somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড, ১৭০ বছর বয়েসী ২,৩১২ টি রেইনট্রি আর শবাহারীদের আকাশচুম্বী লোভ!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বখ্যাত কবি এলেন গিনসবার্গ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমবংগে এসেছিলেন। উঠেছিলেন সুনীল গংগীপাধায়ের বাড়িতে। তিনি গিয়েছিলেন যশোর রোড ধরে অধিকৃত বাংলাদেশের সীমান্তে, দেখেছিলেন বাপদাদার ভিটে একবস্ত্রে ফেলে আসা একটুকরো নিরাপদ ঠাঁইয়ের সন্ধানে হত্যভাগ্য আবালবৃদ্ধবনিতার সীমাহীন যাতনা। সেই অবর্ননীয় দৃশ্যাবলী নিয়েই তার কালজয়ী কবিতা September in Jessore Road লেখা।

প্রাচীন এই রোডটি হল যশোর শহরে শুরু হয়ে বেলাপোল হয়ে কোলকাতা পর্যন্ত মহাসড়কটি। বিজয়ের পর থেকেই এই মহাসড়কের ওপর চাপ বাড়তে থাকে, দুদেশের মধ্যে বানিজ্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার জন্যে। সড়কটির প্রস্থ দ্বিগুণ করা অতি প্রয়োজনীয় হয়ে পরে।

পশ্চিমবংগ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় মহাসড়কটির দু'পাশের প্রাচীন বৃক্ষগুলো কেটে রাস্তা সম্প্রসারণ করার।

পশ্চিম বংগে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। জনরোষকে সম্মান জানিয়ে পশ্চিমবংগ সরকার তাদের সিদ্ধান্ত পালটে সব গাছগুলো রেখেই মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ সমাধা করে।


যশোর রোডের বাংলাদেশ অংশে রেইনট্রি (স্থানীয় নাম রেন্টি এবং রেন্টিকড়ই) আছে ২,৩১২টি, যেগুলোর বয়স ১৭০ বছর। এই মহাসড়কে যারা ভ্রমণ করেন নি তাদেরকে বোঝাবার মত শব্দ সম্ভার সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেননি যে কী অপরূপ, অতীন্দ্রিয়, অপ্রাকৃত, অতিপ্রাকৃত পরিবেশ এই প্রাচীন জীবন্ত পুরাকীর্তিগুলো সৃষ্টি করে রেখেছে সেখানে।

সম্প্রতি একটি সরকারী সিদ্ধান্ত এসেছে যে যশোর রোডের বাংলাদেশের অংশ সম্প্রসারণ করে এটাকে চারলেনের মহাসড়কে উন্নত করা হবে,

এবং,

সে জন্যে একশো সত্তুর বছর বয়সী দুই হাজার তিনশো বারোটি গাছ কেটে ফেলা হবে।

যশোর রোডের ভারতীয় অংশের গাছগুলো সেখানকার আম-জনতাই প্রতিবাদী হয়ে বাঁচিয়েছিল। আমরাও কি পারিনা গাছগুলো বাঁচাতে?



যারা যারা ভাবছেন যশোর রোডের ১৭০ বছর বয়সী ২,৩১২ টি রেইনট্রি আমরা বাঁচাতে এগিয়ে আসবোনা বা পারবোনা, তাদেরকে আমাদের এ ধরনের এবং এর চাইতে কঠিন কয়েকটি অর্জন মনে করিয়ে দিচ্ছিঃ

১। সেনা সমর্থিত সরকারের সময় উপদেষ্টা সফি সামী সাভারের সি আর পি আত্মসাৎ করে ফেলেছিল প্রায়। কলম যোদ্ধাদের নিরলস, নির্ভয়, দুঃসাহসিক প্রচেষ্টায় দি এয়া পি বেঁচে যায়। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল Arif Jebtik.

