somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আযাবকে ডেকে আনে পাপ

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলিম বিশ্ব যে কতটা দুর্বল ও মেরুদন্ডহীন, কতটা বিবেক ও চেতনাহীন এবং কতটা পঙ্গু ও অসহায় সেটি এখন সুস্পষ্ট। ঘরে দুর্বত্ত সন্ত্রাসী বা ডাকাত ডুকলে প্রতিবাদের সাহস থাকে না নিরস্ত্র গৃহকর্তার। সন্তানকে খনণ বা স্ত্রী-কণ্যাকে ধর্ষিত হতে দেখেও এমন দুর্বল ব্যক্তির কিছূ করার সামর্থ থাকে না। এরুপ নিষ্ঠুর বর্বরতাকেও তখন নীরবে সইতে হয় । যুগে যুগে এভাবেই সমাজের পশুবৎ দুর্বত্তদের হাতে কোটি কোটি মানুষ নিহত হয়েছে। ধর্ষিতাও হয়েছে কোটি কোটি অসহায় নারী। ফিলিস্তিন, কাশ্মির, গুজরাত, চেচনিয়া ও আফগানিস্তানের জনপদে অসংখ্য মানুষ এসব দুর্বত্তদের হাতে এখনও নিহত ও ধর্ষিতা হচ্ছে। ইসলামে তাই নিরস্ত্র বা দূর্বল থাকাটাই মহাপাপ। এমন দুর্বলদের মহান আল−াহপাকও্র অপছন্দ করেন। নিছক নামাজ রোযা, হজ্ব-যাকাত বা দোয়াদরুদে এ পাপমুক্তি ঘটে না। আর এ মহাপাপ যে ভয়ানক আযাব ডেকে আনে সে প্রমাণও প্রচুর।
আল্লাহর দরবারে নিছক চোখের পানি ফেলে তা থেকে পরিত্রাণ মেলে না। কারণ, পরিত্রাণের পথ এটি নয়। মহান আল্লাহতায়ালা পরিত্রাণের পথ নির্দেশ করেছেন এভাবে’

ওয়া আয়েদ্দুলাহুম মাস্তাতা’তুম মিন কুওয়া ওয়া মিন রিবাতিল খাইলি তুরহেবুনা বিহি আদুওয়াল্লাহ ওয়া আদুওয়ালাকুম’

অর্থঃ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও সমগ্র সামর্থ দিয়ে এবং প্রস্তুত রাখো তোমাদের ঘোড়া যা ভয় সৃষ্টি করবে আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের মনে .. সুরা আনফাল -৬০)।

এ নির্দেশ পালন ততটাই ফরয় যতটা ফরয নামাযরোযা পালন। কারণ এ ফরমানও মহান আল্লাহর কোরআনী ফরমান। মুসলামানের কাজই তো হলো আল্লাহর প্রতিটি হুকুমকে সুচারু ভাবে পালন। এমন একটি সুস্পষ্ট কোরআনী ঘোষনার প্রতি তাচ্ছিল্য বা অবাধ্যতাই কি আল্লাহর অবাধ্য বান্দাহ হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়? শুধু নামায-রোযা পালনে এ ফরজ আদায় হওয়ার নয়। নবী পাক (সাঃ) ও তাঁর সাহাবাদের মধ্যে এমন একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেদেরকে সর্বাত্মক ভাবে প্রস্তুত করেননি বা যুদ্ধে অংশ নেননি। এমনকি বৃদ্ধ, যুবক এবং অতিশয় নিঃস্বরাও একাজে স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন। অঙ্গিকারহীন নিস্কিয়রা চিত্রিত হয়েছে মোনাফিক রূপে। নবীজীর (সাঃ) পিছনে নামাযপাঠও এমন মোনাফিকদের মোনফিক হওয়া থেকে তাই বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু আজকের মুসলমানদের মাঝে ক’জনের মধ্যে রয়েছে কোরআনের এ অমোঘ ফরমান পালনে আগ্রহ? নবীজীর (সাঃ) নফল ইবাদত, নফল নামায ও বহু নফল আমলকে আমরা সূনড়বত গণ্য করি। এ সূনড়বত পালন না করলে নিজেকে গোনাহগারও ভাবি। অথচ শত্র“র বিরদ্ধে জিহাদে নিজেকে প্রস্তৃুত রাখা কোন নফল কাজ নয়, এটি ফরজ। এর নির্দেশ এসেছে মহান আল−াহপাক থেকে। কিন্তু সে ফরজ আমরা ক’জন পালন করি। আমাদের সমগ্র উপার্জন এবং সামর্থের শতকরা ক’ ভাগ এ কাজে খরচ করি? উপরে বর্ণীত আয়াতে আল্লাহপাক
