somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম্পর্ক কথা (প্রথম কিস্তি)

২৭ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মহান স্রষ্টার এক অনুপম সৃষ্টি ‘সম্পর্ক’। একজন মানুষ আরেকজন বা বিভিন্ন জনের সাথে মিশে থাকে কেবল এই সম্পর্কের টানে। এই সৃষ্টি জগতের সবকিছুই একে অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই নিবির সম্পর্কের যে কোন এক জায়গায় সামান্য চির ধরলেও এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। এটা বিজ্ঞান স্বীকৃত। ঠিক একই ভাবে এই মানব সভ্যতা গড়ে ওঠা, বিকশিত হওয়া এবং টিকে থাকা সবটাই এই সম্পর্ক নির্ভর।
আজকের পৃথিবীতে যে অসহিষ্ণুতা, যে অস্থিরতা আমরা দেখতে পাই তাঁর পেছনেও রয়েছে সম্পর্কের টানা পোড়েন। একইভাবে পারিবারিক অস্থিরতা, সামাজিক অবক্ষয়, হিংসা, মারামারি, খুন সব কিছুর পিছনে একটাই প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। আর তা এই সম্পর্কের অবনতি বা সম্পর্ক হীনতা।

সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই বোঝা প্রয়োজন সম্পর্ক কি? সম্পর্ক একটিমাত্র শব্দ হলেও এর ব্যাপ্তি অনেক। অনেকগুলি ইতিবাচক দিক একত্রীত হলেই এই শব্দটি পূর্ণতা পায়। দায়িত্ববোধ, মমত্ব, আন্তরিকতা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা বোধ এই সব উপাদানের সাথে যখন কর্তৃত্ব যোগ হয় তখনই একটি সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক সৃষ্টির সকল উপাদানের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল এই সমান কর্তৃত্ব উপাদানটি। যখন দুজন বা ততোধিক ব্যক্তির নিজেদের মধ্যে সমান কর্তৃত্বের অধিকারী হয় তখন তাদের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং সুস্থ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সমান কর্তৃত্ব হল সেটাই, যেখানে দুজন দুজনকে সমানভাবে শাসনের অধিকার রাখে। এটা মা-সন্তানের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। হতে পারে প্রায়োগিক ক্ষেত্রে উভয়ের শারীরিক এবং মৌখিক ভাষা ভিন্ন হবে কিন্তু উদ্দেশ্য একই থাকবে এবং একই সাথে উভয়কেই সন্তুষ্ট চিত্তে এই কর্তৃত্ব মেনে নিতে হবে। তখনই কেবল আমরা একে একটি সুস্থ সম্পর্ক বলতে পারব।
যেমন ধরুন, মা তাঁর ছেলেকে আদেশ দিলেন নির্দিষ্ট একটি মেয়েকে বিয়ে করতে। এটা তাঁর কর্তৃত্ব প্রয়োগের উদাহরণ। কিন্তু ছেলে সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছে না তখন সে তাঁর কর্তৃত্ব কি করে প্রয়োগ করবে? একটা সুস্থ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ছেলে তাঁর মা’কে বুঝিয়ে শুনিয়ে। অনুরোধ উপরোধের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে অথবা মা তাকে বুঝিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে ছেলেকে রাজি করাবেন। যেখানে দুজনই জিতে যাবে। আর তা না করে যদি যে কোন একজন নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং নিজের সিদ্ধান্ত অন্যের উপর চাপিয়ে দেন তাহলে বুঝতে হবে তাদের মাঝে সুস্থ সম্পর্ক নেই। যা সম্পর্ক হীনতারই নামান্তর মাত্র।

একটু লক্ষ করে দেখুন, পৃথিবীর সবথেকে মজবুত সম্পর্ক থেকে শুরু করে সব থেকে ঠুনকো, কোনটাই মানুষের স্থাপিত নয়। সবটাই মহান স্রষ্টা প্রদত্ত। যেমন মা-সন্তানের সম্পর্ক থেকে শুরু করে সাধারণ বন্ধুত্ব। সম্পর্কগুলো চাইলেই যে কেউ স্থাপন করতে পারে না। হয়ে যায়। কখন কিভাবে, কার সাথে কার পূর্বে তা জানার কোন উপায় নেই। অথচ এই সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার বা টানা পোড়েনের দায় পুরোটাই সম্পর্কযুক্ত মানুষের।

মানুষের দায়িত্ব হল মহান আল্লাহ্‌ প্রদত্ত অসংখ্য নিয়ামতের মত এই নিয়ামতটিরও পরিচর্যা করা। যত্ন নেয়া। আমরা শরীরের যত্ন নেই। কারণ জানি যত্ন না নিলে শরীর অসুস্থ হবে। আমরা সম্পদের যত্ন নেই। কারণ জানি, যত্ন না নিলে সম্পদ নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা কি সম্পর্কের যত্ন নেই? নেই না। কারণ আমরা ভাবি সম্পর্ক স্থায়ী।
ফলে আমাদের সম্পর্কের সুতো গুলো ক্রমশ ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমরা একলা হয়ে পড়ছি। ঘরে –বাইরে সর্বত্র। যার ফলে এক সময় অনেক যত্ন নেয়া স্বাস্থ্য-সম্পদ সব কিছুই হাড়িয়ে ফেলছি। সম্পর্ক যেমন একের উপর নির্ভর করে না তেমনি একের যত্নেও এটি সুস্থ থাকে না। সম্পর্কযুক্ত প্রত্যেককেই সমান যত্নে একে লালন করতে হয়। চলবে………………
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×