somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আঞ্চলিক ভাষা কত্ত মজা!

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চান্দিনা, কুমিল্লা

নমুনা -১: মাদাইন্নাবালা আইয়্যো কিন্তুক!
(সম্পর্কে মামী তার পাশের বাড়ীতে অনেকদিন পর বেড়াতে আসা ভাগনীকে)

এইডা কে! আরে মাশুদের মার বরো মাইয়্যাডা না! কিগ মা, কি খবর তোমার? তোমার মায় বালানি? আহ্হারে, গতফিরা আইয়্যা আল্লাছাইল দোহনের সমায় আতো ডেহিডা পইরা যেই কষ্টডা তোমার মায় ফাইছিল, ও মাগ্গো মা, মনে ফরলে অহনো আমার কইলজাডা মোছরাইয়্যা ওডে। বিতরে সাদা মাংসডা দেহা যাইত্যাছে, একফোডা রক্ত নাই! ও মাগ্গো মা ! অহন্ কিরুম আত্ডা, হুগাইছেনিগো মাইয়্যা? আগুন মাসো খন্-টন্ শেষ অইলে আবার আইয়্যা এক ফাক গুইরা যাইত কইও। আইয়্যো না, আংগ বাইত সোলমানের বউডা দেইক্কা যাইও। আরে, আরে মাইয়্যায় কি কয়, কাইল্লা রেশমার হাদি! তো মা তুমি থাকবানি কয়ডা দিন? আইছ্ছা, আত্মোক দুইয়্যা রেশ নাও। রেশ টেশ নিয়া মাদাইন্নাবালা আইয়্যো কিন্তুক!


নমুনা-২: নেটওয়ারের প্রবলেং
(ঢাকা থাকে ছেলে, মা মুঠোফোনে কথা বলছে তার সাথে)

আরে, আরেট্টু জোরে কও, এ্যানো দানের মিশিং লাগাইয়্যা রাকছে, কিছ্ছু হোনা যায় না। হ হ হোনতাছি। নেটওয়ারের প্রবলেং। বাত খাইছনি? কি ছালন রানছ? কি! হিং মাছ! হিং মাছ ফাইলা কই? মাশাল্লা বালে। তোমার এ্যানো কিয়ের কেওয়াজ? ও টেন্ডেস্টার! টেন্ডেস্টার আবার কিনলা কবে? হুদাহুদি ট্যাহা-ফইসাডি নষ্ট কইরো না। না, না, তোমার নানায় দো হেদিনকা তুমি ডাহা যাওনের কদ্দুর ফরেই গ্যাছিগ্গা। হ মার শইলডা বালে। হ তোমার আব্বায়ও বালা। হোনো, ট্যাহা-ফইসা লইয়্যা ছিন্তা কইরোনা। ল্যাহা-পরা কইরো ঠিকমতো, ফাছ ওক্ত নোয়াজ ফইরো। আল্লার কাছে ছাইয়ো , ছাইলে আল্লায় দিবো। যার কেউ নাই, তার আল্লা আছে। আইছ্ছা ঠিকাছে, রাকলাম।

নমুনা-৩: ডুলাডা আর গইট্টাডাও লইয়্যা ল
(পুকুরের পানি সেচ শেষ, দুই উৎসুক পিচ্চি কথা বলছে মাছ ধরা নিয়ে)

-যাবিনি? সুম্ইুন্নাগো হুগুরডা হিছ্তাছে। আরে মাছরে মাছ! হইল্ মাছ, জাগুর মাছ আরোযে কত্তোরহম মাছ আছে গ্যালে দ্যাক্তারবি। দশমুইন্না বোয়ালডা আছে না, ইডাত বলে জৈনপুরের হুজুরের তাবিজ লাগাইন্না আছে! হাবলা হুলডির নিচে বলে দেউনসিডার বাসা। হুগুরের তলা দিয়া খোরল কইরা এইডা গিয়া হারুইজ্জার ডেংগাত ওটছে। হিংগিড্ডাত্তে, জির্বাইশ্যেত্তে, কাশাইরখোলা-বিরখাল, হতুফুর- সব জাগাত্তে মানুষ আইয়্যা বইরা গ্যাছে। ল, ল তারাতারি ল। ডুলাডা আর গইট্টাডাও লইয়্যা ল। না, না তোর মাত্তে কওন লাগদনা। আরে আয়ছেন। ফেত্তিনিডি মনেঅয় নাইম্মা গেছিগ্গা। একটা হইল্ মাছ ফাইলে অয়।

