somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মতিউর রহমান মল্লিক স্মরণে নাগরিক শোকসভা মৃত্যুর ভিতর থেকে জেগে ওঠে জীবনপ্লাবন -আহমদ বাসির

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খান জাহান আলীর খলিফাতাবাদের গর্বিত ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী জনপদ, বৃক্ষশোভিত, সমুদ্র তীরবর্তী বাগেরহাট জেলার বারুইপাড়া গ্রামে ১৯৫৪ সালের পয়লা মার্চ যে শিশুটি জন্মেছিল; কে জানতো নয়াবিপ্লবের বীজমন্ত্র সে ছড়িয়ে দেবে সমগ্র বাংলায়? ‘আল কুরআনের প্রথম জনপদের সর্বাধিক অধিকার প্রাপ্ত মানুষের' একটি সমাজ, একটি পৃথিবী হয়ে উঠেছিল তার স্বপ্নের একটি মাত্র ক্যানভাস। কৈশোরের প্রথম প্রান্ত থেকে সেই ক্যানভাসে তুলির আঁচড় বুলাতে বুলাতে জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার ক্ষণ পর্যন্ত সেই ছবিটি ফুটিয়ে তোলার প্রাণান্ত সাধনা সে করেছে। আর এভাবেই বিশাল বাংলার বিপুল তাওহিদী জনগোষ্ঠী ও সত্যনিষ্ঠ মানুষের নিকট ছেলেটির নাম পরিণত হয়েছে একটি চেতনার নামে, একটি বিপ্লবে।
মতিউর রহমান মল্লিক আজ আমাদের মাঝে নেই; আছে তাঁর জীবন, আছে তাঁর কর্ম, আছে তাঁর চেতনা-বিপ্লবের আধার। বিগত রমজান মাসের চাঁদ যখন মুক্তির হাতছানি দিয়ে উদিত হয়েছে তারপরই তিনি বিদায় নিয়েছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন), পৃথিবী নামক কারাগার থেকে আল্লাহর ইশারায় লাভ করেছেন মুক্তি। তাঁর নাম আজ আমাদের নিত্য স্মরণীয়। আর তাই তাঁর স্মরণে সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্র আয়োজন করেছে নাগরিক শোকসভা। গত ১৬ অক্টোবর রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিকালে ৫টায় শুরু হয় এই সভা। মাঝে সালাতুল মাগরিবের বিরতি দিয়ে সভা চলে একটানা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কণ্ঠশিল্পী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সাংস্কৃতিক সংগঠক অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মানছুরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতির বিবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ। আলোচনা, স্মৃতিচারণ, গান ও কবিতা পরিবেশন নাগরিক শোকসভাকে যেন এক নয়া উদ্দীপনায় উজ্জীবিত করে তোলে। একে একে আলোচনা ও স্মৃতিচারণে অংশ নেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ও বিশ্বখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ শাহ আবদুল হান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএম লুৎফুর রহমান, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, অনুবাদক, গবেষক ও বাংলা সাহিত্য পরিষদের পরিচালক আবদুল মান্নান তালিব, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রখ্যাত কথাশিল্পী অধ্যাপক জুবাইদা গুলশান আরা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব মোস্তফা জামান আব্বাসী, নজরুল ও ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের জনপ্রিয় শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ, ফররুখ গবেষণা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাহিত্যিক অধ্যাপক মুহম্মদ মতিউর রহমান, বিশিষ্ট কথাশিল্পী ও সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচারের পরিচালক মাহবুবুল হক, বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ও অঙ্গীকার ডাইজেস্ট সম্পাদক আবু জাফর মুহম্মদ ওবায়দুল্লাহ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের সাবেক মহাপরিচালক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান, শিশু সাহিত্যিক শরীফ আবদুল গোফরান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন খান, চিত্রনায়ক শেখ আবুল কাশেম মিঠুন, এডভোকেট কবি গাজী এনামুল হক, আশা ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের ডীন প্রফেসর এবিএম মাহবুবুল ইসলাম ও সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক ও নাট্য নির্দেশক হুসনে মোবারক। সভায় কথা বলেন, কবির সহধর্মিণী, ব্যাংকার ও কথাশিল্পী সাবিনা মল্লিক এবং কবির ছোট মেয়ে নাজমী নাতিয়া।
মর্দে-মুমিন কবি মতিউর রহমান মল্লিকের স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোকসভায় অংশগ্রহণ করতে পেরে বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ মহান আল্লাহর প্রশংসা উচ্চারণ করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ইসলামী গান গাইলে একটা গোষ্ঠীর দিকে চলে যাচ্ছে-এ ধারণা যারা করে তাদের জন্য দুঃখ হয়। তিনি বলেন, ইসলাম একটি ইউনিভার্সাল কনসেপ্ট। ইসলাম শুধু মুসলমানের জন্য তো নয়ই বরং শুধু মানবজাতির জন্যও নয়; ইসলাম গোটা সৃষ্টিজগতের জন্য। ইসলাম গাছের জন্য, মাছের জন্য, পশুর জন্য, কীটের জন্য... বোমা ফাটিয়ে একে পলিউট করা মানুষের কাজ নয়। আল্লাহতায়ালা মুসলমানদেরকে আদর্শ করে দিয়েছেন। এ জন্যই বলা হয়েছে- ‘নবীরা হবেন তোমাদের সাক্ষী আর তোমরা হবে মানবজাতির সাক্ষী।' বিচারপতি বলেন, এই ইসলামই কবি মতিউর রহমান মল্লিকের কাব্য, গান আর জীবনের কনসেপ্ট। যারা ইসলামের অনুসারীদের মৌলবাদী বলে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মৌলবাদ তো খ্রিস্টবাদের বিষয়, ইসলামের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। মুসলমান কাউকে কটু কথা বলতে পারে না, কাউকে কষ্ট দিতে পারে না, বোমা ফাটাতে পারে না। তবু তোমরা যারা এটা বলছ, তারা দয়া করে পড়ালেখা কর। বিচারপতি আবদুর রউফ পুলিশ মোতায়েন করে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর হামদ-নাতের আসর বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, স্রষ্টাকে স্মরণ করে গান গাইলে সেটা বন্ধ করে দেয়া হবে- এটা মূর্খতা। তিনি কবির স্মরণে জাতীয় শোকসভা আয়োজনের প্রস্তাবের প্রতি একমত পোষণ করেন।
শাহ আবদুল হান্নান বলেন, মতিউর রহমান মল্লিক অনেক কাজ করে গেছেন। তার শূন্যতা পূরণ করা যাবে না, কঠিন হবে; কিন্তু এটা করতে হবে। তার প্রতিটি কর্মীকে অব্যাহত কাজ করে যেতে হবে। তাদেরকে অনেক ত্যাগ করতে হবে, অনেক পড়াশোনা করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই থেমে যাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, মতিউর রহমান মল্লিক একটা বৈরী পরিবেশে কাজ শুরু করেছেন। এরই মধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে ইসলামী সংস্কৃতির ক্ষেত্রে। অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে কিন্তু অনেক কাজ বাকি। গানের ক্ষেত্রে, কবিতার ক্ষেত্রে সাহিত্যের ক্ষেত্রে, নাটকের ক্ষেত্রেও কিছু কিছু হয়তো কিন্তু চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে কোন কাজ হয়নি। শাহ আবদুল হান্নান সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবশিষ্ট কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