মুসলমানদেরকে নিজেদের ঘোড়াকে সর্বদা প্রস্তুত রাখার কথা বলেছেন। সে কালে ঘোড়া রণাঙ্গণে ট্যাংকের কাজ দিত। ফলে ঘোড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। দরিদ্র সাহাবীদের সামর্থ ছিল না সুন্দর গৃহ নির্মানের, অনেকের ঘরে এমনকি দু-বেলা খাবারও জুটতো না। কিন্তু জীর্ণঘরে বা জরাজীর্ণ বসনে থেকেও তারা উনড়বত মানের ঘোড়া কিনতেন। সে ঘোড়াকে সুস্থ-সবল রাখতে অর্থের পাশাপাশি প্রচুর সময়ও ব্যয় করতেন। শত্র“র বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ও ইসলামের বিজয়ে এটি ছিল অতিশয় স্ট্রাটেজিক প্রয়োজন। এ সামরিক আয়োজনে রাষ্ট্রীয় তহবিলের যা ব্যয় হতো তার চেয়ে বেশী হতো তাদের নিজেদের ব্যয়। এভাবেই প্রকাশ পেতো মহান আল−াহর নির্দেশের প্রতি গভীর আনুগত্য। এ পথেই সে কালের দরিদ্র মুসলমানেদের জীবনে এসেছিল উপর্যপরি বিজয়। এব্ং এ বিজয়ের সবচেয়ে বড় সম্বল ছিল মহান আল−াহর সাহায্য। তাদের সাহায্যে তিনি বার বার ফেরশতা
পাঠিয়েছেন। নিছক দোয়া নয়, এমন সাহায্য লাভে অপরিহার্য হলো ঈমানদারের নিজের বিণিয়োগটা। এমন সাহায্যের প্রতিশ্র“তি আল−াহপাক পবিত্র কোরআনে বার বার দিয়েছেন। যে দরিদ্র মুসলমান তার জীবনের সমগ্রই সঞ্চয়ই শুধূ নয়, প্রিয়
প্রাণটিও যেখানে আল−াহর পথে খরচ করতে দুপায়ে খাড়া তাকে মহান আল−াহ সাহায্য করবেন না সেটি কি হয়? কারণ সে তো আল−াহর দলেরই সৈনিক। তাদের ক্ষুদ্রতা তিনি পুরণ করেন নিজের অসীম কুদরত দিয়ে। যে কৃষক জমিতে কোন শ্রমই বিণিয়োগ করেনি, বপন করেনি একটি বীজও সে কি করে ক্ষেতে ফসল ফলাতে পারে? কি করে পেতে পারে সুখ-স্বাচ্ছন্দময় জীবন? সারা রাতের নফল ইবাদত বা চোখের পানি ফেলা μন্দনে কি সেটি সম্ভব? আর সেটি সম্ভব হলে নবীজী (সাঃ) যুদ্ধের ময়দানে কেন নিজের রক্ত ফেললেন? প্রায় সত্তর ভাগ সাহাবী কেন শহীদ হলেন? বিশ্বে আজ শত কোটিরও বেশী মুসলমান।
মুসলিম ভূমি আজ একের পর এক পরাভূত হচ্ছে, মুসলমানেরা লাশ হচ্ছে এবং মাবোনের ধর্ষণও শত্র“র উৎসবে পরিণত হয়েছে, কিন্তু মুসমানদের মাঝে এর বিরুদ্ধে প্রস্তুতি কৈ? আমরা ক’জন নিজের্দে জানমাল ও ইজ্জত রক্ষায় এক ফোটা রক্ত বিণিয়োগ করেছি? ক’জন বিণিয়োগ করেছি নিজেদের অর্থ, শ্রম ও মেধা? নিজেদের সামর্থ কি শুধু নিজ জীবনের আরাম আয়াস বাড়াতেই ব্যয় হচ্ছে না? অতএব এমন স্বার্থপরদের আল−াহপাক কেন বিজয় দিবেন? কেনই বা তাদের জীবনে নিরাপত্তা দিবেন?


