বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট- বঙ্গবন্ধু-১ । বাঙ্গালী হিসেবে গর্ব হয় পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের মালিক হবার জন্য। কিন্তু যখন দেখি এটি আমাদের প্রয়োজন মেটানোর চাইতে জনগনকে ভ্যালকা বানিয়ে নাম-সর্বস্ব বিলাসিতার অংশ হিসেবে বানানো হইছে তখন প্রশ্ন জাগে এই তিন হাজার কোটি ডলারের মেশিন দিয়ে কি করা যাবে? আর কি কি করা যাবে না?
চলুন দেখি এক নজরঃ
১। এটি একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট। মানে এর মাধ্যমে ডিজিটাল টিভি ব্রডকাস্টিং, রেডিও ব্রডকাস্টিং এবং যোগাযোগ করা যাবে।
২। বাংলাদেশের অবস্থান ৯০ দশমিক ৪ দ্রাঘিমাংশে আর বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের অরবিটাল পজিশন ১১৯ দশমিক ২ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। তাই স্যাটেলাইটের সবথেকে অনুকুল এরিয়া (অপটিমাম কভারেজ) এর মধ্যে বাংলাদেশের স্থলসীমা অথবা জলসীমা নেই। সব থেকে ভাল পজিশন আছে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন।
৩। বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের অপটিমাম কভারেজের বাইরে থাকায় সামান্য খারাপ আবহাওয়ায়ও দেশীয় চ্যানেলগুলোর ব্রডকাস্টিং সিগন্যাল ব্যহত হতে পারে।
৪। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে ছবি তোলা, ইমেজ প্রসেসিং, বন্যা পরিস্থিতি পরিমাপ, পানির উচ্চতা নির্ণয়, আবহাওয়া পূর্বাভাস, দূরত্ব পরিমাপ, নদীর নাব্যতা ও গতিপথ পর্যবেক্ষণ, জলাভূমির সংকোচন-প্রসারণ, রাস্তাঘাটের নিপুণ ডিজিটাল মানচিত্র, আর্থ অবজারভেটরি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত কাজগুলো করা যাবে না।
৫। দুর্যোগকালীন সময়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে যোগাযোগের জন্য আবার বিশেষ ধরনের টার্মিনাল অথবা স্যাট-ফোন ব্যাবহার করতে হবে এবং এতে যে খরচ পরবে তার তুলনায় অনেক কম খরচে বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানী অনেক আগে থেকেই এই সুবিধা দিচ্ছে।
৬। দ্রুতগতীর ইন্টারনেট পাবেন, ভাবছিলেন? বঙ্গবন্ধু-১ একটি জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট অর্থ্যাৎ দীর্ঘ ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার দূরত্বের কারনে মাত্র ৬০ থেকে ৫১২ কেবিপিএস ইন্টারনেট পাওয়া সম্ভব তাও দাম পড়বে বর্তমান থেকে ১০ গুনেরও বেশি। আমরা স্যাটেলাইট উঠছে এতেই খুশি হয়ে আছি কিন্তু এই গরীবের হাতি দিয়ে যে টিভি দেখা ছাড়া আর যে কিছু করা যাবে না তার কোন খবর নাই!