somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কে এই মৃত্যুপরোয়ানা প্রাপ্ত নিজামী?:

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মতিউর রহমান নিজামী (জন্মঃ ৩১শে মার্চ ১৯৪৩ খ্রিঃ) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান দলনেতা বা আমীর। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক তার মামলার রায়ের জন্য কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত। এছাড়াও চট্রগ্রামের দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি আল বদর নামের আধা-সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী বাহিনীর হত্যাকাণ্ডে আল-বদর সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করে, এবং ১৪ই ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনেও তাদের প্রধান ভূমিকা ছিল।
যদিও হিউম্যান রাইটস্‌ ওয়াচ, বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এই বিচারকে স্বাগত জানিয়েছিল কিন্তু নভেম্বর ২০১১ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মামলার তদন্তের অগ্রগতি, স্বচ্ছতার অভাব এবং প্রতিপক্ষের আইনজীবি ও সাক্ষীদের হয়রানির বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সংসদ সংসদ নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের কৃষি (২০০১-০৩) ও শিল্প মন্ত্রনালয়ের (২০০৩-০৬) মন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবনঃ

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের (বর্তমান ইসলামী ছাত্র শিবির) সাথে যুক্ত হন। পরপর তিন বছর (১৯৬৬-৬৯) তিনি পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন । এরপর দুইবার তিনি গোটা পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান জামায়াতে ইসলামী এবং এর অনেক সদস্যকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন কারণ দলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনীকে সমর্থন দিয়েছিল। এ সময় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং দলের আরো কয়েকজন প্রধান নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
১৯৭৫ সালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাতে শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৭৭ সালে একটি অভ্যূত্থানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। তিনি ১৯৭৮ সালে শীর্ষ জামায়াত নেতা যেমন, অধ্যাপক গোলাম আযম ও নিজামীকে বাংলাদেশে ফিরে আসার অনুমতি দেন; তারা পুনরায় জামায়াতে ইসলামীকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং এটি দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী রাজনৈতিক দলে পরিনত হয়। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এবং জামায়াতের যুব সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে সংগঠিত করেন। ১৯৭৮-১৯৮২ তিনি ঢাকা মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩-১৯৮৮ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে সেক্রেটারী জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং আমীর নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত (২০০০) দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীর হয়ে সংসদীয় আসন পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৪ পর্যন্ত সংসদে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন।[১২] ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি তার প্রার্থীতা হারান এবং আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আবু সাঈদ তার আসন থেকে নির্বাচিত হন।
যুদ্ধাপরাধ ব্যতীত অন্যান্য অভিযোগ সমূহঃ

দুর্নীতির অভিযোগঃ

মে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন নিজামীসহ আরো কয়েকজন রাজনীতিবিদের নামে গেটকো দুর্নীতি মামলা করেন, এতে বলা হয় তিনিসহ অন্যরা অবৈধভাবে স্থানীয় গেটকো ফার্মের সাথে কন্টেইনার ডিপো সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেছিলেন। নিজামীসহ আরো ১২ জনের নামে এই মামলায় ২০০৮ সালে ১৫ই মে গ্রেফতারি পরোয়ানা জাড়ি করেন আদালত।
নিজামীসহ অন্যদের বিরোদ্ধে অভিযোগ ছিল কোম্পানিটি শর্ত না পূরণ করা সত্ত্বেও আসামীরা তাদের টেন্ডার গ্রহণ করেছিলেন। আর এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ সরকারের ১০০ মিলিয়ন টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছিল। নিজামী অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন মামলাটি রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছে।[তিনি দুই মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

ধর্মীয় মামলাঃ

২০১০ সালের ১৭ই মার্চ একটি জনসভায় ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে নিজামীর জীবনকে নবী মুহাম্মদ-এর সাথে তুলনা করেন। ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতিতে আঘাত করেছে, এমন অভিযোগে ২১শে মার্চ বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খাঁন ও ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রশিবিরের সভাপতি আ স ম ইয়াহিয়ার নামে মামলা করেন।২৯ জুন, ২০১০ তারিখে রমনা থানা পুলিশ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মতিউর রহমান নিজামীসহ আরো তিনজন সিনিয়র জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করে।তিনি পরের দিন জামিনের জন্য আবেদন করেন এবং ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১১ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করেন। ২০১১ সালের মার্চে উচ্চ আদালত মামলাটি চার মাসের জন্য মুলতুবি ঘোষণা করেন।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাঃ

২০১১ সালের ৪ই মে নিজামীকে ভারতের আসামের বিদ্রোহী সংগঠন উলফার জন্য অস্ত্র চোরাচালান মামলায় গ্রেফতার করা হয়।৭ই সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে তার জামিন আবেদন আদালত নাকচ করে দেন।
৩০শে জানুয়ারি ২০১৪ সালে নিজামীসহ আরো ১৩ জন আসামীকে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় অভিযুক্ত প্রমাণিত হওয়ার পর আদালত ফাঁসির দন্ডাদেশ দেন।২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড সিইউএফএল জেটিঘাটে ধরা পড়ে ১০ ট্রাক অস্ত্র। এরপর পরের বছর ৬ জুলাই এই মামলায় বাদি আহাদুর রহমানের সাক্ষ্য দেয়ার মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। ২০০৭ সালের ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন করে। ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি এএসপি মনিরুজ্জামান তদন্ত শুরু করেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর অস্ত্র মামলায় মোট ৫৬ জন ও চোরাচালান মামলায় মোট ৫৩ সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

যুদ্ধাপরাধের বিচারঃ

১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার বিষয়ে ২০০৯ সালের ২৯শে জানুয়ারি জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। সংসদে গৃহীত প্রস্তাবের বাস্তবায়নে সরকার বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস অ্যাক্ট, ১৯৭৩ অনুযায়ী অভিযুক্তদের তদন্ত এবং বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণাটি আসে ২০০৯ সালের ২৫শে মার্চ।
২০১০ সালের ২৯ জুন অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার নিজামীকে একই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।এরপর ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর জামায়াতের আমিরের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করে ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষ।২৮ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগ আমলে নেয়। ২০১২ সালের ২৮ মে থেকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি অভিযোগে নিজামীর মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এ বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগসমূহঃ

রাষ্ট্রপক্ষ মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যেসব অভিযোগ আনেন সেগুলো হলো,

1. পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিনকে ১৯৭১ সালের ৪ জুন পাকিস্তানি সেনারা অপহরণ করে নূরপুর পাওয়ার হাউসের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে নিজামীর উপস্থিতিতে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ১০ জুন তাকে ইছামতী নদীর পাড়ে আরো কয়েকজনের সঙ্গে হত্যা করা হয়।
2. ১৯৭১ সালের ১০ মে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়ি গ্রামের রূপসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের একটি সভায় নিজামী উপস্থিত ছিলেন। সভায় পরিকল্পনা করে ১৪ মে পাকিস্তানি সেনারা দুইটি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪৫০ জনকে হত্যা করে এবং রাজাকাররা প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ করে।
3. ১৯৭১ সালের মে মাসের শুরু থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনায় নিজামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে কারণ তিনি ঐ ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
4. করমজা গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ।
5. ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল নিজামীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা ঈশ্বরদী উপজেলার আড়পাড়া ও ভূতের বাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় ২১ জন নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করা হয়।
6. নিজামী ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর ধুলাউড়া গ্রামে ৩০ জনকে হত্যায় নেতৃত্ব দেন ও তার সম্পৃক্ততা ছিল।
7. ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সোহরাব আলী নামক এক ব্যক্তিকে নির্যাতন ও হত্যা করেন।
8. ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট নিজামী নাখালপাড়ার পুরোনো এমপি হোস্টেলে গিয়ে আটক রুমী, বদি, জালালদের হত্যার ঘটনায় পাকিস্তানি সেনাদের প্ররোচনা দেন।
9. ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর হিন্দু অধ্যুষিত বিশালিখা গ্রামে ৭০ জনকে গণহত্যা করেন।
10. নিজামীর নির্দেশে রাজাকাররা পাবনার সোনাতলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা অনিল চন্দ্র কুণ্ডুর বাড়িতে আগুন দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
11. ১৯৭১ সালের ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউটে ইসলামী ছাত্রসংঘ আয়োজিত সভায় নিজামী উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন।
12. ২২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল মাদানীর স্মরণসভায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য ১২ নম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।
13. ৮ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে ছাত্রসংঘের সভায় বক্তব্যের জন্য ১৩ নম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।
14. ১০ সেপ্টেম্বর যশোরে রাজাকারদের প্রধান কার্যালয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য ১৪ নম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।
15. ১৯৭১ সালের মে মাস থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত রাজাকার ক্যাম্পে নিজামী ও রাজাকার সামাদ মিয়ার ষড়যন্ত্রে সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়।
16. ১৯৭১ সালের ১৮ই ডিসেম্বর জামায়াতের তত্কালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ ও আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেন এবং আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিজামীর বিরোদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়।

যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ঃ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।তাঁর বিরুদ্ধে আনা ষোলটি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে আদালত জানিয়েছে।এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- ১ এই আদেশ দেন।নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগের জন্য তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বাকি ৫, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নিজামীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
http://www.bbc.com/bengali/news/2014/10/141029_si_nizami_verdict_death

নিজামী ছিলেন আলবদরের শিরোমণিঃ

একাত্তরে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘই ছিল কুখ্যাত রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর নেতৃত্বে। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটিকে তখন রূপান্তর করা হয়েছিল আল-বদর হাইকমান্ডে। ছাত্রসংঘের সারা পাকিস্তানের প্রধান হিসেবে মতিউর রহমান নিজামীই ছিলেন আল-বদরের সর্বেসর্বা। তার নির্দেশেই গড়ে ওঠে এ ঘাতক বাহিনী। শুধু সাধারণ মানুষকেই নয়, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা করেছে ওরা। লাহোর থেকে প্রকাশিত সাইয়িদ মুতাক্কিউল রহমান ও সালিম মনসুর খালিদের লেখা ‘জাব ভুহ নাজিম-ই আলা দি’ (যখন তারা নাজিম-ই আলা ছিলেন) বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানী বংশোদ্ভূত গবেষক সাইয়েদ ওয়ালি রেজা নাসের তার The Vanguard of The Islamic Revolution : The Jamaat-i Islami of Pakistan বইয়ে লিখেছেন, একাত্তরে সরকারের অনুপ্রেরণায় ইসলামী ছাত্রসংঘ (ইসলামী জমিয়তে তুলাবা বা IJT) হয়ে ওঠে জামায়াতে ইসলামীর মূল শক্তি। আর্মির সহায়তায় এরা আলবদর ও আলশামস নামে দুটি প্যারামিলিটারি ইউনিট গঠন করে বাঙালি গেরিলাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। ইসলামী ছাত্রসংঘের তখনকার প্রধান মতিউর রহমান নিজামী আলবদর ও আলশামস বাহিনী সংগঠিত করেন।
পাকিস্তানে নির্বাসিত আফগান সাংবাদিক ও গবেষক মুসা খান জালাজাই তার Secterianism and the politico-religious Terrorism in Pakistan গ্রন্থে লিখেছেন, সেনাশাসনের সঙ্গে ছাত্রসংঘকে সম্পৃক্ত করার ক্ষেেত্র নিজামীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।… আল-বদর ও আল-শামস গড়ার সিদ্ধান্তটাও নিজামীর।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে পাঠানো গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, একাত্তরের ১৪ জুন ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমায় ইসলামী ছাত্রসংঘের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিউর রহমান নিজামী বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেনাবাহিনী যেভাবে কাজ করছে তাতে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা সম্ভব। নিজামী বলেন, ইসলাম রায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে। এ জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন তিনি।
নিজেদের দলীয় মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম-এ সে বছর ১৪ নভেম্বর ‘জনতার পার্লামেন্ট’ কলামে ‘বদর দিবস : পাকিস্তান ও আলবদর’ শীর্ষক এক নিবন্ধে নিজামী লিখেছিলেন, ‘আমাদের পরম সৌভাগ্যই বলতে হবে। পাক বাহিনীর সহযোগিতায় এদেশের ইসলামপ্রিয় তরুণ ছাত্রসমাজ বদর যুদ্ধের স্মৃতিকে সামনে রেখে আল-বদর বাহিনী গঠন করেছে।’ নিবন্ধে আরো বলা হয়, ‘সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আল-বদরের তরুণ যুবকেরা হিন্দুস্তানের অস্তিত্ব খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করবে।’ ১৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম-এ মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার বিষয়ে নিজামীর অঙ্গীকারের কথা প্রকাশিত হয়। সংগ্রামের খবরটি এ রকমÑ যশোরে রাজাকার সদর দফতরে সমবেত রাজাকারদের উদ্দেশ্য করে নিজামী বলেন, ‘জাতির এই সংকটজনক মুহূর্তে প্রত্যেক রাজাকারের উচিত ঈমানদারীর সাথে তাদের উপর অর্পিত এ জাতীয় কর্তব্য পালন করা এবং ঐ সকল ব্যক্তিকে খতম করতে হবে যারা সশস্ত্র অবস্থায় পাকিস্তান ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।’
একাত্তরের ২৩ সেপ্টেম্বর নিজামী ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় আলবদর ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে এক চা-চক্রে তিনি বলেন, মাদ্রাসা ছাত্ররা দেশ রায় একযোগে এগিয়ে এসেছে। কারণ তারা ইসলামকে ভালবাসে। পাকিস্তানকে ভালবাসে। (দৈনিক সংগ্রাম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)
নিজামীর কাছে পাকিস্তান ছিল ‘আল্লাহর প্রিয় ভূমি’। একাত্তরে চট্টগ্রামে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তার প্রিয়ভূমি পাকিস্তানকে রা করার জন্যে ঈমানদার মুসলমানদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু মুসলমানেরা যখন রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা রাজনৈতিক পন্থায় করতে ব্যর্থ হল, তখন আল্লাহ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তার প্রিয়ভূমির হেফাজত করেছেন।’ (দৈনিক সংগ্রাম, ৫ আগস্ট ১৯৭১)
