ঐশীর কথা মনে আছে আপনাদের? কেউ কেউ ভুলে গেলেও বেশিরভাগ মানুষের অন্তরে আজও আছে ঐশী। মিডিয়ার কল্যানে বাবা-মাকে হত্যার পর সে যত আলোচিত হয়েছিল এমন আলোচিত হওয়ার সংখ্যা খুবই কম যদিও ছেলে-মেয়ের হাতে খুন হওয়া বাবা মায়ের সংখ্যা কম নয়। গুগলে সার্চ দিলে পত্রিকার লিংক গুলো পাবেন খুব সহজেই।
.
২০১৩ সালে ঐশী তার বাবা-মাকে হত্যা করে...এরপর কেটেছে দীর্ঘ সময়। ঐশীকে নিয়ে অনেক লেখা-লেখি আলোচনা সমালোচনার জন্ম নিয়েছিল। তখন বারবার যে কথাটা বারবার সামনে আসছিল, “ঐশীর খুরি হওয়ার পিছনে যতটা না সে নিজে দায়ী তার থেকে বেশী অংশে দায়ী আমাদের সমাজ ব্যবস্হা। আর তার বাবা-মা ও কম দায়ী নয়”
সমাজের অব্যবস্হাপনা আর বাবা-মায়ের অতি আদর আর উদাসীনতায়ই ছেলে মেয়ে গুলো বেশি বিগড়ে যায়...অডেল প্রাপ্তিতে যখন ভাটা লাগে তখন আর আপন পর না দেখে নিজের প্রয়োজন মিটাতে হয়ে ওঠে খুনী, নিষ্ঠুর খুনী।
.
ব্যতিক্রম ও আছে... বকাবকি করায় মাকে হত্যা বিলাসি খুনী না হলেও যে মাকে হত্যা করতে পারে সে যে নিষ্ঠুর নয় তা বলা কঠিন। তবে এ নিষ্ঠুরতাকেও ছাড়িয়ে যায় যখন কোন পুত্র তার বাবা-মাকে আগুনে পুড়িয়ে মারে এ ঘটনা সামনে আসে।
.
আমাদের সময় এস এস সি পরীক্ষার পর একটা সাইকেল চাইলে সামর্থ থাকার পরও অনেক সময় দিতে চাইতো না বাবা-মা। বলতো আর একটু বড় হও ভাল রেজাল্ট করো তখন দেখা যাবে। মধ্যবিত্ত হওয়ার করনে আরো অনেক প্রয়োজনের ভিড়ে সন্তানদের কেও ত্যাগ করতে হতো কিছু কিছু...
সেখানে পাচঁ লক্ষ টাকা দিয়ে মোটরবাইক কিনে দেয়ার পরও যখন বাবাকে খুন হতে হয় নিজ ছেলে কাছে, তখন ছেলে থেকে বেশি আফসোস হয় বাবার জন্য। যার টাকা থাকলেও ছেলেকে মানুষ করতে পারে নি, এ টাকার ঊৎস নিয়ে বলতে পাবো না যদিও কিন্তু হালাহ বৈধ পথের ইনকামে ছেলেকে এতো টাকা দেয়া যে কষ্টকর তা বুঝতে বিষেশজ্ঞ হওয়া লাগে না।
.
সন্তানের জন্মের পর বাবা মায়ের কিছু দায়িত্ব থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ছেলেকে নৈতিক শিক্ষা দেয়, যা টাকা পয়সার থেকেও গুরুত্বপূর্ন।
ছেলে মেয়েকে সঠিক ভাবে লালন পালন না করলে যে তারা ঐশী আর ফারদিনের (আগুনে পুড়িয়ে বাবাকে হত্যা করেছে যে সন্তান তারই নাম) মতো হয়ে উঠকে তাতে সন্দেহ নেই।
ছেলেটার নাম ফারদিন হুদা। তার বাবা রফিকুল হুদা।
ছেলেটা হুদা হুদাই তার বাবাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে! ছেলের চাহিদা ছিল ৭ লাখ টাকা দামের মটর সাইকেল, ছেলেকে কিনে দেয়া হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা দামের মটর সাইকেল। কিন্তু এতে ছেলের প্রেস্টিজ পাংচার হয়ে গেছে। তাই বাবাকে পুড়িয়ে মেরেই ফেলল।
কত স্বাভাবিক হত্যা তাই নয় কি?
তবে এখন সময় এসেছে , ঐশী আর ফারদিনের বাবা-মায়ের মতো যারা আছেন তাদের শিক্ষা নেয়ার। যদি নিতে পারেন তো ভাল আর না পারলে...উচিত শিক্ষা আপনার ছেলে মেয়েরাই দিবে যখন তখন আর সুযোগ থাকবে না।
এটা কোন ইসলামি পোষ্ট না। যারা পরকালে বিশ্বাসী না তাদের জন্য বলছি, দুনিয়ায় ভাল থাকতে চাইলেও ছেলে মেয়েদের এমনভাবে লালন পালন করুন যাতে আপনার ছেলে ডাক্তার হয়েও নিজের পর্ণ ভিডিও আপলোড করে আপনার মান সম্মান না ডোবায়।
যারা মনে করছেন পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা মানেই ছেলে মেয়ে মানুষ হয়ে গেছে, আপনি বাবা মা হিসেবে সফল হয়ে গেছেন, তাহলে আপনার জন্য সমবেদনা রইল।