somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চুক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ বাংলাদেশ

২০ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলার মানুষের চুক্তির অভিজ্ঞতা বড়ই করুণ। ১৭৫৭ সালে ৩ জুন মীরজাফর চুক্তি করেছিল ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভের সাথে। ফার্সীতে লেখা ১২ দফা সেই চুক্তির মাধ্যমে মীরজাফর বাংলার মানুষের জন্য দু'শ বছরের দাসত্ব খরিদ করেছিলেন। ভারতবর্ষ থেকে ৭৫০ বছরের মুসলমান শাসন উচ্ছেদ হয়েছিল এবং সেই চুক্তির ফলে রাজার জাত থেকে বাংলার মুসলমানদের এক রাতে ভিখারীর জাতে পরিণত করা হয়েছিল। তাই বলছিলাম বাংলার মানুষের চুক্তির অভিজ্ঞতা বড়ই করুণ।
মীরজাফর-ক্লাইভের চুক্তির শর্ত ছিল ১২টি। ১. সিরাজ ইংরেজদের সাথে যে সন্ধি করেছিল তার সমস্ত শর্ত মানতে বাধ্য থাকবো। ২. দেশীয় কিংবা ইউরোপীয়, যারা ইংরেজদের শত্রু তারা বাংলার নবাবেরও শত্রু। ৩. বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার ফরাসীদের যেসব কুঠি বা ধন-সম্পত্তি আছে সব ইংরেজদের দেয়া হবে। ৪. সিরাজদৌলার কলকাতা অধিকারের সময় কোম্পানির যে ক্ষতি হয়েছে এবং যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যদের পেছনে যে ব্যয় বহন করতে হয়েছে, তা পূরণ করার জন্য ইংরেজদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। ৫. কলকাতায় ইংরেজ অধিবাসীদের যেসব মালামাল লুন্ঠিত হয়েছে তার ক্ষতিপূরণের জন্য ২০ লাখ টাকা দেয়া হবে। ৬. দেশের অভিজাত হিন্দুদের ক্ষতিপূরণের জন্য ২০ লাখ টাকা দেয়া হবে। ৭. আর্মেনিয়ানদের ক্ষতিপূরণের জন্য ৭ লাখ টাকা দেয়া হবে এবং ইংরেজ ও অন্যান্য দেশীয়দের কাকে কত টাকা দিতে হবে তা নির্ধারণ করবে ক্লাইভ, ওয়াটসন, ডেক, ফিলপ্যাট্রিক প্রমুখ। ৮. কলকাতা যে খাত দ্বারা বেষ্টিত তার ভিতরে অনেক জমিদারের জমি আছে, সেইসব জমি এবং খাতের বাইরের আরো ৬শ' গজ জমি ইংরেজদের দান করা হবে। ৯. কলকাতার দক্ষিণে কুপল পর্যন্ত ইংরেজ কোম্পানির জমিদারী হবে। ১০. আমি ইংরেজ সৈন্যের সাহায্য চাইলে তাদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবো। ১১. হুগলীর দক্ষিণে কোনো দূর্গ প্রস্তুত করবো না। ১২. তিন প্রদেশের রাজ্যে অধিষ্ঠিত হলেই উল্লিখিত সমস্ত টাকা শোধ করে দেবো।
মীরজাফর চুক্তির শর্তগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল। ক্লাইভের সাহায্যে সিংহাসনে আরোহন করেই ইংরেজ এবং স্থানীয় হিন্দুদের দাবি মেটাতে গিয়ে রাজকোষ খালি করে ফেলেছিল, দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। মীরজাফর চুক্তির শর্ত পালন করেছিল ঠিকই, কিন্তু ইংরেজরা সেই চুক্তির কানাকড়িও মূল্য দেয়নি। এমনকি মীরজাফরের গদির নিশ্চয়তাটুকুও তারা পালন করেনি। যখনি প্রয়োজন শেষ হয়েছে। তখনই পদাঘাত করে তাকে ফেলে দিয়েছে। আসলে তাই হয়। বিশ্বাসঘাতকের সাথে কেউ বিশ্বাস রক্ষা করে চলে না। সবলের সাথে দুর্বলের কখনও মৈত্রী চুক্তি হয় না, যা হয়, তার নাম বশ্যতা চুক্তি। এমন বশ্যতা চুক্তির নজির পরে আরো দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতের সাথে এই ধরনের এক অসম গোপন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল, যা কুখ্যাত ৭ দফা চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তির শর্তে বলা হয়েছিল: ১. যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকিদের চাকরিচ্যুত করে শূন্যপদে ভারতীয়দের বসানো হবে। ২. বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে। কতদিন অবস্থান করবে তার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। ৩. বাংলাদেশের কোনো নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকবে না। ৪. অভ্যন্তরীণ আইন-শৃক্মখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটা প্যারা মিলিটারী গঠন করা হবে। ৫. সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান ৬. দু'দেশের বাণিজ্য হবে খোলাবাজারভিত্তিক। বছরওয়ারি যার যা পাওনা সেটা স্টালিং এ পরিশোধ করা হবে। ৭. বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে।
স্বাধীনতার লড়াই করতে গিয়ে কেউ কি এমন চুক্তি করতে পারে? আর একটা চুক্তির কথা বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন ভুলবে না। সেই চুক্তিটিও ছিল ক্লাইভ-মীরজাফর চুক্তির মতো ১২ দফা গোপন চুক্তি।