একাত্তরে পাকিস্তানের আজাদী দিবস (১৪ আগস্ট) উপলে ইসলামী ছাত্রসংঘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সভা করে। এতে সভাপতিত্ব করেন নিজামী। সভায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান কোন ভূ-খণ্ডের নাম নয়, একটি আদর্শের নাম। এই ইসলামী আদর্শের প্রেরণাই পাকিস্তান সৃষ্টি করেছে এবং এই আদর্শই পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখতে সম।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামপ্রিয় ছাত্র সমাজ বেঁচে থাকতে পাকিস্তানের অস্তিত্ব টিকে থাকবে। ’ (দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ আগস্ট ১৯৭১)
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সমর্থকদের ভারতের এজেন্ট ও দুষ্কৃতকারী বলত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা। একইভাবে ওই সময় বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকেও ভারতীয় এজেন্ট বলে অভিহিত করেছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী। আর জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম শহীদ মতিউরকে বলেছিল ‘বিশ্বাসঘাতক’।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য বাঙালি ফাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটি থেকে একটি জেটবিমান ছিনতাই করে পালিয়ে আসার সময় কো-পাইলট রশীদ মিনহাজ তাকে বাধা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলে একপর্যায়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। শহীদ হন মতিউর রহমান। মিনহাজও নিহত হয়। কিন্তু হানাদার বাহিনীর অন্যতম দোসর নিজামী তখন মিনহাজের পিতার কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ বীর মতিউরকে ভারতীয় এজেন্ট বলে উল্লেখ করেন। আর নিহত মিনহাজকে সম্বোধন করেন ‘শহীদ’ বলে। ১৯৭১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রামের পাতা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
‘মিনহাজের পিতার নিকট ছাত্রসংঘ প্রধানের তারবার্তা’ শিরোনামে দৈনিক সংগ্রামের ওই খবরে বলা হয়, ‘পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি জনাব মতিউর রহমান নিজামী শহীদ রশীদ মিনহাজের পিতার নিকট এক তারবার্তা প্রেরণ করেছেন বলে সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ। তারবার্তায় জনাব নিজামী বলেন যে, পাকিস্তানি ছাত্রসমাজ তার পুত্রের মহান আত্মত্যাগে গর্বিত। ভারতীয় হানাদার ও এজেন্টদের মোকাবেলায় মহান শহীদ মিনহাজের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা অক্ষুন্ন রাখতে তারা বদ্ধপরিকর।’
এর আগে সে বছরের ১ সেপ্টেম্বর জামায়াতের পত্রিকা দৈনিক সংগ্রামে ‘শহীদ মিনহাজের জীবনের শেষ কয়েকটি মুহূর্ত’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘মাত্র ২০ বছর বয়সে যে বীর অমরত্ব লাভ করেছেন, তিনি শাহাদাত বরণ করার সময় তার দেশ ও পাকিস্তান বিমানবাহিনী ছাড়া আর কিছুই স্মরণ করেননি। ‘আমাকে হাইজ্যাক করা হচ্ছে’– এই ছিল তার শেষ কথা যা টেপরেকর্ডারে ধরা পড়েছে। এই কণ্ঠস্বর ছিল পরিষ্কার ও জোরালো এবং কথাটি তিনবার উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রথমবার ছিল অনুমান করার মতো ঠিক যখন বিশ্বাসঘাতক ফাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান তাকে কোরোফর্ম দিয়ে কাবু করার চেষ্টা করছিল।’’ ‘বেস কমান্ডারের তথ্য প্রকাশ’ উপশিরোনামে ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘যে বিশ্বাসঘাতক বিগত ২০ শে আগস্ট একটি ট্রেনিংদাতা জেট বিমানকে ভারতে হাইজাক করার ব্যর্থ চেষ্টা চালায় তার নাম হচ্ছে মতিউর রহমান। সে করাচীর মসরুর বিমানঘাঁটিতে চাকুরীরত ছিল বলে বেস কমান্ডার আজ তথ্য প্রকাশ করেছেন।’
কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতদন্ত কমিশনকে পাবনা জেলার বেড়া থানার বৃশালিকা গ্রামের আমিনুল ইসলাম ডাবলু জানিয়েছিলেন, তার পিতা মো. সোহরাব আলীকে একাত্তরে নিজামীর নির্দেশেই হত্যা করা হয়। সাত নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুস (গ্রাম-মাধবপুর, পাবনা) কমিশনকে জানান, আলবদর ক্যাম্পে দুসপ্তাহ আটক থাকা অবস্থায় তাদের হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। ওই সময় আলবদরদের একটি গোপন বৈঠকে উপস্থিত থেকে নিজামী মুক্তিযোদ্ধাদের সমূলে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন।
http://icsforum.org/mediarchive/2011/12/21/নিজ%E...
সবশেষে এর আগে অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীরা যা করেনি, তাই করে বসলো নিজামী।নিজের সব দোষ স্বিকার করে আপীল আদালতের নিকট সাজা কমানোর অর্থাৎ প্রাণভিক্ষা করে বসলো সে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা বাশেরকেল্লায় খুব গর্ব করেই বলতো ,তাদের নেতারা মরলে শহীদ বাচলে গাজী।আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে তারা ক্ষমা ভিক্ষা করেনা। নিজামীর ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে অবশেষে তাদের সর্বশেষ অহংকাটুকুও হাওয়ায় মিলিয়ে গেল

