somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরাজনীতির অপশাসন ফলাফল অপমৃত্যু-১

২৬ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিশ্চিন্তপুরে নিশ্চিন্তে ঘটে গেল স্মরণকালের আরেকটি অপমৃত্যুর ঘটনা। এই নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে চলছে সংবাদ ও টেবিল গরম করা আলোচনা সমালোচনা। কেউ বলছেন সরকারের উদাসীনতা, কেউ বলছেন প্রশাসনের দূর্বলতা, কেউ বলছেন গার্মেন্টস মালিকদের আগ্রাসী মনমানসিকতায় দায়ী। প্রত্যেকেই এব্যাপারে বিচার ও প্রতিকার চেয়েছেন। অনেকে এধরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যকারিতা ও তার ফলাফল নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন।
কেউ বলছেন আগের ঘটনাগুলোর তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি বা সেসব তদন্তে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে শাস্তি দেয়া হয়নি বলেই এমন ঘটনা বার বার ঘটছে।
তবে এসব টক'শোর সবার কথায় সত্য। কিন্তু আসল সত্যটা বলে দিলেন সিপিডি'র দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বললেন, সুশাসনের অভাবেই বা কুশাসনের জন্যই এমন ঘটনা ঘটছে।
হ্যা তার এমন কথায় আমি পুরোটায় একমত। অনেকে একমত নাও হতে পারেন। তবে তার সঙ্গে আমি একটু যুক্ত করছি আর তা হলো এসব অপমৃত্যু হলো অপরাজনীতি+অপশাসনের ফলাফল।
একটু ব্যাখায় যাক, আমাদের দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অর্থের যোগানদার বা প্রধান দুই রাজনীতিবিদের পারিবারিক ভরণপোষণ আসে ব্যবসায়িক শ্রেণী থেকে। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে দেশের ব্যবসায়িক সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের দেখা যায়। অনেকে এই দুই দলের গুরুত্বপূর্ণ পদও দখল করে রয়েছেন। কেউবা ব্যাংকের মালিক, কেউবা এফবিসিসিআই বা বিজিএমইএ'র সাবেক বা বর্তমান সভাপতি বা পরিচালক। এর ফলে যদি এধরণের দূর্ঘটনায় এসব ব্যবসায়ীদের দূর্বলতা থাকেও তা থেকে সহজে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন। এখানেই রাজনীতির অপব্যবহারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য হাজারো তদন্ত রিপোর্ট হোক না কেনো তাতে কয়েকটি সুপারিশ আর শ্রমিকদের অসচেতনাটায় প্রতিফলিত হয়। আবার আসেন চট্টগ্রামের ফ্লাইওভার ধ্বস। এখানে যে কোম্পানিটি কাজ করছে তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে কিনা এটা নিয়ে অবশ্যই সন্দেহ করা যায়। আগেও এই ফ্লাইওভার একটি গ্রাডার ধ্বসে পড়লেও তা নিয়ে কোনো কিছুই হয়নি। এবং আমি এটা নিশ্চিন্তে বলতে পারি পুরো ফ্লাইওভারটা ধ্বসে পুরো চট্টগ্রামের মানুষ মারা গেলেও (আল্লাহ যেন এমনটি না হয়) এক থেকে দুই সপ্তাহ টিভি আর পত্রিকাগুলোই গরম থাকবে এর বাইরে সব কিছুই শুন্য সবকিছুই ভুলে যাবে সবাই।

অপরাজনীতি একটি বড় সুফল হলো দেশে অপশাসন চলে। এখন শাসন বলতে আমরা বুঝি প্রচলিত আইনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সঠিকভাবে কাজ করা। আর এর ব্যতয় হওয়াটায় হলো অপশাসন। আসুন নিশ্চিন্তপুরে ফিরে যায় যেখানে এখনো পোড়া লাশের গন্ধ মিশে আছে।

তোবা গার্মেন্টসের কারখানাটি স্থাপনের আগে ও পরে এই কারখানাটি ব্যবহারের উপযোগি কিনা যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কয়েকটি দপ্তর থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে হয়। এর মধ্যে ভবনের জন্য গণপূর্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি সেটি রাজউক হয়, হতে পারে স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগ। তাদের কাজ হলো ভবনটি ঝুকিপূর্ণ কিনা তা যাচাই করা। আর এই ঝুকিপূর্ণ বিষয়টি যাচাই করার জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর মেনে চলা হয়, প্রথম ভবনের সঠিক নকশা অনুমোদন ও তা মেনে চলা হয়েছে কিনা, দুই ভবনের নির্মাণ উপাদানের পরিমাণ ও মান ঠিক আছে কিনা। আর তৃতীয় বিষয়টি হলো ভবনটি ফায়ার প্রটেক্টিভ বা অগ্নিনিরুপক কিনা। আর এই তৃতীয় সনদটি দিবে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তারা ভবনটি পরিদর্শন করে তারপর এই সনদ দিবে। খোজ নিয়ে দেখুন এই কারখানার জন্য প্রত্যেকটি সনদই আছে। কারণ এধরণের সনদ পেতে মান থাকার দরকার নেই। টাকা হলেই পাওয়া যায়। এসব কর্তৃপক্ষ যেন নীলক্ষেতের ফটোকপির দোকান। চাহিবা মাত্র ইহার গ্রাহককে দিতে বাধ্য থাকে।

আর যদি সনদ পেতে একটু দেরিও হয় তাহলে স্থানীয় সরকারি দলের নেতা কিংবা এমপি আর তাতেও যদি না হয় তাহলে মন্ত্রী তো রয়েছেন। শুধুমাত্র একটি কল। আর সাথে সাথে সনদ আপনার বাসায় এসে হাজির।

এখন স্পষ্ট যে আমাদের প্রশাসনগুলো প্রচলিত আইন ও রীতিনীতি না মেনেই এসব কাজ করছেন অনেকটা ঘরে বসেই। কিছুই দেখার দরকার নেই তাদের। আর এটায় হলো অপশাসন। যার ফলে আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুটা আজ অপমৃত্যুতে পরিণত হচ্ছে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×