১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের সাথে আর একটা ২৫ বছর মেয়াদী চুক্তি করেছিলেন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী। আশ্চর্যের বিষয় ক্লাইভ-মীরজাফর চুক্তির মতো এই চুক্তিটিও ছিল ১২ দফা চুক্তি। এটিও ছিল একটি গোপন চুক্তি। চুক্তিটি দীর্ঘ ২৫ বছর মেয়াদকালের জন্য করা হলেও জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা দূরে থাক জনগণকেও কোনোদিন চুক্তির বিষয়ে ঘুণাক্ষরেও কিছু জানতে দেয়া হয়নি। চুক্তিটি যখন প্রকাশিত হলো তখন দেখা গেল এর সাথে মীরজাফর-ক্লাইভের ১২ দফা চুক্তির অনেক মিল আছে। চুক্তির সংক্ষিপ্ত শর্তগুলো ছিল এই রকম-
১. দু'টি দেশ দুই দেশের জনগণের মধ্যে স্থায়ী শান্তি বজায় রাখবে। প্রত্যেক পক্ষ অপর পক্ষের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখন্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, অপর পক্ষের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবে। ২. জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল জনগণ ও রাষ্ট্রের সমঅধিকারের নীতিমালায় পরিচালিত হবে। ৩. উভয়পক্ষ জোট নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি পালন করে চলবে। ৪. সকল পর্যায়ে বৈঠক ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় রাষ্ট্রের স্বার্থের ক্ষেত্রে প্রভাবসৃষ্টিকারী প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক সমস্যাবলী নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলা হবে। ৫. সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত জাতীয় নীতির ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য পরিবহন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। ৬. বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী অববাহিকার উন্নয়ন এবং পানি বিদ্যুৎশক্তি ও সেচের উন্নয়নের যৌথ সমীক্ষা চালানো হবে ৭. শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ক্রীড়া ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সম্পর্ক বৃদ্ধি করবে। ৮. অপর পক্ষের বিরুদ্ধে পরিচালিত কোনো সামরিক বন্ধনে যোগদান কিংবা অংশগ্রহণ করবে না। অপরপক্ষের সামরিক দিক দিয়ে ক্ষতি কিংবা নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি হতে পারে এমন যেকোনো কাজের জন্য নিজস্ব ভূখন্ড ব্যবহারের অনুমতি দেবে না। ৯. অপরপক্ষের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সামরিক সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী কোন তৃতীয় পক্ষকে কোনো সহায়তা প্রদান করা হবে না। একপক্ষ যদি আক্রান্ত হয় অথবা হুমকির সম্মুখীন হয় তাহলে সেই হুমকি নির্মূলের উদ্দেশ্যে দুই পক্ষ পরামর্শে মিলিত হয়ে দুই দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ১০. গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে এক বা একাধিক রাষ্ট্রের সাথে এমন কোনো অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া যাবে না, যা এই চুক্তির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। ১১. এই চুক্তি ২৫ বছর মেয়াদী এবং নবায়নযোগ্য। ১২. চুক্তির ক্ষেত্রে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে তা দ্বিপক্ষীয়ভিত্তিতে নিত্তি করতে হবে।
বলাবাহুল্য, চুক্তির শর্তগুলো আপাত মধুর বচনে ঠাসা হলেও এর সুদূরপ্রসারী ক্রিয়ায় বাংলাদেশকে ২৫ বছর ধরে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। তাছাড়া ক্লাইভ যেমন মীরজাফরের চুক্তির প্রতি কোনো সম্মান দেখায়নি, ভারতও তেমনি দুর্বল বাংলাদেশের সাথে ২৫ সালা ১২ দফা চুক্তির একটি দফাও মেনে চলেনি। মেনে চলার প্রয়োজনও অনুভব করেনি।
চুক্তির প্রথম ধারায় ভৌগোলিক অখন্ডতার কথা বলা হলেও ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী চাকমাদের এবং বঙ্গভূমিওয়ালাদের আপন ভূখন্ডে আশ্রয় দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, ট্রেনিং দিয়ে বাংলাদেশের অখন্ডতার হুমকি সৃষ্টি করে এসেছে।
২নং ধারায় জাতি-ধর্মের সমঅধিকারের কথা বলা হলেও ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যা করার জন্য হাজার হাজার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানো হয়েছে। বাবরী মসজিদসহ শত শত মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে।
৫নং ধারায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমঅধিকারের কথা বলা হলেও ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকা।
৬নং ধারায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং নদী অববাহিকা উন্নয়নের কথা বলা হলেও ভারত এক তরফাভাবে ফারাক্কাসহ উজানের নদীসমূহে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশকে চিরন্তন খরা এবং বানভাসির দেশে পরিণত করেছে।