পরিবারের সদস্যরা কে কি করেন!?


মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের চূড়ান্ত রায়েও ফাঁসি বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু কোথায় কি করছেন নিজামীর সন্তানেরা?

চার ছেলে এবং দুই মেয়ে সহ মোট ছয় সন্তানের জনক নিজামী। ছোট ছেলে নাদিম তালহা এখনো ছাত্র হলেও বাকি পাঁচ সন্তানই প্রতিষ্ঠিত।

নিজামীর সন্তানদের পরিচয় তুলে ধরা হলো:
সন্তানদের মধ্যে সবার বড় মেয়ে মোহসিনা ফাতেমা। তিনি পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। আর মোহসিনা ফাতেমার স্বামী সাইফুল্লাহ মানসুর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বিটিভির সংবাদ পাঠক ছিলেন। তবে মহাজোট সরকার ক্ষমাতায় আসার পর তিনি আর সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করছেন তিনি।

বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান পড়ালেখা করেছেন মালয়েশিয়ার আন্তজার্তিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ করোলিনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ ভালোই আছেন তিনি। তবে দূরে থাকলেও দেশ বা দেশের রাজনীতি নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে সর্বদাই ব্যস্ত তিনি ।

দ্বিতীয় ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাবেয়া ভূঁইয়া একাডেমীতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে লন্ডন গিয়ে বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ ছাড়া নিজামীর এই ছেলে তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকেও কামিল পাশ করেছেন। ছেলেদের মধ্যে কেবল নাজিব মোমেনই দেশে অবস্থান করছেন। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।

ডা. নাইমুর রহমান খালেদ। তিনি নিজামীর তৃতীয় ছেলে। পড়াশোনা করেছেন পাকিস্থানের একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে অস্টেলিয়ায় চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। চিকিৎসা সেবায় তিনি বেশ মনযোগী হওয়ায় দেশ বা দেশের রাজনীতি নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই তার।

ছোট ছেলে নাদিম তালহা মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা করছেন। নিজামীর এই ছেলেই কেবল ছাত্রজীবনে রয়েছেন। তবে এখনো ছাত্র হলেও ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রমে রয়েছে তার ব্যাপক বিরোধিতা। প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ট্রাইব্যুনালবিরোধী বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান তিনি।

ছোট মেয়ে খাদিজা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছোট মেয়ের স্বামী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম। তিনি এক সময় শিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। নজরুল ইসলাম বর্তমানে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।

নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামীও পিছিয়ে নেই। তিনি গুলশানে অবস্থিত ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে জামায়াতের নারী শাখার নেত্রীও তিনি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×