মুসলমানদের পতনের শুরু তখনই যখন তারা ফরজ কাজ ভূলে নফল পালনকে বেশী গুরুত্ব দিয়েছে। নফল আদায় না করলে কেউ পাপী হয় না। অথচ ফরজ পালনে ব্যর্থতা শুধু মহাপাপই নয়, এটি ভয়ানক আযাবও ডেকে আনে। মুসলমান
মাত্রই আল−াহর সৈনিক। সৈনিকের দায়িত্বপালনই প্রতিটি ঈমানদারের উপর ফরজ। এটিই সার্বক্ষণিক ইবাদত। মুসলমান মাত্রই জ্ঞানী হবে, জেনারেল হবে, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী এবং ডাক্তারও হবে, কিন্তু সবই হবে আল−াহর সৈনিক রূপে উচ্চতর দায়িত্বপালনের তাগিদে। কারণ আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লড়ায়ে মুর্খ সৈনিক আর জ্ঞানবান সৈনিকের অবদান এক হয় না। এ লক্ষ্যে সে যেমন সুন্দর গৃহ ও শহর নির্মান করবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকারখানা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানও করবে। সভ্যতা নির্মানের লড়াইয়ে এসবও অপরিহার্য । কারণ সভ্যতা কখনই তাঁবুতে বা মুর্খদের দ্বারা গড়ে উঠে না। সুফিদেও বড় অপরাধ হলো তারা মুসলমানদেও সভ্যতা নির্মানের এ মিশন থেকে উঠিয়ে খানকায় বা বদ্ধ গুহায় নিয়ে উঠিয়েছিল এবং এভাবে ত্বরান্বিত করেছিল মুসলমানদের পরাজয়। আল−াহর জমিনকে পাপ মুক্ত করাই মুসলমানের জীবনের মিশন। এ পথে লড়াই
অনিবার্য। কারণ অতিশয় পাপীরাও বীনা যুদ্ধে পথ ছেড়েছে সে নজির নেই। লড়াই এজন্যই মুসলমানের জীবনে অনিবার্য। নবীর যুগে কোন মুসলমানই তা থেকে পরিত্রাণ পাননি। পরিস্থিতি আজও তা থেকে ভিনড়বতর নয়। আর এ লড়ায়ে জিততে হলে প্রতিটি মুসলমানের যোগ্যতা বাড়াতে হবে। মুর্খ ও জ্ঞানহীন থাকাটি এজন্যই ইসলামে মহাপাপ। আজ ইসলামের বিস্তার যেরূপ স্তিমিত হয়েছে এবং মুসলমান সন্তানেরা যে ভাবে লাখে লাখে অনৈসলামের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে তার কারণ জ্বিহাদ ও জ্ঞানার্জনে অবহেলা। এ পাপই আরো বহুপাপের জন্ম দিয়েছে। সত্য বা হক ত উজ্বলই হোক তা নিজ গুণেই প্রতিষ্ঠা পায় না। এবং প্রতিষ্ঠা লাভের পর তা নিজশক্তিতে টিকে থাকে না। সত্যের প্রতিষ্ঠা ও সেটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য চাই সার্বক্ষণিক সৈনিক। মুসলমান সে সৈনিকের কাজই করে। নবীপাক (সাঃ) এ কাজে আরবের বস্তিতে বস্তিতে ঘুরেছেন। গালী খেয়েছেন, রক্তাত্ব হয়েছেন এবং স্বশরীরে বহু যুদ্ধও লড়েছেন। সাহাবাগণ এ মিশন নিয়ে নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, বহু সাগরও অতিক্রম