আমি সে সময় মাত্র ওয়ার্ডে যাওয়া শুরু করেছি। আমার ওয়ার্ড মেডিসিন দিয়ে শুরু হয়। এপ্রন পরে গলায় স্টেথস্কোপ ঝুলিয়ে পুরা ডাক্তার ভাব নিয়ে হাসপাতালে যেতাম আর আলগা ভাব নিতাম। যদিও সেসময় ডাক্তারীর ড জানতাম না। ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগের। সকাল ৯টায় ওয়ার্ডে যেয়ে শুনি পলিটেকনিক কলেজের একটা ছেলে নাকি, কি খেয়ে ভর্তি হয়েছে। ছেলেটির বয়স ১৮-১৯ বছর হবে। আমাদের রেজিস্টার স্যার তার কাছে আমাদের নিয়ে গেলেন। ছেলেটার বেডের পাশে দেখি কয়েকজন তরুন আর একজন মধ্যবয়সি ভদ্রলোক। ছেলেটা অজ্ঞান,স্যালাইন চলছে। স্যার ছেলেটাকে অনেক ডাকাডাকি করলেন। কোন সারা শব্দ নেই। বেডের পাশের তরুন মানে ছেলেটির বন্ধুদের কাছ থেকে আমরা যা জানলাম তা হল-ছেলেটির শিউলি নামে একটা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি গরীব পরিবারের হওয়ায় ছেলেতির ধনী পরিবার সম্পর্কটি মেনে নেয় নাই। মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ছেলেটি হোস্টেলের ছাদে গিয়ে কি যেন খেয়ে এসে ঘুমায়। এরপর সকালে ঘুম থেকে না উঠায় ছেলেটির হোস্টেলের রুমমেটদের সন্দেহ হয়। তারপর ত এই হাসপাতালে। স্যার বিভিন্ন ভাবে ছেলেটির জ্ঞান ফেরানোর চেস্টা করে বিফল হলেন। বুকের চামড়ায়,হাতে,হাতের তালুতে কি দিয়ে যেন মেয়েটির নাম লিখেছে, চামড়া পুড়ে সাদা হয়ে গেছে। যখন স্যার এসব দেখে, ছেলেটির বাবাকে দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি লজ্জায় মরে যাচ্ছেন। এক সময় তিনি রুম থেকে বের হয়ে যান। বেশ কিছু সময় পরে হঠাৎ করে ছেলেটা চোখ খুলে অস্বাভাবিক ভাবে তাকায় আর মৃদু ভাবে শিউলি শিউলি করে ডাকে। পাশে থাকা নার্স বলে এইত আমি, দেখ দেখ। স্যারের দিকে তাকিয়ে দেখি স্যার মুচকি মুচকি হাসছেন। ভারসাম্যহীন ভাবে ছেলেটি শুধু শিউলি শিউলি করছে,নার্সের কথা যেন তার কানেই ধুকছে না। আমি মনে মনে বলি হায়রে প্রেম!!!যমের মুখ থেকে ফিরে আসেই প্রেমিকা কে খুঁজছ, যে মা তোমারে ১০ মাস গর্ভে রাইখা এই দুনিয়ার মুখ দেখাইলো তারে ডাকলা না, যে বাবা তোমারে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তোমার মুখে অন্ন যোগাইল তারে ডাকলা না,ডাকলা প্রেমিকারে। প্রেমের কি অসীম শক্তি! পরের দিন গিয়ে শুনি তাকে নাকি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হায়রে ভালবাসা!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আমি সে সময় মাত্র ওয়ার্ডে যাওয়া শুরু করেছি। আমার ওয়ার্ড মেডিসিন দিয়ে শুরু হয়। এপ্রন পরে গলায় স্টেথস্কোপ ঝুলিয়ে পুরা ডাক্তার ভাব নিয়ে হাসপাতালে যেতাম আর আলগা ভাব নিতাম। যদিও সেসময় ডাক্তারীর ড জানতাম না। ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগের। সকাল ৯টায় ওয়ার্ডে যেয়ে শুনি পলিটেকনিক কলেজের একটা ছেলে নাকি, কি খেয়ে ভর্তি হয়েছে। ছেলেটির বয়স ১৮-১৯ বছর হবে। আমাদের রেজিস্টার স্যার তার কাছে আমাদের নিয়ে গেলেন। ছেলেটার বেডের পাশে দেখি কয়েকজন তরুন আর একজন মধ্যবয়সি ভদ্রলোক। ছেলেটা অজ্ঞান,স্যালাইন চলছে। স্যার ছেলেটাকে অনেক ডাকাডাকি করলেন। কোন সারা শব্দ নেই। বেডের পাশের তরুন মানে ছেলেটির বন্ধুদের কাছ থেকে আমরা যা জানলাম তা হল-ছেলেটির শিউলি নামে একটা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি গরীব পরিবারের হওয়ায় ছেলেতির ধনী পরিবার সম্পর্কটি মেনে নেয় নাই। মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ছেলেটি হোস্টেলের ছাদে গিয়ে কি যেন খেয়ে এসে ঘুমায়। এরপর সকালে ঘুম থেকে না উঠায় ছেলেটির হোস্টেলের রুমমেটদের সন্দেহ হয়। তারপর ত এই হাসপাতালে। স্যার বিভিন্ন ভাবে ছেলেটির জ্ঞান ফেরানোর চেস্টা করে বিফল হলেন। বুকের চামড়ায়,হাতে,হাতের তালুতে কি দিয়ে যেন মেয়েটির নাম লিখেছে, চামড়া পুড়ে সাদা হয়ে গেছে। যখন স্যার এসব দেখে, ছেলেটির বাবাকে দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি লজ্জায় মরে যাচ্ছেন। এক সময় তিনি রুম থেকে বের হয়ে যান। বেশ কিছু সময় পরে হঠাৎ করে ছেলেটা চোখ খুলে অস্বাভাবিক ভাবে তাকায় আর মৃদু ভাবে শিউলি শিউলি করে ডাকে। পাশে থাকা নার্স বলে এইত আমি, দেখ দেখ। স্যারের দিকে তাকিয়ে দেখি স্যার মুচকি মুচকি হাসছেন। ভারসাম্যহীন ভাবে ছেলেটি শুধু শিউলি শিউলি করছে,নার্সের কথা যেন তার কানেই ধুকছে না। আমি মনে মনে বলি হায়রে প্রেম!!!যমের মুখ থেকে ফিরে আসেই প্রেমিকা কে খুঁজছ, যে মা তোমারে ১০ মাস গর্ভে রাইখা এই দুনিয়ার মুখ দেখাইলো তারে ডাকলা না, যে বাবা তোমারে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তোমার মুখে অন্ন যোগাইল তারে ডাকলা না,ডাকলা প্রেমিকারে। প্রেমের কি অসীম শক্তি! পরের দিন গিয়ে শুনি তাকে নাকি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।