মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করা যাক।
বছর > জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা > পাশের হার
২০০৪ > ৯৮৮৬ > ৫০.২৭%
২০০৫ > ১৭২৯৪ > ৫৪.১০%
২০০৬ > ৩০৪৯০ > ৬২.২২%
২০০৭ > ৩২৬৪৬ > ৫৮.৩৬%
২০০৮ > ৫২৫০০ > ৭২.১৮%
তথ্যসূত্র: জাতীয় দৈনিক পত্রিকা।
শুধুমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান (মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড বাদে)
২০০৭ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৫,৭৩৭ জন।
২০০৮ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪১,৩১৭ জন।
বাস্তবতা অনুধাবনে পরিসংখ্যান কতটা সহায়তা করে? আমরা প্রায়ই পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করি এবং যতটা সম্ভব hypothetical বিষয় এড়িয়ে চলি।
কিন্তু সকল ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করলে বাস্তবতার অনুধাবন খানিকটা অস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২০০৮ সালের এই ৫২৫০০ শিক্ষার্থী হল, সারা দেশ বাছাই করা সেরা মেধাবী। যদিও পরে গোল্ডেন ৫, সিলভার ৫ নামের আলাদা কাহিনি শুরু হবে, তবে আপাতত এরাই সেরা।
কিন্তু তার মানে এমন নয় যে, জিপিএ ৪.৯৪ - ৪.২৫ যারা পেয়েছে তারা মেধাবী নয়। বরং মেধার লড়াইয়ে এরা খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে মাত্র।
{জিপিএ ৪.২৫ শেষ সীমা ধরেছি কারন, এই জিপিএ পেতে হলে প্রতি বিষয়ে গড়ে ৭০ ভাগ নাম্বার পেতে হয়।}
খানিকটা পিছিয়ে পড়া এই সকল শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০০০০+ (এক লক্ষের ওপরে)। যাদের জিপিএ এর চেয়েও কম তাদের কথায় পরে আসছি।
তাহলে দাড়াল, ৫২৫০০ + ১০০০০০ = প্রায় ১৫২৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে যারা মেধাবী।
অথচ বর্তমানে দেশে ভাল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান (কলেজ) এর সংখ্যা হতে গোনা। নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০ এর বেশি হবে না। আনঅফিসিয়ালি এই সংখ্যা ২৬। এই সব কলেজের মোট সিটসংখ্যা কমবেশি ২০০০০।
অর্থ্যাৎ সেরা শিক্ষার্থীদের কাতারে সামিল হওয়া সত্ত্বেও ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারা অনেকটা নিশ্চিত। আর খানিকটা পিছিয়ে পড়লে তো কথাই নেই।
খানিক পিছিয়ে পড়া মানে এই নয় যে, তারা ভাল প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার যোগ্য নয়। রেজাল্ট খুব খারাপ হলে হয়তো বাস্তবতা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু সত্য এতটাই নির্মম যে, মাত্র ২-৩ নাম্বারের ব্যবধানে পয়েন্টের বিরাট হেরফের হয়ে যায়।
শিক্ষাজীবনের এটাই প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এই সময় শিক্ষার্থীর বয়স কতই বা হবে, বড়জোর ১৬/১৭। মাত্র ১৬ বছর বয়সে হতাশায় ভারাক্রান্ত হওয়া, একজন শিক্ষার্থীর মানসিক বিপর্যয়ের পক্ষে যথেষ্ট। আর বিশেষত এই সময়টা বয়ঃসন্ধিকালের। মানে দাড়াল, তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক আছে, অনুঘটক আছে, সাথে আছে অনুঘটক উত্তেজকও, দেখা যাক উৎপাদ কী হয়?
তৌসিক আহম্মেদ।
ছাত্র।
ব্লগ অ্যাড্রেস: http://www.somewhereinblog.net/blog/Tausiq
ইমেইল অ্যাড্রেস: [email protected]