৮.৯.১০ ধারাগুলো ছিল একটা স্বাধীন জাতির জন্য চরম অবমাননাকর। সেখানে বলা হয়েছে, এক দেশ আক্রান্ত হলে অন্য পক্ষ তাকে সাহায্য করবে অর্থাৎ দুই দেশ মিলে যেন একদেশ হয়ে গেছে। দুই দেশেরই কমন বন্ধু এবং কমন শত্রু থাকতে হবে। কারো কোনো ভিন্ন বন্ধু বা ভিন্ন শত্রু থাকতে পারবে না। চীন এবং পাকিস্তান ভারতের শত্রু হওয়ায় বাংলাদেশ তাদের সাথে মিত্রতা রাখতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভৌগোলিকগত কারণে বাংলাদেশকে জলপথ ও স্থলপথে চারদিক থেকে ভারতই ঘিরে আছে। সে ক্ষেত্রে ভারত ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো আক্রমণকারী থাকার কথা নয়। ১৯৭৫-এর পর ভারতই বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে আক্রমণ চালিয়েছে। ফারাক্কাসহ ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে ভারত জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পানিযুদ্ধ চালিয়ে আসছে।
চুক্তির দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ এসব আগ্রাসনের বিষয় আন্তর্জাতিক ফোরামেও তুলতে পারেনি। ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ পড়ে পড়ে মার খেয়েছে অভিযোগও করতে পারেনি।
স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমির অধিকার রক্ষার নামই স্বাধীনতা। চুক্তির বেড়াজালে আটকে বাংলাদেশের নেতানেত্রীরা তার নিজস্ব ভূমির অধিকারটুকুও রক্ষা করতে পারেনি।
১৯৭৪ সালের ২৮ নবেম্বর এক অসম চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের নেতা দেশের ২.৬৪ বর্গমাইল বিস্তৃত বেরুবাড়ী অঞ্চল ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল। এই অবৈধ হস্তান্তরের জন্য সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনী পর্যন্ত আনা হয়েছিল। বেরুবাড়ীর ২.৬৪ বর্গমাইল অঞ্চলের বিনিময়ে ভারত ওয়াদা করেছিল, বাংলাদেশের ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় প্রবেশের জন্য মাত্র ১৭৮ মিটার*৮৫ মিটার আয়তনের (তিনবিঘা) একটা রাস্তা তারা বাংলাদেশকে দান করবে। চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরই তিনবিঘা করিডোর বাংলাদেশকে হস্তান্তরের কথা ছিল। ভারত বেরুবাড়ী দখল করে নেয় ঠিকই কিন্তু তিনবিঘার সার্বভৌমত্ব আজও বাংলাদেশ পায়নি।
আর একটা চুক্তির কথা আমাদের স্মৃতিতে এখনও ভাস্বর হয়ে আছে। ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে ভারত গোপনে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করে। ১৯৭৫ সালের ১৮ এপ্রিল ফারাক্কার ফিডার ক্যানেলে পানি পরীক্ষার জন্য ৩১ মে পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ৪১ দিন পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা চালু করার অভিপ্রায় জানিয়ে ভারত বাংলাদেশের সাথে এক সমঝোতা চুক্তি করে। সেই ৪১ দিন আর কোনোদিন শেষ হয়নি। চুক্তি খেলাপকারী ভারত গঙ্গা থেকে ফারাক্কায় সর্বোচ্চ পানি প্রত্যাহার চিরস্থায়ী করে নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ তখনকার হিসাবে ৫৬ হাজার ৬শ' ৯০ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের ৪ বছরের রাজস্ব আয়ের সমান। অতএব, দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের এক শ্রেণীর নেতানেত্রীর চুক্তি বিলাসই বাংলাদেশের ১৪ কোটি মানুষের চিরস্থায়ী দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ এবং ভারতের স্বার্থে চুক্তি কথা দু'টি যেন সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজও আওয়ামী লীগের সেই চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি। তারা চুক্তিভঙ্গকারী ভারতের সাথে একের পর এক চুক্তি করতে উৎসাহী হয়ে পড়েছে। করিডোর চুক্তি, বিদ্যুৎ চুক্তি, পানি চুক্তি, গ্যাস চুক্তিসহ বহুবিধ চুক্তির জালে বাংলাদেশকে আবদ্ধ করে ভারতের পায়ে উপঢৌকন দেয়ার জন্য যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারত যে চুক্তি বরখেলাপী তার আজ একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সাথে ৩০ বছরের পানি চুক্তি করে। চুক্তির শর্ত খাতাপত্রে থাকলেও বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ তার নদীগুলোয় একফোঁটা পানিও পায়নি। বরং চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করার অধিকারটুকুও তার বন্ধু হয়ে গেছে।
বর্তমান সরকার কোনো এক রহস্যজনক কারণে অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে এমন কিছু চুক্তির জালে দেশকে আবদ্ধ করছে যা ভবিষ্যতে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে বাংলাদেশের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা।
-ধূমকেত'র লেখা থেকে।
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×