somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোদির বিজয় ও একটি বিশ্লেষণ

২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভুমিকা
১.২৫ বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ ভারতে গত ১৬ মে পাঁচ সপ্তাহব্যাপী ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়- ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের বৈচিত্রতার মাত্রা অনেক বেশি। এখানে প্রেক্ষিত বিষয়গুলো হল বিশ্বাস, ধর্ম, ভাষা, আদর্শ, সংস্কৃতি ইত্যাদি।
এই নির্বাচনে বিজেপি জোট (টউঅ) ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৩৬ টি আসন পেয়েছে। যেখানে বিজেপি একা পেয়েছে ২৮২ টি আসন। সরকার গঠনে আসন প্রয়োজন ২৭২টি। ভারতীয় জনতা পার্টি একটি হিন্দু আদর্শবাদী দল। একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে বিজেপির মত সাম্প্রদায়িক দল কিভাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করল? তাও এক নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখে; যার বিরুদ্ধে গুজরাটে ২০০০ মুসলমান হত্যার অভিযোগ রয়েছে। মমতা ব্যানার্জির ভাষায় যাকে গুজরাটের কসাই বলা হয়। গোটা দুনিয়ায় এ নিয়ে বহু গবেষণা চলছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রদের অভিসন্দর্ভের বিষয়ও হবে।

রাজনৈতিক ভারসাম্যঃ
ভারতে গত দুই দশক ধরে আঞ্চলিক দলগুলোর প্রতিপত্তি ক্রমাগত বেড়েই চলছিল। বিপরীত দিকে কেন্দ্রীয় দলগুলোর অবস্থা ক্রমান্বয়ে ক্ষয় হচ্ছিল। এই বিপরীতমূখী ধারা ভারতের রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামোয় এক অভ’তপূর্ব ভারসাম্যহীন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ বিবেচনায় কেউ কেউ বলছেন সর্বভারতীয় দল হিসেবে বিজেপির উথ্থান ভারতের জাতীয় সংহতির জন্য কল্যানকর। তবে এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় বিবেচনার দাবী রাখে।বিজেপির ২৮২ জন লোক সভা সদস্যের মাঝে একজনও মুসলমান নেই। ৪৫ জন মন্ত্রীর মাঝে একজনের মুসলিম পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯৫২ সালের পর এবারই লোক সভায় সর্বনিম্ন মুসলিম সদস্য এসেছে। ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্ন এখানেও আছে। ভারসাম্যের কথা বলা হলেও সাম্প্রদায়িতকার যে দৈত্যের ঘাড়ে চেপে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তা নিষ্ক্রিয় রাখার মত প্রায় অসম্ভব কাজটি করতে না পারলে প্রতিশ্র“তি ও সম্ভাবনাগুলো সব আশংকা ও হুমকী হয়ে আসবে। নিউ স্টেটসম্যান পত্রিকার ভারতীয় প্রতিনিধি উইলিয়াম ডারলিম্পল লেখেনঃ ‘ভারতের জনগন একটি মারাত্মক জুয়া খেলায় মেতে উঠেছে। তারা মোদিও মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা বিষয়ক অবস্থানকে পাশ কাটিয়ে তার মধ্যে একজন শক্তিশালী ও সিদ্ধান্ত গ্রহনে সক্ষম ব্যাক্তিকে নির্বাচিত করেছেন। যিনি হয়তো কঠিন সংস্কার করতে পারবেন। এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও হয়তো আসবে। কিন্তু তার বদলে ভারতীয়রা কি হারাল, সেটা তাদের ভেবে দেখা দরকার।’

কিন্তু মোদি কেন?
