সেন্ট মার্টিনে প্রথম যখন পা রাখলাম তখন বেশ মন খারাপ হয়েছিল। এত কষ্ট করে এ কোথায় এলাম রে বাবা! দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও কক্সবাজারের লাবনী বা ইনানী বীচের সাথে এর তেমন পর্থক্য খুঁজে পেলাম না। কংক্রিটের সারি সারি হোটেলের বেমানান প্রাঙ্গন অতিক্রম করে ক্লান্ত আমি জেনারেটরের বিরক্তকর তীব্র আওয়াজ সাঙ্গ হবার পরে অনেকটা হতাশা নিয়েই ঘুমোতে গেলাম। তখনও আমার কল্পনার বাইরে ছিল আগামী ভোরে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে। মুগ্ধ বললে খুব কম বলা হয়, সত্যি বলতে কি আমি রীতিমতো বিমহিত হয়ে গেলাম সেই ভোরে দেখা সেন্ট মার্টিনের পশ্চিম পাড়ের সামুদ্রিক সৌন্দর্য্য দেখে। প্রকৃতি এত সুন্দর হতে পারে!
অনেকদিন আগে আমাকে বিমহিত করেছিল যে দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য্য, সেই সেন্ট মার্টিনের একটি খবর আমাকে প্রচণ্ড আহত করলো। খবরটি আমাদের দেশের প্রিন্টিং মিডিয়ার দৃষ্টিকোন থেকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় কারণ তা ছাপা হয়েছে প্রথম আলোর পঞ্চম পাতায় (যদিও প্রথম পাতায় একটি সংযুক্তি ছিল)। কিন্তু আমি মনে করি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের পরিবেশ বিপর্যয়ের দৃষ্টিকোন থেকে এটি অবশ্যই একটি বড় খবর যা প্রথম পাতায় আসতে পারতো আর তা হচ্ছে-"বিস্ফোরণে কেঁপে কেঁপে উঠছে সেন্ট মার্টিন"।
সবাই বলে অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোক পাথর। আমার যেন সেই পাথর হবারই দশা। কিন্তু কোন কোন পাথরও নাকি কথা বলে। সেই থেকে এই লেখার অবতারনা। হায় আমরা আজ কোথায়... কোন দিকে... চলতে শুরু করেছি। মাত্র সাত বর্গমাইলের এই ছোট্ট প্রবাল দ্বীপ এমনিতেই কৃত্রিম অবকাঠামোতে ভারাক্রান্ত। তার উপর যদি সেই দ্বীপের বুকে লুকিয়ে থাকা বড় বড় পাথর বিষ্ফোরকের মাধ্যমে ছোট পাথরে রূপন্তরিত করার পর সেটি ব্যবহার করেই তার উপর কংক্রিটের জঞ্জাল বাড়ানো প্রক্রিয়া চলতেই থাকে তাহলে সেই দ্বীপটিই বা আর কতদিন পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে?
তাই প্রতিবাদ করে বলতে চাই "এখনই বন্ধ করা হোক এমনতর ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক কার্যকলাপ"। কিন্তু কি হবে এসব লিখে? তীব্র লোভের কাছে এসবের কি কোন মূল্য আছে? যারা এর সাথে জড়িত আর যাদের দায়িত্ব এসব প্রতিরোধ করা তাদেরকে কি কোন দিন বিচারের সম্মুখিন হতে হবে? হবে কি কোন দিন শাস্তি? তাই তো বলি সময় থাকতেই ঘুরে আসুন সেন্ট মার্টিন আর ফ্রি উপভোগ করতে থাকুন কৃত্রিম ভূ-কম্পন। এমন দূর্লভ সুযোগ পৃথিবীতে আর কোথাও পাবেন কি? হা. হা.. হা...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