করেছিলেন। কিন্তু নবী জীবনের এ ফরজ ইবাদত আমাদের ক’জনের জীবনে পালিত হচ্ছে? তবে মুসলমানেরা জীবন যে দিচ্ছে না তা নয়। ইরাকের প্রায় এক লক্ষ কুর্দী যুদ্ধের জন্য আজ দু’পায়ে খাড়া। এ যুদ্ধে অনেকের প্রাণও যাবে। তবে তাদের লক্ষ্য ইসলামের বিজয় নয়, মুসলমানের ইজ্জত রক্ষাও নয়। বরং নিজেদেরকে তারা প্রস্তুত করেছে মুসলিম ভূমিতে মার্কিন বাহিনীর আগ্রাসানকে ত্বরান্বিত করতে। যেভাবে মুসলিম ভূমিতে ভারতীয় বাহিনীর অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছিল শেখ মুজিব ও তার দল । এক কালে মক্কার উসমানিয়া খেলাফতের গভর্নর ও আরব বিশ্বের অতি পরিচিত মিরজাফর শরিফ হোসেনও একই অপরাধ করেছিল সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ বাহিনীকে আরব ভূমিতে ডেকে এনে। আরব ভূমি আজ যে ২২ টুকরায় বিভক্ত ও শক্তিহীন
তার জন্য কি শুধু শত্র“পক্ষ দায়ী? একই অপরাধ করছে আফগানিস্তানের বুরহান উদ্দিন রব্বানী, হামিদ কারজাই, রশিদ দোস্ত ামেরা। নিজেদেরকে মুসলমান রূপে পরিচয় দিলেও ইসলামের শক্তি বাড়াতে এরা এক ফুটা রক্ত দূরে থাক একটি বাক্যও ব্যয় করিনি। বরং সকল সামর্থ ও মেধা ব্যয় হয়েছে শত্র“র তুষ্টিতে। এরাই বহু কাল ধরে বহু রক্ত ব্যয়ে গড়া বৃহৎ বৃহৎ মুসলিম ভূমিকে ভেঙ্গে খান খান করেছে এবং আনন্দ বাড়িয়েছে ইসলামের চিহ্নিত দুষমনদের। অথচ মুসলমানের মাঝে বিভক্তি গড়া ইসলামে হারাম। ’ওয়া লা তাফাররাকু’ অর্থঃ ’এবং তোমরা বিভক্ত হয়ো না’ আল−াহর এ নির্দেশের এটি প্রকাশ্য বিরুদ্ধোচারন। হারাম মুসলিম ভূমিতে অমুসলিম শত্র“ বাহিনীকে ঢেকে আনা। মুসলামানদেরকে বলা হয়েছে ’বুনিয়ানুম মারসুস’ বা সীসাঢালা প্রাচীরসম দেয়াল গড়তে। তাই খোলাফায়ে রাশেদার আমলে মুসলিম রাষ্ট্রের আয়তন শতগুণ বাড়লেও রাষ্ট্রের সংখ্যা একটির স্থলে দুটি হয়নি। এক ও অভিনড়ব রাষ্ট্রের মাঝে নানা ভাষাভাষী ও নানা বর্ণের মানুষ একত্রে বসবাস করেছে। এজন্যই সেদিন মুসলিম জনপদে বর্বর শত্র“বাহিনীর হাতে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাঠ হয়নি। কোন পাত্রে আবর্জনা জমলে সুস্থ্য মানুষের প্রচেষ্ঠা হবে সেটিকে আবর্জনামুক্ত করায়। কিন্তু আবর্জনা জমেছে এ যুক্তিতে পাত্রটিকে ভেঙ্গে ফেলা শিশুসূলভ বালখিল্যতাই শুধু নয়, এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিষয়টি মুসলিম দেশের ভূগোলের ক্ষেত্রেও। জনগণ দশটি ভিনড়ব ভাষায় কথা বলে এ যুক্তিতে মুসলিম দেশকে দশ টুকরোয় বিভক্ত করা শুধু