাদ্য খাবে। কোন ভাষায় কথা বলবে। কোন স্কুলে পড়বে। কি আচরণ করবে। কোথায় কোথায় কখন কখন নামাজ পড়তে পারবে না। কোন কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে পারবে না। এই সকল বিষয়গুলি ঠিক করে দেওয়া যাবে। আর এই বিষয়গুলি ঠিক করে দিতে পারলেই ভারতীয় মুসলিমদের দাবিয়ে রাখার কাজটা মাখনের ভিতরে ছুরি চালানোর মতোন সহজ হয়ে যাবে।

এই সেই দাবিয়ে রাখার আনন্দ। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী লড়াইয়ে। সেই রাজ্যের শাসক দলের প্রধান এবারের নির্বাচনী লড়াইকে আশি বনাম কুড়ির লড়াই বলে দেগে দিয়েছেন। যে নির্বাচনে আসন্ন ভরাডুবির অনুমান থেকেই কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই রাজ্যের শাসক দলের হাত দিয়ে। নির্বাচনের সকল বিষয়গুলিকে ধামাচাপা দিয়ে এই আশি বনাম কুড়ি করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। না, রাজনীতির বিষয় নিয়ে এই আলোচনা নয়। সে কথা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের অধিকাংশের ভিতরেই অন্যকে দাবিয়ে রেখে আনন্দ পাওয়ার যে প্রবৃত্তিটুকু কাজ করে। সেটিও একটি রাজনীতি। এক ধরণের রাজনীতি। যার বৃহত্তর রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করি সমাজে, রাষ্ট্রে। এবং আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায়। ভারতবর্ষের বর্তমান সময়ে, এই দাবিয়ে রাখার আনন্দ প্রাপ্তির একটা বড় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। সেটি করা হয়েছে একেবারেই রাজনৈতিক ভাবে। আশি বনাম কুড়ির তত্ত্ব খাড়া করে দিয়ে।

সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের প্রকৃতির ভিতরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দাবিয়ে রাখার প্রবৃত্তি উত্তরাধিকার সূত্রেই এগিয়ে চলতে থাকে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির গতি ও প্রকৃতির উপরে নির্ভর করে সেই প্রবৃত্তির সংক্রমণ ও লক্ষ্মণগুলি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে এক এক সময়ে। একুশ শতকে এসে ভারতবর্ষে এই দাবিয়ে রাখার প্রবৃত্তি প্রবল ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ফলে এই সময়ে বহু মানুষই নিজেদের মুখোশ খুলে ফেলার একটা সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। একেবারে দাঁত নখ প্রদর্শন করে একপেশে গাজোয়ারি এবং গাঁজাখুড়ি যুক্তির জাল বিস্তৃত করে চলেছেন। আর সেই অপকর্মটির চর্চার ভিতর দিয়েই তাঁরা দাবিয়ে রাখার তৃপ্তিটুকু। দাবিয়ে রাখার আনন্দের মৌতাতটুকু উপভোগ করে নিতে চাইছেন চেটেপুটে। বহুদিন অভুক্ত থাকার পরে মুখের সামনে আহার্য্য বস্তু দেখলে মানুষের যে দশা হয়। তাঁদেরও আজ ঠিক সেই দশা। লোভের আগুনে চোখমুখ চকচক করে উঠছে। কুযুক্তির ধার জিহ্বার আগায় লকলক করে উঠছে। আর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের পারিবারিক ঐতিহ্য নিয়ে আজ তাঁরাই ঝাঁপিয়েছেন। না, তাঁদের সকলেই হয়তো জয়শ্রীরাম ধ্বনি দিতে দিতে হিজাবধারী মুসলিম মেয়েদের তাড়া করে ধাওয়া করেন না। কিন্তু অন্তরের অন্তঃস্থলে যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের চর্চা করতে থাকেন। সেই চর্চাই তাঁদেরকে এক একজন হিপোক্রিট বানিয়ে তোলে। তখন তাঁদের যে চোখে হিজাব পরা অনৈতিক অন্যায় বলে মনে হয়। সেই একই চোখে মাথায় পাগড়ি বেঁধে স্কুলে ঢোকা তাঁদের কাছে ড্রেসকোডের বিধিভঙ্গ বলে মনে হয় না। স্কুলের ড্রেসকোডে ইউনিফর্মের সাথে পাগড়িও ড্রেসকোডের অঙ্গ হিসাবে চলবে। কিন্তু হিজাব চলবে না। এটাই সবচেয়ে বড়ো হিপোক্রেসি।

না, তাঁরা কি তাঁদের এই হিপোক্রেসির বিষয়ে সচেতন নন? একদমই তা নয়। তাঁরা তাঁদের এই হিপোক্রেসির বিষয়ে যথেষ্ঠ মাত্রায় সচেতন। এই হিপোক্রেসির চর্চার ভিতরেই তো সেই আনন্দটুকু বর্তমান। অন্যকে দাবিয়ে রাখতে পারলে মানুষ যে আনন্দটুকু ভোগ করতে থাকে। অনেকের মনে হতেই পারে। ভারতবর্ষে শিখধর্মের মানুষও তো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তাহলে শিখেদের পাগড়িতে আপত্তি নাই কেন? এর অন্যতম কারণ হলো শিখধর্ম অন্য কোন দেশের রাষ্ট্রধর্ম নয়। বিশেষ করে পড়শী পাকিস্তান বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মতো। মূলত ইসলামিক যে দেশগুলিকে ভারতীয় রাজনীতিতে অন্যতম শত্রুদেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। যদি শিখেদেরও নিজের কোন আলাদা দেশ থাকতো। তাহলে ভারতীয় শিখদের পাগড়ি নিয়ে কথা উঠতো বইকি। এই প্রসঙ্গে স্মরণ করে নেওয়া যাক। অতিসম্প্রতি দিল্লীর সীমান্তে টানা তেরো মাস অবস্থান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া শিখদেরকে খালিস্তানী দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক তকমায় দেগে দেওয়ার রাজনীতির বিষয়টাও। কৃষক আন্দোলনকে বানচাল করতে শিখদেরকেও দেশদ্রোহী বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। কারা দিয়েছে? আজকে যারা উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনকে আশি বনাম কুড়ির লড়াই বলে প্রচার করছে। তারাই। আজকে যারা মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পড়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিচ্চে। তারাই। আজকে যারা পারিবারিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারে হিজাব ব্যান করার বিষয়ে চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছে, তারাই। এবং ভারতবর্ষে যাঁরা হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। তারাই। তারা এই দুইদিন আগেও শিখদেরকে দেশদ্রোহী হিসাবে বিবেচনা করেছেন। কি যুক্তি ছিল তাঁদের? অনৈতিক ভাবে রাজপথ অবরোধ করে রেখে জনসাধারণের অসুবিধা সৃষ্টি করা। অনৈতিক ভাবে কৃষক দরদী সরকারের কৃষকদের হিতার্থে চালু করা কৃষি আইনের বিরোধীতা করা। এই সকল অভিযোগেই শান দিচ্ছিলেন তাঁরা গত তেরো মাস ধরে। আশা ছিল কৃষক আন্দোলনকে এইভাবেই দাবিয়ে রেখে দেওয়া যাবে। আজ যদি হিজাব কাণ্ডের সূত্র ধরে আগামীতে মুসলিম সম্প্রদায়কে সত্যিই দলিতদেরকে দাবিয়ে রাখার মতোন করে দাবিয়ে রাখা যায়। তবে অদূর ভবিষ্যতে এই দাবিয়ে রাখার আনন্দ পেতে শিখধর্মের পাগড়িও ড্রেসকোড বিধিভঙ্গের আওতায় পড়ে যেতেই পারে। দাবিয়ে রাখার আনন্দ একবার পেতে শুরু করলে। সেই আনন্দ পাওয়ার খিদে ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার নিয়ন্ত্রণ আর নিজের হাতে থাকে না। দাবিয়ে রাখার আনন্দই তখন মানুষের স্বভাবধর্ম হয়ে ওঠে। মানুষের মজ্জাগত প্রকৃতির ভিত হয়ে দাঁড়ায়।

