somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইফেল টাওয়ার বিক্রি (দুইবার); বিশ্বের সেরা বাটপার - পর্ব ১

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি সহকারে পুরো পোষ্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আসুন বিশ্বের সব থেকে বড় বাটপার বা কন আর্টিষ্টদের একজনের সাথে আজ পরিচয় করিয়ে দেই। ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন এনার নাম হচ্ছে 'ভিক্টর লুস্টিক' যাকে বলা হয় "The man who sold the Eiffel Tower. Twice."

জনাব ভিক্টর সাহেব যৌবন কাল থেকেই পেশা হিসাবে বাটপারির সাথে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ ভিক্টর সাহেব আবার বাটপারি করতেন বাটপারদের সাথে। তাঁর বাটপারির অন্যতম ট্রেডমার্ক হচ্ছে 'মানি প্রিন্টিং মেশিন' যা কিনা তিনি বিক্রি করতেন অন্য বাটপারদের কাছে ৩০০০০ ডলারে। এই মেশিনে নাকি ১০০ ডলারের বিল প্রতি ৬ ঘন্টায় ছাপাতে পারে বলে তিনি তাঁর ক্লায়েন্টদের বুঝ দিতেন, এবং তাদের সামনেই ছাপিয়ে দেখাতেন। কেনার পর ১২ ঘন্টায় ক্লায়েন্টরা দেখতো ২ টা সত্যিকারের ১০০ ডলারের বিল বের হয়েছে। কিন্তু এরপর শুধু সাদা কাগজ বের হতো। ততক্ষণে ভিক্কট সাহেব চম্পট মারতেন।

ভিক্টরের সব থেকে বড় ধান্দাবাজির সুযোগ আসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে। সন ১৯২৫, ফ্রান্স সদ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে রিকাভারি পেয়েছে, এবং প্যারিসের ইকোনমি চাঙ্গা হতে শুরু হয়েছে, যা ছিল ভিক্টরের মতো কন আর্টিস্টের জন্য উপযুক্ত সময়। ভিক্টর একদিন পেপারের নিউজে দেখতে পেলেন 'আইফেল টাওয়ার' এর ম্যান্টেনেন্স নিয়ে, যেখানে আইফেল টাওয়ার কে ইকোনমির জন্য বোঝা হিসাবে দেখানো হয়েছে। ভিক্টর এর মাঝেই তাঁর ধান্দাবাজির ছক কেটে ফেললেন। সে প্যারিসের বড় বড় ৬ ভাঙ্গারী ব্যাবসায়ী কে Hôtel de Crillon তে ইনভাইটেশন পাঠায়। সেই সময় এই হোটেল ছিল নামকরা হাতেগোনা কিছু হোটেলগুলোর একটি। সেখনে মিটিং এ ভিক্টর নিজেকে 'Posts and Telegraphs' মন্ত্রণালয়ের ডিপুটি জেনারেল হিসাবে পরিচয় দেয় এবং তাদেরকে বলে যে তাদেরকে পছন্দ করা হয়েছে তাদের সততা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে।

সে মিটিং এ জানায় যে আইফেল টাওয়ার এতো পুরোনো হয়ে গিয়েছে যে শহরের পক্ষে তা আর মেন্টেনেন্স করা সম্ভব নয়। আর তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এর ভগ্নাবশেষ বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। সাথে সে এও জানায় যে সরকার এই বিষয়টি অতিরঞ্জিত হওয়ার ভয়ে গোপন রেখেছে এবং যথাসময়ে জানানো হবে। আর পাশাপাশি সরকার তাকে দায়িত্ব দিয়েছে এই ৬ জনের মধ্যে থেকে একজন ডিলার পছন্দ করার জন্য। এরপর ভিক্টর সেই ৬ জনকে তাঁর ভাড়া করা লিমুজিনে চড়িয়ে আইফেল টাওয়ারে নিয়ে যায় ইনসপেকশনের জন্য। পাশাপাশি সে এও যাচাই করে যে এই ৬ জনের মধ্যে কে বেশী উৎসাহী বা কাকে 'মামা' বানানোটা সহজ হবে। ভিক্টর তাদেরকে জানিয়ে দেয় যে এরপরদিন সবাইকে বিড করতে হবে, এবং একই সাথে মনে করিয়ে দেয় যে বিষয়টা একেবারেই স্পর্ষকাতর এবং সরকারিভাবে গোপনীয়। ভিক্টর এরই মধ্যে ঠিক করে ফেলেছিল যে সে 'এন্ড্রে পজন' নামের একজনের অফারই গ্রহণ করবে। পজন ব্যাসায়িক দিক থেকে একটু পিছিয়ে পড়েছিল যার কারণে সে মনে করেছিল যে আইফেল টাওয়ারের ডিল তাকে সবার নজরে নিয়ে আসবে।

