আমি ঠিক আগের মত থাকতে চাই। আমার নিজের যে জায়গাটুকু ছিল-সেখানে। স্রষ্টা আমায় ওটুকু দিয়েছিলেন, আমি স্বাধীন ছিলাম। মৃদু মন্দ হাওয়াটুকু আমায় তৃপ্তি দিত, তোমার সান্নিধ্য দিত পূর্ণতা।আমার সজীবতা হারিয়ে আমি নিশেষ হয়ে গেছি। আমি আমার ছোট্ট কাদাভেজা উঠোনে বসে ভিজতে পারি না আর। সূর্যোদয় সূর্যাস্ত হারিয়ে ফেলেছি। জান, আমি রাতকেও হারিয়ে ফেলেছি।
সে আমাকে ভালবাসল কিন্তু আমার স্থান বুঝল না।
আমি আগের মত তোমার সাথে থাকতে চাই। আমি জানি আমার চাওয়া পূর্ণ হবার মত নয়। আমি জানি চিরকাল তুমি আমায় 'বকুল' বলে জড়িয়ে রাখতে পারবে না। তুমি বৃষ্টি, তুমি শীতের বৃষ্টি, তোমায় তো সবসময়ের জন্য পাওয়া যায় না।
তোমার তো যেখানে মন চায় তুমি সেখানে যাও। যাকে খুশি তাকে তোমার স্পর্শ দিয়ে জাগিয়ে তোল। তন্দ্রা ভেঙে মানুষটা যখন তোমায় ধরে রাখতে চায় তুমি চলে যাও। আকাশ থেকে ঝরে পড় আর সবাই চঞ্চল হয়ে ওঠে। তখনই তুমি তার কাছ থেকে চলে যাও, বয়ে যাও পথের কিনারা দিয়ে, ঝরে পড় আমার উঠোনে। বারে বারে রেখাপাত হয় আমার মনে। তোমার ছোট্ট স্রোত ধরে রাখার মত নয়। আর যদি কেউ মাটির সানকিতে আটকে ফেলে তোমায় তখন তোমার শীতলতা শিহরণ হারায়,
সেই শিহরণ যা টুপটাপ শব্দে মাতাল করে আমাকে। আমাকে? শুধু আমিই মাতাল, তুমি? তুমিই কি কম....
আমি আজও জানি তুমি আর সকল তৃষ্ণার্তদের গায়ে ঝরে পড়বে টুপটুপ সুরে। সেখান থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যাবে অজানায়, রেখে যাবে উদভ্রান্ত পথহারা অনেক বকুলকে। আর কোনদিন তুমি আমায় ডাকবে না -
'বকুল'।
শুধু - একবার ডাক-বকুল।
দেখ আমি আবার আমার পাঁপড়ির ডানা মেলব।
আমি শব্দ পাচ্ছি, আমারই বদ্ধ গৃহের চারপাশে তোমার উন্মাতাল দাপট। আজ তুমি বড় বেশি অস্থির। কিন্তু আর লাভ নেই। সেদিনের সামান্য স্রোতে যদি ভাসিয়ে নিতে এই ছোট্ট বকুলকে....তবে আজ আর আমি...হ্যাঁ আমি তোমার স্পর্শে সজীব থেকে মৃত্যুবরণ করতাম। তবে হ্যাঁ, আমি স্বপ্ন দেখছি আমি তোমারই মাঝে হুটোপুটি খাচ্ছি ।
ছোট্ট বকুল স্বপ্ন দেখে চলে। অবোধ বালিকার পড়ার টেবিলে পড়ে থেকে শুকিয়ে যেতে থাকে তার পাঁপড়ি। তবু স্বপ্নে সে তার অধরা বৃষ্টির জল ভাসিয়ে করেছে স্রোতধারা.....তাতে ভেসে ভেসে সে যাচ্ছে বহুদূর। অনেক অ..নে..ক দূর।
#মিষ্টি ঘ্রাণটা মিলিয়ে গেছে। কাজের মেয়েটা ফুলটা বাস্কেটে ফেলে দিল।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫৮