somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের রাজ্যে একদিন (১ম পর্ব)

২০ শে মে, ২০১০ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামহ্যায়ার ইন ব্লগ এ এটি আমার প্রথম পোস্ট। ইনফ্যাক্ট আমার ব্লগার জীবনের প্রথম পোস্ট, জানিনা কেমন লাগবে সবার।

আমার নাম রিফাত। চট্টগ্রামের মেয়ে, এখন থাকি সুদূর মার্কিন মুল্লুকে। গিয়েছিলাম প্রিয় জন্মভূমিতে বেড়াতে গত অক্টোবর মাসে।(কি দূর্ভাগ্য!!! :(( :(( লিখতে হয় বেড়াতে গিয়েছিলাম, কবে যে লিখতে পারব এখন আমি দেশেই থাকি!!!)। ছিলাম প্রায়ই চারমাসের মত।

ডিসেম্বরের শেষের দিকে বেড়াতে গিয়েছিলাম পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবনের নীলগিরিতে। আজকে আপনাদের সাথে আমার সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করতে এই পোস্ট।

২৪ জনের ছোটখাটো একটা দল নিয়ে যাত্রা শুরু আমাদের, রাঙ্গাদিয়ার কাফ্‌কো থেকে, তিনটি গাড়িতে অসমভাবে বিভক্ত হয়ে। কারন আর কিছুই না বাচ্চাপার্টিরা সবাই যেতে চায় একসাথে একই গাড়িতে, নাহলে নাকি তাদের সব মজা মাটি হয়ে যাবে। আর মাশাল্লাহ্ দলে বাচ্চা ও নেহায়েত কম নয়, সর্বসাকুল্যে ছোট বড় সব মিলিয়ে ১৩ জন।এদের মধ্যে ১১ জনই পাঁচদলীয় (কারন পাঁচ ভাই-বোনের বাচ্চা সব) ঐক্যজোট গঠন করে একই গাড়িতে উঠতে বদ্ধপরিকর। আর বাকি দুইজন নিরপেক্ষ। কারন একজন এখনো কথাই বলতে শেখেনি, আর একজন মাত্র কথা বলা শুরু করেছে, তাও পুরো বাক্য পুরোপুরিভাবে বলতে পারেনা। পাঁচদলীয় ঐক্যজোটের আবার পছন্দ তাদের সবচে্ ছোট মামা অথবা চাচার গাড়ি।

যাই হোক, এতসব ঝামেলার পর যাত্রা শুরু হলো ৯টা৩০মি’। তিনটি গাড়ির একটি ভাড়া আর দুটি নিজেদের। সেই ভাড়া গাড়ির ড্রাইভার আর আমি হলাম একেবারে বহিরাগত, আর বাকি ২২ জন সবাই এক্ই পরিবারের সদস্য। আমাকে ঠিক বহিরাগতও বলা চলেনা, বলতে পারেন অর্ধবহিরাগত। কারন আমার কিঞ্চিৎ আত্মীয়তা আছে এদের সাথে, আমার মেজ বোন এই আমিন পরিবারের মেজ বউ। “হক্কল ছালুনোর বওয়র ফাতা” মানে সব তরকারিতে ধনিয়া পাতার মতো আমিও এদের সব পারিবারিক কাজে ঢুকে পড়ি নিতান্তই নাছোরবান্দার মতো।

এখানে বলে রাখি, আমার বোন ও তার তিন নম্বর দেবরও আমার মতই পরদেশেভাসি, থুক্কু প্রবাসি। প্রায় চার বছর পর আর বাবা-মার মৃত্যুর পর এটাই তাদের প্রথম স্ব-পারিবারিক পুনর্মিলন। দেশে গিয়েই শুনলাম প্লানিং হচ্ছে বান্দরবন না সুন্দরবন কোথায় যাওয়ার। ব্যাস, আর কি সব বাধা পেছনে ফেলে গোয়ার এঁড়ে বাছুরের মতো আমিও ঢুকে পরলাম দলে। ভাবখানা এমন, তোরা নিবিনা তো কি হয়েছে!!!! আমি কিন্তু তোদের সাথে যাবোই!!!!!!
যাত্রার শুরুতেও ভাবতেই পারিনি আমি বাংলাদেশে বোসে মালয়শিয়ার গেংটিং হাইল্যান্ডের স্বাদ নিতে যাচ্ছি। বান্দরবন আমার কাছে অপরিচিত কোন জায়গা না। আগেও গেছি দুইবার, তবে মেঘ্লার একটু পর মিলন্‌ছড়ি রির্সট পর্যন্ত। এবার দেখি গাড়ি উঠে যাচ্ছে আরো উপ্‌রে। ভাব্‌লাম এ আর এমনকি, কতদূরেই বা হবে বড়জোর চিম্বুক পর্যন্ত যাওয়া হবে। ভালই হবে চিম্বুক ও দেখা হয়ে যাবে। কিছুক্ষন পরে দেখি আমরা চিম্বুক ছাড়িয়ে উঠে যাচ্ছি আরো উপরের দিকে।পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা কখনো যাননি, তারা কখনই বুঝতে পারবেন না রাস্তা গুলো কি পরিমান বিপদজ্জনক। একদিকে খাড়া পাহাড় আর অন্যদিকে অতল খাদ্, সেইসাথে ০-৯০ ডিগ্রী কো্নের ভয়ঙ্কর বাঁক। ড্রাইভার্কে অসম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে গাড়ি চালাতে হয়।
শেষ্ পর্যন্ত সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ২৪০০ ফুট উপরে গিয়ে শেষ হল আমাদের কাঙ্খিত যাত্রা।গাড়ী থেকে নেমেই ভাল লাগায় ছেয়ে গেল মনটা। যাক্, এত কষ্ট করে এতদূর আসা একটুও বিফলে যায়নি। জায়গাটার নাম নীলগিরি কে দিয়েছে জানিনা, তবে নামটা সার্থক। সিঁড়ি বেয়ে রির্সটের কটেজ গুলোতে যেতেই মন ভাল হয়ে যাবে যে কোন মানুষের। এই গভীর জংগলের ভেতর সাজানো গোছানো এত সুন্দর এক্টা জায়গা থাকবে স্বপ্নেও তা ভাবিনি। এর পুরো কৃতিত্ব কিন্তু আমদের সেনাবাহিনীর। পুরো রির্সটের দেখাশোনা করার দায়িত্বভার তাদেরই উপর।


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১০ দুপুর ১:৫৪
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×