
২২ জুলাই ২০২৩ মাত্র ১০ দিন আগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারির প্রধান ডা. তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ছয় বছর বয়সী শিশুর গলার সমস্যায় অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলেও তার তলপেটে অপারেশন করার অভিযোগ ওঠে।সেই একই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এর দশ দিন বাদেই ২ আগস্ট, ২০২৩তারিখে ভুল চিকিৎসায় ছয়মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল!
কি অদ্ভুত ঘটনা! প্রথমোক্ত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার তদন্ত চলছে সেই অবস্থায় ঐ চিকিৎসক কিভাবে তার চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা কার্যক্রম থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা নিলেন না? তার মানে কি; ওটা কি তাহলে নামের তদন্ত কমিটি ছিল?
বরিশাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার দুরবস্থা চলছে বহুদিন যাবত। সংক্ষেপে 'শেবাচিম' বলা এই হাসপাতালে সেবা গ্রহন করতে আসা অনেকের মুখে একে 'শোচনীয়' বলতে শোনা যায়। একের পর এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছর দুদক অভিযান চালায়। যদিও তাঁরা নিজেরাই অভিযান চালাতে গিয়ে বাধা এমনকি হুমকির স্বীকার হন। যা এর শোচনীয়তার মাত্রাই নির্দেশ করে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত“অভিযানে গিয়ে হুমকির মুখে দুদক টিম” শিরোনামে একটি খবরে জানা যায়, “বরিশালে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে অভিযান চালাতে গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষসহ অন্যদের বাধার মুখে পড়ে দুদক টিম। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়।
হাসপাতাল এবং কলেজে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করা, হাসপাতালের চেয়ে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুদক টিমকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কলেজ অধ্যক্ষ।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত দুদক বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজকুমার সাহার নেতৃত্বে ৫ জনের একটি টিম এ অভিযান চালান। অভিযানে অভিযোগের সত্যতাও পায় দুদক।
জানা গেছে, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন ৩-৪শ রোগী দেখেন। এমনকি সরকার নির্ধারিত সময় সকাল ৮টায় অফিসেও তারা আসেন না।“
যদিও পরবর্তীতে এর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে অবস্থার যে পরিবর্তন হয় নি তা বোঝা যায় গত ১৫ মে ২০২৩ তারিখে সময় টিভির"মধ্যরাতে হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ" শিরনামের এই প্রতিবেদনে। যেখানে দেখা যায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাতে মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে বিছানার চাদর টানিয়ে ঘুমচ্ছেন নার্সরা। দরজার সামনে অপেক্ষায় তাদের রোগী ও স্বজনরা। শুধু মহিলা ওয়ার্ডেই নয় অন্যান্য ওয়ার্ডেও একই অবস্থা।
ডাকাডাকি করেও প্রয়োজনে পাশে পান না নাসর্দের। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার দায়সারা জবাব হাসপাতাল প্রশাসনের।
প্রশ্ন হচ্ছে অভিযোগটা করবে কে? আর কার কাছেই বা করবে? যেখানে দুদক টিমকে পর্যন্ত দেখে নেওয়ার হুমকি দেন খোদ কলেজ অধ্যক্ষ। অনেক দিন ধরেই এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের বিস্তর অভিযোগ। আশা করছি কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




