somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষুদ্র, কিন্তু তুচ্ছ নয় - ১

২৬ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(হয়ত খুব ক্ষুদ্র, নিত্যদিনের ছোটখাটো বিষয়, তারপরেও আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো, তাই লিখা)

‘আপনার মত শিক্ষিত লোকের কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি’ – এটি বহুল ব্যবহৃত একটি বাক্য। শিক্ষিত লোকমাত্রই আমরা আশা করি তিনি তাঁর শিক্ষা-জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনা কাজে লাগিয়ে সমাজের অন্যদের চেয়ে আচরণে-বিনয়ে-ভদ্রতায়-মূল্যবোধে এগিয়ে থাকবেন।

দেশে শিক্ষার হার বাড়ছে, পাশের হার বাড়ছে, বাড়ছে জিপিএ ফাইভের সংখ্যা। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উচ্চশিক্ষিতের হার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন ছাত্র-ছাত্রীদের জায়গা দিতে হিমসিম খাচ্ছে, যার ফলে বাড়ছে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে দেশের বাইরে যাচ্ছেন উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। কেউ ফিরে আসছেন, অনেকেই আসছেন না। যারা দেশের বাইরে থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আসেন, তাঁদের কাছে প্রত্যাশা থাকে আরো বেশি।


কিন্তু বাস্তবতা আসলেই কি তাই? বরং তার উলটো। আমাদের শিক্ষিতদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় দম্ভ, বড়াই আর অপরকে ছোট করার হীন প্রয়াস। আমি বাকি সবার চাইতে বেশি শিক্ষিত, বেশি জানি – সেটা জাহির করার একমাত্র উপায় অন্য সবাইকে ছোট করা। আমি ছাড়া বাকি সব শিক্ষক ভূল পড়ান, কিংবা ঠিকমত পড়াতে পারেন না/ অন্য ডাক্তার যে চিকিতসা দিয়েছেন সেটা পুরোটাই ভূল, আমি নতুন করে ঔষধ দিব, সেগুলোই ঠিক!

আশেপাশে অনেক উচ্চশিক্ষিতদের দেখে প্রথম প্রথম অবাক হতাম, যাঁদের জীবনবৃত্তান্তে যোগ হয়েছে গোটাকয়েক সনদ, শুধু দেশেরই নয়, বিশ্বের নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয় চষে এসেছেন। কিন্তু আচরণে বিনয়ের ছিটেফোটা নেই, আছে হামবড়া ভাব। অন্যের পেছনে লেগে থাকা, দলীয় লেজুড়বৃত্তি, অবৈধ অর্থের বাহাদুরী – যা কিনা তাঁদের বিশাল জ্ঞানের সাথে ঠিক যায়না।

পরে ভেবে বের করলাম, অবাক হওয়ার কিছু নেই। একটা সময় ছিল, যখন মানুষ বিদ্যালয়ে যেত জ্ঞান অর্জন করতে, মূল্যবোধ শিখতে, আচরণ-সৌজন্যবোধ শিখতে। এখন আর সেদিন নেই। বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের শিখিয়ে দেওয়া হয় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে, ক্লাসে ফার্স্ট হতে হবে। বাজারে অমুক সাব্জেক্টের কদর বেশি, এটা পড়লে চাকরী নিশ্চিত, তাই এই বিষয়ে চান্স পেতেই হবে। সামাজিকভাবে সম্মানজনক, আর্থিকভাবে লাভজনক চাকরী নিশিচত করতে যা যা সনদের দরকার হয় সেগুলো যেভাবেই হোক যোগাড় করতেই হবে।

এতসব সনদ, চাকরী, সামাজিক মর্যাদা, আর্থিক নিশ্চয়তা- এসবের মধ্য মূল্যবোধ, বিনয়, সৌজন্যবোধ চর্চার যায়গা কোথায়?! যার ফলে, অগুনিত সনদ আমাদের চারিত্রিক উতকর্ষতা ঘটাতে ব্যর্থ হয়, কিন্তু ক্ষনিকের জন্য হয়ত ঢেকে রাখে আমাদের আসল রূপ। আমরা সমাজে চলি শিক্ষিত ভদ্রলোকের বেশে, সনদের মুখোশ পড়ে। কিন্তু যখনই দরকার হয় কিংবা সুযোগ আসে, সব উলটে, ফুঁড়ে বের হয় সনদের নিচে লুকিয়ে থাকা আমাদের আসল রূপ, যেটা আমরা পেয়েছি আমাদের পরিবারের কাছ থেকে। এতগুলো বছর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়ে, বস্তাভর্তি সনদ যোগাড় করেও যার বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি।

আমি শিক্ষিত বলে আমার কাছে ভদ্রতা, আচরণ, বিবেচনাবোধ আশা করছেন? – সেটা আপনারই ভূল।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×