ড. এসএম লুৎফুর রহমান বলেন, আধুনিককালের বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভাধর কবি মতিউর রহমান মল্লিক আমার সরাসরি ছাত্র। আমার মানসপুত্রের এই অকাল মৃত্যু আমাকে বিহ্বল করেছে। আল্লাহর নিয়ম অলঙ্ঘনীয়। প্রত্যেক বান্দাকে তিনি নির্দিষ্ট সময় ও দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান। মতিউর রহমান মল্লিক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার দায়িত্ব পালন করে চলে গেছেন। আমরা অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে আছি, আরও খারাপ সময় আসছে। তিনি বলেন, এত বিচিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এবং সঠিক পথে থাকা আমার ছাত্রদের মধ্যে সম্ভবত সেই সর্বশ্রেষ্ঠ ছিল। আজকের বিভ্রান্তির মধ্যে মল্লিক বিভ্রান্তিহীন। তিনি সূর্যের মতো সঠিক আলো আমাদের সমাজকে, আমাদের দেশকে বিলিয়ে গেছেন। এ আলো চিরদিন জ্বলুক...। এসএম লুৎফুর রহমান বলেন, সুদীর্ঘকাল আমি শিক্ষকতা করেছি কিন্তু মল্লিকের মতো আর কোন ছাত্র পাইনি। আমার বাসায় গেলে আমার চেয়ারে বসতে বলেছি, বসেনি কিংবা শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে আমার ছায়াও মাড়ায়নি- এমন ছাত্র অনেক পেয়েছি। কিন্তু মল্লিকের মতো ছাত্র পাইনি, আমি নামাযের অযু করতে গেলে সে কিনা নিজ হাতে আমার পা ধুয়ে দিয়েছিল। এই সৌভাগ্য আর কোন শিক্ষকের হয়েছে কিনা জানি না। আমি সৌভাগ্যবান (গৌরবানি¦ত) এমন ছাত্রের শিক্ষক হতে পেরে। তিনি বলেন, মল্লিক জানতো অর্থ দিয়ে সব কেনা যায় কিন্তু জ্ঞান কেনা যায় না, ভক্তি-শ্রদ্ধা দিয়ে এটা অর্জন করতে হয়। মল্লিক জানতো ইসলাম কি আর কোন কোন উপায়ে একে দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সে কারণে সঠিক সময়ে সঠিক পথে সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার কাজে এগিয়ে এসেছিল। আজকে তাকে অপরিহার্য। আজকে আমরা সমন¦য়বাদী হয়ে পড়েছি। সমন¦য়বাদের মধ্যে আমারটা বাদ হয়ে যাচ্ছে। এই সমন¦য়বাদের ইতিহাস অনেক রূঢ়, কুৎসিত। আজ একত্ববাদের বিকাশ প্রয়োজন, আমরা আল্লাহবাদী। যারা এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আমার মল্লিক তাদের বিরুদ্ধে এক কঠোর জবাব। যতদিন এই অপপ্রচার থাকবে ততদিন মল্লিকের প্রয়োজন হবে, প্রয়োজন থাকবে সীমাহীন। মনে রাখতে হবে, যারা ইসলামকে ডিগ্রেড করছে তারা নিজেদেরই ডিগ্রেড করছে। ড. এসএম লুৎফুর রহমান কবির স্মরণে জাতীয় শোকসভা আয়োজনের প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, অসংখ্য মানুষের বলার আছে। সারাদেশ থেকে বক্তাদের এনে কথা বলার সুযোগ করে দিতে হবে। জাতিকে আরও ব্যাপকভাবে মল্লিকের রচনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য তার সকল রচনাকর্ম খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশের আহ্বান জানান।
