IMDb Rating: 7.4/10
প্রথমেই আসি মুভিটির প্রেক্ষাপটে। টেক্সাস; “The Last city to surrender after the Civil War” এভাবেই টেক্সাসের বর্ণনা দেয় ফিল্মের এক চরিত্র James Farmer Jr. এই শহরেই অবস্থিত Wiley College. এখানে ফুটে উঠেছে কালো চামড়ার মানুষের উপর এক ধরনের অত্যাচার যাকে বলে Lynching; এখানে কালো চামড়ার মানুষগুলোকে টেক্সাসের সাদা চামড়ার মানুষগুলো গাছের সাথে ঝুলিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলে। ঠিক প্যারালালী চলতে থাকে এই কলেজের ডিবেট টিম এর সিলেকশন এবং রিহার্সাল। ডিবেট টিমের কোচ ছিলেন Professor Melvin Tolson. একটি পারফেক্ট টিম তৈরি করাই ছিল তার লক্ষ। এই ডিবেট টিমের যাত্রার সাথে চলতে থাকে সামাজিক অনেকগুলো প্রতিকূলতার উত্থান-পতন। ডিবেটের ইতিহাসে প্রথম এবং এই টিমের একমাত্র নারী সদস্য হিসেবে ছিলেন Samantha Booke. Professor Melvin Tolson এই টিমটিকে একটি অপরাজেয় টিম হিসেবে এগিয়ে নিতে থাকেন। এখানে প্রথম ডিবেটটি হয় একটি সাদা চামড়ার মানুষদের কলেজের সাথে এবং পরবর্তীতে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সাথে। ক্লাইমেক্সের ডিবেটিং টকিপ ছিল, “Civil Disobedience” ঘটনাগুলো খুব তাড়াতাড়িই ঘটতে থাকে। কালো চামড়ার মানুষগুলো আরও নির্যাতিত হতে থাকে। আসলে এই মুভিটি ছিল সাদা চামড়া- কালো চামড়ার মানুষগুলোর মধ্যে পার্থক্য এবং এগুলোকে রূপক হিসেবে ফুটিয়ে তোলা ছোট্ট একটি পারসপেক্টিভ। তবে এটা বলতে পারি যে, ফিল্মের শেষটা বারবার দেখতে মন চাইবে আপনার। এটাকে একটা নিখুঁত গল্প বলা যেতেই পারে। এভাবে প্যারালালী দুটি ঘটনা ফুটিয়ে তোলা একজন রাইটারের ক্ষেত্রে আসলেই প্যারাদায়ক। তাই গল্পে দেব ১০ এ ৮.৫।
এখন আসি চরিত্রগুলোয়। লেইডিস ফার্স্ট; Samantha Booke এর চরিত্রে ছিলেন Jurnee Smollett. অসাধারন এবং যথেষ্ট শক্তিশালী একটি চরিত্র প্লে করেছেন এখানে। ঠিক যেমনটা হওয়া উচিত বিশ্বের প্রথম মহিলা ডিবেটারের। Henry Lowe; আরেকজন লিড ডিবেটার এই টিমের। একজন একরোখা ছেলে, যে খুবই একগুয়ে এবং কাউকে তোয়াক্কা করেনা। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন Nate Parker. এরপর আসি James Farmer Jr এর চরিত্রে। এই চরিত্রটি হল বাবা-মায়ের সাম্রাজ্যে বেড়ে ওঠা এক ছেলের। গল্পে যখন এমন কোনো চরিত্র থাকে যে কিনা গল্পের সাথে সাথে নিজের চরিত্রের রঙ পাল্টাতে থাকে, তখন গল্পের শক্তিটা বেড়ে যায় অনেকাংশে। এই চরিত্রটি ঠিক তেমনই একটি বোল্ড চরিত্র। আর এই চরিত্রটি পারফেক্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন Denzel Whitaker. এখন বাকি থাকেন Professor Melvin Tolson. এই চরিত্রটি প্লে করেছেন আমার দেখা একজন পারফেক্ট অভিনেতা Denzel Washington. তাহলে আশা করি এই চরিত্রটি নিয়ে কিছু বলার নেই। এখানে তিনি একাধারে একজন প্রফেসর এবং একজন বিপ্লবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চরিত্রগুলোকে তাই ১০ এ ৯।
এখন আসি টেকনিক্যাল পারফরমেন্সে। অসাধারণ ক্যামেরার কাজ দেখতে পাবেন দর্শক। ক্যামেরায় ফিল্টার এবং কালার টোনের ব্যবহার চোখে পড়ার মত। দেখেই বোঝা যায় প্রোডাকশন ম্যানেজারকে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছে সেট বানাতে গিয়ে। ডিরেকশনে কোনো খুঁত আমার চোখে পড়েনি। তবে বলে রাখা ভালো, মুভিটির ডিরেক্টর ছিলেন Denzel Washington নিজেই। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক নিয়ে একইসাথে আবেগময় এবং বিপ্লবী আবহ তৈরি করা হয়েছে। টেকনিক্যাল পারফরমেন্সে আমি দেব ১০ এ ৮।
সবশেষে বলব, যারা এই মুভিটি এখনও দেখেননি, তারা মুভিটি দয়া করে সংগ্রহে রাখুন। অনেকগুলো লাভস্টোরি আর এ্যাকশনের ভারে যখন হাঁপিয়ে উঠবেন, তখন এই মুভিটি দেখতে বসবেন। ভালো না লেগে যাবে কোথায়। সবাইকে শুভকামনা জানাই এবং পরবর্তী রিভিউ হবে The Lone Ranger (2013) এর উপর। আমন্ত্রন রইল। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