এক সন্ধায় এক ভদ্রমহিলা তাঁর কয়েক ঘন্টার যাত্রা বিরতিতে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন। সময় কাটানোর জন্য তিনি দোকান থেকে একটি বই আর এক প্যাকেট চিপস কিনে নিরিবিলি জায়গা দেখে বসে পড়লেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বইয়ের মধ্যে তাঁর মন বসে গেল। কিন্তু আঁড়চোখে দেখলেন, তার পাশে বসা লোকটি এর মধ্যেই দু-একটি চিপস নিয়ে নিল, অনেকটা উদ্ধত হয়েই। ভদ্রমহিলা ঝামেলা এড়ানোর জন্য দেখেও না দেখার ভান করলেন। তিনি চিপস চিবোতে চিবোতে বই পড়ছিলেন আর মাঝেমধ্যে ঘড়ি দেখছিলেন, আর উদ্ধত ‘চিপস চোরটি’ তার চিপসের প্যাকেট খালি করতে লাগল। ‘নিতান্ত ভদ্র না হলে আমি তার নাকটাই ফাটিয়ে দিতাম’ বিরক্ত হয়ে মনে মনে ভাবলেন তিনি।
প্রতিবার তিনি যখন একটি চিপস নিচ্ছিলেন, লোকটিও একটি নিচ্ছিল। যখন সর্বশেষ চিপসটি বাকি ছিল, তিনি ভাবলেন, দেখি লোকটি এবার কি করে। একটি ছোট্ট লাজুক হাসি দিয়ে লোকটি চিপসটি হাতে নিল এবং মাঝখানে ভাগ করে একভাগ ভদ্রমহিলার দিকে বাড়িয়ে দিল। ‘কি অভদ্র আর গোঁয়ার লোকরে বাবা!’- অর্ধেক চিপস কেড়ে নিতে নিতে ভাবলেন তিনি। একটু কৃতজ্ঞতাও জানালো না!
এতক্ষণের অন্যমনস্কতায় হঠাত করে ভদ্রমহিলা খেয়াল করলেন, তাঁর বিমান ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। তিনি তার জিনিসপত্র নিয়ে গেটের দিকে রওনা দিলেন, ‘উদ্ধত চোরের’ দিকে ফিরেও তাকালেন না।
বিমানে উঠে তিনি আরাম করে তাঁর সিটে বসলেন। বইয়ের আর অল্প কয়েক পৃষ্ঠা বাকি ছিল। বই নিতে ব্যাগে হাত দিয়ে অবাক হয়ে দেখলেন, তার চিপসের প্যাকেটটা ওখানে অক্ষত পড়ে আছে। ‘যদি এটা আমার হয়,’ তিনি বিড়বিড় করে বললেন, ‘তাহলে এতক্ষণ যা খেলাম তা ছিল লোকটির আর সে আমার সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করছিল’। তিনি বুঝতে পারলেন, ভূল স্বীকার করার জন্যে একটু দেরীই হয়ে গেল। মনে মনে বললেন, ‘আমি নিজেই উদ্ধত আর অকৃতজ্ঞ চোর ছিলাম’।
(সংগৃহীত এবং অনূদিত)