আবদুল মান্নান তালিব বলেন, গত ৮০০ বছরে উপমহাদেশের এ অঞ্চলে ইসলামী সাহিত্যের একটি বলিষ্ঠ অবস্থান তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে কবি মতিউর রহমান মল্লিক একটি বিশিষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে তার অঙ্গীকার এভাবেই তিনি পূর্ণ করেছেন। মুমিনদের মধ্যে এমন কিছু লোক থাকে যারা আল্লাহর সাথে তাদের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ রেখে যায়, মল্লিক তাদের একজন।
অধ্যাপক জুবাইদা গুলশান আরা বলেন, কবি মতিউর রহমান মল্লিক ছিলেন অত্যন্ত আত্মনিবিষ্ট, নিজের মধ্যে নিমজ্জিত; সবসময় কিছু ভাবছেন-কিছু করবেন। তিনি একজন কবি। তাঁর আত্মার ভিতর থেকে কবিতা উৎসারিত হয়েছিল। তিনি ঢাকঢোল পেটাননি কিন্তু বলে গেছেন। তিনি মানুষকে ভালোবেসেছিলেন, সেটাই তার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে। তার গানগুলো যখন শুনি-মন জেগে ওঠে, সাড়া দিয়ে ওঠে, নতুনভাবে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে।
একটা কনফিউজড জেনারেশন আমাদের সামনে। অনেক সময় দেশপ্রেম ও অপরাধ হয়ে যায়। এখন এটাই চলছে চারপাশে। মাঝে মাঝে ভাবি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে কি আমরা ভুল করছি? আল্লাহর পথে শহীদ হওয়াকে এখন অপরাধী বলা হচ্ছে। এই কনফিউজড সমাজের মধ্যে মতিউর রহমান মল্লিক মৃত্যুর ভিতর থেকে জীবনকে জাগিয়েছেন ফিনিক্স পাখির মতো। এটাই তিনি করেছেন। তার গান আত্মাকে উজ্জীবিত করে।
মতিউর রহমান মল্লিক ছেয়ে যাওয়া আগাছার ভিতর একটি একটি করে ফুলের চারা রোপণ করেছেন। তিনি লিখেছেন, বজ্রপাতের ভয় আছে তাই বিহঙ্গ/ পাখার ভিতর গুটিয়ে রাখে সব অঙ্গ/ ঝড়-তুফানে পড়ব বলে/সাগর পাড়ি ধরবো না?- আত্মার সাহসকে আবিষ্কার করতে হয়- তিনি যুদ্ধ করে এটা আবিষ্কার করেছেন। এই আবিষ্কারের যে ঐশ্বর্য তা তিনি আমাদের জন্য রেখে গেছেন। একজন শিল্পীর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ না হলে তার সৃষ্টি সুন্দর হয় না। মতিউর রহমান মল্লিকের হৃদয়ে এই রক্তক্ষরণ চলেছে আমৃত্যু। এই কবিকে আবিষ্কার করবে তরুণরা। ছেলেমেয়েদের মধ্যে তার সেই চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। সত্যে আঘাত আসবেই-কবিরা আছেন, সত্যের সাধকরা আছেন। তারা কাজ করে যাচ্ছেন মানুষের জন্য। মতিউর রহমান মল্লিক কাজ করে গেছেন, তাঁকে আবিষ্কার করতে হবে মানুষের জন্য, জীবনের জন্য। মতিউর রহমান মল্লিক কাজ করে গেছেন, তাকে আবিষ্কার করতে হবে মানুষের জন্য, জীবনের জন্য।
মুস্তাফা জামান আববাসী বলেন, কবি মতিউর রহমান মল্লিক একটি অবিস্মরণীয় নাম। আমি বিস্মিত হয়েছি তার কথা কোথাও তেমনভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তার ইন্তেকালের সংবাদ শুনতে পেরেছি অনেক পরে। পবিত্র রমযান মাসের তৃতীয় দিন আমি দিগন্ত টেলিভিশনে গিয়েছি। একটি অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং ছিল। সেখানে বসে আছি। হঠাৎ দিগন্ত টিভির পর্দায় চোখ পড়ল- গত পরশু কবি মতিউর রহমান মল্লিক ইন্তেকাল করেছেন। তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। তার সংগঠন, প্রতিষ্ঠানে আমি বারবার গিয়েছি। তিনি আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। বাংলাদেশে অন্তত চল্লিশটি দৈনিক পত্রিকা এই ঢাকা থেকে বের হয়, পনেরটি টিভি চ্যানেল চলে। অথচ মতিউর রহমান মল্লিককে