somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আধার আমি
আমি শেষ রাতের অবহেলিত চাঁদ। যাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সমাজের বেশির ভাগ মানুষ দেখতে পারে না। ঘুমের দোহাইয়ে সবাই আমার সাথে প্রতারণা করে। আর আমি সমাজ জাগতে জাগতে তে-পান্তরে হারিয়ে যায়।

প্রেম-বিরহকাতর স্বামী-স্ত্রী

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শুনো.....যদি জানতাম তোমার কঙ্কালও এই রাতে বাড়ির উঠানে এসেছে। তবুও আমি যেতাম। তোমার কঙ্কালকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদতাম। তোমার কঙ্কালের সাথে গল্প করে এইসব অভিশপ্ত রাতের কথা ভুলে যেতাম।


স্ত্রী-কন্যা ছেড়ে স্বামী এসেছেন স্বপ্ন চাষ করতে ঢাকা শহরে। দিন যায়, রাত যায় স্বপ্নরা বড্ড উপহাস শুরু করে। চোখে দেখে ভালো চাকরি সম্মান; মনের চোখ বিদ্রোহ করে। সারাক্ষণ দেখে আদরের কন্যাকে। স্ত্রীর প্রেমাভায় ভরপুর মুখের লাজুকতাকে।

বিদ্রোহ! বাইরের চোখের সাথে মনের চোখের। অর্থের সাথে আদর-প্রেম-ভালোবাসার। চড়ুই পাখির মত চঞ্চলা, আধো আধো বল ফোটা কন্যা বলতে পারে না- বাবা তুমি বাড়ি এসো। তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। তবে প্রায়শই মোবাইলে শোনে মেয়ে বলছে, বাবা! বাবা! বাবা!।

আর স্ত্রী! প্রতিনিয়ত তার আদরমাখা কণ্ঠে বলে, এ মাসে বাড়ি আসবে তো? আর স্বামী এক বুক হতাশা আর অজস্র প্রেমের গীত নিয়ে অনিশ্চিয়তার মাঝে বলে, আসব। অবশ্যই আসব। কিন্তু সেটি আর হয়ে আসে না।

স্ত্রী বলে জানো, পূর্ণিমার রাত উপহাস করে। বাতাসের নির্মলতা আমাকে উপহাস করে। প্রকৃতির সজীবতা আমার চোখে অশ্রু আনে। চারিদিকে এত উচ্ছ্বলতা আর আমার বুকের মাঝে শুধু রুক্ষতা!

স্বামীর মাথার ভেতর সারা পৃথিবী দোল খায়। ধরা ধরা গলায় বলে কেন?

জীবনের সমস্ত চাওয়াকে পদতলে পিষ্ট করে স্ত্রী বলে- জানো আমার এই রুক্ষ জীবনে কিছু চায় না। আমি শুধু তোমার পাশে বসে একটু গল্প করতে চায়। তোমার সাথে একটি মূহুর্ত থেকে আমি এই জগতে স্বর্গ খুজতে চায়।

স্বামীর কোনো উপায় নেই। বাড়ি ফিরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। যদি ছুটি পায় তবে। কিন্তু সেই দিনটি কবে আসবে সেটি স্বামীর জানা নেই। তাই স্ত্রীর কথাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে মিথ্যা হাসির ফোয়ারা দিয়ে বলে, আচ্ছা বাদ দাও। বলোতো এখন রাত, নাকি দিন?

স্ত্রী বলে, রাত.....গভীর রাত।

স্বা- একটু বাইরে এসো।
স্ত্রী- কেনো?

স্বা- আসবে তো আগে।
স্ত্রী- আগে বলো কেনো!

স্বা- বাইরে উঠানে এসে দেখো আমার কঙ্কাল, তোমার সাথে গল্প করতে গেছে?
স্ত্রী- আমাকে ভয় দিচ্ছো?

স্বা- আরে না যাবে তো, দেখো আমার কঙ্কাল।
স্ত্রী- শুনো.....যদি জানতাম তোমার কঙ্কালও এই রাতে বাড়ির উঠানে এসেছে। তবুও আমি যেতাম। তোমার কঙ্কালকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদতাম। তোমার কঙ্কালের সাথে গল্প করে এইসব অভিশপ্ত রাতের কথা ভুলে যেতাম। আমার একটুও ভয় করতো না। অন্তত তোমার অস্তিত্ব যে আমাকে স্পর্শ করছে এই আনন্দে বিধাতার কাছে প্রার্থনা করতাম জানো............করতাম এই পৃথিবীকে রাতের পৃথিবী করে দেওয়া হোক।

স্বা- কেনো?.....কেনো তুমি এমন প্রার্থনা করতে?
স্ত্রী- যে দিনের আলো তোমাকে দুরে রাখে সে দিনের আলো আমি চায় না। যে রাত অন্তত তোমার স্পর্শ এনে দিতে পারে সেই রাতেই এই পৃথিবীর নতুন জন্ম হোক।

স্বা- বউ?
স্ত্রী- বলো!

স্বা- আমাকে ছাড়া তোমার খুব কষ্ট হয় তাই না?
স্ত্রী- (হালকা একটু হেসে) না.. কষ্ট হয় না কিন্তু এভাবে বেচে থাকার মানে খুঁজি!

এভাবেই রাতের পর রাত গল্পে গল্পে চলে যায় কাল অতলে। আর স্বপ্নদের নিয়ে বেচে থাকে প্রেম-বিরহকাতর স্বামী-স্ত্রী। আর বাস্তবতার নিরিখে খুঁজে ফেরে আসলে বেচে থাকার অর্থটা কি??
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×