একটি গল্প দিয়ে শুরু করা যাক।
একজন বৃদ্ধা ৪-৫ টি ব্যাগ নিয়ে একটি বিল্ডিং এর নীচে দাড়িয়ে আছেন। তিনি ৫ম তলায় যাবেন। সবগুলো ব্যাগ নিয়ে ৫ম তলায় যাওয়া তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব। রাস্তার পাশে কয়েকজন যুবক দাড়িয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে একজন বৃদ্ধাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এল। বৃদ্ধার মনের ভাব কী রকম হতে পারে?
১. ছেলেটি সত্যিই ভাল। রাস্তায় এতগুলো লোক দাড়িয়ে ছিল, কেউ এগিয়ে এল না অথচ এই ছেলেটি এগিয়ে এল। এমন ছেলে আর হয় না।
২. রাস্তায় এতগুলো লোক দাড়িয়ে ছিল, কেউ এগিয়ে এল না অথচ এই ছেলেটি এগিয়ে এল। কোন বদ মতলব নেই তো। আরও তো ছেলে ছিল তারাতো এগিয়ে এল না তবে এই ছেলেটিই কেন এগিয়ে এল?
এমনিভাবে আমাদের নিজেরদের মনোভাব আমাদের পরিচালিত করে। একটি ভাল ধারনা আমাদের যেমন উদ্দীপনা দেয় তেমনি একটি খারাপ ধারনা আমাদের মনকে কুলষিত করে।
যদি আমরা সকল পদার্থকে ভাঙতে শুরু করি তাহলে কি পাব? বিজ্ঞান আমাদের বলে,
ক্ষুদ্র কণা > অণু > পরমাণু > নিউক্লিয়াস + ইলেকট্রন > শক্তি।
অর্থ্যাৎ দাড়াল যে, সকল কিছুই আসলে শক্তি।
আমরা আসলে শক্তি বা চার্জ ছাড়া আর কিছুই নই। এখন, আমরা যদি কাউকে গালি দেই বা রাগ করি তখন আমাদের পুরো সিস্টেমে ঋণাত্নক চার্জ উদ্ভব হয়। আবার যাকে গালি দিলাম তার মধ্যেও একই চার্জ উদ্ভত হয়। একইভাবে কাউকে ভাল কথা বললে তার মধ্যে এবং আমাদের মধ্যে ধনাত্নক চার্জ বৃদ্ধি পায়।
পোষ্টটির উপসংহারে অনেকগুলো সিদ্ধান্তে আসা যায়। আপনি এটিকে কিভাবে নেবেন তা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। আপনার সিদ্ধান্তের সাথে অন্য ব্যক্তির মতামত নাও মিলতে পারে। যার যার নিজের অবস্থানে, আমাদের সবার মনোভাবই সঠিক।
একটি বাড়ীতে একটি কুকুর ছিল। বাড়ীর লোকেরা সেই কুকুরটিকে খুব আদর-যত্ন করত। ভাল খাবার দিত। কুকুরটি ভাবল, এই বাড়ীর লোকেরা নিশ্চয়ই ফেরেশতা, নাহলে তারা আমার এত যত্ন নেবে কেন?
সেই বাড়ীতে একটি বিড়ালও ছিল। বাড়ীর লোকেরা সেই বিড়ালটিকে খুব আদর-যত্ন করত। ভাল খাবার দিত। বিড়ালটি ভাবল, আমি নিশ্চয়ই একজন ফেরেশতা, নাহলে এই বাড়ীর লোকেরা আমার এত যত্ন নেবে কেন?
যেকোন বিষয়কে একটু পজিটিভলি দেখতে আমাদের এত অনীহা কেন? একটি সুন্দর কথা, একটি সুন্দর হাসি, একটু ভাল ব্যবহার কি সত্যিই দুর্লভ? শত অমিলের মাঝেও আমরা কি মিলেমিলে চলতে পারি না? একটু ভাল ব্যবহার প্রত্যাশা করতে পারি না? ভালবাসা কি এতই কঠিন, এতই দূরের?
৬০ বছরের বৃদ্ধ তার পেনশনের সমস্ত টাকা দিয়ে একতলা বাড়ীর ওপর দোতলা তৈরী করছে। সবাই বলছে, আরে বুড়ো আর কয়েকদিন পরে তো মরেই যাবে, পেনশনের টাকাগুলো দিয়ে একটু আরাম করলেই তো পারো।
বৃদ্ধের উত্তর কী ছিল, জানেন কী?
দোতলা বাড়ীতে আমি থাকতে পারব না তো কী হয়েছে? আমার কলিজার টুকরা সন্তান তো থাকবে?
আমার প্রিয় একটি বাণী, "আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে আরেকটু সুন্দর পৃথিবীতে রেখে যাবার প্রত্যয় নিন। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে বয়সের তারতম্যভেদে বাবা, মা, ভাই, বোন বা নিজ সন্তানের সমান মনে করতে পারলে, আপনি মানুষেকে বুঝবেন বেশি করে, তাদের প্রতি হবেন সহানুভুতিশীল আর নিজে হবেন সত্যিকারের এক ধৈর্য্যশীল ব্যক্তি।"
তৌসিক আহম্মেদ। ছাত্র।