বিদয়াতই নয়, সুস্পষ্ট হারামও। মুসলিম ভুমিতে এজিদদের বর্বর শাসন একবার নয় বহুবার হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক যুগের প্রজ্ঞাবান মুসলমানদের রাগ কখনই সে সব এজিদের কারণে মুসলিম ভূমির উপর গিয়ে পড়েনি। কারণ, অপরাধ তো ভূগোলের নয়। ইজ্জত-আবরু, ধর্ম-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতার প্রতিরক্ষায় বৃহৎ ভূগোল শুধু প্রয়োজনই নয়, অপরিহার্যও। ভূগোল বাড়াতে প্রতি জাতি যুগে যুগে যে বিস্তর অর্থ ও রক্ত ব্যয় করেছে সেটি নিছক খেলাতামাশার জন্য নয়। মুসলমানেরাও অতীতে একাজে বহু রক্ত ব্যয় করেছে। ফলে সে ভূগোলের ক্ষুদ্রকরণে একমাত্র শত্র“ এবং শত্র“র মিত্ররাই খুশী হতে পারে। ফলে সে আমলে বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় পঞ্চাশ গুণ বৃহৎ মুসলিম ভূমিকে ভাঙ্গার কল্পানাও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মগজে ঢুকেনি। এ কাজে পৌত্তলিক বা ইহুদী-খৃষ্টানদের সাথে ষড়যন্ত্রের পথও তারা ধরেনি। অথচ এযুগের মুসলিম জাতিবিধ্বংসী নেতারা সে জঘন্য অপরাধই করেছে। এরাই শত্র“দের সাথে হাত মিলিয়ে মুসলমানদের ভূগোলকে চূর্ণবিচূর্ণ করেছে। এভাবে বিশ্বশক্তিরূপে উত্থানের সকল সম্বাবনাকে তারা বিনষ্ট করেছে। আজ যে মুসলিম উম্মাহর মেরুদন্ডহীন পঙ্গুদশা তার জন্যতো এসব নেতারাই দায়ী। আর শুধু নেতারাই নয়, এসব মুসলিম ভূমির সাধারণ মুসলমানদের বিবেকশূণ্যতা ও চেতনাশূণ্যতাও কম নয়। তাদের অপরাধ, এসব জাতিধ্বংসী চিহ্নিত অপরাধী ও শত্র“র গোলামদেরকে নেতার আসনে বসিয়েছে। এসব মিরজাফরদেরকে জাতির পিতা বা জাতির বন্ধুরূপেও চিত্রিত করেছে। ফলে জাতিবিধ্বংসী পাপ শুধু শরিফ হোসেন, কামালপাশা, কারজাই বা মুজিবদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, জনগণের মাঝেও তার বিস্তার ঘটেছে। এরই কারণে
অবশেষে আযাব নেমে এসেছে জনগণের উপরও।



অধুনা বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা ও সম্পদ দুটিই বেড়েছে। সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সম্পদের কথা বাদই দেয়া যাক, শুধু মক্কা, মদিনা বা জেদ্দার একটি গলীতে আজ যে সম্পদ জমা হয়েছে খোলাফায়ে রাশেদার আমলে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর হাতে
