দেশের প্রথম শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট’। এর প্রতিষ্ঠাতা চিত্রশিল্পী শশীভূষণ পাল। ১৯০৪ সালে নিজ বাড়িতে তিনি এই শিল্প বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। খুলনা বিভাগের দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বরপাশায় অবস্থিত এই শিক্ষায়তনে প্রায় ৪১ বছর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি জেলা বোর্ড ও সরকারী অনুদানের আওতায় আসে। ১৯২৯ সালে স্থান পরিবর্তন করে স্কুলটি চলে আসে যশোর রোডের পশ্চিম পাশে। শিলালিপি অনুযায়ী, ১৯২৯ সালে বর্ধমানের মহারাজাধিরাজের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারীভাবে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ওই বছরের ১৯ মে ভবনটির উদ্বোধন করেন খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর এইচ কুইনন্টন।
১৯৮৩ সালে এখান থেকে স্কুলের কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয় খুলনার গল্লামারিতে। সে সময় নামকরণ করা হয় ‘শশীভূষণ আর্ট কলেজ।’ পরে খুলনা আর্ট কলেজ নামে পরিচিতি পায়। ২০০৯ সালে এটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ প্রতিষ্ঠানে শশিভূষণ পালের আঁকা ৫৩টি চিত্রকর্ম সংরক্ষিত রয়েছে।
চুন-সুরকি আর ইটের গাঁথুনিতে তৈরি একতলা এই ভবনটি। বারান্দার সামনে ছয়টি প্রবেশপথসহ মোট ৯টি দরজা রয়েছে। ৫৫ ফুট দৈর্ঘ্য আর ২৫ ফুট প্রস্থের ভবনটির দরজা-জানালাগুলো বেশ প্রশস্ত। লোহার পাতের ওপর মাটির টালি বসিয়ে তার ওপর ছাদ ঢালাই দেওয়া।
বাংলার গভর্নর, বর্ধমানের মহারাজা বিজয়চাঁদ মহতব, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পল্লিকবি জসিমউদ্দীন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী এস এম সুলতানসহ দেশি–বিদেশি অনেক শিল্পরসিক এই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এসেছিলেন। ১৯৭৪ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও কবি জসিমউদ্দীন এই প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশের প্রথম অংকন শিল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠানর মর্যাদা দিয়েছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৮