somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজেরাই নিজেদের শত্রু: আমেরিকায় অবৈধ বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক

২৭ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশী কমিউনিটিতে নিজেরাই নিজেদের শত্রু। আমেরিকায় বসবাসরত অবৈধদের অবস্থান তার আশপাশের ব্যক্তিই হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে তথ্য জানিয়ে দেয়। যার কারণে অন্যান্য কমিউনিটির অবৈধ বসবাসকারীদের চেয়ে বাংলাদেশীরা সাম্প্রতিক সময়ে বেশি গ্রেফতার হচ্ছে।

গ্রেফতার হওয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। আমেরিকার বিভিন্ন কারাগারে তিন শতাধিক বাংলাদেশী বন্দি রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন জেলে বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ইমিগ্রেশন জটিলতায় গ্রেফতার হয়েছেন। যাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নাই। এছাড়া অন্যান্য অপরাধেও ৫০ জনের মতো বাংলাদেশী আটক রয়েছেন।

আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সূত্রে জানা গেছে, দেশটির বিভিন্ন জেলে আটক তিন শতাধিক বাংলাদেশীর মধ্যে ২৫১ জনের পাসপোর্ট চেয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক এবং লসঅ্যাঞ্জেলেস কন্স্যুলেটে কাগজপত্র চেয়ে ব্যর্থ হয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়েছে। যাতে ডিপোর্টেশন প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত মোট ২৫১ জন বাংলাদেশীর পাসাপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেন প্রেরণ করা হয়। সেই চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এই ২৫১ জনের পাসপোর্ট না দিলে বাংলাদেশীদের আগামীতে আর আমেরিকায় আসতে দেয়া হবে না।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এমন হুমকিতে বেকায়দায় পড়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কথামত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৫১ জন বাংলাদেশীর পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়ার জন্য ওয়াশিংটন দূতাবাসে নামসহ একটি চিঠি পাঠিয়েছে। ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস নিউইয়র্ক এবং লসঅ্যাঞ্জেলেস কন্স্যুলেটে এলাকাভিত্তিক নাম পাঠিয়ে দেয়।

মুলত বাঙালি কমিউনিটির মধ্য হিংসা-বিদ্বেষ বেশি। সামান্য ঘটনার জের ধরেই অনেকে ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে ফোন করে অবৈধের অবস্থান ও ঠিকানা জানিয়ে দেয়। অবৈধ অবস্থানকারী কবে কখন বাসায় থাকেন, তাও জানিয়ে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অভিযান চালিয়ে কাগজপত্রহীন বাংলাদেশীদের গ্রেফতার করছে।

গ্রেফতার হয়ে পরে বন্ডের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পাওয়া এমন এক ব্যক্তি জানান, নিকট আত্মীয়ের কারণে গভীর রাতে বাসা থেকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা থাকলে, তা নিজের ভাইকেও জানানো উচিত না। একই ঠিকানায় দীর্ঘ দিন না থেকে পরিবর্তন করা ভালো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অন্যান্যদের চেয়ে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন বেশি। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা ও প্রত্যেক থানাকেন্দ্রীক সংগঠন রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থক সংগঠন। ইতোমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যেও কমিউনিটি ব্যাপক অগ্রসর হয়েছে। আগে শুধু নিউইয়র্ক কেন্দ্রীক বসবাস থাকলেও এখন অন্যান্য স্টেইটে বাংলাদেশী কমিউনিটি ছড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সম্প্রসারিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

এসব অগ্রগতির পাশাপাশি হিংসা বিদ্বেষও বেড়েছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন, মসজিদের কমিটি হয়ে থাকে। এসব কমিটিকে ঘিরে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। অনেক সময় সংগঠন আবার ভেঙে পাল্টা কমিটি ঘোষণা হয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মামলা-পাল্টা মামলা হয়। এটা এক পর্যায়ে ব্যক্তিগত শত্রুতায় পরিণত হয়। যার ফলে নিজেরা নিজের শত্রু হয়ে একে অন্যের ক্ষতি করে বসে।

কমিউনিটির পরিচিত মুখ মূলধারার রাজনীতিবিদ মাফ মিসবাহ বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি যুক্তরাষ্ট্রে করে কোনো লাভ নেই। এ রাজনীতি কমিউনিটি কিংবা দেশের কোনো উপকারে আসছে না। বরং এখানে বাংলাদেশের রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের পরিবর্তে দেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করা হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে কমিউনিটি ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হলে মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে হবে। আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিতে নের্তৃত্বে আসতে হলে বাংলাদেশীদের দেশীয় রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক মত ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কমিউনিটি ও দেশ সেবায় সত্যিকার ভূমিকা রাখতে হলে বাংলাদেশী আমেরিকানদের মূলধারার রাজনীতিতে নের্তৃত্বের আসনে আসতে হবে।”

তিনি আরো বললেন, “মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা মানে নিজেদের ক্ষমতাহীন করে রাখা। আর মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়া মানেই নিজেদের ক্ষমতাশালী করা। ক্ষমতাবানদের বৈষম্যের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। উল্টো দুর্বল ও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে পারেন। কমিউনিটি ও দেশসেবায় সত্যিকার ভূমিকা রাখতে হলে বাংলাদেশী আমেরিকানদের মূলধারার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ অনিবার্য।
লেখাটা শেয়ার করা।
লিনক
http://bangla.bdnews.com/news/10873
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×