somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তীর্যক নীল
ভালবাসি মা, মাটি, দেশকে। ভালবাসি দেশের মাটির সাথে মিশে থাকা খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে যারা মাটির বুক চিড়ে, মাথার ঘাম মাটিতে মিশিয়ে সোনা ফলান, বিদেশ থেকে কষ্টিার্জিত অর্থ বৈধভাবে দেশে পাঠান আর পোশাক শিল্পকে শিল্প হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি ঘটান।nnnঘৃনা করি; ঐসব

নাস্তিক ও অবিশ্বাসীদের জয়জয়কার! ইসলামের মূলে বিষ!! পর্ব-৬ (শেষ পর্ব)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ব প্রকাশিত’র পর-
এতদ্ব্যাতীত ঐ গোয়েন্দারা প্রথমে কোরআনের আয়াত বানাতে চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে, জাল হাদিস বানিয়ে ইসলামের গভীরতম মূলে মাদ্রাসার পাঠ্য বই ফিকাহ্ শাস্ত্রে ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং “ফিকাহ্ শাস্ত্র সংস্করণ করা নিষিদ্ধ” এই তথ্যটি ফিকাহ্ শাস্ত্রের প্রথমেই ঢুকিয়ে দিয়ে কথাটির ব্যাপক প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার কুফল আজ বয়ে বেড়াচ্ছে সমগ্র মুসলিম জাতি।
তথ্য-১
“পূর্বে ইজ্মা হয়ে আছে তাই এবিষয়ে আর গবেষনা করা যাবে না” কোরআন, হাদিস ও বিবেক-বুদ্ধি বিরুদ্ধ এই কথাটি ফিকাহ্ শাস্ত্রে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে।
তথ্য-২
মাদ্রাসার পাঠ্য বইয়ে এমন তথ্য লিখে রাখা হয়েছে যাতে করে ছাত্ররা জানতে পারে ফিকাহ্ শাস্ত্র সংস্করণ করা নিষিদ্ধ। যেমন-
 ইসলামী বিধানের মূল বুনিয়াদ হল ৪টি। কোরআন, সূন্নাহ্ (তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীগণের) ইজমা ও কিয়াস। কিয়ামত অবধি ঘটমান সকল সমস্যার সমাধান এই চারটি থেকে বের করতে হবে। এর বাইরে ব্যাক্তিগত জ্ঞান বা মেধার আলোকে যে যতই সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাধান বের করুক ইসলামে তার কোন মূল্য নেই।
(পেশ কালাম, ‘উসূলুশ শাশী’, আল-আকসা প্রকাশনী- ২০০৪। কওমী ও আলীয়া মাদ্রাসার পাঠ্য বই)
 ১ম ও ২য় যুগের (হিজরি ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়) মুজতাহিদগণ এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ফিকাহ্শাস্ত্র দান করিয়া গিয়াছেন, যাহাতে মানব জীবনের প্রত্যেকটি সমাধানই রহিয়াছে।……………….. অতএব এখন ইজ্তিহাদ (গবেষনা) করার অর্থ জ্ঞাত বিষয়কে জানার চেষ্টা করিয়া সময় ও শক্তির অপচয় করা ব্যাতিত অন্য কিছু হইবে না।
(হেদায়া, পৃষ্ঠা-৫০, আরাফাত পাবলিকেশন- ২০০৫ইং)
 ৭ম স্তরের (হিজরি ৭ম শতাব্দীর পরের সময়) আলেমগণের কোন মাস’আলার মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা নাই। ভাল-মন্দের পার্থক্য করার মতো যোগ্য তাঁহাদের নাই। যাহারা শুধু মাস’আলা শিক্ষা করিয়া থাকেন। ফতোয়া দেওয়অ তাঁহাদের জন্য জায়েজ নাই। তাঁহারা শুধু ইতিহাসের মতো মাস’আলা বর্ণনা করিতে পারিবেন।
(হেদায়া, পৃষ্ঠা-৫২, আরাফাত পাবলিকেশন- ২০০৫ইং)
 জুম’আ’র খুতবায় “ফিকাহ্ শাস্ত্রের সংস্করণ বের করা যাবেনা” বক্তব্যটি সূচতুরভাবে ঢুকিয়ে দিয়ে সারাবিশ্বের মুসলানদের প্রতি সপ্তাহে একবার করে মনে করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বুখারী শরীফের একটি হাদিসের অংশ বিশেষের মাধ্যমে। হাদিসটির উদৃত অংশটুকু হল-
“………. যুগের মধ্যে, আমার যুগের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি উত্তম, অতঃপর তার পরবর্তী যুগের, অতঃপর তার পরবর্তী যুগের……………….। (বুখারী)
এইখানে হাদিসের অংশ বিশেষ উল্লেখ করে চতুরতার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। মূল হাদিসের প্রেক্ষাপট আর উল্লেখিত এই অংশের প্রেক্ষাপট এক নয়। মুহম্মদ (সঃ) এর বিদায় হজ্জ্বের ভাষন সংক্রান্ত একটি হাদিসে উল্লেখ আছে-
“……….. অতঃপর বললেন, উপস্থিতরা যেন অনুপস্থিতদের নিকট আমার এই বার্তা পৌঁছে দেয়। কেননা পরে পৌঁছানো ব্যাক্তিদের মধ্যে অনেকে আসল শ্রোতা অপেক্ষা অধিক উপলব্ধি কারী ও রক্ষাকারী হবে।” (বুখারী, মুসলিম)
এই হাদিস দু’টি ব্যাখ্যা করলে যা দাড়ায়, তা হচ্ছে-
 সাহাবী, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ী যুগের মানুষেরা আমলে উত্তম।
 পরের যুগের মানুষেরা জ্ঞানে উত্তম।

তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ী যুগের মানুষদের চেয়ে প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমান যুগের মানুষেরা বহু বিষয়ে অনেক জ্ঞানী এটা অনস্বীকার্য। তাহলে সাধারণ জ্ঞান দিয়েওতো এইটুকু অনুধাবন করা যায়, ফিকাহ্ শাস্ত্রের সংস্করণ অবশ্যই করা উচিৎ। এমনটাইতো মুহম্মদ (সঃ) এর নির্দেষ।

মুসলিম বিশ্বে কিছু আলেম সম্প্রদায় কারো কাছে শুনা কোন হাদিস অথবা বিভিন্ন চটি ও অখ্যাত কিতাবাদিতে পড়া কোন হাদিস কোনরূপ যাচাই বাছাই ছাড়াই বিভিন্ন ওয়াজ মাহ্ফিল তথা সাধারণ মুসলমানগণের নিকট প্রচার করে থাকেন। এই শ্রেণীর আলেম সম্প্রদায়ের জন্য সাধারণ মুসলিমগণ খুব সহজেই গোমরাহীতে পতিত হন।
কিন্তু নবী কারীম (সাঃ) ঐসব তথাকথিত আলেমদের ব্যাপারে অতি কঠোর অবস্থানে ছিলেন-
হযরত আবু হোরাইরা (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ মানুষ যা শুনে তাই বর্ণনা করে দেয় (যাচাই বাছাই ব্যাতিত) তারা মিথ্যুক হওয়ার জন্য যথেষ্ট। (মুসলিম শরীফ-২২)
অন্য এক হাদিসে নবী কারীম (সঃ) বলেনঃ
মাক্কী ইব্নে ইব্রাহীম (রঃ) …………… সালমা ইব্নে আক্ওয়া (রঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী কারীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যাক্তি আমার উপর এমন কথা আরোপ করে যা আমি বলিনি, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।” (বুখারী শরীফ-১১০)
নবী কারীম (সঃ) এর ওসিয়ত-
হযরত ইবরাজ বিন সারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন- ……………. আমার পর তোমাদে মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা অল্প দিনের মধ্যেই অনেক মতবেদ দেখতে পাবে, তখন তোমরা আমার সূন্নাহ্কে এবং সৎপথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সূন্নাতকে আঁকড়ে ধরবে এবং দাঁত দ্বারা কামড়ে ধরে থাকবে। অতএব সাবধান! তোমরা নতুন কথা থেকে বেঁচে থাকবে, কেননা প্রত্যেক নতুন কথাই বেদা’ত এবং প্রত্যেক বেদা’তই গোমড়াহী। (সহীহ সূনানী আবি দাউদ-৩৮৫১)

