এখন বাংলা ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি আর বলিউডের মাঝে কোন তফাৎ আমি খুঁজে পাইনা । দুইটার দশা একই রকম । কেউই এখন আর গল্প খুঁজে পায় না । একই ধাচের ফিল্ম তৈরি করে যাচ্ছে একের পর এক । বাংলাদেশ যদি ইন্ডীয়ার মত বড় দেশ আর এডভান্স হত তাহলে আমরাও আজে বাজে ফিল্ম দিয়ে , কপি করে বলতে গেলে অনন্ত জলিলের ফিল্মও শত কোটী টাকার বিজনেস করতে পারত । তবে অবশ্যই সমালোচনার ঝর উঠত , কারণ বাঙ্গালিরা নিজেরদের জাতির সমালোচনা করতে পছন্দ করে । বাঙ্গালী বরাবরই নিজের শত্রু আর এরা নিজের উন্নতি কিভাবে হবে তা না ভেবে ভিনদেশের সাথে তুলনা করতে পছন্দ করে । কারণ বাংলাদেশীরা নিজেদের চেননা কিন্তু নিজেদের ছাড়া বিশ্বের বাকি সবকিছুই চিনতে এদের কষ্ট হয় না আর ভারত টিকে আছে আমাদের উল্টো স্বভাবের হওয়ার জন্য ।।।
এক কালে আমি খুব বাংলা ছবির ভক্ত ছিলাম । সময়টা ছিল ২০০০-২০০৬ সাল । এই ছয় বছরে প্রতি শুক্রবার একটি করে ফিল্ম দেখা হত । শুক্রবার মানে ছিল এক ধরনের উৎসবের মত । আমি থাকতাম এক অজপারা গ্রামে । আমার গ্রামে এখনো কারেন্ট যায় নি । আমার গ্রামের পাশাপাশি আরও ৪ টা গ্রাম রয়েছে । পাচটা গ্রামে বর্তমানে টিভি আছে ৪ টা । তাহলে বুঝে নিন ২০০০ সালে একটা টিভি মানে কতকিছু ছিল । সৌভাগ্যবশত তখন টিভিটা আমদের ছিল । তখন প্রতি শুক্রবারে রীতিমত আমাদের বাড়িতে ১০০-২০০ মানুষ জমে যেত । অবশ্য সবার সাথে ছবি দেখার মজাও ছিল অনেক ।।। তখন কার ফিল্মগুলাও ছিল তৎকালীন সমাজের জন্য উন্নত । তাই অনেক দেখতেও ভালো লাগত । তখনকার কিছুকিছু ফিল্ম দেখলে এখনো চ্যানেল বদলাতে ভুলে যাই । একটা ফিল্ম তো প্রায় মুখস্তের পর্যায়ে ছিল , " হাঙ্গর নদীর গ্রেনেড "।
২০০৬ সালে সিলেট চলে আসি । তখন থেকে ধিরে ধিরে হিন্দি ফিল্মের নেশা ধরে । বাংলা ফিল্ম তখন দু চোখের বিষ হয়ে দাড়ায় । কারণ একেত হিন্দি ফিল্মের ভালো ভালো কাহিনী আর দ্বিতীয়ত ছোট বেলায় যত বাংলা ফিল্ম দেখেছি পরবর্তি সময় ঐগুলার কাহিনীই একের পড় এক রিফাইন করা হয়েছে । মাঝে মাঝে যখন কিছু ভিন্ন ধরনের ফিল্ম তৈরি হয়েছে ঐগুলা দেখেছি । যেমন , " মনপুরা" টাইপ । কিন্তু হিন্দি ফিল্ম চলতে থাকে পুরু দমে । এখন আমার কাছে , হিন্দি ফিল্মের দশাও একই রকম হয়ে গেছে । কপি পেস্ট ছাড়া বলিউডে কোন ফিল্ম তৈরি হয় না । "KRRISH3" থেকে "DHOOM3" সব কপি প্যাস্ট । ২০১২ সাল থেকেই হিন্দি ফিল্মে বিতৃষ্ণা চলে এসেছে । বলিউডের ফিল্ম মেকার দের অবস্থা বাংলাদেশি ফিল্ম মেকারদের মতই হয়ে গেছে । কোন গল্প তারা খুঁজে পায় না তাই তামিল , ইংলিশ , কোরিয়ান ফিল্ম সবগুলা থেকে কপি মারতে মারতে ভরাই দিতেসে । তাই ২০১২ থেকে হিন্দি ফিল্ম দেখাও কমিয়ে দিয়েছি তবে হুমায়ুন আহমেদ আর ইন্ডীয়ার চেতান ভাগাতের গল্প থেকে তৈরি প্রিতিটা ফিল্ম আমি দেখি । তবে ইন্ডিয়ান বাংলা ফিল্ম আমি সচরাচর দেখে থাকি । পাগলু , ফাগলু টাইপ না অনেকটা রিতুপর্ন ঘোষের তৈরি ফিল্মের ধরনের ।।।।
২০১২ সাল থেকে ইংলিশ ফিল্মের দিকে ঝুকে পড়ি , এদের কথা আর কি বলার । এরা যে মাস্টার পিস এটাত সবাই যানে । কিন্তু কয়েকদিন আগে থেকে কোরিয়ান ফিল্ম দেখা শুরু করি । এক কথায় আমি হতবাক হয়ে গেছি । জানতাম না যে কোরিয়ানরা এত সুন্দর ফিল্ম তৈরি করে । অনেক ক্ষেত্রে তো কোরিয়ানরা হলিউডকেও ছাড়িয়ে গেছে । কোরিয়ান ফিল্ম যদি একবার দেখেন তাহলে এদের ফ্যান না হয়ে পারবেন না । এরা দর্শকের ইমোশন নিয়ে এত খেলতে পারে কি বলব । আপনাকে কাঁদিয়ে ছাড়বে এরা এইটা নিশ্চিত থাকেন । এত ইমশনাল অত্যাচার করে এরা । যদি এখনো কোরিয়ান মুভি না দেখে থাকেন তাহলে অনেক কিছুই মিস করেছেন ।
কোরিয়ান , " No Mercy" আর "Miracle in cell no.7 " এই দুইটা ফিল্ম দেখেই আমি কোরিয়ান ফিল্মের প্রেমে পরে গেছি । আশা করি আপনারও পরবেন ......