তারা প্রকাশ করেনি, তার ইন্তেকালের সংবাদটি তারা প্রচার করেনি। কিন্তু যারা বিশ্বাসী তারা এটাকে কিছুই মনে করে না। আমাদেরও হয়তো এমনই হবে। আমরা সরে যাবো কেউ জানবে না। আমরা এটাকে কিছুই মনে করি না। মতিউর রহমান মল্লিক ইসলামী গান গেয়েছেন, লিখেছেন, সুর করেছেন। ইসলামী গানের এই ধারা-কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম শুনিয়েছিলেন-আমার মোহাম্মদের নামের ধ্যায়ান হৃদয়ে যার রয়। তারপর ফররুখ আহমদ... তার শতশত গান, রেডিওতে। তালিম হোসেন, আজিজুর রহমান... কারো মনে তুমি দিও না আঘাত এই ধারায় মতিউর রহমান মল্লিক। তিনি ছিলেন সত্যিকারের রসুল প্রেমিক কবি। যখন তিনি রসূলের কথা বলতেন, তার চোখ দিয়ে দরদর করে বেরিয়ে আসতো পানি। যে রসুলকে ভালবাসবে সেই ইসলামকে বিজয়ী করবে। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে আমরা এ ভালোবাসাই খুঁজবে।
মতিউর রহমান মল্লিক এই ভালোবাসা দিয়েই জাগিয়েছেন। তার গান আমার হাতে। কী সেই গান। ‘আমার হাতে তার পঞ্চাশটি গান আছে। এগুলো যদি দেশের বিখ্যাত শিল্পীদের দিয়ে গাওয়ানো যায় তাহলে বাংলাদেশে একটা নতুন বিপ্লব সৃষ্টি হবে। এই গানগুলো আমরা জাতির কাছে পৌঁছে দেব ইনশাআল্লাহ।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, কাজী নজরুল ইসলামসহ অতীতে যেসব মহান ব্যক্তিরা সত্যের জন্য, সুন্দরের জন্য কাজ করেছেন তাদের কারো পথই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। মতিউর রহমান মল্লিকের পথও ছিল কণ্টকাকীর্ণ। আমরা যেমন অতীতের মহান মনীষীদের কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছি তেমনি মতিউর রহমান মল্লিকের কাজও এগিয়ে নিতে হবে। আজকে এই রাজধানী শহরের এত ব্যস্ত জীবন মানুষের, তার মধ্যেও এত মানুষ এখানে একত্রিত হয়েছে, এখানে এসেছে মতিউর রহমান মল্লিককে জানার জন্য, বোঝার জন্য, তারপরে কী আর ভাবার থাকে বলেন? তার কাজকে আমাদের আগামী দিনের পাথেয় করে এগিয়ে যেতে হবে। শোক করে ভুলে যেতে নয়, যেন স্মরণ করতে থাকি।
আমরা যে কাজী নজরুল ইসলামের ইসলামী গানের কথা বলি, সে গানের সংখ্যা কিন্তু অনেক কম। তার অন্যান্য গানের তুলনায় সবচেয়ে কমসংখ্যক ইসলামী গান। যদিও সেগুলো গুণগত মানে (অতি) উন্নত এবং আমাদের মনের চাওয়ার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এদিক থেকে মতিউর রহমান মল্লিকের গান বিপুল সংখ্যায় এবং গুণগত মানে সেগুলো অসাধারণ। তিনি সারাজীবন যেসব গান সৃষ্টি করেছেন সবই ইসলামী গান।
নাগরিক শোকসভায় কবি মতিউর রহমান মল্লিকের সহধর্মিনী কথাশিল্পী সাবিনা মল্লিক বলেন, ইন্তিকালের পর থেকে প্রতিটি দিন তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, লেখা হচ্ছে, দোয়া হচ্ছে। আমাদের পরিবারেও এখন একটাই আলোচনার বিষয়। মাঝে মাঝে আমি বিব্রত হয়ে পড়ি-অফিসে, বাসায়। বাসায় কত আত্মীয়-স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষী আসেন। তাদের সাথে আমি কেবল উনার কথাই বলতে থাকি। অফিসে গেলেও কলিগদের সঙ্গে কেবল উনার কথাই বলতে থাকি। বলতে বলতে এক সময় বিব্রত হয়ে পড়ি। আমি কেবল উনার কথাই বলে যাচ্ছি। কিন্তু যারা শুনছে তারা কি বিরক্ত হচ্ছে না। আমি বিব্রত হয়ে পড়ি। তিনি বলেন, কবি মতিউর রহমান মল্লিক শুধু আমার স্বামী নন, তিনি আমার