2. চট্টগ্রামের সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন মেয়র মহিউদ্দিন ঐতিহ্যবাহী, বিপ্লবী প্রীতিলতার স্মৃতিবিজড়িত অপর্ণা চরণ স্কুল গ্রাস করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুরো দেশ সোচ্চার হয়ে ওঠে। ব্লগগুলো গর্জে
ওঠে। ১০৩ বছর বয়সী বিপ্লবী বিনোদ বিহারী রাস্তায় নেমে আসেন, বক্তব্য দেন।

দেশের বাইরের বাংগালী ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিসটরা সোচ্চার হয়ে ওঠে। অস্ট্রেলিয় বাংগালীরা অস্ট্রেলিয় সরকারকে অনুরোধ করে এব্যাপারে কিছু করতে।

কূটনৈতিক চ্যানেলে বাংলাদেশ সরকারের সাথে তারা যোগাযোগ করে অনুরোধ করেস্কুলটিকে বাঁচাতে। তার সাথে যোগ হয় আভ্যন্তরীণ দাবী।

স্কুলটি বেঁচে যায়।

৩। ধর্ষক পরিমল জয়ধরের প্রচন্ড শক্তিশালী যোগাযোগ থাকা স্তত্বেও সে এখন ১৪ শিকের ভেতরে। এটা সম্ভব হয় শুধুমাত্র ভিকিদের একটি ফেইসবুক পেইজ খোলার কারনে, যে পেইজে প্রথম দিনই লাইক পরে ১০ হাজার।

৪। বি আর টি এ একবার ব্যান্ড উইডথের দাম বাড়াতে চেয়েছিল। ফেইসবুক এবং ব্লগে প্রতিবাদের বন্যা বয়ে যাবার কারনে বি আর টি এ তাদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেনি।

যশোরের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পর্যায়ের ক্ষমতাশালীরা।

এই ফেইসবুকে আমরা সোচ্চার হলে:

১। জনমত গঠনে সহায়ক হবে তা।

২। কেন্দ্রিয় সরকারের গোচরীভূত হবে তা এবং সরকার এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।

৩। জনমত গঠন হলে মানুষরা এগিয়ে আসবে, প্রতিবাদ করবে।

৪। যশোর রোডে বৃক্ষগুলোকে ঘিরেও প্রতিবাদ হবে যা পরিবেশবাদী লবিংয়ের পথ প্রশস্ত হবে।

১৭০ বছর বয়সী ২ হাজার ৩শো ১২ টি গাছ আপনি সোচ্চার হলে রক্ষা পেতে পারে। কারো মানসিক বৈকল্য বা সীমাহীন লোভকে যেকোন মূল্যে প্রতিহত করুন!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তুমি অথবা শরৎকাল

লিখেছেন আজব লিংকন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১০


রোদ হাসলে আকাশের নীল হাসে।
গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা মেঘ দল ব্যস্ত হয়ে
দূর সীমাহীন দিগন্তে ছুটে।

লিলুয়া বাতাসে তোমার মুখে এসে পড়া চুল আর
ঢেউ খেলানো আঁচলের সাথে—
কাশবনে সব কাশফুল নেচে যায়।
নিভৃতে একজোড়া অপলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

সেই ষাট সত্তর দশকের কথা বলছি- আমাদের শিক্ষা জীবনে এক ক্লাস পাস করে উপরের ক্লাসে রেজাল্ট রোল অনার অনুযায়ী অটো ভর্তি করে নেওয়া হতো, বাড়তি কোনো ফিস দিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন্দির দর্শন : ০০২ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি পূজা মন্ডপ ও নাচঘর বা নাট মন্দির

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের জমিদার বাড়িগুলির মধ্যে খুবই সুপরিচিত এবং বেশ বড় একটি জমিদার বাড়ি। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে একটি লেখা আমি পোস্ট করেছিলাম সামুতে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কলকাতা থেকে রামকৃষ্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদিন সবকিছু হারিয়ে যাবে

লিখেছেন সামিয়া, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



একদিন সবকিছু ফিকে হয়ে যাবে,
সময়ের সাথে হারিয়ে যাবে স্মৃতি।
মনে থাকবে না ঠিক ঠাক কি রকম ছিল
আমাদের আলাদা পথচলা,
হোঁচট খাওয়া।
মনে থাকবে না
কাছে পাওয়ার আকুতি।
যাতনার যে ভার বয়ে বেড়িয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে না'ফেরা অবধি দেশ মিলিটারীর অধীনে থাকবে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৯



একমাত্র আওয়ামী লীগ ব্যতিত, বাকী দলগুলো ক্যন্টনমেন্টে জন্মনেয়া, কিংবা মিলিটারী-বান্ধব।

আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ অনেকটা সমর্থক শব্দ ছিলো: বাংলাদেশ ব্যতিত আওয়ামী লীগের প্রয়োজন নেই, আওয়ামী লীগ ব্যতিত বাংলাদেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×