বিষয়টি অনেকভাবেই এসেছে। প্রচুর বিশ্লেষণ চলছে। ভারতের কেন্দ্রীয নেতৃত্বে একটি অচলাবস্থা তৈরী হয়েছিল। কংগ্রেস মনে হয় আর পারছিল না। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন, প্রবৃদ্ধি, নেতৃত্বেও বলিষ্ঠতা, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্ব ক্ষেত্রেই কংগ্রেস মারাত্মক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তারপরও প্রশ্ন মোদি কেন?-
১. বিজেপি ছাড়া কেন্দ্রীয দল হিসেবে কংগ্রেসের কোন বিকল্প ছিল না। বিজেপির হাতে মোদির ছেয়ে অধিক কোন ক্যারিজম্যাটিক নেতা নেই। এজন্যই অনেকে বলেছেন এটি মোদির জয় নয় রাহ’ল গান্ধীর হার, কংগ্রেসের ব্যর্থতা।
২. জনগন ভারতের গনতান্ত্রিক পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, যা ৫% এর বেশি প্রবৃদ্ধি দেখাতে পারেনি। যেখানে কার্যক্ষম জনসংখ্যার ধারাবাহিকতার জন্য ১০% প্রবৃদ্ধি দরকার, যা মোদির কর্তৃপক্ষিয় পুঁজিবাদ দিতে পারবে বলে জনগন ধারণা করেছে। ২০০১ সাল হতে গুজরাটে মাথাপিছু আয় ৩ গুণ হয়েছে। মোদি প্রচার করেছে সমগ্র ভারত এমন হবে। দুর্নীতিকে হাইলাইট করে দেখিয়েছে দুর্নীতি বন্ধ হলে এটি সম্ভব।
৩. শক্তিশালী মিডিয়া প্রচারণা চালানো হয়েছে। যেখানে মোদিও সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল উপস্থাপন করা হয়েছে। সমগ্র ভারতের জাতীয় ও আঞ্চলিক সব ধরণের মিডিয়াতে এমন প্রচারণা হয়েছে, যা ভারতবাসী এর আগে দেখেনি। Brand NaMo নামের মিডিয়া প্রচারণায় এমনকি মোদি কোর্তা, মোদি মুখোশ, মোদি রিং টোন, মোদি এনরয়েড এপ্লিকেশান, মোদি স্লোগান, সিন্ডিকেটেড মোদি নিউজ ইত্যাদি বহুবিদ আইটেম ছিল। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ধরণে এই প্রচারণা ভারতের জন্য ছিল সম্পূর্ণ নতুন। এর খরচও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতই হয়েছে। এই বিশাল ব্যয় বহন করেছে ভারতের প্রায় সকল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন সিন্ডিকেটেড বিনিয়োগও আগে কেউ দেখেনি। এই মেকানিজমের পিছনে বিজেপির বাইরের বন্ধুদেরও হাত থাকতে পারে।
৪. হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের সামাজিক জীবনে খুবই প্রভাবশালী। ভারতে প্রচলিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সিরিয়াল, চলচ্চিত্র সবকিছুতেই মন্দির ও পূজার উপস্থিতি অনিবার্য। এর প্রভাব বলয়ও মনস্তাত্বিকভাবে সেরকম হয়েই তৈরী হয়েছে। সমগ্র ভারতের মন্দির ও পুরোহিতদের কাজে লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ দেশব্যাপী তার ৪৫০০০ শাখা নিয়ে মোদির পক্ষে কঠিনভাবে কাজ করেছে। এটি একটি উগ্রবাদি, হিন্দু সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠি। ভারতে ইতিপূর্বে তিনবার এ সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়। জঝঝ কে বিজেপির মাতৃসংগঠন ভাবা হয়। নারী ভোটারদের টানার জন্যও মন্দিরকে ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি নারী অধিকারের কিছু বক্তব্য দেয়া হয়েছে। কৌশলে মোদি আবার বলেছে আমি একজন আদর্শবাদি হিন্দু। তবে আগে টয়লেট তারপর মন্দির। এছাড়া শিবসেনা, বজরং দলসহ আরো অনেক আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সংঘ মোদির পক্ষে কাজ করেছে।
৫. নির্বাচনি ইশতেহারে মোদি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মানের ঘোষণা দিয়েছে। মোদি বলেছে পাকিস্তান হতে সন্ত্রাসের জন্ম হচ্ছে এটি সহ্য করা হবেনা। কাশ্মীরসহ সীমান্ত প্রদেশগুলোতে তার লোকেরা প্রচার করেছে মোদির দিকে ফির না হয় পাকিস্তান চলে যাও। মোদি তার প্রতিদ্বন্ধী পার্টিকে ভারতের শত্র“ ও পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেছে। মোদির বক্তব্যে ভারতের পরমানু অস্ত্র ব্যবহারের নীতি পরিবর্তনের প্রচ্ছন্ন হুমকী ছিল। ঘড় ভরৎংঃ ংঃৎরশব- ঘঁপষবধৎ বিধঢ়ড়হ চড়ষরপু পরবির্তনের আভাস দেয় মোদি। নির্বাচনের পর বাংলাদেশীদের(মূলত মুসলমানদের) সীমান্ত পার করে দেয়ার হুমকী দেয়। অতি উতসাহী সংকীর্ণমনা অনেক ভারতীয় এতে লাফিয়ে উঠে।
