somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমুর অপেক্ষায় রুপা

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ২ টা আমি এখনো হেঁটে বেড়াচ্ছি । আকাশে চাঁদ উঠেছে । রুপাকে কথা দিয়েছি পূর্নিমা দেখাব । কিন্তু আজও আমি আমার কথা রাখব না । রুপাকে অপেক্ষা করাতে একাটা আলাদা আনন্দ আছে । থাকনা অপেক্ষায় , অপেক্ষা মানুষের জীবনকে রুমাঞ্ছকর করে তুলে । ভাবছি মিসির আলি সাহেবের বাসায় যাব । এক কাপ চা হাতে হাজির হয়ে চমকে দিলে মন্দ হয় না । কিন্তু মিসির আলি মানুষটা সাধারন মানুষেদের মত নয় , খুব অল্পই চমকায় । আজকাল মানুষের চমকে যাবার স্বভাবটা লুপ পাচ্ছে । জীবনে তারা এতই বড় চমকের সাথে পরিচিত হচ্ছে যে বিশেষ কিছু না করলে চমকায় না । আমি এখন মজনু ভাইয়ের রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে যাচ্ছি । দোকানের কর্মচারীরা জিনিসপত্র ঠিক করছে । একটু পরেই বুধহয় দোকান বন্ধ করে দিবে । সামান্য শীতও পড়েছে । কিছু কুকুর ঘুরা ঘুরি করছে । সাধারণত ভাতের রেস্টুরেন্টের কোন নাম থাকে না । কিন্তু এইটার নাম আছে , মজনু ভাইয়ের ভাতের দোকান । দোকানে গিয়ে দেখি সবাই একটা বড় পাত্র থেকে ভাত নিচ্ছে । মনে হয় সবাই মিলে একসাথে খাওয়ার ব্যবস্তা করছে । আমি যাওয়ার সাথে সাথে মজনু ভাই এগিয়ে আসলেন ।
কি হিমু ভাই , কেমন আছেন ? আজকাল তো আপনাকে আর দেখাই যায় না । কোথায় থাকেন ?
আমি কোন উত্তর না দিয়ে সামনে এগিয়া গেলাম ।
মজনু ভাই আবার জিজ্ঞেশ করলেন , কি হিমু ভাই , কেমন আছেন ?
ভাল । ভাত তরকারি কিছু আছে ?
না ভাই আজ সব ভাত শেষ । বাকি যে ভাত রয়েছে ওইটা সবাই মিলে খাবে । চাইলে আপনিও যোগ দিতে পারেন ।
না ভাই থাক আপনারা কষ্ট করেছেন এখন ভাত খান । আমি যাই । আজ একটু বেশি ঘুম পেয়েছে ।
আমি হাঁটা শুরু করলাম । আমার গন্তব্য স্তান আমার মেস ।আমি গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম । শীতের দিনে ঘুম আস্তে বেশি সময় লাগে না । গায়ে একটা চাঁদর আর কিছুই নেই , আর মধ্যে দরজা খুলা । আমি দরজা খুলা রেখে ঘুমাই । কারন চুর ভুলেও যে ঘরের দরজা খুলা অই ঘরে ধুকবে না । চুর দের কিছু নিয়ম কানুন আছে । তারা মনে করে খুলা দরজার পিছনে হয়ত কোন মানুষ হাতে লাঠি নিয়ে দারিয়ে আছে । ঘরে ঢুকার সাথে সাথে ঠাশ করে স্বজোরে একটা আঘাত তার মাথার পিছনে লাগবে ।

সকাল ছয়টায় ঘুম ভাঙল । চা খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু বিছানা ছাড়তে মন চাচ্ছে না ।ঘুম থেকে উঠে দেখি সামনে চিঠিটা পরে রয়েছে । চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম । লিখা দেখে মনে হচ্ছে রূপার চিঠি ।

প্রিয় হিমু ,
কেমন আছো ? তুমি এবারও আসনি । প্রতিবার কথা দিয়েও তুমি আস না । কাল আমি সারা রাত তুমার অপেক্ষায় বসে ছিলাম । মনে মনে ভেবেছিলাম তুমার সাথে খুব সুন্দর একটা রাত কাটাব । দুজনে মিলে আকাশের চাঁদ দেখব । কিন্তু আমি জানতাম তুমি আসবেনা । কারন আমি কষ্ট পেলে তুমি অনেক আনদ পাও । তবুও দেখ , তুমার প্রতি রাগ দেখানোর বদলে তুমার কাছে চিঠি লিখছি । তুমি এমন কেন বলতো । যতই চেষ্টা করি তুমার উপর কখনও রাগ করতে পারিনা । আচ্ছা হিমু তুমি কি সত্যিই কোন দিন আমাকে তুমার সাথে চাঁদ দেখাতে নিয়ে যাবে । কখনও কি আমি এই সুযোগ পাব ? মনে হয় এটি স্বপ্ন হয়েই থাকবে ।

ইতি
তুমার রূপা
মিসির আলি সাহেব সব চিঠি আন্তত তিন বার পরেন । কিন্তু আমি কখনও চিঠি একবারের বেশি পরি না । এটা আমার বাবার আদেশ ,
“ শোন হে বৎস , কখনও কারো দুঃখ অথবা আনন্দে লিখা চিঠি একবারের বেশি পাঠ করিবে না , একবার পাঠ করা শেষ হলে চিঠিটিকে ছিরে ফেলবে । এতে তুমি মোহ গ্রস্ত হবে না , তাদের দুঃখ অথবা আনন্দ আনুভব করবে না । মহাপুরুষরা দুঃখ অথবা আনন্দের উর্ধে এবং যারা মোহ ত্যাগ করতে পারে তারাই প্রকৃত মহাপুরুষ ।”

চিঠিটা পড়া শেষ করে ছিরে ফেললাম । মাঝ ববাবর নয় , অনেক ছোটছোট অংশে ছিরলাম । জানালা দিয়ে বাইরে ছুরে ফেলে দিতেই কাগজের টুকরোগুলি বাতাসে উরে চলে গেলো ।
কিছু সময় পর বিছানার মোহো কাটিয়ে উঠে হাত মুখ ধুয়ে নিলাম । আজ বাদলের কাছে যেতে ইচ্ছা করছে । অনেক দিন হল দেখা হয় না।।.......
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×