গুরুও। তিনি আমাকে রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবকিছুই শেখাতেন। এখন তিনি নেই। আমি একা হয়ে গেছি। আমি সকল বিষয়ে তার সঙ্গে শেয়ার করতাম। তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন এক ভারতীয় জেনারেল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে এমন একটি মন্তব্য করেছিলেন যে, মন্তব্য শুনে আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, দাবার চালটি তখন আমাদের হাতে কিংবা এ রকমই একটি মন্তব্য। আমরা যারা পাকিস্তান আমল, বৃটিশ আমল দেখিনি, দেখেছি একটি দেশ, একটি পতাকা। কিন্তু সেই জেনারেলের মন্তব্য শুনে আমি এতই মর্মাহত হয়েছিলাম যে, আমার মনে হয়েছে, আমাদেরকে নিয়ে একটা খেলা চলছে আর সেই খেলাটা খেলছে অন্যরা। রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে আমি অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। বিষয়টি শেয়ার করার জন্য আমি আমার স্বামীকে পাইনি। তখন তিনি পুরোপুরি অসুস্থ তারপরে আর তাকে পাইনি। আমি জানি, আমার এই আবেগ, এই অনুভূতির প্রতি তিনি সম্মান পোষণ করতেন, তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিতেন। সেই সুযোগ আর হয়নি। সেদিন সেই জেনারেলের মন্তব্য শুনে বাসায় গিয়ে জাতীয় পতাকাটা হাতে নিয়ে আমি কাঁদলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, পতাকা তুমি কার? আমরা কি ফুটবল যে যার যেমন ইচ্ছা সে তেমনভাবে আমাদের পায়ে পায়ে ঘুরাবে। এমন পরিস্থিতিতে আমার স্বামী আমাকে পথ দেখাতেন, আমার কষ্ট কমিয়ে দিতেন। পুলিশকে দিয়ে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর হামদ-নাত সন্ধ্যা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সাবিনা মল্লিক বলেন, আমার প্রশ্ন কেন শিল্পীদের গাইতে দেয়া হলো না? কেন অনুষ্ঠান বন্ধ করা হলো? সাইমুমের উদ্দেশে তিনি বলেন, মতিউর রহমান মল্লিক কাউকে পরওয়া করতে শেখাননি। তিনি এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো পরওয়া করতেন না। আপনারা এগিয়ে যাবেন। আপনারাও কাউকে পরওয়া করবেন না। আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করবেন।
কবিকন্যা নাজমী নাতিয়া বলেন, আমাদের বাসায় যে আলো ছিল, যে আকাশ ছিল, যে বটগাছ ছিল তাকে এখন আর পাই না। আমি কখনও ভাবিনি, কখনও চাইনি এত তাড়াতাড়ি আববুর শোকসভা হবে। সবাই তো আববু হারায়, আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। আববু আমাকে ছোট মা বলে ডাকতেন। আমার এত এত চাচারা বাসায় আসতেন। তাদের সামনে তিনি আমাকে ডাকতেন-নাজমী! নাজমী! ছোট মা! ছোট মা! শুনতে শুনতে চাচারাও আমাকে ছোট মা বলে ডাকতে শুরু করেছেন। এখন বাসায় আমি সারাক্ষণ আমার আববুকে খুঁজে বেড়াই এ ঘরে ও ঘরে, পাই না। আববু আমাদের বলতেন- মা তোমরা বড় হও। এডুকেশন দিয়ে বড় হও। আমার তো আর কোন রত্ন নেই, তোমরা তিনজনই আমার রত্ন। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আববুর জন্য দোয়া করবেন।
নাজমী যখন কথা বলছিলেন, হল কক্ষ জুড়ে সৃষ্টি হয়েছিল অন্যরকম পরিবেশ। উপস্থিত প্রায় সকলেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন অনেকে, অনেকে কেঁদেছেন নীরবে।