৬. ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের আবেগ ছড়িয়েছে মোদি। সুযোগটা করে দেয় আমেরিকা। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় কুটনৈতিক দেবযানীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একশনকে ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তখন মোদির শক্তিশালী বক্তব্য ভারতের জনগনের আমেরিকা বিরোধী সেন্টিমেন্টকে ভোটে কনভার্ট করে। এখন অনেক বিশ্লেষকই বলছেন আমেরিকা শুরু থেকেই চেয়েছে মোদির জয় হোক।

আভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জসমূহঃ
১. উন্নয়ন, সুশাসন ও দুর্ণীতির বিরুদ্ধে মোদিও গুজরাট মডেল একটি শক্তিশালী নিয়ামক হলেও এটি যে দল হিসেবে বিজেপির মূল এজেন্ডা নয় তা সময়ই বলে দেবে। নরেন্দ্র মোদির মূল এজেন্ডা নির্ধারণ কওে বিজেপি। বিজেপির রাজনৈতিক মেরুদন্ড হচ্ছে শিবসেনা, আরএসএস, বজরং দলের মত সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি। দায়িত্ব নেয়ার আগেই স্বরাষ্ট্র সচিবকে ডেকে অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে আলাদা একটি দফতর গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মোদি। উত্তর প্রদেশের ২১ টি আসনের মধ্যে সবগুলোই মোদি পেয়েছেন। এ জন্র মুসলিম ভোটের অবদান রয়েছে। দিল্লীর চাদনীচকের আসনে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ্। এখানে কংগ্রেসের সিনিয়র এক প্রার্থীর বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছে। মুসলিম ভোটের প্রায় ৩০% মোদি পেয়েছে। মুসলমানদের আস্থা অর্জন মোদির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
২. বিজেপির ৩০% লোকসভার সদস্যেও বিরুদ্ধে বিভিন্ন হত্যা, খুন, রাহাজানির জন্য ক্রিমিনাল চার্জ গঠন করা আছে। সুশাসনের জন্য এটিও একটি চ্যালেঞ্জ।
৩. মোদির অনেক সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ভারতের নির্বাচনি বিধিমালা লঙ্ঘনের শামিল। কমিশনের এ ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া ছিল মৃদু। (তাও মোদি চ্যালেঞ্জ করেছেন) যদিও তাকে অযোগ্য ঘোষনার ক্ষমতা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ছিল। দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হলে জনগনের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য এসব কাজ মোদি আবার শুরু করতে পারে।
৪. কর্পোরেট দাতারা তাদের বিশাল ব্যয়ের (বিনিয়োগ) বিপরীতে ভাল পুরশ্কার চাইবেন। যা রাষ্ট্রেও বা জনস্বার্থেও বিরুদ্ধে যেতে পারে।
৫. বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ৪২টির মধ্রে ২টি, তেলেনঘানাতে ১৭টির মধ্যে ২টি, তামিলনাড়–তে ৩৯টির মধ্যে ২টি, উড়িষ্যায় ২১টির মধ্যে ১টি পেয়েছে এবং কেরালায় ২০টির মধ্যে ১টিও পায়নি। তার অর্থ দেশে দক্ষিণ ও পূর্ব প্রান্তে ১৩৯ টি আসনের মধ্যে মাত্র ৭টি আসন পেয়েছে বিজেপি জোট। এর বাইরে মনিপুর ও ত্রিপুরায় একটি আসনও পায়নি মোদি। দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জ।
৬. দায়িত্ব নেয়ার পরপরই কম সময়ের মধ্যে (জুন-জুলাই) রাষ্ট্রীয় বাজেট দিতে হবে। নি:সন্দেহে এটি একটি তাৎপযৃপূর্ণ বিষয়। প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রশ্নে এ সময় থেকেই আলোচনা শুরু হয়ে যাব্
েআন্তর্জাতিক ইস্যুঃ
১. জলবায়ু পরিবর্তনে অন্য জাতি-রাষ্ট্রেও সাথে কাজ করা।
২. এ বছরই (২০১৪) আফগানিস্তানে নির্বাচন, ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্ন জড়িত।
৩. বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসা ও রাজনীতি এমনকি ক্ষুদ্র মালদ্বীপ ও মায়ানমারেও ব্যবসা রক্ষা কঠিন হয়ে পড়েছে।
৪. আরব বসন্ত উত্তর সমগ্র আরবে পরিবর্তিত পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে। ভারতের প্রচুর পেট্রোলিয়াম প্রয়োজন। গুজরাট ইস্যু ও আরএসএস কানেকশান নিয়ে অবশ্যই ইসলামী দুনিয়ার সাথে হিসাব করে সম্পর্ক করতে হবে।
