অনেক গুলো বই পড়ার বাকি ছিল, "এ্যাভেঞ্জার্স এ্যান্ড গেইম" মুভিটাও দেখার ইচ্ছা ছিল। অনেক কথা বলার থাকলেও বলা হয়নি কখনোই। না বলাই থাকলো কিছু কথা.. তাতেই মঙ্গল হয়তো সবার। আচ্ছা নিজেকে মেরে ফেলাটা কি এতোই সহজ সবার জন্য? একটা কারনও থাকে না বাঁচার তাগিদে? হয়তোবা না, থাকলে আমি এসব কিছু লিখতাম না। কিভাবে আত্মহত্যা করলে কষ্ট বেশী হয়? গলায় ফাঁসি দিলে? নাকি রক্ত নালী ব্লেড দিয়ে কেঁটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে? ঘুমের ট্যাবলেট খেলে মরতে কষ্ট হয়? মনে হয় অনেক বেশী কষ্ট হয় তখন, বাঁচার একটু ইচ্ছা জাগে কখনো। তখন বমি করার বৃথা চেষ্টায় মগ্ন হয়ে যায় মানুষ, কখনো আবার হাসপাতালে যেতেও ইচ্ছা হয়। কিন্তু লোক-লজ্জার ভয়ে হয়তো যায়না কেউ। যাদের মনোবল বেশি তারা হয়তো যায়। আচ্ছা কিভাবে মরা সহজ? ট্রেনের নিচে কাঁটা পরে? নাকি মহা-সড়কে কোন গাড়ীর নিচে পরে? নাকি বিশাল কোন অট্টালিকার উপর থেকে ঝাঁপ দিলে? কিংবা সাঁতার না জেনে পুকুরে/নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে?
আচ্ছা মৃত্যুর পরে কি আছে? বেঁচে থাকলেও যে ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে কিংবা বর্তমান থেকে ভালো থাকবো এর কোন প্রমান আছে কি আদৌ? বেঁচে থেকেও কারো কষ্টের কারন হওয়ার কি দরকার? কারো মুখেইতো হাঁসি ফোঁটাতে পারিনি... আচ্ছা অনেকেই বলবে আমাকে যে আমার বাবা-মা'র কথা চিন্তা করতে, আমি মারা গেলে সন্তানহীন তারা কেমন অনুভব করবে। তাদের কতটা খারাপ লাগবে। তাদেরকেই বলছি, আমার কেউই নাই। আমি একটা "ব্রোকেন ফ্যামিলি"এর সন্তান। বাবা-মায়ের ভালোবাসার ফসল না আমি, আমি একটা কম্প্রোমাইজের ফসল। আমি একা না, আমার ছোট ভাই একটা সেও। বাবা-মা দু'জনই নিজেদের মত করে নিজেরা সুখেই আছে। আচ্ছা ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তানদের কাছে কোন নরমাল ফ্যামিলি তাদের সন্তানের বিয়ে দেয় না কেন? খুব ভালো বন্ধু গুলোও দূরে চলে যায় কেন সব কিছু জানার পরে? আচ্ছা আমি মাথা উঁচু করে কারো সামনে কথা বলতে পারি না কেন? নিষিদ্ধ পল্লীতে আমি নেহায়েত একটা দেহ ভাড়া করতাম কথা বলার জন্য। ঘন্টা-দুয়েকের জন্য মনে হতো কেউ আমাকে শুনছে, কখনো কখনো আমিও শুনতাম তার কথা। শারীরিক কোন মোহ্ আমার ছিল না তাদের প্রতি। তবে আর দশজনের মতন আমার পুরুষত্বের প্রকাশ আমি টাকায় করিনি। ভালোবেসে ছিলাম এক মানবীকে, পাইনি। ভালোবাসাটা ছিল একতরফা। ঘেণ্যা লাগে নিজের মুখটা আয়নায় দেখতে। নিজেকে কখনো জংলী মনে হয়, ভয় পাই আমি সেই বুনো শুয়োরটার মতন। কেউ হয়তো আমাকে ভেঙ্গে ফেলতে চাইবে। তাই আলাদা হয়েই থাকি সবার কাছ থেকে। একা থাকাটাই আমার জন্য চরম তৃপ্তির। কিন্তু এখন সেই চরম তৃপ্তিটাই আমার মৃত্যুর কারন হয়ে যাচ্ছে। আমি আটকে রাখতে পারছি না। নিজেকে সামলে নিতে প্রচন্ড হিমসিম খাচ্ছি আমি। পারছি না, না কেউ আমাকে বোঝার চেষ্টা করেছে, না আমি কাউকে বোঝার চেষ্টা করছি। বেঁচে থাকার জন্য যে একটা কারন প্রয়োজন। সে কারন আমার নেই।
এক সময় প্রচুর নেশা করতাম, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা প্রতিদিন খেতাম। রিহ্যাব যাইনি, একা একাই নিজেকে সামলে নিয়েছি। সিগারেট ছাড়া কিছুই খাইনা এখন, শুধু মাঝে মধ্যে ৫/৬ প্যাক মদ খাই টেষ্টটা জিহ্বাকে মনে করিয়ে দেবার জন্য। তাও বছরে ২/১বার। কেউই পাশে থাকে নি, আর আমি থাকতেও দেইনি কাউকেই। আমি চাইনি কেউ থাকুক, কারো করুনার পাত্র হতে আমি বরাবরই নারাজ। আমার হজম হয়না করুনা বেপারটা। একা থাকাটাই আমার জন্য ভালো, অন্তত আমার মতন জংলী এই অমানুষের জন্য। আমি অনেক দূর্বল চিত্ত্বের মানুষ। পেছন ফিরে তাকালে ২৬ দেখি। কিন্তু তবুও কেন যেন আমি অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে গেছি। অনেক বেশি একা হয়ে গেছি। আর এইভাবে তিলে তিলে মরার চেয়ে মরে যাওয়াই ঢের ভালো নয় কি?
আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ী সম্পূর্নরূপে, আর দায়ী একান্তই আমার প্রতিটা অব্যাক্ত মুহূর্তগুলো।
আমি সেই,
অবাক
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:১৮