কিন্তু আফসোস; আজ সারা বিশ্বের তথা অধিকাংশ মুসলমানগণই ধর্মকে অন্ধ অনুকরণ করে চলেছেন। কোন ধর্মীয় নেতা (পীর/দরবেশ) যা বলেছেন, তাই অন্ধভাবে অনুসরণ করে চলেছেন। ঐ বলার পেছনে কোন দলিল-প্রমাণ যাচাই করেনা কেউ। অনেকেরই যুক্তি- আমরাতো আরবী জানি না আবার কেউ কেউ বলছেন- লেখা পড়া জানি না, তাহলে অন্ধ অনুকরণ না করেতো আমাদের উপায় নেই।
এক্ষেত্রেও মহান আল্লাহতা’লা স্পষ্ট সমাধান দিয়ে রেখেছেন পবিত্র গ্রন্থে-
“যদি তোমরা না জান, তাহলে বিজ্ঞগণকে জিজ্ঞাসা করে নাও দলিল-প্রমাণ ও গ্রন্থসহ।” (সূরা নাহল-৪৩-৪৪)
অন্ধ অনুকরণের ব্যাপারে নবী কারীম (সাঃ) এর বাণী-
মুহম্মদ ইবনে আব্দুল আজিজ (রঃ)…………… আবু সাইদ খুদরী (রঃ) নবী কারীম (সঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার আচরণকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তাঁরা যদি গুইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এদের অনুসরণ করবে। আমরা বললাম ইয়া রসুলুল্লাহ্ এরা কি ইহুদি-নাসারা? তিনি বললেনঃ আর কারা? (বোখারী শরীফ-৬৮২১)
মহান আল্লাহতা’লা পবিত্র কোরানুল কারীমে ঘোষনা করেন-
“তারা আলেম ও দরবেশ ব্যাক্তিদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে রব বানিয়ে নিয়েছে।” (সূরা- তাওবা-৩১)
ব্যাখ্যাঃ এ আয়াতের ব্যাখ্যা হিসাবে আদি বিন হাতিম (রাঃ) এর প্রশ্নের জবাবে রসুল্লাহ্ (সাঃ) বলেনঃ ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের রব মেনে নেওয়ার অর্থ হল তাদের সকল কথা বা সিদ্ধান্ত, নির্ভুল মনে করে, অন্ধভাবে বিনা যাচাইয়ে মেনে নেওয়া তথা তাকলীদ করা।
মহান আল্লাহ ও তাঁর রসুলের ঘোষনা কি কখনও মিথ্যা হতে পারে? কখনোই না। ঐ ঘোষনারই স্পষ্টতঃ সত্য প্রতিফলন এই গোয়েন্দা কার্যক্রমে প্রকাশিত।

সূতরাং দলিল-প্রমাণ ছাড়া অন্ধ অনুকরণ ইসলাম ধর্মে স্পষ্টত নিষিদ্ধ। আসলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, গোয়েন্দা আলেমগণ মুসলিম বিশেষজ্ঞ, পীর, দরবেশ সেজে আসল মুসলিম বিশেষজ্ঞদের ফাঁকি দিয়ে, কোরআনের আয়াতকে আড়াল করে মুসলিম জাতিকে অন্ধ অনুকরণে বাধ্য করেছে।

মহান আল্লাহতা’লা ও রসুলুল্লাহ (সঃ) এর উপর যারা বিশ্বাসী তাদের কাছে স্পষ্টত প্রমাণিত বৃটিশ গোয়েন্দাদের এই ষড়যন্ত্র নির্মম সত্য। মহান আল্লাহ এবং রসুলে কারীম (সঃ) বিশ্বাসীদের আগেই এব্যাপারে হুসিয়ার করে দিয়ে গেছেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

মহান আল্লাহতা’লা সকল মুসলিমদের সঠিক জ্ঞান দান করুন ও সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।


৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×