কিন্তু পজনের স্ত্রী পুরো বিষয়টাই সন্দেহের চোখে দেখলো। আর ভিক্টর তা বুঝে উঠার পর পরপরই পজনের কাছে 'স্বীকার' করলো যে সে আসলে করাপটেড মন্ত্রী, এবং সে সরকারের এই অফার শুধুমাত্র তাকেই দিতে পারে যদি সে কিনা ভিক্টরকে ঘুষ দেয়। পজন এতে ডাইভার্টেড হয়ে ভিক্টরকে ঘুষ দিয়েই আইফেল টাওয়ারের দ্বায়িত্ব নিতে চাইলো। এতে ভিক্তর আইফেল টাওয়ারের উপর চার্জ করা দামও পেল সাথে ঘুষের টাকাও। অতঃপর চম্পট দিলো। পজন এই ঘটনায় এতোটাই হতবাক, লজ্জিত, অপমানিত হলো যে সে পুলিশে কমপ্লেইন পর্যন্ত কারার সাহস করলো না।

একমাস পর ভিক্টর আবার প্যারিসে ফিরে এসে আবার ৬ জন ভাঙ্গারি ব্যাবসায়ীকে দামি হোটেলে তলব করে মিটিং করলো, এবং আইফেল টাওয়ার আরো একবার বিক্রি করার চেষ্টা করলো। এইবার তাঁর পছন্দ করা ভিকটিম ফাইনাল ডিলিংস এর আগেই পুলিশের কাছে গেল কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পরার আগেই ভিক্টর চম্পট দিতে সক্ষম হয়েছিল।
পোর

আসুন বিশ্বের সব থেকে বড় বাটপার বা কন আর্টিষ্টদের একজনের সাথে আজ পরিচয় করিয়ে দেই। ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন এনার নাম হচ্ছে 'ভিক্টর লুস্টিক' যাকে বলা হয় "The man who sold the Eiffel Tower. Twice."

জনাব ভিক্টর সাহেব যৌবন কাল থেকেই পেশা হিসাবে বাটপারির সাথে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ ভিক্টর সাহেব আবার বাটপারি করতেন বাটপারদের সাথে। তাঁর বাটপারির অন্যতম ট্রেডমার্ক হচ্ছে 'মানি প্রিন্টিং মেশিন' যা কিনা তিনি বিক্রি করতেন অন্য বাটপারদের কাছে ৩০০০০ ডলারে। এই মেশিনে নাকি ১০০ ডলারের বিল প্রতি ৬ ঘন্টায় ছাপাতে পারে বলে তিনি তাঁর ক্লায়েন্টদের বুঝ দিতেন, এবং তাদের সামনেই ছাপিয়ে দেখাতেন। কেনার পর ১২ ঘন্টায় ক্লায়েন্টরা দেখতো ২ টা সত্যিকারের ১০০ ডলারের বিল বের হয়েছে। কিন্তু এরপর শুধু সাদা কাগজ বের হতো। ততক্ষণে ভিক্কট সাহেব চম্পট মারতেন।

ভিক্টরের সব থেকে বড় ধান্দাবাজির সুযোগ আসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে। সন ১৯২৫, ফ্রান্স সদ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে রিকাভারি পেয়েছে, এবং প্যারিসের ইকোনমি চাঙ্গা হতে শুরু হয়েছে, যা ছিল ভিক্টরের মতো কন আর্টিস্টের জন্য উপযুক্ত সময়। ভিক্টর একদিন পেপারের নিউজে দেখতে পেলেন 'আইফেল টাওয়ার' এর ম্যান্টেনেন্স নিয়ে, যেখানে আইফেল টাওয়ার কে ইকোনমির জন্য বোঝা হিসাবে দেখানো হয়েছে। ভিক্টর এর মাঝেই তাঁর ধান্দাবাজির ছক কেটে ফেললেন। সে প্যারিসের বড় বড় ৬ ভাঙ্গারী ব্যাবসায়ী কে Hôtel de Crillon তে ইনভাইটেশন পাঠায়। সেই সময় এই হোটেল ছিল নামকরা হাতেগোনা কিছু হোটেলগুলোর একটি। সেখনে মিটিং এ ভিক্টর নিজেকে 'Posts and Telegraphs' মন্ত্রণালয়ের ডিপুটি জেনারেল হিসাবে পরিচয় দেয় এবং তাদেরকে বলে যে তাদেরকে পছন্দ করা হয়েছে তাদের সততা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে।

