মার্চের ২৩ তারিখে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দরুন বড় একটা বিপদে পড়েছিলাম। হয়তো ইতোমধ্যে সবাই বিস্তারিত জেনে গেছেন। কিছুটা ভোগান্তির পর অবশেষে ৩১ তারিখে বাসায় ফিরেছি। এখন সুস্থ আছি, আপাতত আর কোনও দুশ্চিন্তা নেই। সহব্লগার, ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন গ্রুপে সিনিয়র-জুনিয়র ভাইয়েরা, সহলেখকরা যেভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন, দোয়া করেছেন সত্যি আমি চিরকৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ সরকার এবং লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস অভূতপূর্ব তৎপরতা দেখিয়েছে। লিবিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাও যে পরিমাণ প্রফেশনালিজম দেখিয়েছে সত্যি অভিভূত। সত্যি বলতে লিবিয়ার ইন্টেলিজেন্সের তৎপরতা ও প্রফেশনালিজম দেখে বেশ চমকিত হয়েছি।
এমন দক্ষ বাহিনী যখন নিজ দেশের নাগরিক ও আমাদের মতো প্রবাসীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে তখন আমরা যারা প্রফেশনাল এবং বৈধভাবে এখান অবস্থান করছি তাদের ভয়ের আর কোনও কারণ থাকতে পারে না। এমন নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থেকে আমাদের পক্ষে নিশ্চিতে স্ব স্ব কাজে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব। একই সাথে যারা অবৈধ কাজে জড়িত তাদের জন্যেও এটা একটা সতর্কবার্তা।
আমাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথমে কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম সত্যি, কিন্তু পরে যখন বুঝতে পারি এরা অথরিটি এবং সরকারী নিরাপত্তা বাহিনী তখন সব ভয় মুহূর্তেই উবে গিয়েছিলো। তবুও যতক্ষণ পর্যন্ত না বাসায় ফিরছি ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুটা অনিশ্চয়তা কাজ করছিলো। তখন ঘুরে ফিরে কেবল একটা কথাই মনে হচ্ছিলো, আর যদি না ফিরতে পারি তবে অসমাপ্ত লেখাগুলোর কী হবে!
‘লোলার জগতের’ দ্বিতীয় পর্ব কিছুটা লিখে রেখেছি, আরও দুইটা সায়েন্স ফিকশন উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি ফাইনাল হয়ে আছে। দুইটা উপন্যাস আংশিক লেখা হয়েছে ও একটি সায়েন্স ফিকশন সংকলনের জন্যে প্রায় বিশটা ছোট গল্প একত্র করে রেখেছি। এই লেখাগুলোর জন্যে বারবার মন খারাপ হচ্ছিলো। এই চরম বিপদের মধ্যেও কেবল লেখা নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়ার জন্যে এখন মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি হাঁটিহাঁটিপাপা করে লেখক হয়ে উঠছি।
অবশেষে, সবাই যেভাবে দোয়া করেছেন; খোঁজখবর নিয়েছেন, মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেছেন; সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২২ সকাল ৭:০২