somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পীরের দরবার মানুষ না গরুর জন্য !

২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনামটি দেখে কেউ হয়তো চমকে ওঠছেন,আবার কারো কারো কপালের চামড়ায় ভাজ পড়েছে যে লেকটা বলে কী!

হ্যাঁ ভাই, আমি মনে হয় ভুল কিছু বলিনি। কারণ যুগ যুগ ধরে মানুষ বেহেস্তে যাওয়ার জন্য- বেহেস্তের পথ পাওয়ার জন্য পীর আউলিয়াদের দরবারে যাতায়াত করে আসছে। উদ্দেশ আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করে বেহেস্তের উপযোগী হওয়া।

দু:খজকন হলেও সত্য যে, বিগত দুই তিন দশক যাবত বিভিন্ন দরবার শরীফে মানুষের পাশাপাশি গরু-ছাগলের যাতায়াতও পরিলক্ষিত হয়ে আসছিলো। গত কয়েক বছর যাবত তা ব্যাপক আকার ধারণকরে মানুষের পাশাপাশি গরু- ছাগলও সমানতালে চলছে। সমানতালে কথাটা পুরোপুরি ঠিক হলো না, বরং বলতে হবে পাল্লা দিয়ে চলছে।

আর এই পাল্লায় দিন দিন মানবসমাজকে পরাজিত করে গরু সমাজ বিজয়ের মাল্য ছিনিয়ে নিতে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে। তাইতো বিভিন্ন দরবারের ওরশ শরীফে দেখা যায়- মানুষের প্যান্ডেলের চেয়ে গরুদের প্যান্ডেল অনেক বড় করে তৈরি করা হচ্ছে।

তাহলে কি আমরা ধরে নিতে পারি যে, বর্তমান আত্মশুদ্ধি মানুষের চেয়ে গরুদের বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে? না কি তধাকথিত এসব দরবার শরীফে পীর মুরীদি ও আত্মশুদ্ধির আড়ালে পেট পূজার জমজমাট ব্যবসা চলছে।

আমার এই লেখা প্রকাশের উদ্দেশ কারো অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া নয়, বরং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ধর্মের নামে যে অধর্ম, ওরস-মাজার আর ইসালেসওয়াবের নামে যে ধান্ধাবাজি চলছে এবং যার কারণে অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে- তার কিঞ্চিত পরিমাণ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া।

আমি নিজ চোখে এমন অনেক ঘটনা দেখেছি। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেইটের একটি বিবরণ উল্লেখ করছি। এইতো কিছুদিন পূবেূর কথা, সেখানে দেখলাম বার্ষিক ওরস শরীফের নামে বিশাল প্যান্ডেল ও চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জার মাধ্যমে অসংখ্য বড় বড় রাজকীয় গেইট তৈরি করা হয়েছে । যেখানে ন্যূনতম পনের থেকে বিশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে । আমার মধ্যে কৌতুহল জন্ম নিল যে, লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করে এসবের মানে কী! আর এতো টাকার যোগানই বা কীভাবে হয়?

আমার এই কৌতুহলের জবাব পেতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হলো না । সামান্য অগ্রসর হয়ে মানিক মিয়া এ্যভিনিউ মাঠে দেখলাম বিশাল এক প্যান্ডেল । যা পূর্বের প্যান্ডেল থেখে কোনোক্রমেই ছোট হবে না । মজার ব্যাপার হলো এখানে কোনো মানুষজন নেই, শুধু গরু আর গরু। তবে সান্ত্বনার কথা হলো গরুদের সঙ্গে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়নি, বরং গরুদের প্যান্ডেলও মানুষের প্যান্ডেলের মতোই জাকজমকপূর্ণ করা হয়েছে ।

প্রশ্ন হলো আত্মশুদ্ধি ও ইসালেসওয়াবের অনুষ্ঠানে এতো আলোকসজ্জা আর আড়ম্বরতা কেন? এসব অনুষ্ঠানতো যতো অপচয়মুক্ত অনাড়ম্বর পরিবেশে হবে ততোই উত্তম। হেদায়েতের আলোকবর্তিকা লক্ষাধিক নবী-রাসূল (সা.) তো অনাড়ম্বর পরিবেশেই দীনের দাওয়াত দিয়েছেন । নবী-রাসূলগণের সুন্নত তরিকা বর্জন করে সওয়াবের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয়ের উদ্দেশ কি সওয়াব অর্জন না অন্য কিছু ? পবিত্র কুরআনে তো অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে । আত্মশুদ্ধির নামে কি তাহলে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে শয়তানের ভাই বানানো হচ্ছে ?

যাহোক গরুর আধিক্য দেখে মনে মনে বললাম, মানুষের প্যান্ডেল খালি আর শত শত গরু এসেছে পীরের দরবারে আত্মশুদ্ধির জন্য । আজকের সমাজের মানুষগুলোর উপলব্ধি যদি এই গরুগুলোর মতোও হতো তাহলেও মনে একটু শান্তি পেতাম! আচ্ছা আল্লাহ তায়ালা এই গরুদেরতো আর বেহেস্ত দান করবেন না। এমন টিহলোতো অবশ্যই গরুর বেহেশ্ত নামে কোন বেহেস্ত থাকত।


একজন ওয়াচ ব্লগারের লেখা হুবহু কপি করে দেওয়া হল
লেখকের অনুমতি নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৫
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×