somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এত এত রোমিওর ভিড়ে নারীকে সাবধানে থাকতে বলি কিভাবে?

২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের লেখায় একটা মেয়ের আর্তনাদ তুলে ধরেছিলাম। ও বলেছিল, ‘আপুরা তোমরা সাবধানে থেকো।’ এই লেখাটি প্রকাশ করার পর অনেক প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এরপর বিষয়টি নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করলাম। সত্যি তো শুধু মেয়েদের সাবধানে থাকতে বললেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? ভাবতে ভাবতে অনেক বিষয় সামনে চলে এল। আমার প্রতি বৃহষ্পতিবার সকাল ৯ টায় ক্লাস থাকে। কলেজ যাওয়ার পথে আমার বাসা পেরিয়ে পুকুর পাড়ে একটা মোড় পড়ে। এই মোড়ে প্রতি বৃহষ্পতিবার দেখি অনেক ছেলে সাদা স্কুল ড্রেস পরে দাঁড়িয়ে থাকে। আমি ভাবতাম ওরা বোধহয় প্রাইভেট পড়া শেষ করে দাঁড়িয়ে থাকে বাসায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু সেদিন গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতেই আসল বিষয়টি বেরিয়ে এল। আসলে ঐ সময় দুই পাশের দুই গলি থেকে দুইজন স্যার তাদের ছাত্রী ব্যাচ পড়িয়ে ছেড়ে দেন। এখন ঐ ছোট ছোট মেয়েগুলোকে প্রেম প্রস্তাব দেয়া কিংবা উত্যক্ত করার জন্য ওরা দল বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে। আমি একটু আড়ালে গিয়ে খেয়াল করলাম কয়েকটি মেয়ে আবার কয়েকটি ছেলের সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলছে। তার মানে ওদের মধ্যে হৃদয় ঘটিত ব্যাপারটি ঘটে গেছে।এর মধ্যে দেখলাম জোর শব্দে মোটর সাইকেল চালিয়ে তিন রোমিও হাজির। যে ছেলেটা ড্রাইভ করছে সে পেছনের ছেলেটিকে বলছে, ‘এই আদিব দ্রুত নেমে যা, সোনিয়া চলে গেল। আজকেই প্রপোজ করে আয়।’ ছেলেটি দেখলাম দ্রুত নেমে মেয়েটির কাছে গিয়ে পথ আটকাবার চেষ্টা করছে কিন্তু সেই মুহুর্তে দুজন মুরুব্বি ঐ পথে চলে আসায় আদিবের সেদিন আর প্রপোজ করা হলো না। আপনার আমার পাড়ায় মহল্লায় দেখবেন মোড়ে মোড়ে এরকম রোমিওদের আনাগোনা। আর যে এলাকায় মেয়েরা একটু বেশি প্রাইভেট পড়তে যায় কিংবা মেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে আরো বেশি উপস্থিতি। এই রোমিওগুলোর ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হলো এদের বাবা-মা ঠিক ভাবে কেয়ার নেন না। ছেলে কোথায় গেল, কার সাথে মিশল, কি করে বেড়ায় এ ব্যাপারে তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তারা আছেন আয় রোজগার নিয়ে। এরা বাংলা মুভি, বলিউডি মুভি ও গানের অসম্ভব ভক্ত। ওরা ওখান থেকে দেখে শিখছে যে, এই জীবনের একটাই উদ্দেশ্য। সেটি হলো প্রেম করা। প্রেম করতে না পারলে জীবনটাই বৃথা। ওরা এটাও শেখে যে প্রেম করতে গেলে মেয়েটি ডিনাই করতে থাকবে কিন্তু হাল ছাড়লে চলবে না। লেগে থাকলে ঠিকই একদিন মেয়েটি রাজি হবে!এই ছেলেগুলোর প্রায় প্রত্যেকের হাতে স্মার্ট ফোন আছে। ফলে এরা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন এডাল্ট মুভি খুব সহজেই দেখে ফেলছে। আর এই মুভির মাধ্যমে অল্প বয়সেই ওদের মধ্যে নারী দেহ সম্পর্কে একটা ফ্যান্টাসি তৈরি হচ্ছে এবং ওদের ধ্যান-জ্ঞান হয়ে উঠছে ঐ নারী দেহ কেন্দ্রিক। এর সাথে আরেকটি সমস্যা হলো এখন শহরে অধিকাংশ পরিবারে হয় একটি ছেলে না হয় মেয়ে। এখন যে ছেলেটি একা একা গড়ে উঠছে সে বোনের সাথে যে অসম্ভব ভালো একটি আবেগীয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলে ওর ইয়ং মেয়েদের প্রতি যে সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধা গড়ে ওঠার কথা সেটি গড়ে উঠছে না। এবং ও সব ইয়ং মেয়েকে ফ্যান্টাসির চোখে ছাড়া অন্যকিছু ভাবতে শিখছে না। আশংকার কথা হলো এই রোমিওদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই আমরা যদি শুধু নারীকে বলি তোমরা সচেতন হও, সাবধানে থেকো, নিজেকে সামলে রেখো তাহলে খুব একটা ভালো ফল পাওয়া যাবে না। এই রোমিওদের সামাজিকীকরণ শুরু করতে হবে পরিবার থেকে। বাবা-মাকে এগিয়ে আসতে হবে। ওদেরকে নারীর প্রতি সম্মান দেখানো, নারী যে শুধু ফ্যান্টাসি নয়, ওরা কারো মা, বড়ো আপা, ছোট বোন, কারো স্ত্রী এগুলো সম্পর্কে বোঝাতে হবে। নারীর প্রতি ছেলেদের মাঝে ছোট বেলা থেকে সম্মানবোধ জাগাতে না পারলে এই সমাজে লাখো লাখো রোমিও ঘুরে বেড়াবে যাদের দাপটে নারীরা এক অসহায় জীবে পরিণত হবে এ কথা হলফ করে বলা যায়।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×