somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাদের জন্য?

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বলা হচ্ছে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অথচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে মোটর সাইকেল এবং তিন চাকার যান অর্থাৎ সিএনজি। সাধারণ মানুষ যে গন পরিবহনে চড়ে সেই গাড়ির টোলের হার ১৬০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই চালকরা এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এড়িয়ে চলবেন। প্রথমত টোলের বিষয় আছে দ্বিতীয়ত দুই মিনিট পর পর যাত্রী ওঠানামা করানো যাবে না। আবার এই রুটে চলাচলের জন্য ঢাকার চাকা জাতীয় কোন বাস রুটের ব্যবস্থাও করা হয় নি। তার মানে দাঁড়ালো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি এক কথায় সাধারণ মানুষের জন্য নয়। সরকার কেবলমাত্র নিজস্ব গাড়ীর মালিক এবং যারা চার চাকার গাড়ী ব্যবহারের ক্ষমতা রাখেন তাদের জন্যই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করেছেন। তা তারা করতেই পারেন। বাংলাদেশের মানুষ এখন দুই দলে বিভক্ত এক রাজা দুই প্রজা। এখানে কিছু সংখ্যক(কয়েক লক্ষ) রাজা আছেন, বাকি বিশ কোটি প্রজা।
এই রাজাদের সুযোগ সুবিধা সকল সরকার সর্বদাই বেশ আন্তরিকতার সাথেই দেখে থাকেন। কারণটা হল আজকের ক্ষমতাধরদের তো কাল ক্ষমতাহীন রাজায় পরিণত হতেই হবে। কাজেই রাজাদের সকল বন্দবস্ত সুচারুরূপে হওয়া চাই। বুদ্ধিমানেরাই আগামীকালের কথা ভাবে। আর সে ভাবনা থেকেই তারা বলেন, "বাজার সিন্ডিকেটে হাত দেয়া যাবে না"। ঠিকই তো বলেন, কেন হাত দিবেন তারা তারাই তো! তাই না?
বাংলাদেশের উন্নয়নের রোড ম্যাপের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন। সে রোড ম্যাপে রাজার স্থান কতটা আর প্রজার স্থানই বা কতটা। এখানে রাজাদের কাতারে নিত্য নতুন নাম যোগ হচ্ছে। তাদের সুযোগ সুবিধা তো সরকারকেই দেখতে হবে। তাই না? এ দেশে রাজার যে বাম্পার ফলন ঘটছে তা সরকারীভাবেই স্বীকৃত।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী,
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিল ৫ জন
১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়।
১৯৮০ সালে ছিল ৯৮
১৯৯০ সালে ৯৪৩
১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪
২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২
২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭
২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩
২০২০ সালে ৯৩ হাজার ৮৯০।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে এর সংখ্যা দাড়ায় ১ লাখ ১৯৭৬ ।
সুত্র-যুগান্তর

১৯৭২ থেকে ২০২২ পঞ্চাশ বছরে পাঁচ জন থেকে এক লাখ উনিশ শত ছিয়াত্তর! অর্থাৎ এ দেশে রাজার বাম্পার ফলন অব্যাহত আছে! তবে এ হার বুঝতে বিআরটিএ'র এই তথ্যটি আরেকটু বেশি সহায়ক। বিআরটিএ'র তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ঢাকায় মোট গাড়ির ১৮ শতাংশই প্রাইভেট কার। যার পরিমাণ তিন লাখ ৮ হাজার ৮৬০টি। পক্ষান্তরে গন পরিবহনের সংখ্যা মাত্র- ৩৬ হাজার ৯৭৮টি, যা মোট গাড়ির ২ শতাংশ। সূত্র-সারাবাংলা

দেশে রাজার সংখ্যা বাড়ছে তাতে কি প্রজাদের জ্বলুনি হচ্ছে? এ প্রশ্নটা তো আসবেই। আর সেটা যে সবেগে আমাদের দিকেই আসবে তা বলাই বাহুল্য। তাই আগে থেকেই উত্তরটা দিচ্ছি। রাজার সংখ্যা বাড়ুক, কোন সমস্যা নেই। সরকার রাজাদের আরও বেশি সুযোগ সুবিধা করে দিন তাতেও সমস্যা নেই। এমনকি দেশটাকে তাদের জন্য স্বর্গ বানিয়ে দিন তাতেও প্রজাদের কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হল এই রাজা হওয়ার প্রক্রিয়াটা যে একেবারেই প্রজা শোষিত হয়ে যাচ্ছে। আমরা তো ব্রিটিশদের অধীনে নেই! পাকিস্তানের অধীনেও নেই। আপনাদের ভাষায় স্বাধীন। যদি তাই হয় তাহলে কেন এত বেশি অসহায় সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে জায়গা নেই, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেই, ওষুধের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, খাদ্য দ্রব্যের দাম বাড়ছে, জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। উৎপাদক যোগান হারাচ্ছে। সব যে মধ্য স্বত্বভোগীর পকেটে চলে যাচ্ছে। রাজার ছত্রছায়ায় নতুন রাজা তৈরি হচ্ছে, দ্রুতই রাজারা মহারাজা হয়ে উঠছে। সমস্যাটা সেখানে। সাধারণ মানুষের জীবনমান ক্রমান্বয়ে নিচে মানছে। সমস্যাটা সেখানে।
আরও বেশি সমস্যা হচ্ছে যখন দেখছি সাধারণের অর্থে অসাধারনদের জন্য করা উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে জন স্বার্থে বলে চালান হচ্ছে। অথচ সেটা জনস্বার্থেই হওয়া উচিত ছিল। এই প্রতারণাটা কেন? এটা বন্ধ হোক। অথবা এবার জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজানো হোক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৩
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×