আশুরায় অতীত ও ভবিষ্যত ঘটনাবলির বানোয়াট ফিরিস্তি
মিথ্যাবাদীরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামে জালিয়াতি করে বলেছে:
১. আশুরার দিনে আল্লাহ আসমান ও যমিন সৃষ্টি করেছেন।
২. এ দিনে তিনি পাহাড়, পর্বত, নদনদী.... সৃষ্টি করেছেন।
৩. এ দিনে তিনি কলম সৃষ্টি করেছেন।
৪. এ দিনে তিনি লাওহে মাহফূয সৃষ্টি করেছেন।
৫. এ দিনে তিনি আরশ সৃষ্টি করেছেন।
৬. এ দিনে তিনি আরশের উপরে সমাসীন হয়েছেন।
৭. এ দিনে তিনি কুরসী সৃষ্টি করেছেন।
৮. এ দিনে তিনি জান্নাত সৃষ্টি করেছেন।
৯. এ দিনে তিনি জিবরাঈলকে (আ) সৃষ্টি করেছেন।
১০. এ দিনে তিনি ফিরিশতাগণকে সৃষ্টি করেছেন।
১১. এ দিনে তিনি আদমকে (আ) সৃষ্টি করেছেন।
১২. এ দিনে তিনি আদমকে (আ) জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন।
১৩. এ দিনে তিনি ইদরীসকে (আ) আসমানে উঠিয়ে নেন।
১৪. এ দিনে তিনি নূহ (আ)-কে নৌকা থেকে বের করেন।
১৫. এ দিনে তিনি দায়ূদের (আ) তাওবা কবুল করেছেন।
১৬. এ দিনে তিনি সুলাইমান (আ)-কে রাজত্ব প্রদান করেছেন।
১৭. এ দিনে তিনি আইঊব (আ)-এর বিপদ-মসিবত দূর করেন।
১৮. এ দিনে তিনি তাওরাত নাযিল করেন।
১৯. এ দিনে ইবরাহীম (আ) জন্মগ্রহণ করেন... খলীল উপাধি লাভ করেন।
২০. এ দিনে ইবরাহীম (আ) নমরূদের অগ্নিকুণ্ডু থেকে রক্ষা পান।
২১. এ দিনে ইসমাঈল (আ) কে কুরবানী করা হয়েছিল।
২২. এ দিনে ইউনূস (আ) মাছের পেট থেকে বাহির হন।
২৩. এ দিনে আল্লাহ ইউসূফকে (আ) জেলখানা থেকে বের করেন।
২৪. এ দিনে ইয়াকুব (আ) দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান।
২৫. এ দিনে ইয়াকূব (আ) ইউসূফের (আ) সাথে সম্মিলিত হন।
২৬. এ দিনে মুহাম্মাদ (ﷺ)জন্মগ্রহণ করেছেন।
২৭. এ দিনে কেয়ামত সংঘঠিত হবে....।
কেউ কেউ বানিয়েছে: মুহাররামের ২ তারিখে নূহ (আ) প্লাবন হতে মুক্তি পেয়েছেন, ৩ তারিখে ইদরীসকে (আ) আসমানে উঠানো হয়েছে, ৪ তারিখে ইবরাহীমকে (আ) অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরূপ অগণিত ঘটনা এ মাসে বা এ দিনে ঘটেছে এবং ঘটবে বলে উল্লেখ করেছে জালিয়াতরা তাদের এ সকল কল্প কাহিনীতে। মোট কথা হলো, আশুরার দিনে মূসা (আ) ও তাঁর সাথীদের মুক্তি পাওয়া ছাড়া আর কোনো ঘটনা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। আদমের (আ) এর তাওবা কবুল, নূহ (আ) এর নৌকা জূদী পর্বতের উপর থামা ও ঈসা (আ) জন্মগ্রহণ করার কথা অনির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো কোনো সাহাবী-তাবিয়ী থেকে বর্ণিত। আশুরা বা মুহাররাম সম্পর্কে আর যা কিছু বলা হয় সবই মিথ্যা ও বাতিল কথা। দুঃখজনক হলো, আমাদের সমাজে মুহাররাম বা আশূরা বিষয়ক বই পুস্তকে, আলোচনা ও ওয়াযে এ সমস্ত ভিত্তিহীন কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়। -------------------------------------------------------------------------------------
ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূ‘আত ২/১১২-১১৭; ইবনুল কাইয়িম, আল-মানার, পৃ. ৫২; যাহাবী, মীযানুল ই’তিদাল ২/১৯০; ইবনু হাজার, লিসানুল মীযান ২/১৬৯; সুয়ূতী, আল-লাআলী ২/১০৮-১০৯; ইবনু র্আরাক, তানযীহ ২/১৪৯; মোল্লা কারী, আল-আসরার, পৃ. ৩০০; আব্দুল হাই লাখনবী, আল-আসার, পৃ. ৯৪-৯৭; দরবেশ হূত, আসনাল মাতালিব, পৃ. ২৭৭-২৭৮; আজলূনী, কাশফুল খাফা ২/৫৫৭, হাদিসের নামে জালিয়াতি- ৫১১ পৃ.
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৭