somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তীর্যক নীল
ভালবাসি মা, মাটি, দেশকে। ভালবাসি দেশের মাটির সাথে মিশে থাকা খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে যারা মাটির বুক চিড়ে, মাথার ঘাম মাটিতে মিশিয়ে সোনা ফলান, বিদেশ থেকে কষ্টিার্জিত অর্থ বৈধভাবে দেশে পাঠান আর পোশাক শিল্পকে শিল্প হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি ঘটান।nnnঘৃনা করি; ঐসব

একনায়কতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রের দূরত্ব কতটুকু?

২৪ শে অক্টোবর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
রাষ্ট্র বিজ্ঞান সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান নাই। প্রতিদিন গণতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, বাকশাল আর একনায়কতন্ত্র শব্দগুলো শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। এগুলোর সঠিক সংজ্ঞাও আমার জানা নাই। মাঝে মাঝে মনে হয় রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসাবে হয়ত এগুলো আমার জানা উচিৎ। আবার জানার ইচ্ছের মধ্যেও জন্ম নেয় তিক্ততা। মনে প্রশ্ন জাগেঃ আসলেই কি আমি দেশের কোন নাগরিক? জনগণের অংশ? নাকি কোন গরু ছাগল? কেন জানি এগুলোর মধ্যে খুঁজে পাই মিথ্যাচার। তাই জানার ইচ্ছেটা বার বার অবদমিত হয়ে যায়। বাংলাদেশের কিতাবীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে নেতা-নেত্রীগণের কথায় আর কাজে মিল খুঁজে পাইনি কোনদিন। নেতা-নেত্রীদের মূখে শুধুই গণতন্ত্রের বুলি শুনি, কিন্তু গণতন্ত্রের স্বাদ কি তা আজো বুঝা হলোনা। আজকের এই গণতন্ত্রের মাঝে খুঁজে পাই জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত একনায়কতন্ত্র। একনায়কতন্ত্রের কিতাবীয় সংজ্ঞা আমি জানিনা। খাটি বাঙালীর বাংলা সংজ্ঞায়, আমার হিসাবে একনায়কতন্ত্র হলঃ একক শাসকের অধীনে পরিচালিত শাসনতন্ত্র। রাষ্ট্র পরিচালনায় সকল সিদ্ধান্ত নেওয়ার একক ক্ষমতার অধিকারী সরকার প্রধান।

পাঁচ বছর পর পর কেবল ভোটের সময় গণিয়ে এলেই শুনতে পাই গণতন্ত্রের সংজ্ঞা। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। কেবল তখনই আমরা জনগণে পরিণত হই। ভোট পার হয়ে গেলে যারা ক্ষমতার মস্নদে আসীন হয়, তাদের কাছে আমরা এই জনগণ আবার পরিণত হয়ে যাই গরু ছাগলে। গরু ছাগলের চেয়ে উত্তম আচরণের আশা করতে পারিনা আবার পরবর্তী পাঁচ বছর। ক্ষমতায় গেলেই গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টে যায়। তখন দলের চেয়ে, দেশের চেয়ে নিজের ক্ষমতা বড় হয়ে যায়। শুরু করে আজীবন ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার মারপ্যাচ। যাঁতাকলে পিষ্ট হই আমরা জনগণ নামের গরু-ছাগলের দল। তারপরও পাঁচ বছর পর পর শুধুই ক্ষমতার পালাবদল। আমরা যেই গরু-ছাগল, সেই গরু-ছাগলই রয়ে যাই।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের বদৌলতে প্রতিনিয়ত দেখে চলেছি বিভিন্ন মন্ত্রী মহোদয়গনের চরম ব্যার্থতার পরও মূখে বীরত্বের রূপকথা। ব্যার্থ মন্ত্রীদের ব্যার্থতা আড়াল করার চির-চেনা সেই অপপ্রয়াস বিগত সরকারের উপর দোষ চাপানোর মূখস্থ বুলি। অতঃপর ব্যার্থ মন্ত্রীর বীরত্বের জয়গাঁথা সরকার প্রধান তথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মূখে।

যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের ব্যার্থতার জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্প প্রধাণমন্ত্রীর হাতে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যার্থতার জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য প্রতিনিয়ত মাথা ঘামান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ব্যার্থতার জন্য জবাবদিহি করেন প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যার্থতার জন্য হাজির হন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, আইন মন্ত্রনালয়ের ব্যার্থতার জন্য হস্তক্ষেপ করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, শেয়ার মার্কেটের চরম অবক্ষয়ের জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে কি সকল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী?

