somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সূরা আল-ইনফিতার‌ পবিত্র কুরআনের ৮২ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ১৯। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নামকরণ :
প্রথম আয়াতের শব্দ থেকেই এর নামকরণ করা হয়েছে। এর মূলে রয়েছে ইনফিতার অর্থাৎ ফেটে যাওয়া । এ নামকরণের কারণ হচ্ছে যে এ সূরায় আকাশের ফেটে যাওয়ার কথা আলোচনা করা হয়েছে।

নাযিলের সময় -কাল
এই সূরার ও সূরা আত তাকভীরের বিষয়বস্তুর মধ্যে গভীর মিল দেখা যায়। এ থেকে বুঝা যায় , এই সূরা দু’টি প্রায় একই সময়ে নাযিল হয়েছে ।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে আখেরাত । মুসনাদে আহমাদ , তিরমিযী , ইবনুল মন্‌যার , তাবারানী , হাকেম ও ইবনে মারদুইয়ার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমরের ( রা) একটি বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে । তাতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

“ যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিনটি নিজের চোখে দেখতে চায় সে যেন সূরা তাকভীর , সূরা ইনফিতার ও সূরা ইসশিকাক পড়ে নেয়। ”

এখানে প্রথমে কিয়ামতের দিনের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে , প্রত্যেক ব্যক্তি দুনিয়ায় যা কিছু করেছে কিয়ামতের দিন তা সবই তার সামনে উপস্থিত হবে। তারপর মানুষের মনে অনুভূতি জাগানো হয়েছে , যে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে অস্তিত্ব দান করলেন এবং যাঁর অনুগ্রহ তুমি আজ সমস্ত সৃষ্ট জীবের মধ্যে সবচেয়ে ভালো শরীর ও অংগ – প্রত্যংগ সহকারে বিচরণ করছো , তিনি কেবল অনুগ্রহকারী ইনসাফকার নন , তাঁর সম্পর্কে তোমার মনে কে এই প্রতারণার জান বিস্তার করলো ? তাঁর অনুগ্রহের অর্থ এ নয় যে , তুমি তাঁর ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবহার ও বিচারের ভয় করবে না। তারপর মানুষকে সাবধান করে দেয়া হয়েছে , তুমি কোন ভুল ধারণা নিয়ে বসে থেকো না। তোমার পুরো আমলনামা তৈরী করা হচ্ছে। অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য লেখকরা সবসময় তোমার সমস্ত কথাবার্তা , ওঠাবসা , চলাফেরা ও যাবতীয় কাজকর্ম লিখে চলছেন। সবশেষে পূর্ণ দৃঢ়তা সহকারে বলা হয়েছে , অবশ্যই একদিন কিয়ামত হবে। সেদিন নেককার লোকেরা জান্নাতে সুখের জীবন লাভ করবে এবং পাপীরা জাহান্নামের আযাব ভোগ করবে। সেদিন কেউ কারোর কোন কাজে লাগবে না । বিচার ও ফায়সালাকারী সেদিন হবেন একমাত্র আল্লাহ ।
আয়াতসমূহঃ

مِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ إِذَا السَّمَاءُ انفَطَرَتْ
১) যখন আকাশ ফেটে যাবে ,

وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ

২) যখন তারকারা চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে ,

وَإِذَا الْبِحَارُ فُجِّرَتْ
৩) যখন সমুদ্র ফাটিয়ে ফেলা হবে

وَإِذَا الْقُبُورُ بُعْثِرَتْ
৪) এবং যখন কবরগুলো খুলে ফেলা হবে,

عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ وَأَخَّرَتْ
৫) তখন প্রত্যেক ব্যক্তি তার সামনের ও পেছনের সবকিছু জেনে যাবে ৷

يَا أَيُّهَا الْإِنسَانُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ
৬) হে মানুষ ! কোন জিনিষ তোমাকে তোমার মহান রবের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে ,

الَّذِي خَلَقَكَ فَسَوَّاكَ فَعَدَلَكَ
৭) যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন , তোমাকে সুঠাম ও সুসামঞ্জস্য করে গড়েছেন

فِي أَيِّ صُورَةٍ مَّا شَاءَ رَكَّبَكَ

৮) এবং যে আকৃতিতে চেয়েছেন তোমাকে গঠন করেছেন ৷

كَلَّا بَلْ تُكَذِّبُونَ بِالدِّينِ

৯) কখনো না, বরং ( আসল কথা হচ্ছে এই যে ) , তোমরা শাস্তি ও পুরস্কারকে মিথ্যা মনে করছো৷

وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ
১০) অথচ তোমাদের ওপর পরিদর্শক নিযুক্ত রয়েছে ,

كِرَامًا كَاتِبِينَ
১১) এমন সম্মানিত লেখকবৃন্দ ,

يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ
১২) যারা তোমাদের প্রত্যেকটি কাজ জানে৷

إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ
১৩) নিসন্দেহে নেক লোকেরা পরমানন্দে থাকবে

وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٍ
১৪) আর পাপীরা অবশ্যি যাবে জাহান্নামে ৷

يَصْلَوْنَهَا يَوْمَ الدِّينِ
১৫) কর্মফলের দিন তারা তার মধ্যে প্রবশ করবে

وَمَا هُمْ عَنْهَا بِغَائِبِينَ
১৬) এবং সেখান থেকে কোনক্রমেই সরে পড়তে পারবে না৷

وَمَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الدِّينِ
১৭) আর তোমরা কি জানো , ঐ কর্মফল দিনটি কি ?

ثُمَّ مَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الدِّينِ
১৮) হাঁ , তোমরা কি জানো , ঐ কর্মফল দিনটি কি ?

يَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئًا ۖ وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِّلَّهِ
১৯) এটি সেই দিন যখন কারোর জন্য কোন কিছু করার সাধ্য কারোর থাকবে না। ফায়সালা সেদিন একমাত্র আল্লাহর ইখতিয়ারে থাকবে৷

সূত্রঃ পবিত্র কুরআনের ধারাবাহিক বঙ্গানুবাদ ও আলোচনা পড়ুন এখানে
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×