সে মিটিং এ জানায় যে আইফেল টাওয়ার এতো পুরোনো হয়ে গিয়েছে যে শহরের পক্ষে তা আর মেন্টেনেন্স করা সম্ভব নয়। আর তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এর ভগ্নাবশেষ বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। সাথে সে এও জানায় যে সরকার এই বিষয়টি অতিরঞ্জিত হওয়ার ভয়ে গোপন রেখেছে এবং যথাসময়ে জানানো হবে। আর পাশাপাশি সরকার তাকে দায়িত্ব দিয়েছে এই ৬ জনের মধ্যে থেকে একজন ডিলার পছন্দ করার জন্য। এরপর ভিক্টর সেই ৬ জনকে তাঁর ভাড়া করা লিমুজিনে চড়িয়ে আইফেল টাওয়ারে নিয়ে যায় ইনসপেকশনের জন্য। পাশাপাশি সে এও যাচাই করে যে এই ৬ জনের মধ্যে কে বেশী উৎসাহী বা কাকে 'মামা' বানানোটা সহজ হবে। ভিক্টর তাদেরকে জানিয়ে দেয় যে এরপরদিন সবাইকে বিড করতে হবে, এবং একই সাথে মনে করিয়ে দেয় যে বিষয়টা একেবারেই স্পর্ষকাতর এবং সরকারিভাবে গোপনীয়। ভিক্টর এরই মধ্যে ঠিক করে ফেলেছিল যে সে 'এন্ড্রে পজন' নামের একজনের অফারই গ্রহণ করবে। পজন ব্যাসায়িক দিক থেকে একটু পিছিয়ে পড়েছিল যার কারণে সে মনে করেছিল যে আইফেল টাওয়ারের ডিল তাকে সবার নজরে নিয়ে আসবে।

কিন্তু পজনের স্ত্রী পুরো বিষয়টাই সন্দেহের চোখে দেখলো। আর ভিক্টর তা বুঝে উঠার পর পরপরই পজনের কাছে 'স্বীকার' করলো যে সে আসলে করাপটেড মন্ত্রী, এবং সে সরকারের এই অফার শুধুমাত্র তাকেই দিতে পারে যদি সে কিনা ভিক্টরকে ঘুষ দেয়। পজন এতে ডাইভার্টেড হয়ে ভিক্টরকে ঘুষ দিয়েই আইফেল টাওয়ারের দ্বায়িত্ব নিতে চাইলো। এতে ভিক্তর আইফেল টাওয়ারের উপর চার্জ করা দামও পেল সাথে ঘুষের টাকাও। অতঃপর চম্পট দিলো। পজন এই ঘটনায় এতোটাই হতবাক, লজ্জিত, অপমানিত হলো যে সে পুলিশে কমপ্লেইন পর্যন্ত কারার সাহস করলো না।

একমাস পর ভিক্টর আবার প্যারিসে ফিরে এসে আবার ৬ জন ভাঙ্গারি ব্যাবসায়ীকে দামি হোটেলে তলব করে মিটিং করলো, এবং আইফেল টাওয়ার আরো একবার বিক্রি করার চেষ্টা করলো। এইবার তাঁর পছন্দ করা ভিকটিম ফাইনাল ডিলিংস এর আগেই পুলিশের কাছে গেল কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পরার আগেই ভিক্টর চম্পট দিতে সক্ষম হয়েছিল।

ছবি সহকারে পুরো পোষ্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন

ফেইসবুকে প্রতিদিন এই সংক্রান্ত মজার মজার তথ্য পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন

এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটঃ ত্রিভকাল.কম
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×