বিভিন্ন গণমাধ্যমে সকাল থেকে রাত অবধি শুনতে হয় নানা রকম সাধু কথা। দলীয় কর্মী, নেতা, মন্ত্রী, স্ববিশেষ সরকার প্রধান নিজেও চাপাবাজির এ প্রতিযোগিতায় সকলের পৃষ্ঠপোষক। কেবল গলাবাজি চলছে তো চলছেই। তিনি মাঝে মধ্যেই ঐসব গলাবাজদের ডেকে বৈঠক করে অরিয়েন্টেশন ছবক দিয়ে থাকেন। দেশের সকল অসুবিধা, সমস্যা নিয়ে উনি নিজেই জবাব দিতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। দেশে কোন খাতে কে দুর্নীতি করছে? কোথায় কে চুরি-ডাকাতি করছে? রাস্তাঘাটের বেহাল দশা কেন? দ্রব্যমূল্যের চরম উর্দ্ধগতি কেন? শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের তান্ডব কেন? সকল প্রকল্পেই টেন্ডারবাজী কেন? চাউলের দাম ১০ টাকা নয় কেন? সারের দামে উর্দ্ধগতি কেন? ঘরে ঘরে চাকরী নাই কেন? নির্বাচন কমিশনের পায়ে শিকল কেন? মানবাধিকার কমিশনের হাতপা বাঁধা কেন? দুর্নীতি দমন কমিশনের দাঁত-নখ কাটা কেন? পাবলিক সার্ভিস কমিশন বন্দি কনে? মাছে ফরমালিন কেন? ফলমূলে বিষ কেন? ঔষধে ভেজাল কেন? বিদ্যুতের লোডশেডিং কেন? লাইনে গ্যাস নাই কেন? ঢাকায় যানজট কেন? ড্রাইভাররা মানুষ মারছে কেন? মানবতা ক্রসফায়ারে কেন? গণতন্ত্র বুটের নীচে কেন? যে কোন সময় গুম হয়ে যাওয়ার ভয় কেন? অপহরণের ভয়ে মানুষ অতীষ্ট কেন? মা-বোনের ইজ্জত আজ অনিরাপদ কেন? রাস্তায় ইভ টিজিং কেন? পিলখানায় সেনা অফিসার হত্যা কেন? সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাঙালী নিধন কেন? ট্রানজিটের নামে করিডোর কেন? পুলিশ ঘুষ ছাড়া কাজ করে না কেন? শেয়ার মার্কেট লুট হয় কেন? মন্ত্রী-নেতা-কর্মীরা পয়সা নিয়ে কাজ করে কেন? মন্ত্রীরা কাজ ছেড়ে কেবল অকাজের কথা বলেন কেন? কর্মচারীরা কাজ করে না কেন? সাংবাদিকরা দুর্নীতির খবর লেখে কেন? এগুলোর সমাধানই বা করতে পারছেন না কেন? উনার কাছে সকল প্রশ্নের একটাই জবাব! যা কিছু হচ্ছে- সব কিছুর জন্য দায়ী জিয়া পরিবার এবং দোষ কেবল বিগত জোট সরাকারের!!

রাষ্ট্রীয় যে কোন বিবৃতিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সকল সিদ্ধান্ত পাল্টে যায় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে। সুশীল সমাজের সিদ্ধান্তের কোন মূল্যায়নই থাকে না প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কাছে। খুনীরা রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা পেয়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে। কোন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদেরই নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার যেন কোন ক্ষমতাই নাই। রাষ্ট্রীয় যে কোন সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকে।

তাহলে, কেউ কি আমায় বলতে পারেন একনায়কতন্ত্র কি?

একনায়কতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রের দূরত্ব কতটুকু?

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×