শোকসভায় বক্তাদের মুখে বারবার উচ্চারিত হয় প্রার্থনা- হে আল্লাহ, মতিউর রহমান মল্লিককে তুমি জান্নাতে উচ্চ মর্যাদায় আসিন করো। যখনই বক্তাদের মুখ থেকে এরকম দোয়া উচ্চারিত হচ্ছিল তখনই আমিন! আমিন! ধ্বনিতে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল সভাকক্ষ।
শোকসভায় আলোচনা ও স্মৃতিচারণের ফাঁকে ফাঁকে পরিবেশিত হয় মতিউর রহমান মল্লিকের গান ও কবিতা। উচ্চারণ শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘প্রশংসা সবই কেবল তোমারই', সন্দীপণ শিল্পীগোষ্ঠীর শিশু শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘বই পড় বই পড় বই পড়বে', অনুপম শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘কারো কাছে চাননি কিছু', নিমন্ত্রণ শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘যেখানে মেঘের মতো পাতার অন্ধকার', শিল্পী রোকনুজ্জামান পরিবেশন করেন ‘পাষাণ পাষাণ মণ/পাথর পাথর জন', অনুপম শিল্পীগোষ্ঠীর শিশু শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘সাহস আছে বলেই আমি পাল্লা দিতে আসি', শিল্পী মশিউর রহমান পরিবেশন করেন ‘গান শোনাতে পারি যদি তুমি কথা দিতে পারো', শিল্পী মোস্তফা জামান আববাসী পরিবেশন করেন ‘আমার কণ্ঠে এমন সুধা' ও ‘হাত পেতেছে এই গোনাহগার' গান দু'টির অংশবিশেষ। শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ পরিবেশন করেন ‘আমার কণ্ঠে এমন সুধা দাও ঢেলে দাও হে পরওয়ার'।
সভায় কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পীগণ। মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক আবৃত্তি করেন ‘তুমি কি এখন', আহসান হাবীব খান আবৃত্তি করেন ‘তুলনা', আহমদ বাসির আবৃত্তি করেন ‘অনেক বিজয়' শীর্ষক কবিতা।
কবিকে নিবেদন করে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মোহাম্মদ মোরশেদ আলী, কবি হাসান আলীম ও কবি আমিনুল ইসলাম। জাফর ফিরোজের কথা ও সুরে কবি মতিউর রহমান মল্লিককে নিয়ে লেখা গান পরিবেশ করে অনুপমের শিশু শিল্পীরা। প্রায় দেড় হাজার মানুষ কবি মতিউর রহমান মল্লিকের স্মরণে নাগরিক শোকসভায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, প্রশাসক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সংগঠক ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
বক্তাদের একজন শোকসভা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। এ আপত্তির জবাব দিয়েছিলেন প্রবীণ পন্ডিত আবদুল মান্নান তালিব। তিনি বলেন, হাদিসে যে ধরনের শোক প্রকাশ করার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে, আমরা কেউই সে রকম শোক প্রকাশ করতে এখানে আসিনি। আমরা এসেছি মূলত কবি মতিউর রহমান মল্লিককে স্মরণ করতে। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করতে। সুতরাং এ শোকসভা মূলত শোকসভা নয়, আসলে এটা স্মরণসভা।
নাগরিক স্মরণসভার সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মানছুর তার বক্তব্যে বলেন, আসলে আমরা স্মরণসভা হিসেবেই এ সভার আয়োজন করেছি। তিনি সভাকে সফল করে তুলতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নাগরিক শোকসভা তথা নাগরিক স্মরণসভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। (সমাপ্ত)
২২ ও ২৯ অক্টেবর এবং ১২ নভম্বের ২০১০ দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×