তা ছিল না। সেদিন কাদামাটির জীর্ণঘরে বাস করতেন খলিফারাও। অথচ মুসলিম ইতিহাসের সিংহভাগ গৌরবের নির্মাতা তারাই। কারণ, তাদের কাজে জুটেছিল আল−াহর সাহায্য। সে সাহায্য জুটেছিল আল্লাহর উদ্দেশ্যের সাথে নিজেদেরকে পুরাপুরি একাত্ম করায়। তাই আল্লাহপাক বলেছেন, ’ওয়া মা খালাকতুল জিনড়বা ওয়াল ইনসানা ইল্লা লি ইয়াবুদুন’ অর্থঃইবাদত ভিনড়ব অন্য কোন লক্ষ্যে আমি মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করিনি।’ ফলে যারা সত্যিকার মুসলমান তাদের জীবনে ইবাদত ভিনড়ব অন্য কোন লক্ষ্য থাকতে পারে না। ইবাদতের অর্থ হলো, আল−াহর হুকুমের আনুগত্য। একাজ ক্ষণিকের নয়, আজন্ম। ইবাদত শুধু নামায
রোযা বা হজ্ব-যাকাত নয়, বরং যেখানেই আল্লাহর হুকুম, ইবাদত হলো সে হুকুমেরই প্রতি আত্মসমর্পণ। এ ইবাদত যেমন মসজিদে, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যে, রাজনীতি, সংস্কৃতি, অফিস-আদালত ও সামরিক বাহিনীতেও। মুসলমানের ঈমান তার আমৃত্যু নিত্যসহচর। ঈমান নিয়ে সে শুধু মসজিদেই যায় না বা হজ্বই করে না বরং রাজনীতি, অফিস আদালত, সামিরক ও বেসামরিক কর্ম ক্ষেত্রেও ঢুকে। প্রতিটি কাজের মধ্যেই তার ঈমান বিমূর্ত হয়।। আল−াহর বাহিনীতে নাম লিপিবদ্ধ করার এটিই একমাত্র পথ। এবং এ পথেই প্রাপ্তী ঘটে আল−াহপাকের গায়েবী মদদ। কারণ আল্লাহপাক কি কখনো তাঁর নিজ বাহিনীর পরাজয়
চাইতে পারেন? আজ মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র যে পরাজয় ও পতিত দশা সেটিই বলে দেয় আমরা আল−াহপাকের বাহিনীতে নাম লেখাতে পারিনি। ফলে তার পক্ষ থেকে গায়েবী মদদও আমাদের জুটে নি। যে ব্যক্তি নামায পড়ে ও রোযা রাখে অথচ মদ বিক্রয় করে বা মিথ্যা কথা বলে বা ঘুষ বা সূদ খায় বা দূর্নীতি করে বা ইসলামে অঙ্গিকারহীনকে নির্বাচেন নির্বাচিত করে সে কি করে আল−াহর প্রিয় বান্দাহ হতে পারে? অথচ এ গুলীই মুসলিম সমাজের প্রতিষ্ঠিত আাচারে পরিণত হয়েছে। ফলে মদদ নয়, আযাবই বিচিত্র বীভৎসতা নিয়ে মুসলমানদের ঘাড়ে ভর করেছে। এখন তাই হিসাব নেওয়ার পালা। আমাদের বড় ব্যর্থতা হলো, যে লক্ষ্যে আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছিল সেটি থেকেই আমাদের বিচ্যুতি। আমরা বাঁচছি নিজ নিজ স্বার্থ চেতনায়। ইবাদত রূপ নিয়েছে নিছক আনুষ্ঠিকতায় এবং কর্মক্ষেত্র পরিপূর্ণ হয়েছে আল−াহর অবাধ্যতায়। রাজনীতি, সংস্কৃতি, যুদ্ধবিগ্রহ ও জীবনসংগ্রামের কোন ক্ষেত্রটিতে রয়েছে আল্লাহর একান্ত অনুগত বান্দাহ হওয়ার আকুতি? মুসলমান হয়েও আমরা কি জন্ম দেয়নি বিশ্বের সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রের? এটি কি মুসলমানের কাজ? মুসলমানের রাজনীতি হবে আল−াহর আইন প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার, অথচ সেটিই আজ ক্ষমতাদখলের অস্ত্র। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার স্থলে মানুষের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠাকে আমরা রাজনৈতিক মিশনে পরিণত করেছি। এটি যে শিরক বা কবিরা গোনাহ সেটিই বা ক’জন বুঝি? এরপরও ভাবি আল−াহপাক আমাদের উপর খুশি হবেন। যুদ্ধের জন্য তিনি প্রতিটি মুসলমানকে এমন ভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন যেন শত্র“র মনে ভয়ের উদ্রেক হয়। অথচ হচ্ছে উল্টোটি। মুসলমানদের সকল সামর্থ ব্যয় হচ্ছে শত্র“র মনতুষ্টি অর্জনে। পতন এতটাই চরমে পৌছেছে যে শত্র“দের খুশী করতে মুসলিম ভূমিই শুধু খন্ডিত করা হয়নি বরং আম জনতাকে নিরস্ত্র ও শক্তিহীনও করা হয়েছে। শেখ মুজিব ও তার দল ভারতকে তুষ্ট করতে গিয়ে দেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সীমান্তকেই শুধু বিলুপ্ত করেননি, বরং আরো জঘন্য জাতিবিধ্বংসী কাজ করেছিলেন। সেনাবাহিনীকে তিনি পঙ্গু করেছিলেন, রক্ষিবাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছেন এবং স্বৈরাচারি বাকশালী শাসন চাপিয়ে তিনি জনগণকে অধিকারহীনও করেছিলেন। এবং দূর্ভীক্ষ ডেকে এনে তিনিই হাজার হাজার মানুষের জীবনে মৃত্যু ডেকে
এনেছিলেন। ইসলামের উত্থান রুখতে সংকুচিত করেছিলেন ইসলামী শিক্ষা ও রাজনীতি চর্চা। বিলিয়ে দিয়েছিলেন মুসলিম ভূমি বেরুবাড়ি। একমাত্র আল−াহর শত্র“ই এমন কাজে খুশি হতে পারে। একই অবস্থা প্রায় সকল মুসলিম দেশে। শত্র“ অখুশি হবে এভয়ে তারা সামরিক শক্তি বাড়াতেও অনাগ্রহী। ফলে ক্ষুদ্র ও দরিদ্র উত্তর কোরিয়ার যে সামরিক শক্তি রয়েছে তা ধনকুবের সৌদিদের নেই। উত্তর কোরিয়া আনিবিক বোমা নির্মান করছে অথচ সৌদিরা বন্দুকও তৈরি করতে পারে না। কারণ, সৌদিদের সে ইজ্জত চিন্তাই নেই। নইলে ইসরাইলের চেয়ে প্রায় চারগুণ বৃহৎ জনশক্তি নিয়ে নিজ ভূমিতে কেন মার্কিনীদের স্থান দিবে? একই অবস্থা তুরস্ক ও মিশরসহ অধিকাংশ মুসলিম দেশের। ইসলামের শত্র“রা একমাত্র অস্ত্রের ভাষাই বোঝে। ন্যায়নীতির ওয়াজ তারা বোঝে না। ফলে জনসংখ্যা প্রায় সমান হওয়া সত্বে ভারতের কাছে পাকিস্তানের যে কদর, বাংলাদেশের তা নেই।
