নাস্তিকের ধর্মকথা আমার বন্ধু, অনেক পুরনো বন্ধু।বন্ধুর প্রতি বন্ধুর দরদ থাকবে এইটা স্বাভাবিক।তবু সম্পুর্ণ আবেগহীন হয়েও নিশ্চিতে বলতে পারি, সে অসত্য বলার ছেলে না।সুশীল শব্দটা ব্লগীয় পরিমন্ডলে গালি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।সে আর যাইহোক সুশীল যে না, সেটা নিশ্চিতভাবেই জানি।
ব্লগারের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আপনার প্রশ্ন তোলার ধরনটা বেশ আপত্তিকর।পোষ্টের বিষয়বস্তু থেকে জাজমেন্টে এসে ব্লগারের শিক্ষা নিয়ে কথা বলাটা অরুচিকর এবং আপনার প্রজ্ঞার পরিচয় দেয়না।এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেফতারের ঘটনায় আপনার অবস্থান আমাকে হতাশ করেছিল।
“মুম্মদ” নিক নিয়ে সৃষ্ট ব্লগীয় বিতর্কে আমি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে সরিয়ে রেখেছি।ব্যাপারটা আমার কাছে রাসেল ভাই যেমন টা বলেছেন ধর্মীয় আগ্রাসনের পর্যায়ে পড়ে। “মুম্মদ” নিকের আড়ালের মানুষটির এটা আগেই অনুমান করা উচিত ছিলো,এইটার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে? ডেনমার্কের পত্রিকায় কার্টুন ছাপা হওয়া, বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের অকাল প্রয়ান(ভুল ছিল কিংবা সঠিক ছিল ,কোন জাজমেন্টে যাবোনা) এতো তাড়াতাড়ী বিস্ম্বত হওয়ার কথা না।যদি উনি না জেনেশুনে কাজটি করে থাকে তাহলে নির্বোধ, আর জেনেশুনে কাজটি করে থাকেন তাহলে এটেনশন স্বীকার।স্যারি জাজমেন্টে যেতেই হলো।
মতাদর্শ উতপত্তিগতভাবে আধিপত্যকামি।যতই বলা হোক, মতাদর্শের সহনশীলতার সাথে পাশাপাশি অবস্থান সম্ভব,যেটা আসলেই লজিক্যালি প্রায় অসম্ভব।তবু খোলস দেখিয়ে হলেও আমরা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে অন্তত সহনশীল হওয়ার চেষ্টা করি।এবং সেই চেষ্টা করাটাই উচিত বলে আমি মনে করি।কারণ বৈচিত্রের পৃথিবীতে বিভিন্ন মতের,মানযিকতার মানুষ থাকবে এইটাও স্বাভাবিক।
ধর্মীয় রীতিনীতির চেয়ে ধর্মীয় চেতনার অবস্থান অনেক অনেক গভীরে।মানুষের সামাজিক আইডেন্টিটিও আসলে শেষমেষ ধর্মীয় পরিচয়ের খোলস থেকে বেরুতে পারেনা, কোন ব্যাক্তি ব্যাক্তিগতভাবে যতই ধর্মহীনতার চর্চা করুক না কেন।“মুম্মদ”নিকের অধিগ্রহনের ফলে মুকুল, রাশেদ, অমি রহমান পিয়াল কিংবা এক্মিমো ভাই যে প্রতিবাদ করবে, এইটা তো পুর্বানুমিত।কারন মুসলিম ধর্মীয় (কিংবা যে কোন ধর্ম মতেই) পয়গম্বরদের কিংবা বিশেষত ধর্মের মুলচরিত্রের সম্মান রক্ষার লিখিত কিংবা অলিখিত দ্বায়িত্ব জ্ঞ্যাত কিংবা অজ্ঞ্যাতসারে তার অনুসারীদের উপরেই বর্তায়।নাস্তিকের ধর্মকথা এতো বুদ্ধিমান, যৌক্তিক ছেলে এইটা বুঝতে না পারার কথা না।কারন তাঁরা যেহেতু ধর্ম বিশ্বাসী নয়, এমনটা আমার জানামতে কখনো বলেনি।
হয়তোবা তাঁদের প্রতিবাদের ভাষাটা একটু বেশি কঠিন ছিলো।কিংবা বিভিন্ন মতাদর্শিক বিতর্কে তাদের নৈকট্য অনুধাবন করলেও, এমন প্রবল প্রতিবাদ(প্রতিবাদের ভাষা, যদিও আমি মুকুলের ওই পোষ্ট পড়িনি, কিন্তু না,ধ-এর বক্তব্যটা এমনই ছিলো) আশা করেননি।
একক ব্যাক্তির মাঝেই ভিন্ন ভিন্ন বহু মতাদর্শের (অনেক কনফ্লিকটিং) মানুষ বাস করে।কোন যুদ্ধ কিংবা তর্কের লড়াইয়ে হয়তোবা কাউকে পাওয়া যায়, আবার অন্যকোন ক্ষেত্রে পাওয়া যায়না কিংবা যাবেনা।এইটাই হয়তোবা স্বাভাবিক এবং মনে হয় মেনে নেওয়াটাই সবার জন্য মংগলজনক।
বগ্লীয় এই কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ হোক।কুম্ভকর্ণ, আশাকরি আপনার ব্যাক্তি আক্রমণ মুলক পোষ্টটি সরিয়ে নেবেন।