নমুনা -৪: কালিন্জাবালা বারয়, সারাডাদিন ডাং ফিট্টা দোফরে আইয়্যা কতোক্কন বরে
(গাঁয়ের দুরন্ত কিশোর, যার কাজ-কর্ম নিয়ে চরম বিরক্ত বাবা তার মাকে শাসানি দিচ্ছে)

হোনছোনি? কই গ্যালা? তে কই? কই! ফুব্বাত্র! তে ফুব্বাত্র কিত্ত গ্যাছে, হ্যাতার কি কোনো কাম নাই ? তারে কাইলকা একটা হারা দিছি, আইজ পইরজন্ত যদি তে এইডা করতো। তে গেছে গুড্ডি উরাইতো ! তোমার ফোলা ও উরবো। এই গুড্ডিই তারে উরাইবো। যেদিন হাফ অইয়্যা দংশন করবো হেদিন বুজবা। ল্যান্জা অলা হাফে দংশন করবো তারে, ল্যান্জাঅলা হাফে। আরে কালেরকাডা, তুই যে কালিন্জাবালা বারছ, সারাডা দিন ডাং ফিট্টা দোফরে আইয়্যা কতক্কন বরছ্। তোর হুশ আছেনি, কোন্দিয়ার গু কোন্দিয়া বারয়। নে ফুত, কইরা যা নাগরালি। আরে, আর কয়দিন? আমারদো এক ঠ্যাং হান্দাইয়্যা গ্যাছে। বেশিদিন আর নাই, মল্লে বুজবি. . .


নমুনা-৫: হ্যাতারা হ¹লে হ্যাবেডার লাইগ্গা গাডাত খারইয়্যা রইছে
(বিয়ের দাওয়াত না পাওয়া এক বালক রাগে-ক্ষোভে তার মাকে)

আম্মা, আম্মা, আব্বায় কই? হ্যাতারা হ¹লে হেবেডার লাইগ্গা গাডাত খারইয়্যা রইছে। তারাতারি হোতাত্তে ওরত কন। না আমি যাইতাম্ন। আমি কি নাদান নি! এ্যামনে দাওয়াত দ্যায় না, উইজ্জা উইজ্জা যাওনের আমার কোনো শক নাই। ফাল্লে আম্নে যান।

নমুনা-৬: গণি মিয়া একজন গরিব কৃষক

গইন্নায় এক্কারে গরিব। হ্যাতার কিছ্ছু নাই। আগে মোনোয় কিছু ক্ষ্যাত-ট্যাত ফোষানি করত। অহন তা-ও করে না। সারাবছর কামলা খাডে। ফ্যাডে-বাতে ছলে আর কি কোনোরম। তো, তার লক্কি আছিল আগের বউডা। বেডিত্তে ট্যাহা ফইসাডি লইয়্যা, বেডিডারে মাইরা তারফরে ছার্ইরা দিছে। এহন একটা বিয়া করছে দজ্ঝাল। যেই রানির রানি অই বেডি, গইন্নারে চুইষ্যা খাইতাছে। তার শইলডা এক্কারে আতামালার কাডির মতো অইয়া গ্যাছে। মোনোয়না আর বেশিদিন বাছব।

এলাকার নাম: পাড়া-ক্বারি বাড়ি, গ্রাম- বামনিখোলা, উপজেলা-চান্দিনা, কুমিল্লা, বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থান: ২৩ ডিগ্রী ২৫ মিনিট ১২.৭৬ ইঞ্চি উত্তর, ৯০ ডিগ্রী ৫৬ মিনিট ৫৬.৯৮ ইঞ্চি পূর্ব
যে সময়ের মধ্যে এ ভাষা ব্যাবহৃত: ধূসর অতীত থেকে বর্তমান (২০১১ সাল)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×