পাকিস্তানের সীমানায় তারা পা রাখতে ভয় পায়, অথচ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে গবাদী পশূই শুধু নয় নারী-পুরুষও ধরে নিয়ে যায়। এর কারণ, পাকিস্তানের আণবিক অস্ত্র, বিশাল সামরিক বাহিনী ও সদাজাগ্রত যুদ্ধাবস্থা। একই কারণে ক্ষুদ্র উত্তর কোরিয়াকেও সমীহ করে চলছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফিল্ড বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তাদের ৩৭ হাজার সৈন্য সরিয়ে আনবে। কারণ, উত্তর কোরিয়া মিজাইল ও আনবিক অস্ত্রের রেঞ্জের মধ্যে এখন তাদের অবস্থান। ফলে ভীতি ঢুকেছে মার্কিনীদের মনে। অথচ বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবত মার্কিন সৈন্যের অপসারণের দাবীতে কত বিক্ষোভ হয়েছে সিয়োলের রাজপথে কিন্তু এতকাল তাতে কর্ণপাতই করেনি। বিগত ১২ বছর কাল ইরাকে মার্কিন হামলা না হওয়ার কারণ মার্কিনী ন্যায়নীতি নয়। বরং রাসায়নিক অস্ত্রের ভীতি। সে ভীতি এখন আর নেই। সে অস্ত্র বিনাশে জাতিসংঘকে
তারা পূর্ণভাবে ব্যাবহার করেছে। ফলে এখন মুসলিম দেশটি উপর হামলা হবেই। শিকড় ধরতে হিংস্র নেকড়ে এমনি একটি সময়ের অপেক্ষায় থাকে। তাই অস্ত্র শুধু যু“দ্ধের জন্যই অপরিহার্য নয়, মান-সম্মান ও ইজ্জত-আবরু নিয়ে বাঁচতে হলেও এছাড়া বিকল্প রাস্তা নেই। স্কুল -কলেজ, রাস্তা-ঘাট বা কলকারখানা ও কৃষি বাড়িয়ে আর্র্থীক স্বচ্ছলতা আনা যায়, কিন্তু তাতে ইজ্জতআবরু বাড়ে না। বাড়ে না নিরাপত্তা। কুয়েতীদের স্বচ্ছলতা কি সাধারণ মার্কিনীদের চেয়ে কম? কিন্তু সে স্বচ্ছলতায় কি ইজ্জত বেড়েছে? কোন সম্মানী ব্যক্তিই অন্দরহমলে চিহ্নিত শত্র“ বা অনাত্মীয়কে ঢুকতে দেয়না। কিন্তু এরা সেটিই করেছি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ প্রকাশ্যে ক্রুসেডের ঘোষণা দিয়েছিলেনন ফলে তার সেনাবাহিনী মুসলমানদের বন্ধু হয় কি করে? মুসলিম ভূমিতে সে বাহিনী প্রবেশের অনুমতিই বা পায় কি করে? নাদুস-নুদস দেহ নিয়ে পথের অনেক কুকুরও বাঁচে। কিন্তু মহান আল−াহতায়ালা
তো চান তাঁর প্রিয় বান্দাহরা ইজ্জত নিয়ে বাঁচুক। আর এজন্যই ঘোষণা দিয়েছেন,

’ওয়া আয়েদ্দুলাহুম মাস্তাতা’তুম মিন কুওয়া..”

অর্থাৎ ’প্রস্তুত হও সমগ্র কুওয়াত নিয়ে।’ তাই আল−াহর সদাপ্রস্তুত সৈনিক হিসাবে এ প্রস্তুত হওয়াটিও আল্লাহর ইবাদত। এটি ফরজ। কোন মুসলমান আল−াহর এ হুকুমের কি অবাধ্য হতে পারে? এমন অবাধ্যতা মহাপাপ। এ পাপ যে আল−াহর আযাবকেই যে অনিবার্য করে তুলে তা নিয়ে সন্দেহ আছে কি? মুসলিম বিশ্বের কোনে কোনে বিচিত্র রূপে সে আযাবই কি আবির্ভূত হচ্ছে
না?
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:২৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×