somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সায়েন্স ফিকশন ও টু: যুদ্ধ যখন অক্সিজেনের জন্য

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার লেখালেখির হাতেখড়ি এই সামহোয়ারইনব্লগ হতেই। এবারের বই মেলায় “ও টু” (O2) নামে আমার একটি সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস বের হয়েছে, নালন্দা প্রকাশনি হতে। তাই বই এর ফ্ল্যাপে এই ব্লগের কথা না উল্লেখ করে থাকতে পারিনি। সুখবরটি সহব্লগারদের সাথে শেয়ার করারও লোভ হচ্ছে। বইটি পড়ে কয়েকজন রিভিউ দিয়েছেন, তাদের কিছু অংশ তুলে ধরলাম এখানে,

MD Naimul Haque;
সত্যি বলতে অসাধারণ লেগেছে। একটা ভিন্নধর্মী সাইন্স ফিকশন । দুইটা সমান্তরাল কাহিনী এক জায়গায় এসে মিলে যায়। গল্পের ডেভেলপমেন্ট খুবই ভাল। ফিনিশিং সবচেয়ে ভাল। একটাই নেগেটিভ দিক আমার মতে, কোথাও কোথাও পারিপার্শ্বিকের বর্ণনা একটু বেশিই মনে হয়েছে। কিন্ত অসাধারণ একটা কাহিনীর কাছে এই সামান্য ত্রুটি আসলে কিছুই না।

সাইন্স ফিকশন লাভারদের জন্য মাস্ট রিড একটা বই। তবে যে কোন সাহিত্যপ্রেমীর কাছেই ভাল লাগবে, শক্তিশালী গল্পের কারণে।

Shayma Jahan Tithi
আপনার আগের বইটা পড়ব পড়ব করেও পড়িনি সময় নষ্ট করার রিস্ক নিতে চাইনি বলে। কিন্তু 'ও টু' পড়ে এতোটাই ভালো লেগেছে যে, এখন মনে হচ্ছে সেটাও পড়ে ফেলা উচিত।

Nayeem Hossain Faruque
আজকে আমরা বাজার থেকে খাবার কিনে খাই, জামা কাপড় কিনে পড়ি। কি হবে যদি এমন এক দিন আসে যখন টাকা দিয়ে অক্সিজেন কিনতে হবে? আপনার প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য গুণতে হবে কাড়ি কাড়ি টাকা? অনুমতি ছাড়া সন্তান জন্ম দিলে, সরকারের কোন বিরোধিতা করলে কেঁড়ে নেওয়া হবে আপনার নিঃশ্বাস নেওয়ার অধিকার?

এই রকম অসাধারণ একটা কন্সেপ্ট নিয়ে লেখা সাইফূল ইসলামের ও টু উপন্যাস। বইটাতে চলছে পাশাপাশি দুইটা থ্রেড। একটাতে বর্তমানের মানুষরা প্রাচীন একটা আর্টিফ্যাক্ট হাতে পেয়ে সমাধান করতে বসেছে ও টু রহস্যের। এটা কিভাবে সম্ভব অতি প্রাচীন যুগের মানুষদের কাছে ছিল অক্সিজেন কন্ট্রোল করার টেকনোলজি? তারা কি মানুষ ছিল? ঘটনা কি এই পৃথিবীর নাকি অন্য কোন জায়গার? ডিটেক্টিভ উপন্যাসের মত চলছে জটিল এক রহস্যের সমাধান। আরেক থ্রেডে আমাদের হিরো অজানা সময়ের অজানা জায়গার ডিস্টোপিয়ান সোসাইটিতে সংগ্রাম করে চলেছে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে।

চমৎকার পটভূমি, আগ্রহ ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট। তারপরও বইটা ফ্ললেস না। বেশ কিছু চরিত্র অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। অনেকগুলো ফুটে ওঠে নি। চরিত্রগুলো অনেকাংশে একমাত্রিক, তেমন কোন গ্রে এলাকা নেই। কিছু চরিত্রকে একটু পরে মেরে ফেলা হয়েছে, কিন্তু তাদের প্রস্থানে তেমন কোন কষ্ট আমি পাই নি, কারন চরিত্রদের যথেষ্ট ডেভলপ করা হয় নি। কিছু বৈজ্ঞানিক ভুলও আছে।
আশা করি লেখক তাঁর আগামী উপন্যাসগুলোতে এ বিষয়গুলোতে নজর দেবেন। তাঁর জন্য শুভকামনা থাকল।


Mozammel Hossain Toha
'ও টু' উপন্যাসে লেখক একাধিক কাহিনী সমান্তরালে বর্ণনা করে গেছেন। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যতের কাহিনী এখানে পাশাপাশি এগিয়ে গেছে। উপন্যাসের প্রথম অধ্যায়টি পাঠকের কাছে খুবই গতানুগতিক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় অধ্যায়ের মাঝামাঝি থেকেই পাঠক নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হবেন। লেখকের ভাষা অত্যন্ত সাবলীল, কাহিনী গতিশীল এবং গল্পের শেষে তিনি যে টুইস্ট দিয়েছেন, সেটা মনোযোগী পাঠককেও চমৎকৃত করবে।

'ও টু' উপন্যাসের ত্রুটি খুঁজতে গেলে বেশ কষ্ট করতে হবে। এর প্রথম অধ্যায় হয়তো পাঠকের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, শুরুর দিকে কিছু কিছু বর্ণনাকে বাহুল্য বলেও মনে হতে পারে, কিছু কিছু কথোপকথনকে হয়তো দীর্ঘ বলে মনে হতে পারে, কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর পাঠক যখন উপন্যাসের জটিল কাহিনীর ভেতরে প্রবেশ করবেন, তখন তার কাছে এই ত্রুটিগুলো ম্লান হয়ে আসতে বাধ্য।
'ও টু' উপন্যাসের সবচেয়ে বড় গুণ হলো, লেখক এখানে নিছক বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন থিওরির মধ্যে তার কাহিনীকে আবদ্ধ রাখেননি। তিনি একইসাথে এর মধ্যে টেনে এনেছেন রাজনীতি, ধর্ম এবং পৌরাণিক কাহিনীকে। এবং স্বাভাবিকভাবেই এনেছেন মানবিক সম্পর্কগুলোকে, প্রেম এবং ভালোবাসাকে। উপন্যাসের ফাঁকে ফাঁকে উঠে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্ব আন্দোলনমুখর চিত্রও। উঠে এসেছে মানবজাতির অভ্যুদয় এবং মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে ধর্মের এবং পৌরাণিক কাহিনীর রহস্যময় এবং জটিল সম্পর্কের কথাও, যা কৌতূহলী পাঠককে নতুন ভাবনার খোরাক দিবে।

এই লেখক রোর বাংলার কন্টেন্ট রাইটার। ও টু উপন্যাস নিয়ে সেখানে বিশাল আকারের একটি ফিচার লিখেছেন।

রোর বাংলার লিংক

ভালো লাগা মন্দ লাগার এই অনুভূতিগুলো সবার সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি কারও পড়া হয়ে থাকলে নির্দ্বিধায় পাঠের অনুভূতি জানবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:৪৯
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×