রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ। অনেক দিন পর এই প্রথম বাড়িতে বাবা-মায়ের সাথে নতুন বছর উদযাপন করব। আমার গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। সকাল থেকে অনেকের সাথে নতুন বছর উদযাপন নিয়ে কথা বললাম, পান্তা-ইলিশের কথা বললাম। পান্তার কথা শুনে তো অনেকেরই মেজাজ খারাপ। বলে আগে পান্তা খেতাম অভাবে পড়ে, তোমরা কি মনে কর আমরা সাধ করে পান্তা খেতাম! এখন আগের মতো অভাবও নেই, পান্তাও খাই না। আর ইলিশের কথা কি বলব! বর্ষাকালে যখন ইলিশ পর্যাপ্ত থাকে তখনই ইলিশ কিনে খেতে পারি না, আর এখন কিনব ইলিশ। যাই হোক, কাল অন্যভাবে বৈশাখের প্রথম দিনটি উদযাপন করব। আমার মায়ের পান্তা-ইলিশ নিয়ে কোনো মাথা-ব্যাথা নেই। আমার মা কালকের জন্য দেশি সব খাবারের আয়োজন করছেন। সকালে মায়ের রান্নার মেনুতে আছে কচুশাক, পুইশাক, থানকুনির পাতা, করলা ভাজি, মুগের ডাল, ছোট দেশি মাছের ঝাল-ঝোল, পুকুর থেকে যদি মাছ ধরা হয় তাহলে রুই কিংবা কাতলা মাছের তরকারি, গরম ভাত, একটু পায়েশ। এই হলো আমাদের কালকের বৈশাখের প্রথম দিনের খাবার তালিকা। পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কেনা ইলিশ থাকবে না, সরু চালের পান্তা ভাত থাকবে না আমার মেনুতে । কিন্তু আমার মায়ের হাতে রান্না করা কিছু গ্রামের পদের রান্না থাকবে। সেগুলো দিয়ে উদরপূর্তি করব আর চুটিয়ে একটা ঘুম দিব, ঘুম থেকে উঠে বিকেলে বৈশাখি মেলায় যাব। ছোট বেলার মতো পাপর ভাজা, বাদাম, ছোলা, তরমুজ, জিলাপি কিনব। আর কিনব মাটির তৈরি নৌকা। নৌকা কিনে নৌকার মাথায় দড়ি বেঁধে পরের দিন সকালে টেনে নিয়ে বেড়াব, একটা করে নৌকার চাকা ভাঙবে, আর আমার নৌকা খোঁড়া হবে। নৌকার সব চাকা ভাঙার সাথে সাথে সাথে আমারও এবারের বৈশাখি উদযাপনের ইতি ঘটবে। শুভ নববর্ষ…
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