৫. দুই পারমানবিক শক্তিধর ও চিরপ্রতিদ্বন্ধী ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ফ্যাকটর। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নার সাথে নতুন প্রেক্ষাপটে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ভারত-ইসরায়েল মৈত্রী; মোদিও দুর্বিনীত হওয়ার আশংকাঃ
ইসরায়েলের সাথে ভারতের কোন কুটনৈতিক সম্পর্কই ছিলনা। ১৯৯১ সালে ভারত নীতি পরিবর্তণ করে। ততক্ষণে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে। তৎকালীন কংগ্রেস নেতারা দ্রুত তেলআবিব পৌঁছার জন্য ওয়াশিংটনের রাস্তা ব্যবহার করেন। এক দশকের পরিক্ষিত বন্ধুত্ব চলার পর ২০০৩ সালে এরিয়েল শ্যারণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম দিল্লী আসেন। কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় প্রতিযোগিতামূলকভাবে এ সম্পর্ক বাড়তে থাকে। এখন ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সামরিক সরঞ্জামের আমদানিকারক হচ্ছে ভারত। এর পরিমান বার্ষিক প্রায় ১০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে সকল দলই ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির কথা বলেছে। অবশ্য ব্যতিক্রম ছিল ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি(মার্ক্স)। তারা ভারত-ইসরায়েল সম্পর্কের দিক পরিবর্তনের কথা বলেছে। তাদের ইশতেহারে স্বাধীন প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি সমর্থনের কথা বলা হয়েছে। যাই হোক বিজেপি ভারত-ইসরায়েল সামরিক সম্পর্ক আরো বেগবান করবে। ভারতীয় সাংবাদিক পলাশ ঘোষ ভারতীয ব্যবসায়িক বার্তায় লিখেছেন দক্ষিণ এশিয়ায় ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি। ইসরায়েলের উম্মাদনা মোদির সাম্প্রদায়িকতা ও উচ্চাকাঙ্খার সাথে যুক্ত হয়ে ভারত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুর্বিনীত করে তোলার আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্কঃ
প্রায় সকল বিশ্লেষকই বলছেন অতীতে কংগ্রেস সরকার যেভাবে একটি বিশেষ দলকে প্রমোট করেছে মোদি সরকার হযতো তা করবে না। ফলে পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবেনা। তবে বাংলাদেশে তাদের হঠাৎ অর্জিত সুবিধাগুলো ধরে রাখতে চাইবে। মোদি প্রশাসন নিশ্চয়ই দেখবে আ:লীগকে নির্ধারিত সীমানার বাইরে সাপোর্ট দিতে গিয়ে নয়াদিল্লী ওয়াশিংটন সম্পর্ক মাঝে পড়ে। এজন্য বিএনপি মহল কিছুটা উৎসাহিত। পাশাপাশি তারেক রহমানের মোদি কানেকশনও তাদের আশাবাদি করেছ্। অন্যদিকে মোদির চরম মুসলিম বিদ্বেষ ও আওয়ামীলীগের ইসলাম দলননীতি থেকে একটি কমন গ্রাউন্ড খুঁজছেন কেউ কেউ। সেদিক থেকে আওয়ামী লীগও আশাবাদী যে, শেষ পর্যন্ত পাল্লা তাদের দিকেই ভারী হবে। অথচ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র স্বত্তার জন্য এমন বক্তব্যগুলো কত অপমানজনক ও জঘন্য তা কেউ ভাবছেন না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কারণ মোদি বাংলাদেশের বন্ধু নয়।
কয়েকটি ইতিবাচক দিকঃ
ভারতে সরকার পরিবর্তনের একটি টেকসই পদ্ধতি গড়ে উঠেছে। ভোট কারচুপি ও সন্ত্রাসের তেমন কোন অভিযোগ শোনা যায়নি। কিছু কিছু জায়গায় ৮০% পর্যন্ত ভোটার ভোট দিয়েছে। কংগ্রেসকে আক্রমন করলেও ব্যক্তিগতভাবে গান্ধী ও গান্ধী পরিবারের প্রতি নরেন্দ্রমোদি সর্বোচ্চ সম্মান দেখিয়েছে। সোনিয়া ও রাহুলের উপস্থিতিতে শপথ পাঠের আগ্রহের কথা জানান মোদি। সেজন্য রাজীব গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকী পড়ায় ২১ মে এর শপথ অনুষ্ঠান পিছিয়ে ২৬ মে করা হয়। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে মেনে নিয়ে দলীয় দায়িত্ব হতে অব্যাহতি নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী। গনতান্ত্রিক ধারার এ উদাহরণগুলো বাঙলাদেশের রাজনীতিবিদগন বিবেচনা করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×