ঐতিহাসিক ভাবেই ভারতবর্ষের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ভিতরে অন্যকে দাবিয়ে রাখার এই সনাতনী সংস্কৃতি এমন এক ঐতিহ্য। যা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সজীব রয়েছে। সময় ও সুযোগ বুঝেই সেই সংস্কৃতির সংক্রমণ ও লক্ষ্মণগুলি সমাজ ও রাজনীতির অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দিতে থাকে। রাজনৈতিক ভাবে কোন শক্তি, তার গোষ্ঠীস্বার্থে দেশের ভিতরে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। সেটি একটি দিক। সেটি রাজনীতির বিষয়। সেটির পিছনে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য বর্তমান থাকে। কিন্তু সাধারণ সংখ্যাগুরু জনমানস কিভাবে সেই ফাঁদে পা দেবে, সেই বিষয়টি নির্ভর করে জনমানসের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ঐতিহ্যের গতি ও প্রকৃতির উপরেই। সেই প্রকৃতি যখন অন্য সম্প্রদায়কে তাদের সংখ্যাভিত্তিক দুর্বলতার সুযোগে দাবিয়ে রাখতে উদ্যত হয়ে ওঠে। তখন হিপোক্রেসিই সবচেয়ে বড়ো অস্ত্র হয়ে দেখা দেয়। আমাদের আলোচনার সেটিই মূল প্রতিপাদ্য ছিল। বর্তমান হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে সেই হিপোক্রেসিই নির্লজ্জ ভাবে বেআব্রু হয়ে উঠেছে। যাকে এক কথায় ভারতীয় ঐতিহ্য বলে সুস্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা যায়। কারণ এই ঐতিহ্য ভারতবর্ষেরই ইতিহাস। নতুন কোন রাজনৈতিক সমীকরণে সৃষ্ট নয়। কথায় বলে কয়লা শতবার ধুলেও তার রং যাবে না। ভারতীয় হিপোক্রেসির এই ঐতিহ্যও শত শত মহাপুরুষের জন্ম হলেও শেষ হবে না। যদি না সার্থক সমাজবিপ্লবের হাত ধরে ভারতবর্ষ কোনদিন সত্য অর্থেই অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠতে পারে। সভ্য এবং সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। কে বলতে পারে, সেদিন হয়তো ভবিষ্যতের ভারতীয় জনসাধারণের ভিতরে অন্যকে দাবিয়ে রাখার এই মারণ রোগ এখনকার মতো বংশগত রোগ থাকবে না। নতুন ভাবে কেউ এই রোগে সংক্রমিত হলেও সমাজবিপ্লবের সূত্রেই তার প্রতিষেধক তৈরী থাকবে হাতের কাছে। সেদিনের নববধুই হোক। কিংবা অসহায় শ্বশুর শাশুড়ি। নিস্পাপ ছাত্রই হোক আর অজ্ঞ মক্কেল। অধঃস্তন কর্মচারীই হোক আর সাধারণ জনতা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই হোক আর হিজাব কিংবা পাগড়ি পরে ক্লাস করতে চাওয়া শিক্ষার্থী। কাউকেই আর উৎপীড়কের উৎপীড়নের শিকার হতে হবে না। অন্যকে দাবিয়ে রাখার আনন্দের সন্ধানে কেউ অন্তত অন্যের দুর্বলতার খোঁজ করতে থাকবে না। মানুষ মানুষের জন্য মানুষ হয়ে উঠতে সক্ষম হবে। সেদিন।

১৪ই ফেব্রুয়ারী’ ২০২২
কপিরাইট শ্রীশুভ্র কর্তৃক সংরক্ষিত
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:১২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×